aship.us

aship.us রাত পোহাবার কত দেরী পাঞ্জেরী

খেলাফত আন্দোলনের অবদান
20/11/2023

খেলাফত আন্দোলনের অবদান

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে হাফেজ্জী হুজুরমনযূর আহমাদ১৯৮১ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং খেলাফত আন্দোলন প্রতিষ্ঠার পর হা...
15/11/2023

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে হাফেজ্জী হুজুর
মনযূর আহমাদ
১৯৮১ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং খেলাফত আন্দোলন প্রতিষ্ঠার পর হাফেজ্জী হুজুর বাংলাদেশের রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচিত হন এবং কূটনৈতিক মহলসহ বিদেশেও তাঁর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। নির্বাচনের পর ইরান ও ইরাকের উচ্চপর্যায়ের দুজন কর্মকর্তা পৃথক পৃথ কভাবে কামরাঙ্গীর চরে মাদরাসায়ে নুরীয়ায় উপস্থিত হয়ে হাফেজ্জী হুজুরকে ইরান ও ইরাক সফরের আমন্ত্রণ জানান। ভ্রাতৃপ্রতিম দুটি মুসলিম রাষ্ট্রের মধ্যে তখন যুদ্ধ চলছিল। যুদ্ধে দেশ দুটির শহর-বন্দর ও জনপদ ধ্বংস হওয়া ছাড়াও উভয় দেশের হাজার হাজার নর-নারী হতাহত হচ্ছিল। এই প্রেক্ষাপটে দেশ দুটির যুদ্ধ বন্ধ করার উপায় নিয়ে আলোচনার উদ্দেশ্যে ১৯৮২ সালের শেষ দিকে হাফেজ্জী হুজুর ইরান-ইরাকে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে সফর করেন। তিনি ১৯৮২ সালের সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ইরান সফর করেন। পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল তাঁর সফরসঙ্গী ছিল।[১]
ইরান পৌঁছলে হাফেজ্জী হুজুরসহ প্রতিনিধিদলকে তেহরানের মেহরাবাদ বিমানবন্দরে ইরান সরকারের পক্ষ থেকে বিপুল সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। রাষ্ট্রীয় মেহমান হিসেবে আট দিন ইরানে অবস্থানের সময় তাঁরা ইরানের বিপ্লবী নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি, প্রেসিডেন্ট আলি খামেনিসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে মিলিত হন। ইরান সফরের পর হজ পালন শেষ করে অক্টোবরের পাঁচ তারিখ হাফেজ্জী হুজুর তাঁর শান্তিমিশনের সদস্যগণসহ ইরাকে পৌঁছেন। ইরাকে হাফেজ্জী হুজুরের প্রতিনিধিদলে আরো তিনজন নতুন সদস্য যুক্ত হন।[২] শান্তিমিশনের লক্ষ্য নিয়ে হাফেজ্জী হুজুর ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনসহ তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী এবং ওয়াকফবিষয়ক মন্ত্রীর সাথে বৈঠকে মিলিত হন।[৩] উভয় দেশের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়ের সময় তাঁরা ইরান-ইরাকের ভ্রাতৃঘাতি যুদ্ধ বন্ধ এবং কোরআন-সুন্নাহর ভিত্তিতে শান্তি স্থাপনের আহ্বান জানান ।
ইরানের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইরাক যদি ইসলামি হুকুমত কায়েমের কথা ঘোষণা করে এবং ইরাকি আলেমবৃন্দ ও হাফেজ্জী হুজুরের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে প্রণীত ইসলামি হুকুমতের রূপরেখা বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে কোনো শর্ত ছাড়াই তারা যুদ্ধ বন্ধ করতে প্রস্তুত আছে ।
এই প্রস্তাব ইরাকের প্রেসিডেন্টের নিকট পেশ করা হলে তিনি যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাব মেনে নিলেও কোরআন-সুন্নাহর শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে তাঁর দেশের বিভিন্ন সমস্যার কথা উল্লেখ করেন।[৪] হাফেজ্জী হুজুরের শান্তিমিশন সফল না হওয়ার কারণ হিসেবে শান্তিমিশনের ব্যাপারে উভয় দেশের সরকার প্রধান ও নীতিনির্ধারকদের ভুল বোঝাবুঝির শিকার হওয়া ছাড়াও দেশ দুটির মধ্যে শতাব্দীর পর শতাব্দীর বৈরী সম্পর্ক এবং ‘শিয়া-সুন্নি' বিষয়ক আকিদাগত পার্থক্যের বিরাট ভূমিকা ছিল।[৫]
১৯৮৫ সালের জুলাই-আগস্টে অনুষ্ঠিত লন্ডন মুসলিম ইনস্টিটিউট আয়োজিত পাঁচ দিনব্যাপী এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে হাফেজ্জী হুজুর প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। প্রায় একশটিরও অধিক দেশের বরেণ্য ইসলামি চিন্তাবিদ ও ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে যোগদান করেন।
সম্মেলনে তিনি মুসলিম বিশ্বের ঐক্য, সংহতি ও আন্তর্জাতিক ইহুদী-খ্রিষ্টান চক্রের ষড়যন্ত্র থেকে উদ্ধারের লক্ষ্যে মুসলিম উম্মাহর জন্য পাঁচ দফা প্রস্তাব উত্থাপন করেন। যার মূল বক্তব্য ছিল :
ক. কালিমা পাঠকারী বিশ্ব মুসলিম ঐকবদ্ধরূপে আল্লাহর রজ্জু ধারণ করে সংঘবদ্ধ হয়ে বিশ্বের সমস্ত কুফরি শক্তিকে অভিন্ন সাব্যস্ত করে সর্বাত্মক জিহাদে ঝাঁপিয়ে পড়বে।
খ. ইরান-ইরাক যুদ্ধ বন্ধ করাসহ মুসলিম বিশ্বের পারস্পরিক দ্বন্দ্ব- সংঘাত নিরসনের জন্য একটি শক্তিশালী বিশেষ ওলামা বোর্ড গঠন করতে হবে।
গ. সারা বিশ্বের ইসলামি আন্দোলনসমূহের মধ্যে সমন্বয় বিধান ও তাদের সহযোগিতা প্রদানের জন্য একটি বিশেষ কমিটি এবং ইহুদিদের কবল থেকে ফিলিস্তিনিদের মুক্ত করার জন্য একটি তহবিল গঠন করতে হবে।
ঘ. আন্তঃইসলামি বিশ্বের সংযোগের ভাষা ও খেলাফতের রাষ্ট্রীয় ভাষা হবে আরবি।
ঙ. খেলাফতের রাজধানী হবে মক্কা অথবা মদিনা।[৬]
সম্মেলনে প্রদত্ত হাফেজ্জী হুজুরের প্রস্তাবগুলো ছিল খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কিন্তু এগুলো বাস্তবায়নের জন্য কোনো কর্তৃপক্ষ বা সংগঠন জোরালো কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় প্রস্তাবগুলো কার্যকর কোনো ফলাফল দিতে সমর্থ হয়নি। তারপরও হাফেজ্জীর ভাষণ ও প্রস্তাব পেশ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বাক্তিদের মনে নতুন চিন্তার উদ্রেক করেছিল। অন্তত মানসিকভাবে তারা উজ্জীবিত হয়েছিল। এও কোন সম্মেলনের কম সফলতা নয় ।
হাফেজ্জী হুজুর সমাজ থেকে জুলম, নিপীড়ন, শোষণ, বঞ্চনা ও দুর্বলের ওপর সবলের অত্যাচার বন্ধসহ যাবতীয় অশ্লীলতা উৎখাতের আহ্বান জানাতেন। তিনি এ জন্য দেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় সৎ ও মুত্তাকি নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য বলে মনে করে দল গঠনের মাধ্যমে রাজনীতিতে অংশ নেন এবং জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত (মৃত্যু ৭ মে, ১৯৮৭) এই লক্ষ্যে সাধ্যমতো কাজ করে গেছেন। নানা কারণে ইচ্ছা ও আন্তরিকতার অভাব না থাকা সত্ত্বেও তাঁর রাজনৈতিক উদ্যোগসমূহে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। তবে তিনি চেষ্টা করেছেন, এ-ও তাঁর সাফল্য। তিনি ১৯৮১ থেকে মৃত্যু পর্যন্ত রাজনীতি সক্রিয় ছিলেন। রাজনীতি ছাড়াও আধ্যাত্মিক সাধনায়, জ্ঞানচর্চায় ও শিক্ষা-সেবায় তাঁর সফলতা অসামান্য।
খেলাফত আন্দোলনের বড় সাফল্য –সে বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছিল। বিশেষ করে বাংলাদেশে কওমি ধারার আলেমদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে খেলাফত আন্দোলনের কৃতিত্ব সর্বাগ্রে বিবেচ্য। বাংলাদেশের ত্রিশ হাজার কওমি মাদরাসার ছাত্র- শিক্ষক আজ ইসলামি রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত। বাংলাদেশের সমাজ ও রাজনীতিতে কওমি ধারার আলেম-ওলামার প্রভাব ও ভূমিকা অনস্বীকার্য। এ অবদানের অনেক অংশ হাফেজ্জী হুজুরের প্রাপ্য।
টীকা :
[১] শাইখুল হাদিস আজিজুল হক রাহি., মাওলানা ফজলুল হক আমিনি রাহি., মাওলানা হামিদুল্লাহ রাহি., মাওলানা আখতার ফারুক রাহি. ও ত্বহা বিন হাবীব।
[২] মাওলানা মুহিউদ্দীন খান, মাওলানা হাবীবুল্লাহ ও হাজী সিরাজউদ্দৌলা।
[৩] মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান, প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা-১০৬।
[৪] দেশ দুটি সফরশেষে ঢাকায় সাংবাদিক সম্মেলনের প্রতিবেদন এবং অধ্যাপক আখতার ফারূক লিখিত মধ্যপ্রাচ্যে হাফেজ্জী হুজুর, হিজবুল্লাহ প্রকাশনী, ঢাকা, ১৯৮৩, পৃষ্ঠা-১৫৮।
[৫] মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান, প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা-১১৪-১৫।]
[৬] হাফিজি্জি হুজুর রাহ. স্মারক গ্রন্থ, হাফেজ্জি হুজুর রাহ. পরিষদ, প্রকাশকাল : ২০০৫, পৃষ্ঠা : ২৩৪।
বিস্তারিত পড়ুন :
বই : পঁচাত্তর থেকে শাপলা
লেখক : মনযূর আহমাদ
প্রকাশক : নাবিক প্রকাশন
মুদ্রিত মূল্য : ১৫০০ টাকা

Nabik -এর হাত ধরে ইতিহাসের সঠিক চেতনা পৌঁছে যাক সবার দুয়ারে।
13/11/2023

Nabik -এর হাত ধরে ইতিহাসের সঠিক চেতনা পৌঁছে যাক সবার দুয়ারে।

ইতিহাসের নতুন সব অধ্যায়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে এবং প্রচলিত ইতিহাসের নতুন বয়ান তৈরি করার প্রত্যয় নিয়ে শুরু হয়েছে ...
12/11/2023

ইতিহাসের নতুন সব অধ্যায়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে এবং প্রচলিত ইতিহাসের নতুন বয়ান তৈরি করার প্রত্যয় নিয়ে শুরু হয়েছে নাবিক প্রকাশনের যাত্রা। ইতিহাস মগ্ন পাঠককে নতুনত্বের স্বাদ দেয়াই আমাদের প্রত্যাশা। আমরা পাঠককে ইতিহাস সচেতন করতে চাই। নিজের ইতিহাস সম্পর্কে করে তুলতে চাই। ইতিহাসের অনোন্মচিত সত্য উদ্‌ঘাটন করতে চাই। তৈরি করতে চাই ইতিহাস সচেতন একটি প্রজন্ম।

সেজন্য আমাদের প্রকাশিত বইগুলো আমরা সবচেয়ে সহজ উপায়ে পাঠকের দ্বারে পৌঁছে দিতে চাই।

আমাদের এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য আমরা পাঠকপ্রিয় বই পঁচাত্তর থেকে শাপলা বইটিতে বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা করলে কেমন হয়?!

পঁচাত্তর থেকে শাপলার লেখক Manzur Ahmad এর হাতে চিরায়তর শাপলানামা : তেরো থেকে তেইশ।
20/10/2023

পঁচাত্তর থেকে শাপলার লেখক Manzur Ahmad এর হাতে চিরায়তর শাপলানামা : তেরো থেকে তেইশ।

পাঠকের অনুভূতি : জানিয়েছেন Ejhar Nur**’পঁচাত্তর থেকে শাপলা’ ইসলামি ঘরানার শক্তিমান ইতিহাস লিখিয়ে শ্রদ্ধাষ্পদ Manzur Ahma...
17/10/2023

পাঠকের অনুভূতি : জানিয়েছেন Ejhar Nur

**
’পঁচাত্তর থেকে শাপলা’ ইসলামি ঘরানার শক্তিমান ইতিহাস লিখিয়ে শ্রদ্ধাষ্পদ Manzur Ahmad -এর দুখন্ডে প্রকাশিত ইতিহাস নির্ভর মৌলিক গ্রন্থ। তিনি বরাবরের মতো সত্য তথ্য ও তত্ত্বময় ইতিহাসখানি কলমের আঁচড়ে তুলে ধরেছেন। বর্তমান প্রচলিত বয়ানগুলোতে অনেক মিথ্যা বয়ান বোদ্ধা পাঠকদের মাঝে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। যদ্দরুণ ইতিহাসপাঠকগণ প্রচলিত নাতিদীর্ঘ বয়ানে দিধান্বিত ও দোদুল্যমান। তাই সবাইকে বলব যদি পঁচাত্তরের কালরাত হতে শাপলাচত্ত্বরের ঐতিহাসিক নির্মম ট্রাজেডি ও এতদুভয়ের মাঝে ঘটে যাওয়া যাবতীয় কর্মযজ্ঞ সম্বন্ধে সত্য তথ্যগুলো জানতে চান তবে এই বইটি অধ্যায়ণ করে দেখতে পারেন।

05/10/2023

হাফিজ্জি হুজুর ও ৮৬‘র নির্বাচন।
যে কথাগুলো সবাইকে জানতে হবে।

‘পঁচাত্তর থেকে শাপলা’ থেকে তথ্য নিয়ে কথাগুলো বলেছেন রাকিবুল হাসান নাইম।

`ইসলামি রাজনীতি'র সংকট'সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইসলামি রাজনীতি' অন্যতম আলোচিত ও সমালোচিত ধারণা হিস...
02/10/2023

`ইসলামি রাজনীতি'র সংকট

'সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইসলামি রাজনীতি' অন্যতম আলোচিত ও সমালোচিত ধারণা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ক্ষেত্রবিশেষে 'সন্ত্রাসবাদের সাথে ইসলামি রাজনীতির সংযোগের অভিযোগ আনায় এই বিষয়টি আরো বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই একটি বিতর্ক চলছে যে ধর্মের ভিত্তিতে বা ধর্মকে কেন্দ্র করে রাজনীতি কতটা যৌক্তিক? এটা সত্য যে পাশ্চাত্য ধারার গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে অনেক কিছু হয়। রাজনীতির প্রয়োজনে ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি, ইতিহাস, বিশেষ ব্যক্তি, আদর্শ বা ভাবমূর্তিকে ব্যবহার করা হয়। কোথাও কোথাও বাইবেল কিংবা কোরআনে হাত রেখে রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধানকে শপথ নিতেও দেখা যায়। তবে সেই রাজনৈতিক দলগুলোর মূল আদর্শ ধর্ম নয় কিংবা তারা ধর্মীয় আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য রাজনীতি করে না। বরং রাজনীতির প্রয়োজনেই ধর্মের আশ্রয় নেয়। তাই এখানে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন তৈরি হয়, ধর্মের প্রয়োজনে রাজনীতির ব্যবহার হবে নাকি রাজনীতির প্রয়োজনে ধর্মের ব্যবহার হবে?

পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে রাজনীতির প্রয়োজনে অন্যান্য অনেক বিষয়ের মতো ধর্মকেও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কোনো কোনো দেশে পার্শ্ববর্তী দেশবিরোধী সেন্টিমেন্ট, জাতীয়তাবাদ ইত্যাদি রাজনীতির প্রভাবক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কোনো কোনো রাজনৈতিক নেতাকে দেখা যায় নির্বাচন আসলে হজ করে, টুপি পরে, হিজাব পরে, আবার কেউ কেউ বলে থাকে তাদের ভোট দিলে ধর্ম বাঁচবে ইত্যাদি। কিন্তু এরা কেউ ধর্মীয় রাজনীতি বা ধর্মের জন্য রাজনীতি করে না। বরং, তারা নিজস্ব রাজনীতি টিকিয়ে রাখার জন্য ধর্মকে ব্যবহার করে।

বই : পঁচাত্তর থেকে শাপলা
লেখক : Manzur Ahmad
প্রকাশক : নাবিক প্রকাশন-Nabik Prokashon

আমার দাদা। বয়স হয়েছে অনেক। ৯০ পেরিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন একটু একটু করে। আল্লাহ দাদাকে সুস্থ রাখুন। সুস্বাস্থ্য...
23/09/2023

আমার দাদা। বয়স হয়েছে অনেক। ৯০ পেরিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন একটু একটু করে। আল্লাহ দাদাকে সুস্থ রাখুন। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী করুন। বইয়ের প্রতি প্রবল আগ্রহ আমার দাদাকে অনেক বেশি উজ্জীবিত করে রাখে। অহেতুক টেনশন, বৃদ্ধ বয়সের ভঙ্গুর মানসিকতা, একা একা সময় কাটানো, সবকিছুর সমাধান তিনি বইয়ের মধ্যে খুঁজে পান। আমি যদি দাদার সাথে বই পড়ার প্রতিযোগিতায় নাম, নিশ্চিত হেরে যাব। চোখে মোটা কাচের চশমা নিয়ে ধরতে গেলে সারাটা দিন দাদা বইয়ের দিকে তাকিয়ে থাকেন। কারো অক্ষর গুলো যেন তাকে যাদুর মত টানে। আরো যদি অনেক অনেক বছর আল্লাহ তাদেরকে হায়াত দান করেন, তিনি বইয়ের মধ্যে ডুবে থেকেই দিনগুলো কাটিয়ে দিতে পারবেন। দাদা ও বাবার পাঠাভ্যাস এর কারণেই হয়ত আমি বই হাতে নিয়ে কয়েক পাতা উল্টে দেখার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে কয়েক পাতা পড়েও ফেলতে পারি।

সাধারণত আমার দাদা গ্রামে থাকতে পছন্দ করেন। দাদা আর দাদি মিলে আমাদের কাঠের ঘরটায় টোনাটুনির সংসার পাতেন। গ্রামের মানুষ জনের সাথে কথা বলে, নুয়ে পড়া লাউ ডগাটার ওপর কঞ্চি বাঁশের মাচা দিয়ে, পশ্চিমের বাড়ির পোষা ছাগলগুলোর উৎপাত থেকে বাঁচতে খেতের বেড়াটা আর একটু মজবুত করে কেটে যায় দাদার গ্রামের দিনগুলো।

কখনো কখনো তাকে ঢাকা আসতে হয়। তখন আমার রুমটাই হয় তার নিবাস। পাঠক হিসেবে আমি উন্নতমানের কেউ না হলেও বই সংগ্রহ করতে আমার ভালো লাগে। মাথার পাশে গোটা চারেক বই না নিলে আমার যেন ঘুমই আসে না। আমার এই অগোছালো স্বভাবটা স্বাভাবিকভাবেই বাসার কারো পছন্দ না। আম্মু তো ঘোষণা দিয়েই আমার রুম গোছানোর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন। দাদাজান আমাদের বাসায় আসলে রুমটার এলোমেলো ভাব কেটে গেল বইগুলো টেবিলের উপর গিয়ে জমা হয়। যদিও আমার পাঠাভ্যাসের সাথে দাদার পাঠের বিষয়ের মোটামুটি অনেক ফারাক, আমি চল্লিশটার মত হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড পড়ে ফেললেও দাদার কাছে ওগুলো চূড়ান্ত অখাদ্য। তবুও দাদা আমার টেবিলের উপর জমে থাকা বইয়ের স্তূপ থেকে নিজের পছন্দের বইটা ঠিকই খুঁজে নেন। আমিও চেষ্টা করি দাদার পছন্দের বইগুলো তার হাতে তুলে দিতে। তাফসির ও হাদিস, নবিজির সিরাত, সাহাবিদের জীবনী, ইসলামের ইতিহাস, ইতিহাস আশ্রিত বিভিন্ন গল্প, আমল ও আখলাক গঠনের বিভিন্ন বই, দাদার পাঠ তালিকার প্রথম দিকে থাকে।
গত এক মাস হল গ্রাম থেকে দাদা ঢাকায় এসেছেন। আমার রুমের অধিকার নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন। এবং একটার পর একটা বই তিনি পড়ে যাচ্ছেন। দুটো তাফসির পড়ে শেষ করেছেন। আল্লামা তাকি উসমানির তাফসিরে তাওজিহুল কুরআন-আব্বুর অনুবাদে যেটা ইসলামিয়া কুতুবখানা থেকে ছেপে এসেছে- তিনটা খণ্ডেই তিনি পড়ে ফেলেছেন। সালেহা পাবলিকেশনের সফওয়াতুত তাফাসিরের প্রথম খণ্ডটার অনেকটাই পড়া হয়ে গেছে। সাথে পড়েছেন পেনফিল্ডের আল্লাহর প্রিয় নাম সমূহ, নন্দনের আল্লাহস মাউন্টেন, আমার অনুবাদ করা মুহাম্মাদের চার খলিফার জীবন ও শাসন ব্যবস্থা সহ বেশ অনেকগুলো বই।

এবার ঢাকায় এসে যে বইটি তিনি প্রথম পড়েছেন, সেই বইটির নাম নাবিক প্রকাশনের “ পঁচাত্তর থেকে শাপলা”। স্বাধীন বাংলাদেশের না বলা অনেক কথা, ধুলোবালির নিচে চাপা পড়ে যাওয়া প্রয়োজনীয় অনেক বার্তা, আমাদের বাংলার মুসলমানদের নিজস্বতার ইতিকথা, হেফাজতে ইসলামের ইতিহাস সংকলনের প্রথম উদ্যোগ সহ আরো অনেক অনেক বিষয় সন্নিবেশিত হয়েছে যে বইটিতে। এই বইটির প্রথম পাঠক আমার দাদা। তিনি লেখক অথবা সুবক্তা নন। মানুষ হিসেবে তিনি একটু চাপা ধরনের। প্রয়োজনের অতিরিক্ত কথাবার্তা বলা তার স্বভাবে নেই। এ কারণেই ইচ্ছা থাকলেও কোন বই সম্পর্কে তার অনুভূতি ও বিশ্লেষণ জানা হয় না। তবে বই পড়ার পরে তার দু চার শব্দের একটা বাক্য, ভালো লাগার ছোট কোনো অনুভূতি বই সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা তৈরি করতে সাহায্য করে। তাই দাদাজান যখন “পঁচাত্তর থেকে শাপলা” বইটি পড়ে শেষ করলেন-প্রায় হাজার পৃষ্ঠার বইটি পড়তে তিনি সাত দিনের বেশি সময় নেননি-তার কাছে জানতে চাইলাম, কেমন লেগেছে বইটা?

তিনি স্বভাবসুলভ ভাবে উত্তর দিলেন, গুরুত্বপূর্ণ বই। আমাদের অজানা, জানা কিন্তু অচেনা অনেক অনেক বিষয় আলোচিত হয়েছে বইটিতে। সবার জন্য বইটি পড়ে দেখা অনেক জরুরি।

একটি নতুন প্রকাশনীর প্রথম বইয়ের প্রথম পাঠকের মুখের এই মন্তব্য আসলেই আত্মবিশ্বাস অনেকখানি বাড়িয়ে দেয়। আমার বাবা সৌভাগ্যবান- তিনি দাদা জানের মতো একজন একজন জনক পেয়েছেন। আর এই সৌভাগ্য আব্বুর মাধ্যমে দ্বিগুণ হয়ে আমার পর্যন্ত এসেছে।

আমার দাদু ও আব্বুর দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য আল্লাহর কাছে কামনা করছি।

Mahmud Ahmad

হাফেজ্জি হুজুরের রাজনীতির সবচেয়ে বড় সফলতা হলো—তিনি গণমানুষের রাজনীতি করেছেন। জনগনের সুখ স্বচ্ছন্দ এবং সুযোগ সুবিধার প্রত...
10/09/2023

হাফেজ্জি হুজুরের রাজনীতির সবচেয়ে বড় সফলতা হলো—তিনি গণমানুষের রাজনীতি করেছেন। জনগনের সুখ স্বচ্ছন্দ এবং সুযোগ সুবিধার প্রতি তার দৃষ্টি সব সময় থাকতো। সরকারের কাছে দাবী দাওয়া জানানো বা তার প্রতিবাদের ভাষা সব সময় জনতার ভাষা হতো। তিনি দীন কায়েমের জন্য রাজনীতি করতেন। দীন ধর্ম ব্যবহার করে রাজনৈতিক সুবিধাভোগের কোনো আকাঙ্ক্ষা কখনোই তার ছিল না। তার প্রতিটি জনসভা, প্রেস বিজ্ঞপ্তি অথবা সাংবাদিক সম্মেলন; সবখানে তিনি এই কথাই বলতেন। দীনের পথে চলা এবং জোর জুলুম অন্যায় মুক্ত সমাজ গড়ে তোলা। তিনি কখনো বলেননি—আমাদের ভোট দিলে নবিকে ভোট দেয়া হবে। বরং তিনি বলেছেন—আসুন আমরা তাওবা করি। অন্যায় অবিচার মুক্ত রাষ্ট্র ও সমাজ গড়ে তুলি।
এ কারণে আজও, এতো বছর পরেও, বাংলাদেশের রাজনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হলেন মুহাম্মাদুল্লাহ হাফেজ্জি হুজুর। রাহিমাহুল্লাহ।

ব্যক্তি হাফেজ্জি হুজুর এবং রাজনীতিবিদ হাফেজ্জি হুজুর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পড়ুন—
পঁচাত্তর থেকে শাপলা
লেখক : Manzur Ahmad
প্রকাশক : নাবিক প্রকাশন

লিখেছেন : মাহমুদ আহমাদ

পাঠকের ক্লিক..📷 তামিম জাবের
04/09/2023

পাঠকের ক্লিক..

📷 তামিম জাবের

যারা রাষ্ট্র, রাজনীতি ও সমাজ নিয়ে ভাবেন, তারা এই বইটি পড়তে পারেন। চিন্তার প্রচুর উপাদান পাবেন। বিদগ্ধজন এই বইয়ের কোনো কো...
02/09/2023

যারা রাষ্ট্র, রাজনীতি ও সমাজ নিয়ে ভাবেন, তারা এই বইটি পড়তে পারেন। চিন্তার প্রচুর উপাদান পাবেন। বিদগ্ধজন এই বইয়ের কোনো কোনো বয়ানের সাথে একমত নাও হতে পারেন। ভিন্ন মত মানে কিন্তু ভিন্ন পথ নয়, বরং বহু মত ও বহু পরামর্শ অভিন্ন পথ নর্বাচনে সবচেয়ে বড় সহায়ক ভূমিকা পালন করে। আশাকরি, যারা পড়েছেন, মতামত জানাবেন। তবে ভুল কিছু বলে থাকলে তা দ্বিতীয় মুদ্রণে বাদ যাবে। পাঠকের আগ্রহ দেখে আশাবাদি, এই ধারায় ইতিহাস চর্চা বহুদূর এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। এভাবে তৈরি হতে থাকুক 'আপন ইতিহাসের নিজস্ব বয়ান'।

Manzur Ahmad

মাসিক আল কাউসারের সেপ্টেম্বর সংখ্যায় Manzur Ahmad রচিত পঁচাত্তর থেকে শাপলার বিজ্ঞাপন।৫০% ছাড়ে বইটি সংগ্রহ করতে যোগাযোগ ক...
01/09/2023

মাসিক আল কাউসারের সেপ্টেম্বর সংখ্যায় Manzur Ahmad রচিত পঁচাত্তর থেকে শাপলার বিজ্ঞাপন।

৫০% ছাড়ে বইটি সংগ্রহ করতে যোগাযোগ করুন আমাদের সাথে।

লিখেছেন জগলুল আসাদ : ‘পঁচাত্তর থেকে শাপলা’  নামক গ্রন্থটি হাতে এসেছে বেশ কয়েকদিন হলো। সময়াভাবে বইটি নিয়ে বিস্তারিত লিখে ...
01/09/2023

লিখেছেন জগলুল আসাদ :

‘পঁচাত্তর থেকে শাপলা’ নামক গ্রন্থটি হাতে এসেছে বেশ কয়েকদিন হলো। সময়াভাবে বইটি নিয়ে বিস্তারিত লিখে উঠতে পারছিনা, কিন্তু ফাঁকে ফাঁকে পড়ছি। বয়োজ্যেষ্ঠ লেখক, গবেষক মনযূর আহমাদের এই বই আমাদের ইতিহাসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের আলোচনা-পর্যালোচনা হাজির করেছে । এই বই পাঠ না করলে ইতিহাস-অন্বেষী পাঠক অবশ্যই মিস করবেন অনেক কিছুই। কৃতজ্ঞতা জানাই মুহতারাম Manzur Ahmad (হাফি:)কে, বইটির দুটো খন্ডই উপহার দেবার জন্যে। বইটি নিয়ে আমি পরে কিছুটা বিস্তারিতভাবে বলবার ইচ্ছে রাখি, এখন আপাতত টুকে রাখছি বইটি সম্পর্কে স্বয়ং লেখকের মন্তব্য। বইটির বহুল প্রচার কামনা করি।

"এই ভূখণ্ডের জনমণ্ডলী কী যেন হারিয়ে সর্বক্ষণ খুঁজে বেড়াচ্ছে এবং তাদের চোখে—মুখে মলিনতা লেপ্টে আছে। হয়ত নেতা ও নেতেৃত্বের অভাবে তারা মাথা নিচু করে আছে। বার বার স্বপ্ন ভঙ্গের কারণে তারা স্বপ্ন দেখতেও যেন ভয় পাচ্ছে। আমাদের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যও বহুদিন থেকে বিভিন্ন কৌশলে ভুলিয়ে দেওয়ার পায়তারা চোখে পড়ছে। ফলে নিজেদের মাঝে বহু ধারা ও মত—পথের সৃষ্টি হয়েছে। নিজস্বতা হারানো কোন জাতি কীভাবে অপরের ক্রীড়নকে পরিণত হয় এই সময় তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ বহন করে।

এইসব ভাবনা ও দুর্ভাবনা থেকে এই সময় ও সমাজ সম্বন্ধে কিছু আলাপ এই বইয়ে তুলে ধরা হয়েছে। প্রাসঙ্গিকভাবে শাপলা—শাহবাগ সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা স্থান পেয়েছে।

এই বইয়ে গত পঞ্চাশ বছরের রাজনীতির ধারায় কিছু প্রশ্ন কিছু জবাব ও কিছু বয়ান তুলে ধরা হয়েছে। রাজনীতি, সমাজ ও শিক্ষা সম্বন্ধে সমান গুরুত্বের সাথে আলোকপাত করা হয়েছে।

দশ বছর আগের ইতিহাস, তারও অনেক কিছু মানুষ ভুলে যাচ্ছে! তাই আপনাকে শাহবাগি অনাচারের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নিতে হবে। আল্লাহ আমাদের জিকির করতে উৎসাহিত করেছেন। জিকির মানে স্মরণ। পবিত্র কোরআনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল কাসাস— ইতিহাস। আপনি যদি অতীত ইতিহাস রক্ষা ও ভবিষ্যৎ কল্পনা ও পরিকল্পনা করতে না পারেন, তবে আপনি নিশ্চিত হেরে ও হারিয়ে যাবেন।"
বই : পঁচাত্তর থেকে শাপলা
লেখক: Manzur Ahmad
প্রকাশনা : নাবিক প্রকাশন
প্রচ্ছদ মূল্য: ১৫০০/-

✅সরাসরি যোগাযোগ
নাবিক প্রকাশন
01967-197998

✅বাংলাবাজার পরিবেশক
পূণরায় প্রকাশন
কওমী মার্কেট ৩য় তলা, বাংলাবাজার, ঢাকা
01400-802481

মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ও চেতনাপ্রখ্যাত বাগ্মী ও মনীষী সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী লিখেছেন, ‘আলোক ব্যতীত যেমন পৃথিবী জাগে ন...
29/08/2023

মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ও চেতনা

প্রখ্যাত বাগ্মী ও মনীষী সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী লিখেছেন, ‘আলোক ব্যতীত যেমন পৃথিবী জাগে না, স্রোত ব্যতীত যেমন নদী টেকে না, স্বাধীনতা ব্যতীত তেমনি জাতি কখনো বাঁচিতে পারে না।’ সেই চিরন্তন সত্যের পথ ধরেই ১৯৭১ সালে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে অর্জিত হয়েছে স্বাধীনতা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস একদিকে যেমন করুণ, শোকোবহ, লোমহর্ষক, তেমনি ত্যাগের মহিমাব্যঞ্জিত ও বীরত্বপূর্ণ। ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক সেই মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল যে বোধ বা চেতনাকে কেন্দ্র করে তারই নাম মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। ৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে আমরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি, তাকে চির সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে আবহমানকাল ধরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রেরণা জোগাবে এ জাতিকে। কী সেই চেতনা!
২৬ মার্চে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকেই স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর ২৬ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত এই কেন্দ্র মোট ১৩টি অধিবেশন সম্প্রচার করে বলে জানা যায়।
প্রথম অধিবেশনে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার পর ২৬ মার্চ সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র থেকে বলছি’—এ বাক্য উচ্চারণের মাধ্যমে শুরু হয় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের দ্বিতীয় অধিবেশন। কবি আবদুস সালাম কর্তৃক কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় মূল অধিবেশন। এরপর ডাক্তার আনোয়ার আলীর কাছ থেকে পাওয়া বঙ্গবন্ধুর নামাঙ্কিত ‘জরুরি ঘোষণা’ শীর্ষক স্বাধীনতার ঘোষণা—সম্পর্কিত প্রচারপত্রটি বিভিন্ন কণ্ঠে বারবার প্রচারিত হয়। বহির্বিশ্বের সাহায্য কামনায় ইংরেজিতে নিউজ বুলেটিনে কণ্ঠ দেন বেতারের প্রযোজক আবদুল্লাহ আল ফারুক। কবি আবদুস সালাম স্বাধীনতার পক্ষে ও পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে বাংলার সর্বস্তরের জনগণকে যার হাতে যা আছে তা নিয়ে প্রতিরোধ যুদ্ধে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দেন।

(পঁচাত্তর থেকে শাপলা, খণ্ড : ২, পৃষ্ঠা : ৭৯-৮০)

Address

Dhalkanagar Lane, Gandaria
Dhaka
1204

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when aship.us posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Share

Category