01/10/2023
নামাজ আদায় করুন অর্থ জেনে:
• জায়নামাজের দোয়াঃ
বাংলা উচ্চরন – ইন্নি ওযাজ্জাহতু ওয়াজ হিয়া লিল্লাজি, ফাত্বরস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বঅ হানি-ফাওঁ ওয়ামা-আনা মিনাল মুশরিকী-ন।
অর্থ : নিশ্চই আমি তারই দিকে মুখ করলাম, যিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন এবং বাস্তবিকই আমি মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত নই।
• নামাজের নিয়ত
নামাজের ইচ্ছা করাই হচ্ছে নামাজের নিয়াত করা।মুখে উচ্চরণ করা জরুরী নয়, তবে মুস্তাহাব।
• তাকবীরে তাহরীমা-আল্লাহু আক বার, অর্থ -আল্লাহ মহান।
• সানাঃ (হাত বাধার পর এই দোয়া পড়তে হয় )
উচ্চরণ : সুবহা-নাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহাম দিকা ওয়াতাবারঅ কাস্ মুকা ওয়া তা’আ-লা জাদ্দুকা ওয়া লা-ইলা-হা গাইরুকা ।
অর্থ: হে আল্লাহ ! আমি আপনার পবিত্রতা ঘোষনা করছি এবং আপনার মহিমা বর্ণনা করছি। আপনার নাম বরকতময়, আপনার মাহাত্ম্য সর্বোচ্চ এবং আপনি ভিন্ন কেহই ইবাদতের যোগ্য নয়।
• তাআ’উজঃ
উচ্চরণ – আউযুবিল্লা-হি মিনাশ শাইত্বা-নির রাজীম।
অর্থঃ বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাচ্ছি।
• তাসমিয়াঃ
উচ্চরনঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
অর্থঃ পরম দাতা ও দয়ালূ আল্লাহর নামে শুরু করছি।
• রুকুর তাসবীহঃ
উচ্চরণ : সুবহা-না রব্ বি-ইঃয়াল আ’জ্বীম।
অর্থঃ মহান প্রতিপালকের পবিত্রতা ও মহাত্মতা ঘোষনা করছি।
• তাসমীঃ (রুকু থেকে দাড়ানোর সময় পড়তে হয় )
উচ্চরণ সামি আল্লা হুলিয়াম হামিদাহ,
অর্থঃ প্রশংসাকারীর প্রশংসা আল্লাহ শোনেন।
• তাহমীদঃ (রুকু থেকে দাড়িয়ে পড়তে হয় )
উচ্চরণ : রাব্বানা লাকাল হামদ ।
অর্থ -হে আমার প্রভু,সমস্ত প্রশংসা আপনারই।
• সিজদার তাসবীহঃ
উচ্চরণ: সবহা-না রাব্বিয়াল আ’লা।
অর্থ : আমার প্রতিপালক যিনি সর্বশ্রেষ্ঠ, তারই পবিত্রতা বর্ণনা করছি।
• দু’সিজদার মাঝখানে পড়ার দোয়াঃ
উচ্চরণঃ আল্লাহ মমাগ ফিরলী ওয়ার হামনি ওয়ার যুক্কনী
অর্থ : হে আল্লাহ,আমাকে ক্ষমা করুন,আমাকে রহমত করুন,আমাকে রিজিক দিন।
[ হানীফি মাযহাবে এই দোয়া পড়া হয় না, কেই যদি হানীফি মাযহাব এর হয়ে থাকেন তাহলে এই সময় এক তসবী পড়তে যে সময় লাগে, সেই সময় পর্যন্ত বিরতি দিয়ে পুনঃরায় সেজদায় যাওয়া ]
• তাশাহুদ বা আত্তাহিয়্যাতুঃ
উচ্চরণঃ আত্তাহিয়্যাতু লিল্লা-হি,ওয়াছ ছালা-ওয়াতু,ওয়াত-তাইয়্যিবা তু,আচ্ছালামু আ’লাইকা,আইয়্যুহান নাবিয়্যু,ওয়ারাহ মাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ,আচ্ছালামু আলাইনা,ওয়া আ’লা ইবাদিল্লা হিছ-ছা লিহীন। আশহাদু আল লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু,ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মদান আব্দুহু ওযা রাসুলুহু।
• দরুদ শরীফঃ
উচ্চরণঃ আল্লাহুম্মা ছাল্লি আ’লা মুহাম্মাদিও ওয়া আ’লা আ-লি মুহাম্মাদিন কামা ছাল্লাইতা আ’লা ইব্রহীমা ওয়া আ’লা আ-লি ইব্রহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজী-দ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আ’লা আ’লি মুহাম্মাদিন, কামা বা-রাকতা আ’লা ইব্রহীমা ওয়া আ’লা আ’লি ইব্রহীমা ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ।
• দোয়া মাসূরাঃ
উচ্চরণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নী জ্বলামতু নাফসী জুলমান কাছীরও ওয়ালা ইয়াগফিরু যুনুবা ইল্লা আন্তা ফাগ ফিরলী মাগফিরাতাম মিন ইন্দিকা ওয়ার হামনী ইন্নকা আন্তাল গাফুরুর রাহীম।
• দোয়ায়ে কুনুতঃ ( বিতরের নামাজের পর তিত্বীয় রাকায়াতে সূরা ফাতিহা ও অন্য কিরআত পড়ার পর এই দোয়া পড়তে হয় )
উচ্চরণঃ আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতা’ঈনুকা ওয়া নাসতাগ ফিরুকা, ওয়া নু’মিনু বিকা ওয়া না তা ওয়াক্কালু আলাইকা ওয়া নুছনি আলাইকাল খাইর। ওয়া নাশকুরুকা,ওয়ালা নাকফুরুকা,ওয়া নাখ লা,ওয়া নাত রুকু মাইয়্যাফ জুরুকা। আল্লাহুম্মা ইয়্যাকা না’বুদু ওয়ালাকা নুছাল্লি ওয়া নাসজুদু ওয়া ইলাইকা নাস’আ,ওয়া নাহফিদু ওয়া নারজু রাহমাতাকা ওয়া নাখশা আযাবাকা ইন্না আযা-বাকা বিল কুফ্ফা-রি মুল হিক।
নামাজের সূরা সমূহ:
১. সূরা ফাতিহা
আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন। আর রাহমানির রাহীম। মালিকি ইয়াওমিদ্দিন। ইয়্যাকা না’বুদু ওইয়্যাকা নাসতাঈন। ইহ্দিনাছ ছিরাত্বাল মুসতাকীম। ছিরাত্বাল্লাযিনা আন্আমতা আলাইহিম৷ গইরিল মাগদ্ধুবি আলাইহিম ওয়ালাদ্ধা-ল্লী-ন (আমিন)
বাংলা অর্থ: যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি জগত সমূহের প্রতিপালক। যিনি পরম দয়ালু ও করুণাময়। যিনি বিচার দিবসের মালিক। আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং একমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি। তুমি আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন কর। এমন ব্যক্তিদের পথ, যাদেরকে তুমি পুরস্কৃত করেছ। তাদের পথ নয়, যারা অভিশপ্ত ও পথভ্রষ্ট হয়েছে। (আমীন! তুমি কবুল কর।)
২. সূরা নাস
কুল আউযু বিরাব্বিন্নাস মালিকিন নাস। ইলাহিন্নাস মিন শাররিল ওয়াসওয়াসিল খান্নাস। আল্লাযী ইউওয়াস ওয়িসু ফী সুদুরিন্নাস। মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্নাস।
বাংলা অর্থ: বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করিতেছি মানুষের পালনকর্তার, মানুষের অধিপতির। মানুষের মা’বুদের। তার অনিষ্ট থেকে, যে কুমন্ত্রণা দেয় ও আত্নগোপন করে, যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে। জ্বিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে।
৩. সূরা ফালাক্ব
ক্বুল আউযু বিরাব্বিল ফালাক্ব। মিন শাররি মা খালাক্ব। ওয়ামিন শাররি গাসিক্বিন ইযাওয়াক্বাব। ওয়ামিন শাররিন নাফফাছাতি ফিল উক্বাদ। অমিন শাররি হাসিদিন ইযা হাসাদ।
বাংলা অর্থ: বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি প্রভাতের পালনকর্তার, তিনি যা সৃষ্টি করেছেন, তার অনিষ্ট থেকে, অন্ধকার রাত্রির অনিষ্ট থেকে, যখন তা সমাগত হয়, গ্রন্থিতে ফুঁৎকার দিয়ে জাদুকারিণীদের অনিষ্ট থেকে এবং হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে।
৪. সূরা ইখলাস
ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ৷ আল্লাহুছ ছামাদ। লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ। ওয়ালাম ইয়াকিল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ।
বাংলা অর্থ: বলুন ( হে নবি ), তিনি আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়, তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন, তিনি কাউকে জন্ম দেননি, কেউ তাঁকে জন্ম দেননি। আর তাঁর সমতুল্য কেউই নেই।
৫. সূরা লাহাব
তাব্বাত ইয়াদা আবী লাহাবিও ওয়াতাব্বামা-মা-আগনা আনহু মা-লুহু ওমা কাসাব। সাইয়াছলা নারান যা-তা লাহাবিও ওমরা আতুহু হাম্মালাতাল হাত্বাব৷। ফী-জ্বীদিহা হাবলুম মিম মাসাদ।
বাংলা অর্থ: ধ্বংস হোক আবু লাহাবের হস্তদ্বয় এবং ধ্বংস হোক সে নিজেও। তার ধন-সম্পদ আর সে যা অর্জন করেছে তা তার কোন কাজে আসল না। অচিরেই সে শিখা বিশিষ্ট জাহান্নামের আগুনে প্রবেশ করবে, আর তার স্ত্রীও- যে কাঠবহনকারিণী (যে কাঁটার সাহায্যে নবী-কে কষ্ট দিত এবং একজনের কথা অন্যজনকে ব’লে পারস্পরিক বিবাদের আগুন জ্বালাত)। আর (দুনিয়াতে তার বহনকৃত কাঠ-খড়ির পরিবর্তে জাহান্নামে) তার গলায় শক্ত পাকানো রশি বাঁধা থাকবে।
৬. সূরা নাসর
ইযা-জা-আ নাসরুল্লাহি ওয়াল ফাতহু, ওয়ারা আইতান্নাসা ইয়াদখুলুনা ফীদীনিল্লাহি আফওয়াজা। ফাসাব্বিহ বিহামদি রব্বিকা ওয়াস তাগফিরহু। ইন্নাহু কানা তাউয়্যাবা।
বাংলা অর্থ: যখন আসবে আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় এবং আপনি মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করতে দেখবেন। তখন আপনি আপনার পালনকর্তার পবিত্রতা বর্ণনা করুন এবং তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন; নিশ্চয় তিনি তাওবা কবুলকারী।
৭. সূরা কাফিরুন
কুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফিরুন। লা-আবুদু মা তা বুদুন। ওয়ালা আংতুম আবিদুনা মা আবুদ। ওলা লা আনা আবিদুম মা -আবাত্যুম আবিদুনা মা -আ বুদ। লাকুম দীনুকুম অলিয়া দ্বীন।
বাংলা অর্থ: বলুন, ‘হে কাফিররা! আমি তার ‘ইবাদাত করি না যার ‘ইবাদাত তোমরা কর। এবং তোমরাও তাঁর ‘ইবাদাতকারী নও যাঁর ইবাদাত আমি করি। এবং আমি ‘ইবাদাতকারী নই তার যার ‘ইবাদাত তোমরা করে আসছ। তোমরা এবাদতকারী নও, যার এবাদত আমি করি। তোমাদের কর্ম ও কর্মফল তোমাদের জন্যে এবং আমার কর্ম ও কর্মফল আমার জন্যে।
৮. সূরা আল-কাওসার
ইন্না আ তাইনা কালকাওছার। ফাছাল্লি লি রাব্বিকা ওয়ানাহার। ইন্না শা-নিয়াকা হুয়াল আবতার।
বাংলা অর্থ: নিশ্চয়ই আমি আপনাকে কাউসার (বা প্রভূত কল্যাণ) দান করেছি। অতএব আপনার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে নামায আদায় করুন এবং কুরবানী করুন। নিশ্চয় আপনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারীই লেজকাটা, নির্বংশ।
৯. সূরা আল-মাউন
আরায়াইতাল্লাজি ইউকাযযিবু বিদ্দীন, ফাযালিকাল্লাযী ইয়াদু’য্যুল ইয়াতীম। ওয়ালা ইয়াহুদ্দু আলা তো য়ামিল মিসকীন, ফাওয়াইলুল্লিল মুছাল্লীন। আল্লাযীনা হুম আনছলাতিহিম্ সাহুন। আল্লাযীনা হুম্ ইউরা-উনা ওয়া ইয়ামনায়ূনাল মাউন।
বাংলা অর্থ: আপনি কি দেখেছেন তাকে, যে বিচারদিবসকে মিথ্যা বলে? সে সেই ব্যক্তি, যে এতীমকে গলা ধাক্কা দেয় এবং মিসকীনকে অন্ন দিতে উৎসাহিত করে না। অতএব দুর্ভোগ সেসব নামাযীর, যারা তাদের নামায সম্বন্ধে বে-খবর, যারা তা লোক-দেখানোর জন্য করে, এবং নিত্য ব্যবহার্য্য বস্তু অন্যকে দেয় না।
১০. সূরা কুরাইশ
লিঈলাফি ক্বূরাইশিন। ঈলাফিহিম রিহলাতাশ শিতাই ওয়াছ্ছাইফি। .ফালইয়া’বুদু রাব্বাহাযাল বাইত। আল্লাযী আত্ব’আমাহুম মিন জু-ইও ওয়া আমানাহুম মিন খাওফ।
বাংলা অর্থ: যেহেতু কুরাইশরা অভ্যস্ত; অভ্যস্ত শীত ও গ্রীষ্মের সফরে, এই ঘরের রবের ইবাদাত তাদের করা উচিত। যিনি তাদের ক্ষুধামুক্তি দিয়েছেন এবং নিরাপদ রেখেছেন।
১১. সূরা ফীল
আলাম তারা কাইফা ফা’আলা রাব্বুকা বিআসহাবিল ফী-ল। আলাম ইয়াজ’আল কাইদাহুম ফী তাদ্বলীলিও। ওয়া আরছালা ‘আলাইহিম তাইরান আবাবীল। তারমীহিম বিহিজারাতিম মিন ছিজ্জলিন । ফাজা-আলাহুম কা’আছফিম মা’কুল।
বাংলা অর্থ: তুমি কি দেখনি যে, তোমার রব হস্তি অধিপতিদের কিরূপ (পরিণতি) করেছিলেন? তিনি কি তাদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে দেননি? তাদের বিরুদ্ধে তিনি ঝাঁকে ঝাঁকে পক্ষীকূল প্রেরণ করেছিলেন – যারা তাদের উপর প্রস্তর কংকর নিক্ষেপ করেছিল। অতঃপর তিনি তাদেরকে ভক্ষিত তৃণ সদৃশ করে দেন।
১২. সূরা ক্বদর
ইন্না আনযালনাহু ফী লাইলাতিল ক্বাদরি। ওয়ামা আদরাকা মা লাইলাতুল ক্বদরি লাইলাতুল ক্বদরি খাইরুম মিন্’আলফি শাহর তানায যালুল মালাইকাতু ওয়ার রুহ। ফিহা বিইযনি রাব্বিহীম মিনকুল্লি আমরিন। সালাম। হিয়া হাত্তা মাত্বলাইল ফাজ্বর।
বাংলা অর্থ: নিঃসন্দেহ আমি এটি অবতারণ করেছি মহিমান্বিত রজনীতে। শবে-কদর (মহিমান্বিত রাত) সমন্ধে আপনি কি জানেন? শবে-কদর হল এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। এতে প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে। এটা নিরাপত্তা, যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।