09/10/2022
#নোয়াখালী_হিন্দু_গণহ_ত্যা
্টোবর_লক্ষ্মীপূজার_দিন
১৯৪৬ সালের ১০ অক্টোবর, কোজাগরি লক্ষ্মী পূজার দিন। পুরো বাংলা ছিল খুশির আমেজে। কিন্তু সে বছর পুজোর শঙ্খধ্বনির সাথে বাংলার আকাশ বাতাস নিনাদিত হয়েছিল মানুষের আর্ত চিৎকারে। নোয়াখালীর মানুষের জীবনে নেমে এসেছিল এক দুর্বিসহ কালো অধ্যায়।
বর্ব-র য-বনদের দ্বারা সংঘটিত এই হ-ত্যাযজ্ঞে প্রায় কমপক্ষে ৫,০০০ হিন্দু হত্যা করা হয়েছে বলে অনুমান করা হয়। এছাড়া অনেক হিন্দু নারী ধর্ষ-ণের শিকার হন এবং হাজার হাজার হিন্দু নারী-পুরুষদের জোরপূর্বক ইসলাম মতবাদে ধর্মা*ন্তরিত করা হয়। প্রায় ৫০,০০০ থেকে ৭৫,০০০ বেঁচে থাকা হতভাগ্যকে কুমিল্লা, চাঁদপুর, আগরতলা ও অন্যান্য জায়গার অস্থায়ী আশ্রয় শিবির গুলোতে আশ্রয় দেয়া হয়। এছাড়া প্রায় ৫০,০০০ হিন্দু আক্রান্ত এলাকায় মানবেতর জীবন যাপন করতে থাকে। কিছু এলাকায় হিন্দুদেরকে স্থানীয় মুসলিম নেতাদের অনুমতি নিয়ে চলা ফেরা করতে হত। জোরপূর্বক ইসলামে ধ-র্মান্তরিতদের কাছ থেকে জোর করে লিখিত রাখা হয়েছিল যেখানে লেখা ছিল তারা স্বেচ্ছায় ধর্মান্ত*রিত হয়েছে। তাদেরকে একটি নির্দিষ্ট বাড়িতে বা ঘরে আবদ্ধ করে রাখা হত এবং যখন কোন আনুষ্ঠানিক পরিদর্শক দল পরিদর্শনে আসত তখন তাদেরকে ওই নির্দিষ্ট বাড়িতে যাবার অনুমতি দেয়া হত। হিন্দুদেরকে ওই সময় মুসলিম লীগকে চাঁদা দিতে হত যাকে বলা হত জিজিয়া (যা একসময় ভারতবর্ষে প্রচলিত ছিল। মুসলিম শাসন আমলে হিন্দুরা নিজেদের নিরাপত্তার জন্য তৎকালিন শাসকদের জিজিয়া নামক বাড়তি প্রদান করত।)
ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেছেন,
"জোর করিয়া ধর্মান্তরিত করা ইসলাম ধর্ম অনুমোদন করে কিনা সে তর্কের প্রয়োজন নাই; কিন্তু যে মুসলমানদের কাছে তিনি এই কথা বলিয়াছিলেন তাহাদের পূর্বপুরুষের শতকরা অন্তত নব্বই জনকে যে জোর করিয়া মুসলমান করা হইয়াছিল-- এবং প্রায় প্রত্যেক মুসলমানই যে ইহা অনুমোদন করিয়াছে, করিতেছে এবং করিবে; গান্ধীজির উপদেশ যে তাহাদের কাছে উপহাসের মতই মনে হইবে এ সম্বন্ধে যাঁহারা প্রধানমন্ত্রী বা মহাত্মা নহেন-- সাধারণ ব্যক্তি মাত্র, তাঁহাদের কোনো সন্দেহ নাই।"
(বাংলা দেশের ইতিহাস, চতুর্থ খণ্ড, রমেশচন্দ্র মজুমদার)
নির্মল কুমার বসুর লেখা থেকে:
"এখানকার (ভাটিয়ালপুর নাথভৌমিক বাড়ী) ঠাকুরঘর নষ্ট করে সবাইকে মুসলমান করেছিল। আজ প্রার্থনার পর উঠানে ঠাকুরঘরে গান্ধীজি একটি বাঁধানো ছাপা রাধাকৃষ্ণের ছবি বসিয়ে দিলেন। অর্থাৎ নূতন করে ঠাকুর প্রতিষ্ঠা করে দিলেন। শাঁখ ঘন্টা বাজিয়ে তিনমাস পরে আবার পূজা আরম্ভ হল। (১৪ই জানুয়ারি, ১৯৪৭)"
এই হ*ত্যাকাণ্ডের ইতিহাস অনেক বড়। উইকিপিডিয়ার পেইজটি মোটামুটি সমৃদ্ধ। সকলকে পড়ার অনুরোধ রইল।
bn.wikipedia.org/wiki/নোয়াখালী_দাঙ্গা