26/01/2024
আজ নীলের বিয়ে,,,
♣♥৩য় পর্ব♥♣
নানান রকম ভাবনার মধ্যে দিয়ে নীলের মাথা যেন ভারি হয়ে আসছে,,,।
#পাগল_তোর জন্য রে পাগল,,, হঠাৎ করেই নীলের মোবাইল এ এই রিংটোন টা বেজে উঠল,,,
নীলের স্বপ্নরানি যাকে সে ভালবাসতো, তার ফোন,,,,।
যার সাথে তার দীর্ঘদিনের রিদয়ের আদান প্রদান,,কিন্তু আর কিছুক্ষন পর তার সাথে সব সম্পর্ক ইতি হয়ে যাবে অনন্যা নামে একটা মেয়েকে বিয়ের মাধ্যমে,,,,।
যে অনন্যা নীলকে শুধু বেদনায় নীলই করেনি, করেছে দিশেহারা,কলংকিত আর তার রিদয়ের গহিন অরন্যে লুকিয়ে থাকা মানুষটা থেকে করেছে চিরতরে আলাদা,,,।
নীলের এই রিংটোন টা খুবই প্রিয় কারন তার ভালবাসার অনেক অনুভতি আর ভালবাসা জমে আছে এই গানটার মধ্যে।
এই গানটা যে তার ভালবাসার মিস্টি নাম 💋শ্রাবন্তি তাকে প্রতিনিয়ত কানের কাছে ফোন রেখে তাকে গেয়ে শুনাত।
নীল ফোনটা রিসিভড করতেই ওপাশ থেকে 💋শ্রাবন্তির অভিমান আর কান্না ভরা কন্ঠে রিদয় আবেগ জড়ানো মিস্টি গালি,,, যা নীলের এক প্রকার প্রাপ্য বলা যেতে পারে।
শ্রাবন্তির কান্না আর অভিযোগ নীলকে যেন পাথর থেকে পাথর দিচ্ছে,,,।
কিন্তু কি করবে নীল, সে যে নিরুপায়,,,নীল যেন কথা না বলতে পারা একটা বোবা মানব হয়ে বসে আছে মাইক্রোর সিটে।
শ্রাবন্তি আগেই হয়তো জেনে গেছে তার নীল আজ হারিয়ে যাচ্ছে তার রিদয়ের নীলসাগর থেকে তাকে একা করে, হয়তো তার রিদয় সাগরে নীল আর কখনো ঢেউয়ের তালে তুলবে না গানের সুর,রিনিঝিনি সুর বাজবে না আর দুই রিদয়ের একসাথে পথচলার মাঝে,,,।
শ্রাবন্তি কেদেই চলেছে অঝর ধারায় আর মুখ থেকে বের হচ্ছে সেই অভিমান ভরা রিদয়ের অব্যক্ত কথা,,,।
মাইক্রো থামানো আর চেঁচামেচিতে নীল বুঝতে পারল যে তারা বিয়ে বাড়িতে চলে এসেছে,,
তাই তারাতারি নীল ফোন টা কেটে দিয়ে সুইজ অফ করে দিল,,,,।
রাস্তার ধারেই অনন্যাদের বাসা,,,
মাইক্রো থেকে নেমেই নীল দেখতে পেল বিয়ের গেট সাজানো,,,অনেক লোকজন তাকে দেখতে ভিড় করেছে,, এতে নীল ভিতরে ভিতরে অনেক লজ্জা পাচ্ছিল,,,,।
অন্য মনস্ক নীলকে বসানো হলো গেটে পেতে রাখা চেয়ারে,,,,,সেখানে টেবিলের উপর একটি থালায় অনেক গুলো রংবেরং এর শরবতে ভরা গ্লাস রাখা,,,,পাশেই মিস্টি আর একটি প্যাকেটে সিগারেট,,,,।
নীলের যেন মনে হলো প্যাকেটের সব গুলা সিগারেট একসাথে ধরিয়ে মুখে নিয়ে টান দিতে যাতে তার মানসিক একটা প্রশান্তি আসে মনের মধ্যে,,,,।
যাহোক গেটের আনুস্টাকিতা সেরে উঠতেই নীলের গলায় ফুলের মালা দিয়ে আর চারিদিক থেকে ফুল ছিটিয়ে বরন করে নেওয়া হচ্ছে,,,।
কয়েক কদম যাওয়ার পরেই নীলদের বসার জায়গায় চলে আসলো,,,,।
শরবত আর নাস্তার পর্ব শেষ করেই বিয়ে পর্ব শেষ করার জন্য কাজী এসে নীলের পাশে বসলেন,,,,।
লেখালেখি, সাক্ষি আর কলেমা পড়িয়ে যখন নীলকে কবুল বলতে বলা হলো তখন যেন নীলের মনের মধ্যে একপ্রকার ঝড় বইতে শুরু করল,,,,
কিন্তু চোখের পানি আটকাতে পারল না,,।
অনেক কস্টে নীলের মুখ থেকে কবুল বের হলো,,,,,।
আর সাইন করার সময় যেন মনে হলো যে নীল কোনদিন কলম ধরেনি,,,কিভাবে লিখতে হয় নীল জানেনা,,,,,,।
কোন রকম বিয়ে পর্ব শেষ করে খাওয়া দাওয়া সেরে উঠে নীল পাশেই একটু আড়ালে গেলো সিগারেট টানার জন্য,,,,।
কিন্তু একি নীল যেন এক নতুন গ্রহে প্রবেশ করেছে,,,।
তার মনের মধ্যে চেয়ে না দেখা 😍অনন্যার কথা ভিড় করছে,,,।
💋শ্রাবন্তিকে সে আর যেন তার মনের মধ্যে আনতে পারছে না,,,এইতো কিছুক্ষন আগেও তো তার মন জুড়ে শ্রাবন্তি ছিল,,, এখন আসছে না কেন,,, আস্তে আস্তে শ্রাবন্তি যেন ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে,,,,কিন্তু কেন??????
তাহলে কি আল্লাহর কলেমা পড়ে ওই তিনটি কবুল বলার মধ্যে কি কোন অলৌকিকতা আছে,,,,,।
হবে হয়তো,, তা না হলে দুইটা অপরিচিত রিদয় কিভাবে কলেমা পড়ে আর মুখে কবুল বলে একত্র হয়ে যায়,,,এযে এক আল্লাহ প্রদত্ত অসীম মায়ার বাধন,,,,।
বিয়ে বাড়ির আরো কিছু আনুস্টাকিতা সেরে নীল তার নতুন বউ অনন্যাকে নিয়ে আসছে নিজ বাড়িতে,,,,।
যার সাথে এই মাত্র ঘন্টা খানেক আগে বেধেছে এক নতুন জীবন শুরু করার
এক বন্ধন,,,,,।
অনন্যার গলা ফাটিয়ে কান্নার সুর আর সবার আশির্বাদ নিয়ে নীল এগিয়ে যাচ্ছে মাইক্রোর দিকে,,,,,।
কিছুক্ষন পর মাইক্রো ছুটে চললো তার গন্তব্যের দিকে, নীলের পাশে সদ্য বিয়ে হওয়া অনন্যাকে সংগি করে,,,,,।
_____♦^♥একাকী জয়