শ্রমিক

শ্রমিক দুনিয়ার মজদুর এক হও

জেমস কনোলি ছিলেন একজন আইরিশ সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবী এবং ট্রেড ইউনিয়ন নেতা। ১০৪ বছর আগে আজকের এই দিনে ডাবলিনে ব্রিটিশ দখলদ...
12/05/2023

জেমস কনোলি ছিলেন একজন আইরিশ সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবী এবং ট্রেড ইউনিয়ন নেতা। ১০৪ বছর আগে আজকের এই দিনে ডাবলিনে ব্রিটিশ দখলদার বাহিনী কর্তৃক তার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়েছিল। ১৯১৬ সালের ‘ইস্টার রাইজিং’-এ তার নেতৃত্বের জন্য তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ইস্টার রাইজিং ছিলো একটি সশস্ত্র বিদ্রোহ যার লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একটি আইরিশ প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। ১৯১৬ সালের ২৪-২৯ এপ্রিল পর্যন্ত এই সশস্ত্র বিদ্রোহের স্থায়ীত্ব ছিলো।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে, কনোলি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রামের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে নিশ্চিত হন। তিনি দেখেছিলেন আয়ারল্যান্ডের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বিরুদ্ধে লড়াই সমাজতন্ত্রের সংগ্রামের সাথে জড়িত ।

কনোলির সেনাবাহিনী যখন ডাবলিনে জেনারেল পোস্ট অফিস দখলে নিয়েছিল এবং আইরিশ তিরঙ্গা উত্থাপন করেছিল, তখন কমরেড লেনিন তার সাম্রাজ্যবাদ এবং জাতীয় আত্মনিয়ন্ত্রণের তত্ত্ব লিখছিলেন। লেনিন এই বিদ্রোহকে "ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের শক্তির বিরুদ্ধে আঘাত" হিসাবে উল্লেখ করেন এবং সমর্থন জানান।

যদিও বিদ্রোহ শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশদের দ্বারা নির্মমভাবে দমন করা হয়েছিল, তবে এটি আইরিশ জনগণকে বিপ্লবী করে তুলেছিল। ১৯১৬ সালের এই বিদ্রোহ আয়ারল্যান্ডের স্বাধীনতা সংগ্রামে একটি নতুন পর্ব নিয়ে আসে। যা ১৯২২ সালে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রজাতন্ত্রীক আয়ারল্যান্ড প্রতিষ্ঠার পথকে সহজ করে তোলে।

আজকের ১২ই মে, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিরোধিতা করার অপরাধে কমরেড কনোলিকে চেয়ারে বাঁধা অবস্থায় ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু, কনোলির মতো সকল আইরিশ বিপ্লবীরা আজও আয়ারল্যান্ড ছাড়িয়ে সারাবিশ্বের সাম্রাজ্যবাদবিরোধী মানুষের মাঝে অমর হয়ে আছে, হয়ে আছে সংগ্রাম এবং স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে।

মৃত্যু দিবসে কমরেড কনোলিকে শ্রমিক এর শ্রদ্ধা।

আজ ০৯ মে,সোভিয়েত ইউনিয়নের মহান বিজয় দিবস। ১৯৪৫ সালের আজকের এই দিনে কমরেড স্তালিনের নেতৃত্বে মানবজাতির বিজয় হয় সর্বগ্রাসী...
09/05/2023

আজ ০৯ মে,সোভিয়েত ইউনিয়নের মহান বিজয় দিবস। ১৯৪৫ সালের আজকের এই দিনে কমরেড স্তালিনের নেতৃত্বে মানবজাতির বিজয় হয় সর্বগ্রাসী ফ্যাসিবাদী নাৎসী বাহিনীর বিরুদ্ধে।

পুঁজিবাদী বিশ্ব অর্থনীতি ব্যবস্থা বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানে কার্যকরী নয় বলে পুঁজিবাদের কারনে বিশ্বে নানান সংকটের সৃষ্টি ঘটে,যার অবশ্যম্ভাবী ফলাফল হিসেবে সশস্ত্র সংঘাত হিসেবে বাঁধে যুদ্ধ। মানব ইতিহাসে ঘটে যাওয়া দুটি বিশ্বযুদ্ধই এই পুঁজিবাদী বিশ্ব অর্থনীতির গভীর সংকটের প্রমাণ। তা সত্ত্বেও প্রথম বিশ্বযুদ্ধ থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কিছুটা পার্থক্য ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ছিল পুঁজিবাদের অসম ভাগের কারণে একটি সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ, যেখানে প্রধান সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলির সমস্তগুলিই বিশ্বকে পুনরায় ভাগের জন্য এবং বিশ্ব অর্থনীতিকে তাদের আধিপত্যে অধস্তন করার জন্য লড়াই করেছিল।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের চেয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা সব ধরণের মাত্রাকেই অতিক্রম করে। এর কারণ এটি শুধুমাত্র বাজার দখল, সাম্রাজ্য বৃদ্ধির যুদ্ধ ছিলনা, বরং এটি ছিল উগ্র জাতীয়তাবাদী শ্রেষ্ঠত্ববাদ, বর্ণবাদী আদর্শের বিরুদ্ধে,ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সমাজতান্ত্রিক আদর্শের যুদ্ধ। সেই লক্ষ্যে বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তির সাথে মধ্যযুগের বর্বরতা একত্রিত করে ১৯৪১ সালের ২২শে জুন, জার্মান সামরিক বাহিনী সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ করেছিল। সব ধরণের নির্মম বর্বরতা চালানোর হুকুম পেয়েই প্রায় ৩০ লক্ষ্য জার্মান সৈন্য, ৬০০,০০০ সাঁজোয়া যানবাহন, ৩,৫০০ ট্যাঙ্ক, ৭,০০০ টী আর্টিলারি এবং ৩,৯০০ বিমান নিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়নে ভোর তিনটার দিকে আক্রমণ করেছিল।

প্রথম দিকে সোভিয়েত ভূখণ্ডের বিস্তীর্ণ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মস্কো দখলের পর যুদ্ধে কিছুটা এগিয়ে যায় জার্মান বাহিনী। এমন অবস্থায় নাৎসী বাহিনীকে রুখে দেয় স্তালিনগ্রাদের ব্যারিকেড। সোভিয়েতের লালফৌজের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রাণপনে যুদ্ধ করে রাশিয়ানরা। স্তালিনগ্রাদের যুদ্ধই দুই বছর স্থায়ী হয়। এবং সোভিয়েতের লাল ফৌয জয়ী হয়ে ক্রমান্বয়ে সব অঞ্চল জয় করতে থাকে।পোল্যন্ড জয় করে ১৯৪৫ সালের ৯ মে জার্মানির রাজধানী বার্লিনের সংসদ ভবনের উপর সোভিয়েত ইউনিয়নের কাস্তে হাঁতুড়ির পতাকা। আনুষ্ঠানিকভাবে সেদিন মিত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হিসেবে কমরেড স্তালিনের কাছে আত্মসমর্পন করে জার্মান সামরিক বাহিনী। এরই মাধ্যমে কমরেড স্তালিনের নেতৃত্বে মানবজাতির বিজয় হয় সর্বগ্রাসী ফ্যাসিবাদী নাৎসী বাহিনীর বিষাক্ত আক্রমন থেকে। সেই থেকে প্রতিবছর ৯ই মে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজয় দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়।

এই ধ্বংসযুদ্ধের খতিয়ান ছিল ভয়াবহ। মোট ০২ কোটি ৭০ লক্ষ (২৭ মিলিয়ন) সোভিয়েত নাগরিক যুদ্ধের শিকার হয়ে প্রাণ হারাতে হয়েছিল। সোভিয়েত প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয় এবং রাশিয়ান একাডেমি অফ সায়েন্সেস আয়োজিত একটি কমিশন, ১৯৮৭ থেকে ১৯৯১ সালে পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে, এই সংখ্যাটি ০৩ কোটি ৭০ লক্ষ্য হিসেবে (৩৭ মিলিয়নে) দাবি করে। এর মধ্যে মাত্র ৮.৬ মিলিয়ন সৈনিক এবং ২৭ মিলিয়ন থেকে ২৮ মিলিয়ন বেসামরিক নাগরিক, যাদের মধ্যে অনেকে ক্ষুধা ও অসহনীয় জীবনযাপনের কারণে প্রাণ হারান। লেনিনগ্রাদ শহরটির ২৮ মাসের অবরোধ, যা ওয়েহর্ম্যাট ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারে রেখেছিল, যার ফলে শূধু এখানেই ৪৭০,০০০ মানুষের জীবন শেষ হয়। শুধু সোভিয়েতেরই প্রায় ৩০ মিলিয়ন সোভিয়েত যুদ্ধবন্দী হত্যার শিকার হয় জার্মান বাহিনীর হাতে।

সোভিয়েত ইউনিয়নের পাশাপাশি যুদ্ধে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনে চীনের প্রায় ০২ কোটি (২০ মিলিয়ন)এর অধিক লোক প্রাণ হারায়। এর মধ্যে ৩.৭৫ মিলিয়ন সামরিক ও ১৮.১৯ মিলিয়ন বেসামরিক লোক প্রাণ হারায়।

যার দায় বর্তায় যুক্তরাষ্ট্র,জাপান,ইউরোপের ফ্রান্স,জার্মান,ইতালি,স্পেনসহ সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগুলোর উপর। এদের সাম্রাজ্যবাদী নীতির কারণে যুদ্ধ বাঁধলেও তা থেকে রক্ষার্থে চীন ও সোভিয়েতের প্রায় ৫৭ মিলিয়ন বিপুল জনসংখ্যা প্রাণ হারায়। সেই বিশ্বযুদ্ধের পর বর্তমানে এই সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগুলোর সবাই ন্যাটো সামরিক জোটের মাধ্যমে সোভিয়েতের পতন নিশ্চিত করে ক্ষান্ত হয়নি, লক্ষ্যবস্তু হিসেবে চিহ্নিত করেছে তাদের স্বার্থবিরোধী, পুঁজিবাদবিরোধী রাষ্ট্রগুলোকে। যার কারণে, বিশ্বে শোষিত মানু্ষের সামগ্রিক মুক্তি এখনো সম্ভব হয়নি।

শোষনের এমন দিনে সোভিয়েতের লাল ফৌজ আমাদের মুক্তির দিশা দেয়।

সোভিয়েত লাল ফৌজ, লাল সালাম।
কমরেড স্তালিন,লাল সালাম।

[ শ্রমিক পড়েন, শ্রমিককে মানুষের কাছে পৌঁছে দিন।]

|| প্রী তি ল তা ||প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের জন্ম হয় ১৯১১ সালের ৫ই মে, চট্টগ্রামের ধলঘাট গ্রামে। পিতা জগদ্বন্ধু ওয়াদ্দেদার ছ...
05/05/2023

|| প্রী তি ল তা ||

প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের জন্ম হয় ১৯১১ সালের ৫ই মে, চট্টগ্রামের ধলঘাট গ্রামে। পিতা জগদ্বন্ধু ওয়াদ্দেদার ছিলেন মিউনিসিপ্যাল অফিসের হেড কেরানী, মাতা প্রতিভা দেবী। ডঃ খাস্তগীর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষালাভ শুরু হয় প্রীতিলতার। সেই সময় থেকেই ইতিহাসের শিক্ষিকা ঊষা'দির কাছে প্রীতিলতা শুনতেন ইংরেজ সৈন্যদের বিরুদ্ধে পুরুষের বেশে ঝাঁসির রাণী লক্ষীবাঈ-এর লড়াইয়ের কথা। স্কুলে পড়াকালীন প্রীতিলতার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে ওঠেন কল্পনা দত্ত। সেই স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে বিপ্লবী কল্পনা দত্ত লিখেছিলেন- "কোনো কোনো সময় আমরা স্বপ্ন দেখতাম বড়ো বিজ্ঞানী হব। সেই সময় ঝাঁসির রাণী আমাদের চেতনাকে উদ্বুদ্ধ করে। নিজেদেরকে আমরা অকুতোভয় বিপ্লবী হিসাবে দেখা শুরু করলাম।"

প্রাথমিক শিক্ষালাভ শেষ হলে আই.এ. পড়ার জন্য ঢাকা ইডেন কলেজে ভর্তি হন প্রীতিলতা। এরপরে দর্শনে অনার্স করার উদ্দেশ্যে চলে আসেন কলকাতা, ভর্তি হন বেথুন কলেজে। বিপ্লবী হওয়ার স্বপ্ন ততদিনে আরও প্রবল হয়েছে। বিপ্লবীদের সাথে যোগাযোগ থাকার অভিযোগে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার এবং বীণা দাশগুপ্ত-এর পরীক্ষার ফল স্থগিত রাখা হয়েছিল। পরে ২০১২ সালের ২২ শে মার্চ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তাঁদের মরণোত্তর স্নাতক ডিগ্রি দেওয়া হয়। অন্যদিকে, গান্ধীজির অসহযোগ আন্দোলনের পরে চট্টগ্রামের বিপ্লবীরা সক্রিয় হয়ে ওঠেন। ১৯২৩ সালের ১৩ই ডিসেম্বর টাইগার পাস মোড়ে প্রকাশ্যে সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাবদ নিয়ে যাওয়া ১৭,০০০ টাকা ছিনতাই করেন সূর্য সেনের নেতৃত্বে বিপ্লবীরা। এই ঘটনার দু সপ্তাহ পরে গ্রেফতার করা হয় সূর্য সেন ও অম্বিকা চক্রবর্তীকে। তাঁদের বিরুদ্ধে রেলওয়ে ডাকাতির মামলা দায়ের করা হয়। এই ঘটনা কিশোরী প্রীতিলতার মনে গভীর ছাপ ফেলেছিল, মনের মধ্যে বহু অজানা প্রশ্নেরা ভিড় করেছিল। এরই ফাঁকে ফাঁকে চলছিল ঊষা'দির কাছে বিপ্লবীদের কথা শোনা, ঊষাদি'র দেওয়া "ঝাঁসির রাণী" বইটিও গভীর রেখাপাত করেছিল প্রীতিলতার মনে।

১৯২৪ সালে 'বেঙ্গল অর্ডিনান্স' নামে এক জরুরি আইনের ভিত্তিতে বিপ্লবীদের বিনা বিচারে গ্রেফতার করা শুরু হয়। বিপ্লবীদের যাবতীয় কর্মকাণ্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। সেই সময় বিপ্লবী পূর্ণেন্দু দস্তিদার (প্রীতিলতার আত্মীয় ছিলেন) প্রীতিলতাদের বাড়িতে বিপ্লবীদের কিছু বই লুকিয়ে রেখেছিলেন। দশম শ্রেণীর ছাত্রী প্রীতিলতা পড়ে ফেলেন- 'দেশের কথা', 'বাঘাযতীন', 'ক্ষুদিরাম', 'কানাইলাল' ইত্যাদি। ঢাকাতে তখন 'শ্রীসংঘ' বিপ্লবী সংগঠনের মহিলা শাখা 'দীপালী সংঘ'-তে যোগ দেন প্রীতিলতা। শেখেন লাঠিখেলা, কুস্তি, ডন বৈঠক সহ নানা কিছু। এদিকে ১৯৩০ সালের ১৮ই এপ্রিল চট্টগ্রামের বিপ্লবীদের পরিকল্পনামাফিক আক্রমণে ধ্বংস করা হয় অস্ত্রাগার, পুলিশ লাইন, টেলিফোন অফিস, রেললাইন। এই বিদ্রোহ ইতিহাসে চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহ নামে পরিচিত। এই পরিকল্পনায় ইউরোপিয়ান ক্লাবও ছিল বিপ্লবীদের টার্গেটে। কিন্তু সেই পরিকল্পনা সফল হয়নি।

১৯৩২ সালে, মে মাসের একদিন বিপ্লবী নির্মল সেন প্রীতিলতাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন- "পরিবারের প্রতি কেমন টান আছে?"
এর উত্তরে দৃঢ়চেতা প্রীতিলতার উত্তর ছিল- "টান আছে। কিন্তু 'duty to family' কে 'duty to country'-র কাছে বলি দিতে পারি।" এরপরে নির্মল সেন একদিন প্রীতিলতাকে নিয়ে এসেছিলেন সাবিত্রী দেবীর বাড়িতে মাস্টার দা'র সাথে সাক্ষাত করানোর জন্য। ওই বাড়িতে আশ্রয় নিতেন আত্মগোপনকারী বিপ্লবীরা। বাড়ি'টির গোপন নাম ছিল 'আশ্রম'। বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিয়োজিত করেন প্রীতিলতা।

প্রথমবার আক্রমণের পরিকল্পনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় ১৯৩২ সালে দ্বিতীয়বারের জন্য ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মাস্টারদা। ঠিক হয়েছিল, দলের নারী বিপ্লবীদের নেতৃত্বে হবে সেই আক্রমণ। কিন্তু আক্রমণের দিন যেদিন ঠিক হয়, তার ঠিক সাতদিন আগে পুলিশের কাছে ধরা পড়ে যান বিপ্লবী কল্পনা দত্ত। সেই মূহুর্তে দলের একমাত্র মহিলা বিপ্লবী ছিলেন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। প্রীতিলতার নেতৃত্বে ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ১৯৩২ দিনটিতে আক্রমণ করা হবে বলে স্থির হয়। মোট পনেরো জনের সদস্যের টিম তৈরি করা হয়। ছদ্মবেশ ধারণ করেন প্রীতিলতা। সেদিন আক্রমণের সময় তার পরনে ছিল ধুতি-পাঞ্জাবি, মাথায় সাদা পাগড়ি, পায়ে রবার সোলের জুতো।

ওইদিন রাত প্রায় ১০ঃ৪৫ মিনিটে যোগেশ মজুমদার আক্রমণের নিশানা দেখানোর পরেই প্রীতিলতা হুইসেল বাজিয়ে আক্রমণ শুরু করার নির্দেশ দেন। নিরন্তর গুলি-বোমা বর্ষণে কেঁপে উঠছিল পাহাড়তলীসহ গোটা এলাকা। খোদ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যটাই যেন কেঁপে উঠেছিল সেদিন। ক্লাবের পূর্ব গেট দিয়ে রিভলবার ও বোমা নিক্ষেপের দায়িত্বে ছিলেন প্রীতিলতা, শান্তি চক্রবর্তী ও কালিকিংকর দে। ক্লাবের ভিতরে সেই সময় জনা ৪০ ইউরোপীয় ছিলেন। সব আলো নিভিয়ে দেওয়ার ফলে তাঁরা বেরোতে পারেননি। দু-পক্ষের থেকেই চলতে থাকে গুলিবর্ষণ। প্রীতিলতার বাঁদিকে গুলি এসে লাগে। সেদিনের আক্রমণ শেষে বিপ্লবী দলের সাথে কিছুদূর একসাথে হেঁটে আসেন প্রীতিলতা। তারপর আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে নেন। ২৪শে সেপ্টেম্বর, ১৯৩২ মৃত্যু হয় এই অগ্নিকন্যার। বাকি বিপ্লবীরা তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। প্রীতিলতা 'duty to family'-কে 'duty to country'-র কাছে বলি দিতে পেরেছিলেন। বিপ্লবের রাস্তায় অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছিলেন নিজেকে। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে আমাদের মেয়েরাও প্রীতিলতা হওয়ার স্বপ্ন দেখে। শ্রেণীবৈষম্য, লিঙ্গবৈষম্যের শিকড় গেঁড়ে আছে যে সমাজব্যবস্থায়, তাকে বদলাতে আমাদের প্রয়োজন আরও আরও অনেক প্রীতিলতা।

লেখা - Shreya Acharjee

আজ ০৫ মে, সহস্রাব্দের শ্রেষ্ঠ চিন্তক কমরেড কার্ল মার্ক্সের ২০৫তম জন্মবার্ষিকী। মার্ক্স ছিলেন দর্শন, অর্থনীতি এবং রাজনীতি...
05/05/2023

আজ ০৫ মে, সহস্রাব্দের শ্রেষ্ঠ চিন্তক কমরেড কার্ল মার্ক্সের ২০৫তম জন্মবার্ষিকী।
মার্ক্স ছিলেন দর্শন, অর্থনীতি এবং রাজনীতির ইতিহাসে একজন বিপ্লবী ব্যক্তিত্ব। মানব সভ্যতার ইতিহাস যে শ্রেণি সংগ্রামের ইতিহাস এবং সেই সংগ্রামের আগামী দিনগুলো কেমন হবে তা দেখিয়েছিলেন। শ্রমিক শ্রেণির অর্থনীতি, রাজনীতি, দর্শনের তাত্ত্বিক প্রতিষ্ঠা দৃঢ়ভাবে করেন।
তিনিই প্রথম পুঁজিবাদকে বৈজ্ঞানিকভাবে ব্যাপক বিশ্লেষণ করেন এবং এর চূড়ান্ত পরাজয়ের অনিবার্যতা তুলে ধরেন। মার্কসের পুঁজিবাদের দ্বন্দ্বের বিশ্লেষণ এবং উৎপাদনের উপায়ের সমষ্টিগত মালিকানার উপর ভিত্তি করে একটি শ্রেণীহীন সমাজের তার দৃষ্টিভঙ্গি তার নিজের সময়ে যেমন প্রাসঙ্গিক ছিল, তেমনি আজও প্রাসঙ্গিক রয়ে গেছে। আজও মার্কসের ইতিহাস, অর্থনীতি এবং রাজনীতির তত্ত্বগুলি সমাজতান্ত্রিক তত্ত্ব এবং অনুশীলনের মূল ভিত্তি হিসাবে বিবেচিত। মার্কস কেবল একজন তাত্ত্বিকই ছিলেন না,ছিলেন একজন বাস্তব বিপ্লবী, যিনি একটি অধিকতর ভালো দুনিয়ার জন্য সংগ্রামে তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। মার্ক্সের প্রতিভা এই সত্যের মধ্যে রয়েছে যে, তিনি সঠিকভাবে দেখাতে পারেন পুঁজিবাদী সমাজে ভাল বা মন্দের জন্য কাজ করা সামাজিক শক্তিগুলিকে, যেমনটি অন্য কেউ পারে না। পুঁজিবাদের কার্যকারিতা এবং সামাজিক শ্রেণীগুলির শক্তি সম্পর্কে মার্কসের অন্তর্দৃষ্টি বর্তমান সময়ে আরো বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। সেজন্য মার্ক্সের প্রভাব শুধু একাডেমিয়াতেই নয়, বিশ্ব রাজনীতিতেও আগের চেয়ে অনেক বেশি স্পষ্ট। মার্ক্সের তত্ত্বগুলি এখনও প্রাসঙ্গিক, বিশেষ করে সমাজে পুঁজিবাদের প্রভাব বোঝার ক্ষেত্রে এবং সম্মিলিত সংগ্রামের মাধ্যমে তার ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটানোর ক্ষেত্রে। মার্ক্সের কাজ তার সময়ের প্রভাবশালী চিন্তাধারার সাথে একটি বিপ্লবী পরিবর্তনের প্রতিনিধিত্ব করে, এবং আজও যারা একটি শ্রেণিহীন বিশ্ব গড়তে চায় তাদের অনুপ্রাণিত করে চলেছে।
কার্ল মার্ক্স আমাদেরকে দ্বান্দ্বিক এবং ঐতিহাসিক বস্তুবাদের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি দিয়ে ইতিহাস এবং এর বিবর্তন বোঝার জন্য সজ্জিত করেছেন। যার মাধ্যমে তিনি দুনিয়ার সমস্ত অন্যায়,অবিচারের বিরুদ্ধে সংগ্রামরত মানুষের মনে একজন স্থায়ী শিক্ষক ও সংগ্রামের সঙ্গী হিসেবে স্থান করে নিয়েছেন।

২০৫তম জন্মদিবসে কার্ল মার্ক্সের প্রতি শ্রমিক এর শ্রদ্ধা।

আজ ৪ মে, লংগদু গণহত্যা দিবস। এই গণহত্যার  ৩৪ বছর পূর্ণ হলো। ১৯৮৯ সালে এই দিনে রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় আর্মি ও গ্রাম প্র...
04/05/2023

আজ ৪ মে, লংগদু গণহত্যা দিবস। এই গণহত্যার ৩৪ বছর পূর্ণ হলো। ১৯৮৯ সালে এই দিনে রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় আর্মি ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর (ভিডিপি) সহায়তায় সেটলার বাঙালিরা পাহাড়ি অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে পরিকল্পিতভাবে এ গণহত্যা চালায়। এতে বহু পাহাড়ি হতাহত হয়। সেটলাররা পাহাড়িদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়, বৌদ্ধ মন্দির ও বুদ্ধ মুর্তি ধ্বংস করে। কিন্তু আজও এই গণহত্যার কোন বিচার হয়নি।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, ১৯৮৯ সালের ৪ঠা মে বিকাল ৪-৫ টা নাগাদ লংগদু উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ সরকার তার অফিসের কাছে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাবার আড়াই ঘন্টা পর লংগদুতে পাহাড়ি গ্রামবাসীদের উপর প্রতিশোধ মূলক হামলা শুরু হয়। এই প্রতিশোধমূলক হামলায় কম করে ৩৬ জন নারী-পুরুষ ও শিশু মারা যায়। তবে এর প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে বলে রিপোর্টে বলা হয়। আর আব্দুর রশিদ সরকারের মৃত্যুর জন্য শান্তিবাহিনীকে দায়ী করা হলেও এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এর কোন কারণ খুঁজে পায়নি বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

অ্যামনেস্টির ওই রিপোর্টে বলা হয়, “… কম করে ৬টি গ্রাম আক্রমণ করা হয়, পাহাড়িদের শত শত ঘরবাড়ি, অসংখ্য বৌদ্ধ মন্দির এবং খ্রিস্টানদের দু’টি গীর্জা জ্বালিয়ে দেয়া হয়। যারা বেঁচে যায় তারা আশ্রয়ের জন্য পাহাড়ে ও জঙ্গলে পালিয়ে যায় এবং তাদের একটা বিরাট অংশ সীমান্ত পার হয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়।”

তৎসময়ে এ হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে চাকমা রাজা ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়, প্রাক্তন সংসদ সদস্য চাইথোয়াই রোয়াজা, প্রাক্তন সংসদ সদস্যা সুদীপ্তা দেওয়ান, প্রেসিডেন্টের সাবেক উপদেষ্টা সুবিমল দেওয়ান, তৎকালীন রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গৌতম দেওয়ান এবং রাঙামাটি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মায়াধন চাকমাসহ ২২ জন বিশিষ্ট পাহাড়ি নেতা বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন।

স্মারকলিপিতে তারা এ হত্যাযজ্ঞের ভয়াবহতার বর্ণনা দিয়ে বলেন, “উপজেলা সদরে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য, লংগদু ইউনিয়ন পরিষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও ৩নং লংগদু মৌজার হেডম্যান অনিল বিহারী চাকমা তার বাসভবনে হামলার শিকার হন। ভাগ্যক্রমে তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও তার স্ত্রী ও প্রতিবেশীদের অনেকে (যারা হেডম্যানের বাসভবনে আশ্রয় নিয়েছিল) নির্মম হত্যার শিকার হয়েছেন। হত্যাকারীরা দা, বল্লম ইত্যাদি সহ আগ্নেয়াস্ত্রের দ্বারাগুলি করে এইসব নিরীহ নারী, পুরুষ, শিশু নির্বিশেষে হত্যা করেও ক্ষান্ত হয়নি। মৃতদেহগুলি বাড়ীতে ফেলে তাতে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে। অনিল বিহারী চাকমা তার স্ত্রীর মৃতদেহ বাড়ী থেকে বের করে বাড়ীর পাশ্ববর্তী জঙ্গলে সারারাত পাহারা দিয়ে রাখেন। ভোরের দিকে থানায় খবর দিতে এসে উদ্ধার করতে গেলে পরবর্তীতে মৃতদেহের কোন হদিস পাননি। পরিস্থিতিরএমন ভয়াবহতায় মৃতদেহগুলি ধর্মীয় বিধিতে পর্যন্ত সৎকার করা সম্ভব হয়নি”। (তথ্য সূত্র: রাডার, লোগাঙ গণহত্যা সংখ্যা)।

যে সময় এ ঘটনা সংঘটিত হয় সে সময় দেশে ছিল সামরিক শাসন। ক্ষমতার আসনে ছিলেন স্বৈরাচারী এরশাদ। ফলে এ বর্বর হত্যাযজ্ঞের সংবাদ সে সময় বাংলাদেশের কোন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়নি বা প্রকাশ করতে দেওয়া হয়নি।

এই গণহত্যার প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ জন্ম লাভ করে।

লোমহর্ষক এ গণহত্যার আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানানোর জন্য পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ১৯৮৯ সালের ২১ শে মে ঢাকার রাজপথে মৌন মিছিল বের করে এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। এতে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতৃবৃন্দ বর্বরতম এ হত্যাযজ্ঞের তীব্র নিন্দা এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ এবং দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি প্রদানসহ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ক্ষতিপূরণ দাবি জানান।

কিন্তু দীর্ঘ ৩৪ বছরে দেশে ক্ষমতার নানা পালাবদল হলেও কোন সরকারই এ গণহত্যার বিচার ও জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার শাাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। শুধু তাই নয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে এ যাবত সংঘটিত ডজনের অধিক গণহত্যারও কোন বিচার হয়নি। এমনকি এসব গণহত্যার সঠিক তদন্ত রিপোর্টও আজ পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি।

পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘটিত এসব হত্যাযজ্ঞের বিচার না হওয়ায় বার বার সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার হতে হচ্ছে পাহাড়ি জনগণকে। পার্বত্য চুক্তির পরও এমন বর্বর হামলা থামেনি। বরং বলা যায় চুক্তির আগের চেয়েও বেশি সাম্প্রদায়িক হামলা সংঘটিত হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামে।

গণহত্যার সাক্ষী সেই লংগদুতে ২০১৭ সালের ২ জুন পাহাড়িদের ওপর আবারো এক বর্বর সাম্প্রদায়িক হামলা চালানো হয়। এক বাঙালি মোটর সাইকেল চালকের লাশ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে সেনা-প্রশাসনের সহযোগিতায় সেটলার বাঙালিরা পাহাড়িদের কয়েকটি গ্রামে হামলা চালিয়ে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি পুড়িয়ে ছাই করে দেয় এবং ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধাকে পুড়িয়ে হত্যা করে।

সূত্রঃ CHT News

১৯৩৩ সালের ২রা মে,  জার্মানিতে এডলফ হিটলার তার সরকার গঠনের তিনমাসের মাথায় দেশের সকল শ্রমিক ইউনিয়ন বাতিল করে। হিটলারের পু...
03/05/2023

১৯৩৩ সালের ২রা মে, জার্মানিতে এডলফ হিটলার তার সরকার গঠনের তিনমাসের মাথায় দেশের সকল শ্রমিক ইউনিয়ন বাতিল করে। হিটলারের পুলিশ বাহিনী সকল শ্রমিক ইউনিয়নের অফিসগুলা দখলে নিয়া নেয়। ইউনিয়নের নেতা ও এর সাথে জড়িত ব্যক্তিদেরকে গ্রেপ্তার কইরা ফেলা হয়, ইউনিয়নগুলোর আর্থিক তহবিলগুলা বাজেয়াপ্ত করা ফেলা হয়।

১৯৩৩ সালের ১লা মে তে জার্মানিতে শ্রমিকদের 'আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস' পালনের পরিপ্রেক্ষিতে এর একদিনের মাথায় এই সিদ্ধান্ত নেয় হিটলারের সরকার।

জার্মানির শ্রমিক ইউনিয়নগুলা বাতিলের পর তথাকথিত শ্রমিক সংগঠন 'জার্মান লেবার ফ্রন্ট' গঠন করা হয় এবং শ্রমিকদের তাতে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়। জার্মান লেবার ফ্রন্ট শ্রমিকদের অবসর সময়ে বাধ্যতামুলকভাবে নানারকম অনুষ্ঠানের আয়োজন করতো, যাতে করে শ্রমিকরা রাজনৈতিক হয়ে উঠার সময় বের করতে না পারে।

২রা মে, শ্রমিক ইউনিয়নগুলো বাতিল ঘোষনার সাথে সাথে জার্মাতি শ্রমিক ধর্মঘটও নিষিদ্ধ করা হয়। পরবর্তী বছরগুলাতে জার্মানিতে যখন জীবন যাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুর খরচ বেড়েই চলছিলো তখন শ্রমিকদের বেতন সংক্রান্ত সংকট ছিলো চরমে। হিটলারের সরকার সেইসময় চাকরিহীন জার্মানদের সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য করে। ঠিক এইভাবেই গড়ে উঠেছিলো পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম বর্বর ও জাতীয়তাবাদী এক উন্মত্ত সেনাবাহিনী।

২রা মে, জার্মানির শ্রমিক ইতিহাসে, শ্রমিক শোষণের সবচাইতে কালো অধ্যায় আরম্ভ হওয়ার দিন।

১৯৩৮ সালের ৩রা মে, জ্যামাইকার 'ফ্রোম চিনিকল' এর ধর্মগটরত নির্মাণ শ্রমিকদের ওপর গণহত্যা চালায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক পুলিশ।  ধ...
03/05/2023

১৯৩৮ সালের ৩রা মে, জ্যামাইকার 'ফ্রোম চিনিকল' এর ধর্মগটরত নির্মাণ শ্রমিকদের ওপর গণহত্যা চালায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক পুলিশ। ধর্মঘটরত শ্রমিকেরা আন্দোলন করছিলেন মুলত তাঁদের পারিশ্রমিক বৃদ্ধির দাবি আদায়ের লক্ষ্যে৷ তিনজন শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করা হয় এবং একজনকে নির্মমভাবে বেয়োনেট চার্জ করে হত্যা করা হয়। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক পুলিশের এই জঘন্য অত্যাচারে অন্তত পঁচিশ জন শ্রমিক আহত হন সেদিন।

ব্রিটিশ পুলিশ ঐদিন শুধু শ্রমিক হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি। তারা একশো নয় জন শ্রমিককে গ্রেপ্তার করে এবল তাঁদের ওপর দাঙ্গা সংঘটিত করার অভিযোগ দায়ের করে। গ্রেপ্তার হওয়া শ্রমিকদের অনেকেরই এক বছরের বেশি সময়ের কারাদন্ড দেয় ব্রিটিশরা।

১৯৩৮ সালের ৩রা মে এর এই শ্রমিক হত্যা সারা জ্যামাইকার শ্রমিকদের মাঝে আন্দোলন ও ধর্মঘট করার স্ফুলিঙ্গ তৈরি করে। যার ফলস্বরূপ পরবর্তীতে শ্রমিকেরা নিজেদের দাবি আদায়ে আরো ধর্মঘটের ডাক দেন।

‘মে দিবসের উৎস কি?’- রোজা লুক্সেমবার্গ (১৮৯৪)।~আট ঘন্টা কর্মদিবস অর্জনের উপায় হিসাবে সর্বহারা ছুটির উদযাপন করার সুখী ধা...
01/05/2023

‘মে দিবসের উৎস কি?’
- রোজা লুক্সেমবার্গ (১৮৯৪)।
~
আট ঘন্টা কর্মদিবস অর্জনের উপায় হিসাবে সর্বহারা ছুটির উদযাপন করার সুখী ধারণাটি প্রথম অস্ট্রেলিয়ায় জন্মগ্রহণ করেছিল।আট ঘন্টা কর্মদিবস অর্জনের উপায় হিসাবে সর্বহারা ছুটির উদযাপন করার সুখী ধারণাটি প্রথম অস্ট্রেলিয়ায় জন্মগ্রহণ করেছিল। এই উদযাপনের দিনটি ২১ এপ্রিল হওয়ার কথা ছিল। প্রথমে, অস্ট্রেলিয়ার শ্রমিকরা এটাকে শুধুমাত্র ১৮৫৬ সালের পালনের জন্য উদ্দেশ্য করেছিল। কিন্তু প্রথমবারেই এই উদযাপন অস্ট্রেলিয়ার সর্বহারা জনসাধারণের উপর এতটাই শক্তিশালী প্রভাব ফেলেছিল,যা তাদেরকে উজ্জীবিত করেছিল এবং নতুন আন্দোলনের দিকে নিয়ে গিয়েছিল যে, প্রতি বছর এই উদযাপনের পুনরাবৃত্তি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

প্রকৃতপক্ষে, শ্রমিকদের নিজেদের শক্তির জন্য
বৃহত্তর সাহস ও বিশ্বাস আর কী হতে পারে যে দলবেঁধে তারা নিজেরাই কাজ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল? কারখানা ও কর্মশালার চিরকালের দাসদের নিজেদের সৈন্য সংগ্রহের চেয়ে বড় সাহস আর কী হতে পারে?এইভাবে, একটি সর্বহারা উদযাপনের ধারণাটি দ্রুত গৃহীত হয়েছিল এবং, অস্ট্রেলিয়া থেকে, অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছিল যতক্ষণ না শেষ পর্যন্ত এটি সমগ্র সর্বহারা বিশ্বকে জয় করেছিল।

আমেরিকানরাই প্রথম অস্ট্রেলিয়ান শ্রমিকদের উদাহরণ অনুসরণকারী। ১৮৮৬ সালে তারা সিদ্ধান্ত নেয় যে, ১লা মে সর্বজনীন কাজ বন্ধের দিন হওয়া উচিত। এই দিনে তাদের মধ্যকার ২০০,০০০ জন শ্রমিক তাদের কাজ ছেড়ে দেয় এবং আট ঘন্টার কর্মদিবস দাবি করে। পরে, বহু বছর ধরে পুলিশ এবং আইনি হয়রানি শ্রমিকদের এই [আকারের] বিক্ষোভের পুনরাবৃত্তি করতে বাধা দেয়। যাইহোক, ১৮৮৮ সালে তারা তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্নবীকরণ করে এবং সিদ্ধান্ত নেয় যে পরবর্তী উদযাপন হবে ১লা মে, ১৮৯০।

এরই মধ্যে ইউরোপে শ্রমিক আন্দোলন শক্তিশালী ও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। এই আন্দোলনের সবচেয়ে শক্তিশালী অভিব্যক্তি ১৮৮৯ সালে আন্তর্জাতিক ওয়ার্কার্স কংগ্রেসে ঘটেছিল।এই কংগ্রেসে, চারশত প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে আট ঘন্টার কর্মদিবস প্রথম দাবি হতে হবে। তখন ফরাসী ইউনিয়নের প্রতিনিধি, বোর্দোর কর্মী ল্যাভিগনে, এই দাবিটি সর্বজনীন কাজ বন্ধের মাধ্যমে সমস্ত দেশে প্রকাশ করার জন্য প্রস্তাবনা তোলে। আমেরিকান শ্রমিকদের প্রতিনিধি তার কমরেডদের ১লা মে,১৮৯০ তারিখে ধর্মঘটের সিদ্ধান্তের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন এবং কংগ্রেস সার্বজনীন সর্বহারা উদযাপনের জন্য এই তারিখের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো।

এই ক্ষেত্রে, অস্ট্রেলিয়ায় ত্রিশ বছর আগে, শ্রমিকরা সত্যিই কেবল একবারের বিক্ষোভের কথা ভেবেছিল। কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নেয় যে ১লা মে, ১৮৯০ তারিখে সারা বিশ্বের শ্রমিকরা আট ঘন্টা কর্মদিবসের জন্য একত্রে বিক্ষোভ প্রদর্শন করবে।কেউই পরবর্তী বছরের জন্য ছুটির পুনরাবৃত্তির কথা বলেনি। স্বভাবতই বজ্রপাতের মতো এই ধারণাটি কতটা সফল হবে এবং কত দ্রুত শ্রমিক শ্রেণী গ্রহণ করবে তা কেউই আন্দাজ করতে পারেনি। যাইহোক, মে দিবসটি কেবলমাত্র একবার উদযাপন করাই যথেষ্ট ছিল যাতে সবাই বুঝতে এবং অনুভব করতে পারে যে, ‘মে দিবস’কে অবশ্যই বার্ষিক এবং প্রচলিত হতে হবে [...]।

‘পহেলা মে’ আট ঘণ্টা কর্মদিবস চালুর দাবি জানায়। কিন্তু এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর পরও ‘মে দিবস’কে পালন করা বন্ধ করে দেওয়া হয়নি।যতদিন বুর্জোয়া ও শাসক শ্রেণীর বিরুদ্ধে শ্রমিকদের সংগ্রাম চলবে, যতক্ষণ পর্যন্ত সব দাবি পূরণ না হয়, মে দিবস হবে এসব দাবির বাৎসরিক বহিঃপ্রকাশ। এবং, যখন অধিকতর ভাল দিনের উদয় হবে, যখন বিশ্বের শ্রমজীবী ​​শ্রেণী তার মুক্তি লাভ করবে তখন মানবতাও সম্ভবত তিক্ত সংগ্রাম এবং অতীতের অনেক কষ্টের প্রতি সম্মান জানিয়ে মে দিবস উদযাপন করবে।:

১৯২৮ সালের ১লা মে, নারী অধিকারের জন্য লড়াইকারী ও কমিউনিস্ট মতাদর্শে বিশ্বাসী শিয়াং জিংইউকে হত্যা করে চায়নার 'কওমিনটাঙ' ন...
01/05/2023

১৯২৮ সালের ১লা মে, নারী অধিকারের জন্য লড়াইকারী ও কমিউনিস্ট মতাদর্শে বিশ্বাসী শিয়াং জিংইউকে হত্যা করে চায়নার 'কওমিনটাঙ' নামক ন্যাশনালিস্ট পার্টি। শিয়াং জিংইউ নিজ দলের মানুষের দ্বারা বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হয়ে ফরাসী পুলিশের হাতে ধরা পড়েন এবং পরবর্তীতে তাঁকে ফরাসি পুলিশই জাতীয়তাবাদ ভিত্তিক কনজার্ভেটিভ কওমিনটাঙ সরকারের কাছে হস্তান্তর করে।

চায়নায় নারী অধিকার আন্দোলন সংগঠিত করার পিছনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছিলেন। পাশাপাশি কমিউনিস্ট আন্দোলনের সময় লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণের জন্য তাঁর ক্রমাগত প্রচেষ্টা ছিলো। ১৯২৪ সালে প্রায় দশ হাজার সিল্ক ফ্যাক্টরির নারী শ্রমিকদের নিয়ে তিনি ধর্মঘটের ডাক দেন। শিয়াং জিংইউ কমিউনিস্ট পার্টি অফ চায়নার প্রথমদিককার নারী সদস্য এবং তিনবার পার্টির সেন্ট্রাল কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯২৮ সালের ২০শে মার্চ তাঁকে ফরাসী পুলিশ আটক করে। এপ্রিল মাসে ফরাসী পুলিশ তাঁকে তৎকালীন জাতীয়তাবাদী সরকারের নিকট হস্তান্তর করে। নির্মম নির্যাতনের মধ্যেও তিনি তাঁর কমরেডদের নাম প্রকাশ করেননি। মে মাসের প্রথম দিনে চায়নিজ পুলিশের হাতে নিহত হন শিয়াং জিংইউ।

মৃত্যুদিবসে নারী অধিকার ও সাম্যের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়া কমরেড শিয়াং জিংইউকে শ্রমিক এর লাল সালাম।

আজকের এই দিনেঃ ৩০এপ্রিল, ১৯৪৫।সোভিয়েত রেড আর্মি রাইকস্ট্যাগ জয় করার মুহূর্তে হিটলার এবং তার স্ত্রী ইভা ব্রাউন বার্লিনের ...
30/04/2023

আজকের এই দিনেঃ
৩০এপ্রিল, ১৯৪৫।

সোভিয়েত রেড আর্মি রাইকস্ট্যাগ জয় করার মুহূর্তে হিটলার এবং তার স্ত্রী ইভা ব্রাউন বার্লিনের একটি বাংকারে আত্মহত্যা করেন এবং তার সাথে সাথেই না*জি জার্মানির সমাধি রচিত হয়।

"প্রত্যেকটি স্বাধীনতা-প্রেমী মানুষ রেড আর্মির কাছে এতোটা ঋণী যে, এক জীবনে এই ঋণ শোধ করা অসম্ভব!"
- আর্নেস্ট হেমিংওয়ে

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে মায়ের কাছে ভাত চেয়ে না পেয়ে অভিমান করে ইটভাটা শ্রমিক নাঈম হোসেন (১৪) নামের এক কিশোরের গ্যাস ট্যাব...
29/04/2023

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে মায়ের কাছে ভাত চেয়ে না পেয়ে অভিমান করে ইটভাটা শ্রমিক নাঈম হোসেন (১৪) নামের এক কিশোরের গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।

নিহত নাঈম উপজেলার গারাদহ ইউনিয়নের গাড়াদহ গ্রামের কৃষক মো. আবু সাঈদের ছোট ছেলে, সে স্থানীয় একটি ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার গাড়াদহ গ্রামের কৃষক মো. আবু সাঈদের ছোট ছেলে ইটভাটা শ্রমিক নাঈম হোসেন সকালে পালিত গাভীর জন্য ঘাস কাটতে যায়। বেলা আনুমানিক ১১টায় ঘাস কাটা শেষে বাড়িতে ফিরে তার মায়ের কাছে ভাত খেতে চায়।

এসময় নাঈমের মা তাকে জানায় যে ভাত ফুরিয়ে গেছে, রান্না করে দিতে হবে। এসময় নাঈম অভিমান করে বাড়ি থেকে চলে যায়।

কিছুক্ষণ পর নাঈম বাড়িতে ফিরে উঠোনে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যায়, এসময় পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা গুরুতর অসুস্থ্য অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উল্লাপাড়ার কাওয়াক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন।

সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে নাঈমের জ্ঞান ফিরলে তার বাবার কাছে ইদুর মারার গ্যাস ট্যাবলেট পান করার কথা সে জানায়।

পরে সিরাজগঞ্জ শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১টায় কিশোর নাঈম মারা যায়।

পরে বেলা ২টায় নাঈমের লাশ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। খবর পেয়ে শাহজাদপুর থানার এসআই আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।

শাহজাদপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল মজিদ বলেন, নাঈম নামের এক কিশোর মায়ের কাছে ভাত চেয়ে না পেয়ে অভিমান করে গ্যাস ট্যাবলেট পানে আত্মহত্যার খবর পেয়ে এসআই আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল পাঠানো হয়।

আত্মহত্যার ঘটনায় নাঈমের পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় ও নিহতের পিতা থানায় এসে ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দাফনের আবেদন করেন।

তার আবেদনের প্রেক্ষিতে কিশোর নাঈমের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

সূত্র: সময়ের কন্ঠস্বর

২৮ এপ্রিল, ১৯৪৫ইতালির ফ্যাসিস্ট শাসক ‘বেনিতো মুসোলিনি ও তার স্ত্রী ক্লারা পেতাচ্চি `কে ইতালির স্বাধীনতাকামী, অ্যান্টি ফ্...
28/04/2023

২৮ এপ্রিল, ১৯৪৫

ইতালির ফ্যাসিস্ট শাসক ‘বেনিতো মুসোলিনি ও তার স্ত্রী ক্লারা পেতাচ্চি `কে ইতালির স্বাধীনতাকামী, অ্যান্টি ফ্যাসিস্ট পার্টিজান কমিউনিস্ট সৈন্যরা সুইজারল্যান্ডে পালিয়ে যাওয়ার পথে ধরে এবং পরে হত্যা করে।

জার্মান ফ্যাসিস্ট শাসক হিটলারের সহযোগিতায় যুদ্ধের সময়ে উত্তর ইটালীতে সে জার্মানীর পাপেট শাসক হিসেবে অবস্থান করে। মুসোলিনি যখন মিত্রশক্তি র জয় ও অক্ষশক্তির পরাজয় সুনিশ্চিত বুঝতে পারে তখন সে তার রাস্তা বেঁছে নেয়।

সে নিজেকে আমেরিকান কিংবা ব্রিটিশদের হাতে পড়তে দিতে রাজি নয়। সে নিজেকে কমিউনিস্টদের হাতেও পড়তে দিতে রাজি না, যারা উত্তর ইতালিতে অবশিষ্ট ফ্যাসিস্ট সৈন্যদের সাথে লড়াইয়ে নিয়োজিত রাখছে। সে কোনো নিরপেক্ষ রাষ্ট্রে পালিয়ে যাওয়াকে নিরাপদ মনে করে এবং সুইজারল্যান্ডকেই বেঁছে নেয়। সুইস বর্ডারে পৌঁছানোর পর সেখানকার অবস্থা দেখে মুসোলিনি ও তার স্ত্রী পেতাচ্চি ছদ্মবেশ ধারণ করে ও জার্মান সৈনবাহিনী এর সাথে মিশে যায় যাতে করে তাকে কেউ সন্দেহ না করে। কিন্তু সেখানকার কমিউনিস্ট গেরিলা যোদ্ধারা তাকে চিনে ফেলে। এবং সেখানেই তাকে ও তার স্ত্রীকে হত্যা করা হয়। পরবর্তীতে তাদের লাশ মিলান শহরের মূল ফটকে ঝুলিয়ে রাখা হয়।

ঐতিহাসিক লোগাঙ পদযাত্রা!আজ ২৮ এপ্রিল পার্বত্য চট্টগ্রামের আন্দোলনের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। ঐতিহাসিক লোগাঙ পদযাত্রা ...
28/04/2023

ঐতিহাসিক লোগাঙ পদযাত্রা!

আজ ২৮ এপ্রিল পার্বত্য চট্টগ্রামের আন্দোলনের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। ঐতিহাসিক লোগাঙ পদযাত্রা দিবস। ১৯৯২ সালের এই দিনে লোগাঙ গণহত্যার প্রতিবাদে খাগড়াছড়ি সদর থেকে লোগাঙ অভিমুখে ঐতিহাসিক মৌন পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতৃত্বে এ পদযাত্রায় হাজার হাজার ছাত্র-জনতা অংশ নেন।

লোগাঙ গণহত্যার প্রতিবাদ ও শহীদদের প্রতি সম্মান জানাতে ১৯৯২ সালের ২৮ এপ্রিল খাগড়াছড়ি সদরের কড়ইতলা (খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ প্রাঙ্গন) থেকে শুরু হয় লোগাঙ অভিমুখে এই পদযাত্রা। তিন পার্বত্য জেলার হাজার হাজার ছাত্র-জনতা এই পদযাত্রায় সামিল হন। ঢাকা থেকে আগত প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলের নেতা, ছাত্র নেতা, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মি ও লেখকরাও জুম্ম জনগণের আন্দোলনের সাথে সংহতি জানিয়ে এই পদযাত্রায় অংশ নেন। তাদের এই অংশগ্রহণ জুম্ম জনগণের মনে আরো বেশী শক্তি ও সাহস সঞ্চার করে।

সেদিন সকল রক্ত চক্ষু ও বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে ছাত্র-জনতা পদযাত্রা সহকারে হত্যাযজ্ঞস্থল লোগাঙ পোড়া ভিটায় গিয়ে অস্থায়ী স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করে পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান জানায় এবং ধর্মীয় বিধান মতে শহীদদের শেষকৃত্য সম্পন্ন করে দেয়। এতে পার্বত্য চট্টগ্রামের লড়াই সংগ্রাম এক নতুন মাত্রা লাভ করে।

পদযাত্রার খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভর এলাকা অতিক্রম করছে। ফাইল ছবি
প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালের ১০ এপ্রিল রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় সেটলার বাঙালিরা খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার লোগাঙ গুচ্ছগ্রামে পাহাড়িদের ওপর বর্বর গণহত্যা সংঘটিত করে। সেটলাররা দা, বটি, কুড়াল দিয়ে পাহাড়িদের উপর আক্রমণ করে এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সদস্যরা জুম্মদের উপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। এতে কয়েকশত পাহাড়ি হতাহত হয়। অনেকে নিঁখোজ হয়ে যায়। সেদিন শিশু, বৃদ্ধ, নারী কেউই রেহাই পায়নি। অগ্নিসংযোগ করে ছাই করে দেওয়া হয় পাহাড়িদের ৭ শতাধিক ঘরবাড়ি। দীর্ঘ তিন দশকেও এ গণহত্যার বিচার হয়নি।

[পদযাত্রার ছবিটি ভোকেশনাল ইন্সটিটিউটের সন্নিকট থেকে তোলা,২৮ এপ্রিল ১৯৯২ ]
তথ্যসূত্রঃ chtnews

শ্রমিক পত্রিকাটি শ্রমিক শ্রেণির বিপ্লবী ক্ষমতারোহণের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত একটি পত্রিকা। দেশে প্রতিষ্ঠিত বুর্জোয়া সংবাদপত্র...
27/04/2023

শ্রমিক পত্রিকাটি শ্রমিক শ্রেণির বিপ্লবী ক্ষমতারোহণের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত একটি পত্রিকা।
দেশে প্রতিষ্ঠিত বুর্জোয়া সংবাদপত্রগুলোর বাইরে গিয়ে শ্রমিক পত্রিকার মূল লক্ষ্য হচ্ছে দেশের ভিতরের ও বাইরের শোষিত- নিপীড়িত সর্বহারা শ্রেণির মুখপাত্র হিসেবে কাজ করা।
কমরেড আন্তোনিও গ্রামসি বুর্জোয়া সংবাদপত্র এবং শ্রমিকদের সম্পর্ক নিয়ে ১৯১৬ সালে ‘সংবাদপত্র এবং শ্রমিক’ শিরোনামে প্রকাশিত লেখায় বলেন,
“বুর্জোয়া সংবাদপত্রগুলি এমনকি সহজতম সত্যকে এমনভাবে বলে যা বুর্জোয়া শ্রেণীর পক্ষে যায় এবং শ্রমিক শ্রেণী ও এর রাজনীতিকে অভিশাপ দেয়।
কোনো ধর্মঘট ছড়াইয়া পড়ছে?
বুর্জোয়া সংবাদপত্রের ভাষায় শ্রমিকরা সবসময়ই ভুল।
এইখানে কোন বিক্ষোভ চলতেছে?
বিক্ষোভকারীরা সর্বদাই ভুল, শুধুমাত্র শ্রমিক হওয়ার কারণে তারা সর্বদা উত্তেজিত, দাঙ্গাবাজ, গুন্ডা।
সরকার কোন আইন পাস করছে? এটি সর্বদা ভাল, দরকারী এবং ন্যায়সঙ্গত, এমনকি যদি তা নাও হয়।
আর যদি কোনো নির্বাচনী, রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়? সর্বোত্তম কর্মসূচি এবং প্রার্থীরা সবসময় বুর্জোয়া দলগুলিরই হবে।”

কমরেড আন্তোনিও গ্রামসি ছিলেন একজন ইতালীয় মার্ক্সবাদী দার্শনিক এবং কমিউনিস্ট রাজনীতিক।গ্রামসি রাজনৈতিক তত্ত্ব, সমাজবিজ্ঞান ও ভাষাতত্ত্বের ওপর লেখালিখি করেছেন। ধ্রুপদী মার্ক্সীয় চিন্তাধারার অর্থনৈতিক নির্ধারণবাদ থেকে বিযুক্ত হবার প্রয়াস চালান বলে তাকে নব্য-মার্ক্সবাদীদের মধ্যে হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি ইতালির কমিউনিস্ট পার্টির একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও নেতা ছিলেন এবং বেনিতো মুসোলিনির ফ্যাসিবাদী শাসনামলে তাকে কারাবন্দী করা হয়েছিল। কারাবাসকালে ঐতিহাসিক ও বিশ্লেষণমূলক ত্রিশটির অধিক নোটবই ও তিন সহস্রাধিক পৃষ্ঠা লিখেছিলেন। তার কারাগারের নোটবইকে বিংশ শতাব্দীর রাজনৈতিক তত্ত্বে অত্যন্ত মৌলিক অবদান হিসেবে গণ্য করা হয়।

২২ জানুয়ারি ১৮৯১ সালে জন্মগ্রহণ করা কমরেড গ্রামসি ২৭ এপ্রিল ১৯৩৭ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

মৃত্যু দিবসে কমরেড গ্রামসির প্রতি শ্রমিকের শ্রদ্ধা।

বিশ শতকের দিকে যখন দেশের অধিকাংশ মানুষই কৃষক এবং ব্রিটিশ অনুগত জমিদারদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ, সেখানে মুসলিম লীগ ও কংগ্রেসের...
27/04/2023

বিশ শতকের দিকে যখন দেশের অধিকাংশ মানুষই কৃষক এবং ব্রিটিশ অনুগত জমিদারদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ, সেখানে মুসলিম লীগ ও কংগ্রেসের মতো শক্তিশালী ও জনপ্রিয় দুই সাম্প্রদায়িক দলের বাইরে গিয়ে অসাম্প্রদায়িক ‘কৃষক প্রজা পার্টি’ গড়েন ফজলুল হক।

১৯৩৭ সালের নির্বাচনের সময়ে ফজলুল হক হয়ে ওঠেন জনসাধারণের নেতা। নির্বাচনে রাজনৈতিক স্লোগান ওঠে, ‘লাঙ্গল যার জমি তার, ঘাম যার দাম তার’। ফজলুল হক হয়ে ওঠেন জনগণের ‘হক সাহেব’। বাংলাদেশের শতকরা ৮৫ ভাগ মানুষই কৃষক। আর অধিকাংশই বাঙালি মুসলমান। তবু হক সাহেব ঘোষণা করেন— ‘কৃষক আন্দোলন শুধু কৃষকদেরই আন্দোলন, কৃষকেরা কোন ধর্মাবলম্বী তা আমাদের জানবার বিষয় নয়।’

হক সাহেবের জনমুখী রাজনীতির প্রমাণ হিসেবে ১৯৩৭ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনের ইশতেহার দেখা যায়। কৃষকদের জন্য কোনো ক্ষতিপূরণ ছাড়াই কৃষকের মৃত্যুফাঁস কুখ্যাত জমিদারি প্রথা বাতিল, জমির মালিকানা পরিবর্তনের স্বীকৃতি, নজর সেলামি নামে এক ধরনের করপ্রথা বাতিল, ঋণ সালিশী বোর্ড গঠন করে কৃষকদের ওপর বিশাল ঋণের বোঝা থেকে মুক্তি ও পাঠের পাটের ন্যায্য দাম নির্ধারণ করার দাবি করে ফজলুল হকের কৃষক প্রজা পার্টি। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক, আর প্রতিটি থানায় হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার কথা বলেন সেই ইশতেহারে।

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে নিপিড়ীত মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠা আবুল কাশেম ফজলুল হকের মৃত্যু দিবসে শ্রমিকের শ্রদ্ধা।

বিশ্বজুড়ে কমিউনিস্ট এবং সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের একটি আইকনিক প্রতীক ‘কাস্তে এবং হাতুড়ি’ ১৯১৮ সালের আজকের এই দিনে (২৫ এপ...
25/04/2023

বিশ্বজুড়ে কমিউনিস্ট এবং সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের একটি আইকনিক প্রতীক ‘কাস্তে এবং হাতুড়ি’ ১৯১৮ সালের আজকের এই দিনে (২৫ এপ্রিল) সোভিয়েত ইউনিয়নের বলশেভিক পার্টি কর্তৃক প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়েছিল।

‘হাতুড়ি এবং কাস্তে’ প্রতীকটি রাশিয়ান শিল্পী ইয়েভজেনি ইভানোভিচ কামজোলকিন দ্বারা ডিজাইন করা হয়েছিল, যিনি বলশেভিক পার্টির সদস্য ছিলেন।

‘হাতুড়ি এবং কাস্তে’র সমন্বয়ে গড়া প্রতীকটির হাতুড়ির অংশটি শিল্প-শ্রমিক শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ব করে এবং কাস্তে, যা কৃষি শ্রমিক শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ব করে।

‘হাতুড়ি এবং কাস্তে’ প্রতীকটি প্রথম ১৯২৩ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতাকায় ব্যবহৃত হয়েছিল এবং এটি দ্রুত কমিউনিস্ট পার্টি এবং সোভিয়েত সরকারের প্রতীক হয়ে ওঠে। প্রতীকটির জনপ্রিয়তা দ্রুত বিশ্বের অন্যান্য কমিউনিস্ট ও সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনে ছড়িয়ে পড়ে এবং এটি বিভিন্ন পতাকা, লোগো এবং প্রতীকে ব্যবহার করা হয়েছে।

হাতুড়ি এবং কাস্তে প্রতীকটি বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনের সাথেও যুক্ত হয়েছে যার লক্ষ্য ছিল সামাজিক সমতা, শ্রমিকদের অধিকার এবং সম্পদ ও সম্পদের আরও ন্যায়সঙ্গত বন্টন।:

Address

Dhaka

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when শ্রমিক posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Share

Category