18/07/2024
ডিভাইড এন্ড রূল। মানে বিভক্তি করো আর শাসন করো। যদিও বলা হয়ে থাকে এটি ব্রিটিশ কলোনিয়াল সময় হতে এটির প্রয়োগ হয়ে আসছে, কিন্তু এটির উৎপত্তি এবং আদি প্রয়োগকারী হচ্ছে ইহুদিরা। এবং এটির মাধ্যমেই আজ তারা অদৃশ্যভাবে বিশ্ব শাসন করে যাচ্ছে।
সময়ের পরিক্রমায় সেই থিওরি নন ইহুদিরাও প্রয়োগ করা শুরু করে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এর প্রয়োগ মারাত্বকভাবে দেখা য়ায়। রাজনৈতিক ফায়দা বা সুবিধাজনক অবস্থানে থাকতে রাজনৈতিক দলগুলো কেন এইসব কুটকৌশল করে সেটি কারো না বুঝার কথা না। মুল কথা হচ্ছে জনগনের দোহায় দিয়ে রাজনৈতিক নেতারা বছরের পর বছর নিজেদের পকেট ভারী করতে থাকেন।
একটি রাজনৈতিক দলের ক্ষমতায় আসার প্রধান শক্তি হচ্ছে জনগনের ম্যানডেড। যখন এই জিনিসটি তারা হারিয়ে ফেলে তখন রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় থাকতে সহায়ক শক্তির প্রয়োজন হয়। এবং এই সহায়ক শক্তিগুলোই তাকে অবৈধভাবে টিকে থাকতে সাহায্য করে।
ধরা যাক “ক” একটি সায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। মানে এটি স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষমতা রাখে। অগনতান্ত্রিক সরকারের জন্য এই ধরনের প্রতিষ্ঠান একটি হুমকি স্বরুপ। তাই তারা এই ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোর ভিত নড়বড়ে করতে কাজ শুরু করে। প্রথমে তারা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের যায়গায় এমন কাউকে বসাতে চায় যে কিনা রাজনৈতিক দলের পারপোস র্সাভ করবে। এজন্য তারা অযোগ্য এবং বির্তকিত লোককে প্রধানের চেয়ারে বসায়। যাতে করে তাকে অনুগত কুকুরের মত ব্যবহার করা যায়। কথা না শুনলে চাকরি নাই আর আরাম আয়েশ শেষ। এবার প্রধান কব্জায় চলে আসলে তার অধিনস্থ সকলেই তার নিয়ন্ত্রনে। বেশি অসুবিধা মনে হলে অনৈতিক সুবিধা প্রদান করা, আর চাকরি খেয়ে দেওয়া এইসব বজায় থাকবে।
সরকারী কিংবা বেসরকারী পর্যায়ে, নাম বললেই চাকরি নাই, কিংবা বিপক্ষে বা বিরুদ্ধ মত দিলেই যে কাউকে বিপদে পড়তে হবে এই ধরনের ভীতির সঞ্চার করতে পারাও স্বৈরচারী সরকারের একটি সফলতা। কারন এই ধরনের ভয় কাজ করে বলেই গন-আন্দেলন গড়ে উঠে না। বিভক্তির খেলা এখানে খেলে দিয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য বেকারত্ব একটি আর্শিবাদ। “খ” শিল্প গ্রæপকে কাছে টেনে নিয়ে বলা হলো আমরা তোমাকে আরো আরো টাকার মালিক করতে চাই। খ শিল্প গ্রুপ এবার এলাকার সব ছেলেপুলেদের চাকরি দেওয়া শুরু করলো। কোন পরীক্ষা নাই, শুধু সিভি দিয়ে চাকরি। এভাবে বিশাল একটি বেকার যুবকদের অংশকে অনুগত দাশ বানিয়ে নিলো, সাথে তাদের পরিবারকেও। কারন মহান “খ” গ্রæপ তাদের পরিবারে অন্ন যুগিয়েছেন। “খ” গ্রæপ আবার সরকারের লোক। কিছু বললেই চাকরি নাই। যারা চাকরি নিয়েছেন তাদের মধ্যে ছাত্র থাকা কালীন বিপ্লবি চেতনা থাকলেও তা এখন আর কাজ করবে না। তাই সরকার যতসব অন্যায় করুক “খ” গ্রæপের দয়ায় যারা চাকরি পেয়েছেন তারা কখনো এসব নিয়ে কথা বলবে না। বললেই চাকরি নাই। গন আন্দেলনে সে বা তারা যোগ দেবে না। এভাবে সরকার বিভক্তির ফর্মুলা দিয়ে বড় একটি বেকার অংশকে নিজেদের কব্জায় নিয়ে আসে।
ছাত্র-ছাত্রীদের কাজ পড়াশোনা করা, গবেষনা করা, বুদ্ধি-বৃত্তির চর্চা করা। এটা সবাই জানে এবং বুঝে। তাই রাজনৈতিক নেতারা তাদের সন্তানদের দেশে না পড়িয়ে বিদেশে পড়ান। কারন তারা জানে দেশে যারা পড়াশোনা করবে তাদের তারা অকাজে ব্যবহার করবে। টুয়েলভ ফেইল মুভিতে এই রকম একটা কথা আছে যে, জনগন যদি শিক্ষিত হয় সেটি রাজনৈতিক নেতাদের জন্য একটি মারাত্বক সমস্যা। তাই দেশের নাগরিকদের সুশিক্ষা দেওয়া যাবে না। তারা যাতে তাদের অধিকার নিয়ে, প্রকৃত শিক্ষা নিয়ে কথা বলতে না পারে তার জন্য তাদের একতাবদ্ধ হতে দেওয়া যাবে না। কি করতে হবে তাহলে? শিক্ষার্থীদের অধিকারের কথা বলার জন্য ছাত্র নেতা/সংগঠন দরকার এই ধারনা প্রতিষ্টা করো, ছাত্র নেতাদের হাতে ক্ষমতা দাও, সুবিধা দাও এবং তাদের আমার দলের অনুগত দাশ করে ফেলো।
এভাবেই এরা আমাদেরকে পিছিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।