![ছোটোবেলায় আম্মু রান্নাঘরে অনেকক্ষণ একা থাকলেই ভাঙচুর করতো। এটা ছুঁড়ে মারতো, ওটা ছুঁড়ে মারতো। জিনিসটা খেয়াল করেছিলাম অনেক...](https://img3.medioq.com/781/548/549705617815486.jpg)
18/11/2024
ছোটোবেলায় আম্মু রান্নাঘরে অনেকক্ষণ একা থাকলেই ভাঙচুর করতো।
এটা ছুঁড়ে মারতো, ওটা ছুঁড়ে মারতো।
জিনিসটা খেয়াল করেছিলাম অনেকদিন পর। পানির গ্লাস নেয়ার জন্য রান্নাঘরে গিয়ে দেখি নিচে আম্মু মশলা বাটতেছে আর উপরে কড়াইতে পেঁয়াজ!। আমি বললাম, "আম্মু পেঁয়াজ তো পুড়ে যাচ্ছে!"
আম্মু খেইই করে চিল্লান দিয়ে বললো, "পুড়তাসে দেখসোস তাইলে নাড়োস না কেন?" আমি তড়িঘড়ি করে চুলার জ্বাল ছোটো করে পেঁয়াজ নাড়তে থাকলাম, এরপর আম্মু বললো "এবার আদাবাটা রসুন বাটা দে। এবার মরিচ গুড়া দে, এবার ধনিয়া দে। এবার অল্প পানি দিয়ে কষা।"
এমন করতে করতে পুরা রান্নাটাই প্রায় হয়ে গেলো।
রান্না ঢেকে দিয়ে আমি চলে এসেছিলাম নিজের কাজে।
একটু পর শুনি রান্নাঘর থেকে আবার ভাঙচুরের শব্দ আসছে।
পেঁয়াজ নেড়ে দেয়ার জন্যে আম্মুর একজন মানুষের দরকার ছিলো। সেই মানুষ না পেলেই আম্মু অস্থির হয়ে যেতো, পাগলপ্রায় হয়ে যেতো!
যেমনটা এখন আমি হই।
ভাবি, কেউ রাঁধতে না জানলে, আলু ছিলে দিক!
ছিলতে না জানলে ধুয়ে দিক!
শুধু থাকুক পাশে!
আমি জানি অন্তত, আমি একা নই!
"আসো, দুজন মিলে করি।" এই বাক্যটার মধ্যে যুদ্ধ থামানোর ক্ষমতা আছে। ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ আটকে দেয়ার ক্ষমতা আছে। ধ্বংসস্তুপের নিচ থেকে তাজা গোলাপ বের করে আনার ক্ষমতা আছে। হাজার বছরের জমে থাকা বরফ গলানোর ক্ষমতা আছে।
আমরা বুঝতে চাইনা।
অকৃতজ্ঞের মতো প্রশ্ন করে বসি, "আলু ছিলার জন্যেও যদি হেল্প লাগে তাহলে জীবনে ভাত খাবা কি করে?"