Emranul Haque, HR DESK BD

Emranul Haque, HR DESK BD HR Professional || Content Creator

This world is full of distractions and materialism that has no true purpose except to lead us astray from the path of ri...
24/11/2024

This world is full of distractions and materialism that has no true purpose except to lead us astray from the path of righteousness. Remember, this worldly life is only a testing ground to prepare us for the afterlife, and we have to prepare to meet our Creator on the Day of Resurrection. Focus on attaining Jannah in the next life, and don’t chase the temporary glitter of the world.

24/11/2024

‘‘তোমার জন্য যা কল্যাণকর, তা অর্জনের জন্য তুমি প্রলুব্ধ হও আর আল্লাহর নিকট সাহায্য চাও। কখনই হতাশ হয়ো না। যদি কখনো বিপদে পড়, তবে (কখনই) এ-কথা বলবে না যে, ‘যদি আমি এমন এমন করতাম (তাহলে তো আর এটি হতো না)!’ বরং তুমি বলবে, ‘সবই আল্লাহ তা‘আলা কতৃক নির্ধারিত ব্যাপার; তিনি যা ইচ্ছা তা করেছেন।’ কেননা ‘যদি’ (কথাটি) শয়তানের কাজের পথ খুলে দেয়।’’

[ইমাম মুসলিম, আস-সহিহ: ২৬৬৪]

23/11/2024

রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ’’ইসলামের সকল হাতল (শরীয়তের বিধি-বিধান) একটি একটি করে ভেঙ্গে যাবে। যখন একটি হাতল ভাঙ্গবে মানুষ তার পরেরটি আঁকড়ে ধরবে।

সর্বপ্রথম যেটি ভেঙ্গে যাবে তা হচ্ছে (আল্লাহর বিধান অনুযায়ী) বিচার-ফায়সালা করা।

আর সর্বশেষে যেটি ভেঙ্গে যাবে তা হচ্ছে নামায"।

عَنْ أَبِيْ أُماَمَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قال قال رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ :"لَيَنْتَقِضَنَّ عُرَى الإِسْلامِ عُرْوَةٌ عُرْوَةٌ، فَكُلَّمَا انْتَقَضَتْ عُرْوَةٌ تَشَبَّثَ النَّاسُ بِالَّتِي تَلِيهَا، فَأَوَّلُهُنَّ نَقْضًا الْحُكْمُ، وَآخِرُهُنَّ الصَّلاةُ".

[আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব-৫৭২, ইবনে হিব্বান-৬৬৮০, আহমাদ ৫/২৫১]

22/11/2024
21/11/2024

"মৃত্যু আসল বিচ্ছেদ নয়। কেননা, আমরা সুনিশ্চিতভাবে আখিরাতে মিলিত হবো। শেষ বিচারে যদি আমাদের কেউ জান্নাতে আর অপরজন জাহান্নামে – তবে সেটাই হবে চূড়ান্ত বিচ্ছেদ ও প্রকৃত বিদায়।"
-ড. আয়েজ আল-ক্বারনী

20/11/2024

দুনিয়ার জীবনে সবচেয়ে বেশি যে দুইটি জিনিস নিয়ে দুশ্চিন্তায় আর ভীতিগ্রস্ত অবস্থায় থাকেঃ

১.অতীতের দুঃখ
২. ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তা।

আর জান্নাতে মানুষের অন্তরে থেকে এই দুইটি জিনিস একেবারে নির্বাসিত করা হবে।

সেদিন জান্নাতিদের ডেকে বলা হবেঃ
ٍٱدْخُلُوا۟ ٱلْجَنَّةَ لَا خَوْفٌ عَلَيْكُمْ وَلَآ أَنتُمْ تَحْزَنُونَ

তোমরা জান্নাতে প্রবেশ কর,তোমাদের কোন ভয় নেই এবং তোমরা দুঃখিতও হবে না। [আল আরাফঃ ৪৯]

Faith can be high as the heavens and as low as the valleys for the believer. Don’t give up. Keep the remembrance of Alla...
20/11/2024

Faith can be high as the heavens and as low as the valleys for the believer. Don’t give up. Keep the remembrance of Allah in your heart, on your lips, and in your actions, and you’ll be alright.

19/11/2024

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমার তাক্বদীরে আল্লাহ যা বণ্টন করে রেখেছেন, তাতে সন্তুষ্ট থাকো, তাহ'লে মানুষের মাঝে সর্বাপেক্ষা ধনী হ'তে পারবে।
(তিরমিজি হা/২৩০৫)।

"Be conscious of Allah wherever you are. Follow the bad deed with a good one to erase it, and engage others with beautif...
19/11/2024

"Be conscious of Allah wherever you are. Follow the bad deed with a good one to erase it, and engage others with beautiful character."

People will mock you and call you names when you prioritize religion over everything else in this world. Your loved ones...
18/11/2024

People will mock you and call you names when you prioritize religion over everything else in this world. Your loved ones will hurt you with their words. But Allah tells you not to let their words affect you and not to grieve. Whatever efforts you make in the path of Allah will be rewarded by HIM, not anyone else.

16/11/2024

Imam ash Shafi’ee said,
“You will never be able to please everyone, rather rectify what is between you and Allah and do not care about the people.”
Tawali at Ta’nees, ibn Hajr, 168

15/11/2024

▪️দারসুল কোরআন▪️

🔹সুরা তাকাসুর🔹

❝প্রাচুর্যের মোহ❞

أَلْهَاكُمُ التَّكَاثُرُ
১) প্রাচুর্যের লালসা তোমাদেরকে গাফেল করে রেখেছে।

حَتَّى زُرْتُمُ الْمَقَابِرَ
২) এমনকি, এ অবস্থায় তোমরা কবর পর্যন্ত পৌছে যাও।

كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُونَ
৩) কখখনও নয়। তোমরা শিগগিরই জানবে।

ثُمَّ كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُونَ
৪) আবার শোন, কখখনও নয়, তোমরা শিগগিরই জানবে।

كَلَّا لَوْ تَعْلَمُونَ عِلْمَ الْيَقِينِ
৫) কখনই না, যদি তোমরা নিশ্চিত জ্ঞানের ভিত্তিতে জানতে।

لَتَرَوُنَّ الْجَحِيمَ
৬) তোমরা অবশ্যই জাহান্নাম দেখবে,

ثُمَّ لَتَرَوُنَّهَا عَيْنَ الْيَقِينِ
৭) অতঃপর তোমরা তা অবশ্যই স্বচক্ষে দেখবে ,

ثُمَّ لَتُسْأَلُنَّ يَوْمَئِذٍ عَنِ النَّعِيمِ
৮) এরপর অবশ্যই সেদিন তোমরা প্রত্যেক নেয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।

◼️ নামকরণ:-
নামকরণ বিষয়বস্তু অনুসারে হয়ে থাকে,
আবার আয়াতের অংশবিশেষ থেকে ও নেওয়া হয়ে থাকে। দু'পদ্ধতির মাধ্যমে এ সুরায় প্রথম আয়াত التَّكَاثُرُ থেকে সরাসরি নেওয়া হয়েছে। তাকাসুর শব্দটি আরবি: ﻛﺜﺮﺓ থেকে উদ্ভূত হয়েছে। এর অর্থ প্রচুর ধন-সম্পদ সঞ্চয় করা। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) ও হাসান বসরী (রহঃ) তফসীর করেছেন। এ শব্দটি প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা অর্থেও ব্যবহূত হয়। কাতাদাহ্ (রহঃ) এ অর্থই করেছেন। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ্ (সাঃ) একবার এ আয়াত তেলাওয়াত করে বললেনঃ এর অর্থ অবৈধ পন্থায় সম্পদ সংগ্রহ করা এবং আল্লাহর নির্ধারিত খাতে ব্যয় না করা।

◼️ নাযিল হওয়ার সময় কাল:-
ইবনে আবু হাতেম আবু বুরাইদার (রাঃ) রেওয়ায়েত উদ্ধৃত করেছেন। তাতে বলা হয়েছেঃ বনী হারেসা ও বনিল হারস নামক আনসারদের দুটি গোত্রের ব্যপারে এ সূরাটি নাযিল হয়। উভয় গোত্র পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতামূলক ভাবে প্রথমে নিজেদের জীবিত লোকদের গৌরবগাঁধা বর্ণনা করে। তারপর কবরস্থানে গিয়ে মৃত লোকদের গৌরবগাঁধা বর্ণনা করে। তাদের এই আচরণের ফলে আল্লাহর এই বাণী নাযিল হয়।

ইবনে জারীর, তিরমিযী ও ইবনুল মুনযির প্রমুখ মুহাদ্দিসগণ হযরত আলীর (রা.) একটি উক্তি উদ্ধৃত করেছেন। তাতে তিনি বলেছেনঃ “কবরের আযাব সম্পর্কে আমরা সব সময় সন্দেহের মধ্যে ছিলাম। এমন কি শেষ পর্যন্ত ‘আলহা-কুমুত তাকাসুর’ নাযিল হলো। হযরত আলীর (রা.) এই বক্তব্যটিকে এই সূরার মাদানী হবার প্রমাণ হিসেবে গণ্য করার কারণ হচ্ছে এই যে, কবরের আযাবের আলোচনা মদীনায় শুরু হয়। মক্কায় এ সম্পর্কে কোন আলোচনাই হয়নি। কিন্তু একথাটি আসলে ঠিক নয়।

কুরআনের মক্কী সূরাগুলোর বিভিন্ন স্থানে এমন দ্ব্যর্থহীন ভাষায় কবরের আযাবের কথা বলা হয়েছে যে, এ সম্পর্কে সন্দেহের কোন অবকাশই সেখানে নেই। উদাহরণ স্বরূপ দেখুন সূরা আন’আম ৯৩ আয়াত, আন নামল ২৮ আয়াত, আল মু’মিনূন ৯৯-১০০ আয়াত, আল মু’মিন ৪৫-৪৬ আয়াত। এগুলো সবই মক্কী সূরা। তাই হযরত আলীর (রা.) উক্তি থেকে যদি কোন জিনিস প্রমাণ হয় তাহলে তা হচ্ছে এই যে, উপরোল্লিখিত মক্কী সূরাগুলো নাযিলের পূর্বে সূরা আত তাকাসুর নাযিল হয় এবং এই সূরাটি নাযিল হবার ফলে সাহাবীগণের মধ্যে বিরাজিত কবরের আযাব সম্পর্কিত সংশয় দূর হয়ে যায়।

এ কারণে এই হাদীসগুলো সত্ত্বেও মুফাস্সিরগণের অধিকাংশই এর মক্কী হবার ব্যাপারে একমত। আমার মতে এটি শুধু মক্কী সূরাই নয় বরং মক্কী জীবনের প্রথম দিকে অবতীর্ণ সূরাগুলোর অন্যতম।

◼️ বিষয়বস্তু ও মূল বক্তব্যঃ
এই সূরায় মানুষকে দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসা ও বৈষয়িক স্বার্থ পূজার অশুভ পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। এই ভালোবাসা ও স্বার্থ পূজার কারণে মানুষ মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত বেশী বেশী ধন-সম্পদ আহরণ, পার্থিব লাভ, স্বার্থ উদ্ধার, ভোগ, প্রতিপত্তি, ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব লাভ এবং তার মধ্যে প্রতিযোগিতামূলকভাবে একজন আর একজনকে টপকে যাওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যায়। আর এসব অর্জন করার ব্যাপারে অহংকারে মত্ত থাকে। এই একটি মাত্র চিন্তা তাদেরকে এমনভাবে মশগুল করে রেখেছে যার ফলে এর চেয়ে উন্নততর কোন জিনিসের প্রতি নজর দেবার মানসিকতাই তাদের নেই। এর অশুভ পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে দেবার পর লোকদেরকে বলা হয়েছে, এই যেসব নিয়ামত তোমরা নিশ্চিন্তে সংগ্রহ করতে ব্যস্ত, এগুলো শুধুমাত্র নিয়ামত নয় বরং এগুলো তোমাদের জন্য পরীক্ষার বস্তুও। এগুলোর মধ্য থেকে প্রত্যেকটি নিয়ামত সম্পর্কে তোমাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

◼️ ব্যাখ্যাঃ-
১) : “ أَلْهَاكُمُ التَّكَاثُرُ”
ভাবার্থ: “প্রাচুর্যের মোহ তোমাদেরকে (গাফিল) করে রেখেছে। -
– মানুষ তার জীবনের জাগ্রত সময়ের অধিকাংশই ব্যয় করে সম্পদ আহরণে, এই বাস্তবতার মাঝেই আমরা বাস করছি। আমরা যতই আত্মিক উন্নতি লাভ করতে চাই না কেন আমাদের জীবনের অধিকাংশ সময়ই ব্যয় হয় সম্পদ আহরণে। এখানে সম্পদ বলতে শুধু টাকা-পয়সা বোঝানো হয় নি, বরং তা অন্য প্রকারও হতে পারে, যেমন: সন্তান-সন্ততি। কেননা অধিক সন্তান-সন্ততি থাকা মানে সমাজে অধিকতর শক্তিশালী অবস্থান – সমাজে অনেকেই তাদের সন্তান-সন্ততির বড়াই করে থাকে।

বর্তমান সমাজের সাধারণ চিত্র হচ্ছে এই যে পরিবারের কর্তা সারাদিন ঘরের বাইরে অবস্থান করবেন, তার কর্মক্ষেত্র থেকে সম্পদ আহরণের জন্য, আর কর্ত্রী ঘরে অবস্থান করে সেই সম্পদকে ব্যয় করবেন এবং তিনিও তা জমা করবেন ঘরে সঞ্চিত বিভিন্ন ভোগ্য বস্তুর আকারে – নতুন এটা, নতুন ওটা, বছর বছর ঘরে নতুন পর্দা, নতুন সোফা ইত্যাদি – কখনও পরিতৃপ্ত না হয়ে আরও বেশী করে সম্পদ জমা করতে থাকা। উভয়পক্ষেই চলে এই সঞ্চয়ের প্রক্রিয়া,
পুরুষ ঘরের বাইরে থেকে সম্পদাহরণে ব্যস্ত, আর নারী ঘরের ভেতর বিভিন্ন ভোগ্য পণ্যের আকারে সেই সম্পদকে জমা করতে সক্রিয়।

কিন্তু আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা সূরা আনফালের ২৮ নং আয়াতে আমাদেরকে সাবধান করছেন:
وَاعْلَمُواْ أَنَّمَا أَمْوَالُكُمْ وَأَوْلاَدُكُمْ فِتْنَةٌ وَأَنَّ اللّهَ عِندَهُ أَجْرٌ عَظِيمٌ
“আর জেনে রাখ, তোমাদের সম্পদ এবং সন্তান–সন্ততি তোমাদের জন্য পরীক্ষা বৈ নয়, আর নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট রয়েছে মহা পুরস্কার (যারা এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে তাদের জন্য)।”
(সূরা আল আনফাল, ৮ : ২৮)

অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেন:
“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের সম্পদ এবং সন্তান–সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে বিচ্যুত না করে, এবং যারা এমনটি করবে (সম্পদ ও সন্তান-সন্ততির দ্বারা আল্লাহর স্মরণ থেকে বিক্ষিপ্ত হবে), তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।” (সূরা আল মুনাফিকুন, ৯)

আল্লাহ এখানে আমাদের সামনে সম্পদ এবং সন্তানের প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরেছেন – এ সবই আমাদের জন্য পরীক্ষা, এগুলোর সাহায্যে আমাদেরকে শুধুই পরীক্ষা করা হচ্ছে। আমরা পৃথিবীতে এসেছি এগুলো না নিয়ে, আবার পৃথিবী থেকে বিদায়ও নেব এগুলো না নিয়েই। সুতরাং ধন-সম্পদ এবং সন্তান-সন্ততির প্রতি আমাদের বাসনা যেন আমাদেরকে জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য অনুধাবন করা থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে না পারে – এ কথা জানা যে আমাদের জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য ও দায়িত্ব হচ্ছে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার ইবাদত, এবং এর দ্বারা তাঁকে স্মরণ করা।

আল্লাহ পাক পুনরায় সূরা আল মুনাফিকুনের ৯ নং আয়াতে উল্লেখ করেছেন:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تُلْهِكُمْ أَمْوَالُكُمْ وَلَا أَوْلَادُكُمْ عَن ذِكْرِ اللَّهِ وَمَن يَفْعَلْ ذَلِكَ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الْخَاسِرُونَ
যারা সম্পদাহরণ ও সন্তানের প্রতি তাদের বাসনার কারণে আল্লাহর স্মরণ থেকে বিচ্যুত হল, তারা প্রকৃতপক্ষেই তাদের জীবনের মূল লক্ষ্যকে হারিয়ে ফেলল।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা
أَرَأَيْتَ مَنِ اتَّخَذَ إِلَهَهُ هَوَاهُ أَفَأَنتَ تَكُونُ عَلَيْهِ وَكِيلًا
“তুমি কি তাকে দেখনি যে তার
প্রবৃত্তিকে তার দেবতা
বানিয়েছে?” (সূরা আল ফুরকান, ২৫ : ৪৩)

এটা এমন অবস্থা যখন একজন মানুষ তার বাসনার কাছে আত্মসমর্পণ করে, প্রাচুর্যের বাসনা তার ইলাহতে পরিণত হয়। আর সম্পদের প্রতি এই বাসনা অনির্বাণ,

যেমনটি রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: “যদি
আদম সন্তানকে স্বর্ণের একটি উপত্যকা
দেয়া হয়, সে আরেকটি উপত্যকা চাইবে। শুধুমাত্র যে
জিনিসটি তার মুখ পূর্ণ করতে পারবে, তা হল
তার কবরের মাটি।

◼️ ২) . সূরা আত তাকাসুর, আয়াত – ২: “
حَتَّى زُرْتُمُ الْمَقَابِرَ
অর্থ: “যতক্ষণ না তোমরা কবরে পৌঁছে যাও।”

অর্থাৎঃ বিভিন্নভাবে সম্পদ আহরণের পেছনে সাধনা তোমাদেরকে ব্যস্ত রেখে একেবারে মৃত্যুর মুহূর্ত পর্যন্ত পৌছিয়ে দেয়।

সূরা আনআমের ৪৪ নং আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন:
فَلَمَّا نَسُواْ مَا ذُكِّرُواْ بِهِ فَتَحْنَا عَلَيْهِمْ أَبْوَابَ كُلِّ شَيْءٍ حَتَّى إِذَا فَرِحُواْ بِمَا أُوتُواْ أَخَذْنَاهُم بَغْتَةً فَإِذَا هُم مُّبْلِسُونَ
“অতএব যখন তারা সতর্কবাণী ভুলে গেল,
যার দ্বারা তাদেরকে স্মরণ করানো
হয়েছিল, আমরা তাদের জন্য প্রতিটি (উপভোগ্য) বস্তুর দরজা খুলে দিলাম, যতক্ষণ না তারা এই ভোগ–বিলাসে মত্ত হয়ে পড়ল এবং হঠাৎ এর মাঝে আমি তাদেরকে ছিনিয়ে নিলাম (মৃত্যু ঘটিয়ে
দিয়ে শাস্তিতে নিক্ষেপ করলাম)…”
(সূরা আল- আনআম, ৬ : ৪৪)

তাদের এই পরিণতি এজন্য যে তারা সম্পদের দ্বারা আল্লাহর স্মরণ থেকে বিচ্যুত না হওয়ার উপদেশকে ভুলে গিয়ে শয়তানের কব্জার মধ্যে চলে যায়, এবং আল্লাহ তাদেরকে যাবতীয় পার্থিব সম্পদ দান করতে থাকেন, এবং তাদের এই ভোগ-বিলাসের মধ্যস্থলে হঠাৎ তাদের জান কবয করা হয়। এভাবে যখন মৃত্যু আমাদেরকে স্পর্শ করে, আমরা উপলব্ধি করি যে, জীবিত অবস্থায় এ সবকিছুই ছিল আমাদের জন্য পরীক্ষামাত্র। এই জীবনে মানুষ সহজে বিভ্রান্ত হয় কেননা এখানে আমরা যা করছি, তার পরিণতি আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। এই পরিণতি আমরা কেবল জানতে পারি ওহীর মাধ্যমে। আমরা যেন এই অবস্থায় আটকে পড়ার আগেই আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করি।

কেননা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা সূরা নিসার ১৮ নং আয়াতে বলেন:
وَلَيْسَتِ التَّوْبَةُ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ حَتَّى إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ إِنِّي تُبْتُ الآنَ وَلاَ الَّذِينَ يَمُوتُونَ وَهُمْ كُفَّارٌ أُوْلَـئِكَ أَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا (18
আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে, এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। অতএব তার তাওবাহ কোন কাজে আসবে না, তারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। (সূরা আন নিসা, ৪ : ১৮)

আল্লাহ পাক আরো বলেন:
وَلَن يُؤَخِّرَ اللَّهُ نَفْسًا إِذَا جَاء أَجَلُهَا وَاللَّهُ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ
“এবং নির্ধারিত সময় উপস্থিত হলে
আল্লাহ কোন আত্মাকে অবকাশ দেন না,
এবং তোমরা যা কর, আল্লাহ সে সম্পর্কে
সম্যক অবহিত।” (সূরা আল মুনাফিকুন, ৬৩ :১১)

এবং তাদের অবস্থা হচ্ছে এরকম যে মৃত্যুর পরে তাদের হুশ ফিরে, দুনিয়ার মাল সম্পদের ধান্দায় পড়ে তারা নেক কাজের কথা ভুলে যায়, মৃত্যুর পরে তাদের নেক কাজ করার কথা মনে পড়ে,।
এ ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলা কুরআনে বলেন-
تَرٰٓي إِذِ الْمُجْرِمُوْنَ نٰكِسُوْا رُؤُوْسِهِمْ عِنْدَ رَبِّهِمْ ط رَبَّنَآ أَبْصَرْنَا وَسَمِعْنَا فَارْجِعْنَا نَعْمَلْ صَالِحًا إِنَّا مُوْقِنُوْنَ)
“আর যদি তুমি দেখতে, যখন পাপীরা তাদের প্রতিপালকের সামনে স্বীয় মাথা নীচু করে বলবে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা দেখলাম ও শ্রবণ করলাম, (এখন) তুমি আমাদেরকে পুনরায় (পৃথিবীতে) প্রেরণ কর; আমরা নেক কাজ করব। আমরা তো দৃঢ় বিশ্বাসী হয়েছি।” (সূরা সাজদাহ ৩২:১২)

وَاَنْفِقُوْا مِنْ مَّا رَزَقْنٰكُمْ مِّنْ قَبْلِ اَنْ يَّاْتِيَ اَحَدَكُمُ الْمَوْتُ فَيَقُوْلَ رَبِّ لَوْلَاۤ اَخَّرْتَنِيْۤ اِلٰۤي اَجَلٍ قَرِيْبٍ ۙ فَاَصَّدَّقَ وَاَكُنْ مِّنَ الصّٰلِحِيْن
আর আমি তোমাদেরকে যে রিযক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় কর, তোমাদের কারো মৃত্যু আসার পূর্বে। কেননা তখন সে বলবে, হে আমার রব, যদি আপনি আমাকে আরো কিছু কাল পর্যন্ত অবকাশ দিতেন, তাহলে আমি দান-সদাকা করতাম। আর সৎ লোকদের অন্তর্ভুক্ত হতাম। (৬৩-আল-মুনাফিকুন:১০)

◼️ ৩) সূরা আত তাকাসুর, আয়াত – ৩:
“ كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُون"
অর্থ: “কিন্তু শীঘ্রই তোমরা জানতে পারবে।”

অর্থাৎ সত্য হচ্ছে এই যে মৃত্যু অতি নিকটে, এই পার্থিব জীবনের কর্মের ফল তোমাদের কাছে শীঘ্রই প্রকাশিত হয়ে পড়বে।
রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: “জান্নাত তোমাদের প্রত্যেকের অধিক নিকটবর্তী, এবং জাহান্নামও।”


◼️ ৪) সূরা আত তাকাসুর, আয়াত – ৪:
“ ثُمَّ كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُون ”
অর্থ: আবার শোনো, শীঘ্রই তোমরা জানতে পারবে।”

এখানে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা একই কথা পুনরাবৃত্তি করার মাধ্যমে এ ব্যাপারটিকে জোর দিচ্ছেন যে জীবনের বাস্তবতা বুঝতে পারার এই মুহূর্তটি অতি অতি নিকটে! যেমন আমরাও কোন কিছু জোর দিয়ে বলতে চাইলে দুবার বলে থাকি। কুরআনে কোন কোন আয়াত এভাবে পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে বিশেষ জোর দেয়ার জন্য।
মৃত্যুর ব্যাপারটি এত গুরুত্বপূর্ণ কারণ একবার কেউ কবরে শায়িত হয়ে গেলে, তখন সে দেখবে, কবর হয় জান্নাতের একটি বাগান, কিংবা একটি আগুনের বিছানা! আমাদের মৃত্যুর মুহূর্ত থেকেই আমাদের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে।

◼️ ৫) সূরা আত তাকাসুর, আয়াত – ৫:
“ كَلَّا لَوْ تَعْلَمُونَ عِلْمَ الْيَقِين ”
অর্থ: “কখনই না, যদি তোমরা নিশ্চিত জ্ঞানের ভিত্তিতে জানতে।

যদি আমরা সত্যিই জানতাম এই পার্থিব জীবনের প্রকৃত রূপ, তাহলে আমরা যেভাবে জীবন যাপন করছি, সেভাবে জীবন যাপন করতাম না, আমাদের জীবন সম্পূর্ণ বদলে যেত। কিন্তু আমাদের যদি এই নিশ্চিত জ্ঞান থাকত, তাহলে এই জীবন পরীক্ষার বিষয় হত না, তাই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা ইচ্ছা করেই আমাদেরকে সেই জ্ঞান দান করেন নি। এই জ্ঞান আমাদেরকে দেয়া হয়েছে ওহীর মাধ্যমে যা ধর্মগ্রন্থে এসেছে, এবং এক্ষেত্রে আমাদেরকে স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে, আমরা নবীদেরকে বিশ্বাস করতে পারি, নাও করতে পারি,।

আল্লাহ আমাদের পরীক্ষা করতে চান, আর এ জীবন আমাদের জন্ম থেকে নিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত এক পরীক্ষা মাত্র, আমরা বিশ্বাস করি বা না করি, আমরা এই পরীক্ষা ক্ষেত্রেই অবস্থান করছি, আর এই পরীক্ষা চলছে প্রতিনিয়ত।
বুখারী শরীফের হাদীসে আছে রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: “আমি যা জানি, তা যদি তোমরা জানতে, তবে তোমরা অল্পই হাসতে এবং অধিক ক্রন্দন করতে।”

◼️ ৬) সূরা আত তাকাসুর, আয়াত – ৬:
“ لَتَرَوُنَّ الْجَحِيمَ ”
অর্থ: “তোমরা অবশ্যই জাহান্নাম দেখবে।”

আমরা প্রত্যেকেই জাহান্নামের আগুন প্রত্যক্ষ করব, এই জীবনে নয়, মৃত্যুর পরের জীবনে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা সূরা মারইয়ামে উল্লেখ করছেন:
وَإِن مِّنكُمْ إِلَّا وَارِدُهَا كَانَ عَلَى رَبِّكَ حَتْمًا مَّقْضِيًّا

“তোমাদের মাঝে এমন কেউ নেই, যাকে
এর (জাহান্নামের আগুনের) নিকটে আনা
হবে না…” (সূরা মারইয়াম, ১৯ : ৭১)
বুখারী শরীফের হাদীসের বক্তব্য থেকে জানা যায় যে রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন কাউকে ততক্ষণ জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে না, যতক্ষণ না তাকে জাহান্নামে তার স্থানটি দেখানো হয়, যেখানে তাকে নিক্ষেপ করা হত যদি সে অবিশ্বাস করত, যেন সে অধিকতর কৃতজ্ঞ হয়। তেমনি কাউকে ততক্ষণ জাহান্নামে প্রবেশ করানো হবে না, যতক্ষণ না তাকে জান্নাতের ঐ স্থানটি দেখানো হয়, যা সে বিশ্বাসী হলে লাভ করতে পারত, যেন সে অধিকতর শোকাচ্ছন্ন ও বিমর্ষ হয়।

অপর একটি হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সা) বর্ণনা করেন- জাহান্নামের উপর দিয়ে একটি সেতু স্থাপন করা হবে। সাহাবীরা প্রশ্ন করলেন ‘ ইয়া রাসূলাল্লাহ! এই সেতুটি কি?’রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন: এটি পিচ্ছিল এবং এতে সাঁড়াশি রয়েছে। বিশ্বাসীদের মধ্যে একদল চোখের পলকে তা পার হয়ে যাবে। অন্যদল বিদ্যুত গতিতে পার হবে। কেউ ঝড়ো বাতাসের গতিতে। কেউ দ্রুতগামী অশ্বের গতিতে, কেউ উটের গতিতে। কেউ কোন ক্ষতি ছাড়াই এটা পার হবে। অন্যদের কিছু আঁচড় লাগবে। আর কেউ কেউ জাহান্নামে পড়ে যাবে। শেষ যে ব্যক্তি এই সেতু অতিক্রম করবে, সে এমনভাবে এটা পার হবে যেন তাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে আসা হয়েছে। এর নাম সীরাত।

◼️ ৭) সূরা আত তাকাসুর, আয়াত – ৭:
“ثُمَّ لَتَرَوُنَّهَا عَيْنَ الْيَقِينِ ”
অর্থ: “অতঃপর নিশ্চয়ই তোমরা একে (জাহান্নাম) স্বচক্ষে দেখবে।”

মৃত্যুর পরবর্তী জীবনে আমরা একে স্বচক্ষে দেখতে পারব, এ জীবনে আমরা একে দেখতে পাই নবীদের (আ) বর্ণনায় অংকিত চিত্রানুযায়ী। তাঁরা কিতাব ও ওহী অনুযায়ী জাহান্নামের বর্ণনা আমাদের সামনে তুলে ধরেন। কিন্তু পরবর্তী জীবনে আমরা একে নিশ্চিতভাবে দেখব: “আইনুল ইয়াকীন”। রাসূলুল্লাহ (সা) ব্যাখ্যা করেছেন, মুমিনগণ যখন জাহান্নামের আগুন দেখবে, তারা তা দেখে উৎফুল্ল হবে, কেননা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তাদেরকে এ থেকে বাঁচিয়েছেন, তারা আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়বে। কিন্তু অবিশ্বাসীদের এ দৃশ্য দেখানোর উদ্দেশ্য হচ্ছে তাদের কষ্ট বৃদ্ধি করা, এ দৃশ্য দেখে তারা চরম দুঃখ, ক্ষোভ (নিজেদের মূর্খতার কারণে), হতাশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়বে, একথা উপলব্ধি করে যে তাদেরকে এখানে থাকতে হবে চিরকাল!

এবং কোরআনে আরও বলা হয়েছে জাহান্নামীরা এভাবে আফসোস করতে থাকবে -
এই দিবস (পরকাল) সত্য। অতপর যার ইচ্ছা, সে তার পালনকর্তার কাছে ঠিকানা তৈরি করুক। আমি তোমাদেরকে আসন্ন শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করলাম, যেদিন মানুষ প্রত্যেক্ষ করবে যা সে সামনে (মৃত্যুর আগে) পাঠিয়েছে। আর (সেদিন তা দেখে) কাফেররা বলবে- ‘হায়, আফসোস! আমি যদি মাটি হয়ে যেতাম।’ (সুরা নাবা : আয়াত ৩৯-৪০)

যখন পৃথিবী চুর্ণ-বিচুর্ণ হবে আর আপনার পালনকর্তা ও ফেরেশতাগণ সারিবদ্ধভাবে উপস্থিত হবেন। এবং সেদিন জাহান্নামকে আনা হবে, সেদিন মানুষ স্মরণ করবে, কিন্তু এই স্মরণ তার কি কাজে আসবে? সে (আক্ষেপ করে) বলবে- ‘হায়, এ জীবনের জন্যে আমি যদি কিছু আগে পাঠাতাম!’সেদিন তার শাস্তির মত শাস্তি কেউ দেবে না। আর তার বাধনেরর মত কেউ বাধবেও না।’ (সুরা ফাজর : আয়াত ২১-২৬)

নিশ্চয় আল্লাহ কাফেরদেরকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তাদের জন্যে জলন্ত অগুন (জাহান্নাম) প্রস্তুত রেখেছেন। তথায় তারা অনন্তকাল থাকবে এবং কোনো অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাবে না। যেদিন আগুনে তাদের মুখমণ্ডল ওলট-পালট করা হবে; সেদিন তারা বলবে-হায়। আমরা যদি আল্লাহর আনুগত্য করতাম ও রসূলের আনুগত্য করতাম।
( সুরা আহজাব : আয়াত ৬৪-৬৬)

◼️ ৮) সূরা আত তাকাসুর, আয়াত – ৮:
“ثُمَّ لَتُسْأَلُنَّ يَوْمَئِذٍ عَنِ النَّعِيمِ ”
অর্থ: “অতঃপর সেদিন তোমরা প্রত্যেকটি নেয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।”

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা এই পৃথিবীতে আমাদেরকে যা কিছু দান করেছেন, তা সম্পর্কে আমরা প্রত্যেকেই জিজ্ঞাসিত হব। কেননা যেমনটি আগে বর্ণনা করা হয়েছে, এই জীবনে আল্লাহ পাক আমাদের যা কিছু দিয়েছেন, তার সবই পরীক্ষা। আমাদের সম্পদ পরীক্ষার বিষয়, কেননা আমরা এই পৃথিবীতে এসেছিলাম শূন্য হাতে এবং শূন্য হাতেই এখান থেকে বিদায় নেব। এই সম্পদ পৃথিবীতে আমাদেরকে দেয়া হয়েছে আমানত হিসেবে। যদি আমরা একে আল্লাহর পছন্দনীয় পথে ব্যয় করি, তাহলে এর কল্যাণ আমাদের সাথে রয়ে যাবে, যদি আমরা একে অন্যায় পথে ব্যয় করি, তবে এর পাপ আমাদেরকে গ্রাস করতে আসবে।

রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন-
তিনটি জিনিস একজন মৃত ব্যক্তিকে কবর পর্যন্ত অনুসরণ করে, দুটি ফিরে আসে, একটি থেকে যায়।
তার আত্মীয়, তার সম্পদ এবং তার আমল তাকে কবর পর্যন্ত অনুসরণ করে, তার আত্মীয় এবং সম্পদ ফিরে আসে, আর তার আমল তার সাথে থেকে যায়।

রাসূলুল্লাহ (সা) আরও বলেছেন-
, দুটি নিয়ামত রয়েছে যা সম্পর্কে মানুষ প্রতারিত হয়, সুস্বাস্থ্য এবং অবসর। মানুষ এর দ্বারা প্রতারিত হয় এই ভেবে যে আল্লাহ কর্তৃক প্রদত্ত এ দুটি অনুগ্রহ আমাদের সাথে সর্বদা থাকবে। কিন্তু আমরা সহজেই এগুলো হারাতে পারি, এবং যখন আমরা দুর্বল কিংবা অসুস্থ হয়ে পড়ি, আমাদের অবসর সময় শেষ হয়ে আসে, তখন আমরা ইচ্ছা থাকলেও আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার ইবাদত করতে পারি না, এবং তখন আমাদের আপসোস করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না।

এজন্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন-
“ফা ইযা ফারগতা, ফানসাব।” ভাবার্থ:
“যখন তুমি ব্যস্ততা থেকে মুক্ত হও, অন্য ইবাদতে লেগে
যাও।” (সূরা ইনশিরাহ, ৯৪:৭)

আমাদের জীবন প্রকৃতপক্ষে ইবাদতের এক অবিরাম প্রক্রিয়া। মহান আল্লাহ বলেন -
“…নিশ্চয়ই আমার সালাত, আমার ত্যাগ,
আমার জীবন–মরণ, জগৎসমূহের প্রতিপালক
আল্লাহরই জন্য।”(সূরা আল আনআম, ৬:১৬২)

আমাদের গোটা জীবনই আল্লাহর জন্য হতে হবে, এই পার্থিব জীবনে আমাদের কোন ছুটি নেই। সৎকর্ম থেকে কিংবা ইসলাম থেকে আমরা এক মুহূর্তের জন্যও ছুটি নিতে পারব না। ইসলাম শ্বাস-প্রশ্বাস কিংবা খাদ্যগ্রহণের মতই এক অবিরাম প্রক্রিয়া, এ থেকে এক মুহূর্তও বিরত থাকার উপায় নেই, ইসলাম যেন আমাদের একটি অংশ। আমরা যেমন শ্বাস-প্রশ্বাস ছাড়া একটি মুহূর্তও টিকতে পারি না, তেমনি একজন বান্দা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার নিকট আত্মসমর্পণের অবস্থা ছাড়া একটি মুহূর্ত থাকতে পারে না। যদি আমরা ইসলাম থেকে সাময়িক ছুটি নেই, তবে বুঝতে হবে আমার ইসলাম নিছক কিছু আচার অনুষ্ঠান,। আমার ইসলাম প্রকৃত ইসলাম নয়।

যেমন আমাদের সমাজে দেখা যায় “রামাদান মুসলিম” , যারা কেবল রামাদান মাসে নামায পড়ে, অন্যদের চেয়ে বেশী পরিমাণেই পড়ে, কিন্তু রামাদান শেষ হলে সে এগার মাসের জন্য ইসলাম থেকে ছুটি নেয়, সে মনে করে যে পরবর্তী রামাদানে সে তার সমস্ত ইবাদত পূর্ণ করে নেবে – প্রকৃতপক্ষে এটা ইসলাম নয়। আরও দেখা যায় “জুম্মাবারের মুসলিম ”, যে কোন নামায পড়ে না, কেবল জুমআর নামাযে হাজির হয়, সপ্তাহের বাকী সময় সে ইসলাম থেকে ছুটি কাটায়। এধরনের লোকেরা ভীষণ ক্ষতি ও ধোঁকার মধ্যে রয়েছে।

আল্লাহ পাক বলেন:-
“আমি জ্বিন ও মানুষকে আমার ইবাদত করা ছাড়া আর কোন কারণে সৃষ্টি করিনি।”
(সূরা আয যারিয়াত, ৫১:৫৬)

আমাদের সবাইকে কেয়ামতের দিন আল্লাহ্‌-প্রদত্ত নেয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। আর একথা আল্লাহ তায়ালা, সূরা আর রহমানে বারবার উল্লেখ করেছেন।

মহান আল্লাহ - “(এদের) কান, চোখ, হৃদয়- প্রত্যেকটি সম্পর্কে হিসেব নেয়া হবে।” [সূরা আল-ইসরা:৩৬]

রাসূলুল্লাহ্‌ (সা) আরো বলেন, “দু’টি নেয়ামত এমন আছে যাতে অধিকাংশ মানুষই ধোকা খায়। তার একটি হলো, স্বাস্থ্য অপরটি হচ্ছে অবসর সময়।” [বুখারী: ৬৪১২]

রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “কিয়ামতের দিন প্রথম যে নেয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে তা হচ্ছে, আমি কি তোমাকে শারীরিকভাবে সুস্থ করিনি? আমি কি তোমাকে সুপেয় পানি পান করাইনি?” [তিরমিয়ী: ৩৩৫৮]

অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
“আল্লাহ্‌ তা‘আলা কিয়ামতের দিন বলবেন, আদম সন্তান! তোমাকে ঘোড়া ও উটে বহন করিয়েছি, তোমাকে স্ত্রীর ব্যবস্থা করে দিয়েছি, তোমাকে ঘুরাফিরা ও নেতৃত্ব করার সুযোগ দিয়েছি, এগুলোর কৃতজ্ঞতা কোথায়?” [মুসলিম: ২৯৬৮, মুসনাদেআহমাদ; ২/৪৯২]
এই হাদীসগুলো থেকে একথা সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে, জিজ্ঞাসাবাদ কেবল কাফেরদের কে করা হবে না, সৎ মুমিনদেরকেও করা হবে। আর আল্লাহ্‌ মানুষকে যে নিয়ামতগুলো দান করেছেন সেগুলো সীমা সংখ্যাহীন। সেগুলো গণনা করা সম্ভব নয়। বরং এমন অনেক নিয়ামতও আছে যেগুলোর মানুষ কোন খবরই রাখে না। কুরআন মজীদে বলা হয়েছে, “যদি তোমরা আল্লাহ্‌র নিয়ামত গুলো গণনা করতে থাকো তাহলে সেগুলো পুরোপুরি গণনা করতেও পারবে না।” [সূরা ইবরাহীম: ৩৪] [আদ্‌ওয়াউল বায়ান, আত-তাফসীরুস সহীহ]

💠শিক্ষা:-
১: এমন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞাত থাকা,যে বিষয় সমূহ মানুষকে হিসাবের দিন কে ভুলিয়ে রাখে।
২:বেশি বেশি কবর জিয়ারত করা,জিয়ারত মানুষ কে সে দিনের কথা সরণ করিয়ে দেয় যে একদিন নিজের চির স্থায়ী ঠিকানা হবে এ কবর।
৩: জাহান্নাম থেকে রক্ষা চাওয়া,যেন এক সেকেন্ডের জন্য ও জাহান্নামের ধারে কাছে যেতে না হয়।
৪: আমার উপর অর্পিত নিয়ামত যেন আল্লাহর স্বরণে সপনে রক্ষনাবেক্ষন করতে পারি তার জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া।
৫: সে সময়ের জন্য দোয়া করা যে সময় এ পৃথিবীতে বিচরন করবে আমাদের উত্তরসূরী,তারা যেন আমাদের জন্য সদকায়ে জারিয়া হিসেবে আল্লাহ কবুল করে।

তআমাদেরকে এই সুরার উপর আমল করার মহান রব তৌফিক দান করুন, এবং মৃত্যু পর্যন্ত হেদায়েতের উপর অবিচল রাখুন (আমিন)
ফারজানা পারভীন চাচীর ওয়াল থেকে কপিকৃত।।

12/11/2024

যাদের অনেক বড় ঋণের বোঝা তাদের জন্য দুটো হাদীস এবং দুটো দুয়া।

১. আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী রাঃ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন জনৈক ব্যক্তি এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমি বড় দুশ্চিন্তায় আছি, আমার ঘাড়ে ঋণ চেপে আছে। এ কথা শুনে তিনি স. বললেন, আমি কি তোমাকে এমন একটি কালাম (বাক্য) বলে দেবো না, যা পড়লে আল্লাহ তোমার চিন্তা দূর করবেন ও ঋণ পরিশোধ করবেন। সে বললো, হ্যাঁ, নিশ্চয়ই বলুন, হে আল্লাহর রসূল স.!
তখন তিনি স. বললেন, তুমি সকাল-সন্ধ্যায় পড়বে,
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحُزْنِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ غَلَبَةِ الدَّيْنِ وَقَهْرِ الرِّجَالِ .
আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হুযনি ওয়া আউজুবিকা মিন গলাবাতিত দ্বীন, ওয়া ক্বহরির রিজাল।

অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে দুশ্চিন্তা হতে মুক্তি চাই। আশ্রয় চাই অপারগতা ও অলসতা এবং কৃপণতা ও কাপুরুষতা হতে এবং ঋণের বোঝা ও মানুষের কঠোরতা হতে।

সে বললো, পরিশেষে আমি তা-ই করলাম। আর আল্লাহ আমার দুশ্চিন্তা করে দিলেন এবং ঋণও পরিশোধ করে দিলেন।
[সুনানে আবূ দাঊদ, ১৫৫৫ ]

২. আলী রাঃ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন তাঁর কাছে একজন চুক্তিবদ্ধ দাস এসে বললো, আমি আমার মুনিবের সাথে সম্পদের লিখিত চুক্তিপত্রের মূল্য পরিশোধ করতে পারছি না, আমাকে সাহায্য করুন। উত্তরে ‘আলী রাঃ বললেন, আমি কি তোমাকে এমন কিছু কালাম (বাক্য) শিখিয়ে দেবো, যা রসূলুল্লাহ স. আমাকে শিখিয়েছেন? এ দু‘আর মাধ্যমে যদি তোমার ওপর বড় পাহাড়সম ঋণের বোঝাও থাকে, আল্লাহ তা পরিশোধ করে দেবেন। তুমি পড়বে,
اللَّهُمَّ اكْفِنِي بِحَلَالِكَ عَنْ حَرَامِكَ وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ
‘‘আল্ল-হুম্মাকফিনী বিহালা-লিকা ‘আন্ হারা-মিকা, ওয়া আগ্‌নিনী বিফাযলিকা ‘আম্মান্ সিওয়াক’’

অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তুমি আমাকে হালাল জিনিসের সাহায্যে হারাম থেকে বাঁচিয়ে রাখো এবং তুমি তোমার রহমতের মাধ্যমে আমাকে পরমুখাপেক্ষী হতে রক্ষা করো।
[তিরমিযী, ৩৫৬৩, বায়হাক্বী- দা‘ওয়াতুল কাবীর]
Mahfuzur Rahman ভাইয়ের ওয়াল থেকে। আল্লাহ সুবহানাওয়াতায়ালা ভাইকে উত্তল্ম জাযা দান করুন।।

Keep making Dua to Allah. Keep asking Him to ease your problems.
11/11/2024

Keep making Dua to Allah. Keep asking Him to ease your problems.

Appreciate what you have before it becomes what you had.
11/11/2024

Appreciate what you have before it becomes what you had.

Invest more in your hereafter than in your house.
09/11/2024

Invest more in your hereafter than in your house.

Address

Haven, 2nd Floor, 05 Rajapur Lane, Andarkilla
Chattogram
4000

Opening Hours

Monday 19:00 - 22:00
Tuesday 19:00 - 22:00
Wednesday 19:00 - 22:00
Thursday 19:00 - 22:00
Friday 15:00 - 18:00
Saturday 19:00 - 22:00
Sunday 19:00 - 22:00

Telephone

+8801975233888

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Emranul Haque, HR DESK BD posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Emranul Haque, HR DESK BD:

Videos

Share

Category


Other Video Creators in Chattogram

Show All