Emranul Haque, HR DESK BD

  • Home
  • Emranul Haque, HR DESK BD

Emranul Haque, HR DESK BD HR Professional || Content Creator

05/09/2025

বাংলাদেশে উৎকর্ষতার শীর্ষে
এভারকেয়ার নেফ্রোলজি
বিভাগে যোগ দিলেন
নেফ্রোলজি এক্সপার্ট
ডাঃ সাদিয়া সুলতানা
এমবিবিএস, এমডি (নেফ্রোলজি)
এ্যাটেন্ডিং কনসালটেন্ট - নেফ্রোলজি

অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করতে কল করুন ১০৬৬৩ নম্বরে

04/09/2025

অসুস্থতা যখন নেয়ামত!

আমরা অধৈর্য হয়ে পরি, আমাদের মনের বাসনা যে সুখময় মূহুর্তগুলো যেন চিরস্থায়ী হয়। অথচ আনন্দের সেই মূহূর্তগুলোতে আমরা আল্লাহকে ভুলে যাই। ছন্নছাড়া এই জীবন যখন রবের থেকে বিমুখ হয়ে যায় তখন তিনি সামান্য কিছু ক্ষতি-নামক নেয়ামত পাঠান। অসুস্থতা তার মধ্যে একটি।

• ক্ষতি আবার নেয়ামত? চলুন স্পষ্ট হ‌ই। সুস্থতা আল্লাহর পক্ষ থেকে অসীম এক নেয়ামত। কিন্তু কখনো কখনো সুঠাম দেহের,তাগড়া এই শরীর আমাদেরকে ভুলিয়ে দেয় রবের ডাকে সারা দেয়ার কথা,আমরা দুনিয়ার আনন্দ উল্লাসে মেতে আল্লাহ কে ভুলে যাই। তখন আল্লাহ আমাদেরকে এমন কিছু পরিস্থিতির সম্মুখীন করেন যার বদৌলতে আমরা পুনরায় রাব্বুল আলামীনকে ডাকি, তাঁর কাছে সাহায্য চাই। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশাল এক এহসান, ফিরে আসার একটা সুযোগ। কিন্তু আফসোস আল্লাহর উত্তম এই পরিকল্পনাকে আমরা অনেকেই মানতে নারাজ। সামান্য বা খুব বেশি অসুস্থ হলে আমরা বলি 'আল্লাহ এত কষ্ট আর ভালো লাগে না এর চেয়ে ভালো আমাকে মৃত্যু দান করুন'। (নাউ'যুবিল্লাহ)

- ওয়াল্লাহি একজন মুমিন কখনো এরূপ মন্তব্য করতে পারে না। অসুস্থতার সাময়িক এই কষ্ট মৃত্যুর যন্ত্রনার কাছে কিছুই না। অসুস্থ হলে আমরা হতাশ হয়ে পরি, পেরেশান হয়ে যাই। না প্রিয় ভাই ও বোন! মুমিন বান্দা অসুস্থ হলে অজানা এক শান্তি অনুভব করার কথা, আশে পাশের সহস্র মানুষের মধ্য থেকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তাকে বেছে নিয়েছেন এই নেয়ামত দান করবেন বলে। হয়তো রাব্বুল আলামীন ঐ ব্যক্তির ডাক, তাঁর কাছে বারংবার চাওয়াটা পছন্দ করেছেন তাই সাময়িক কিছু পরিক্ষার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাকে। আল্লাহ বলেন -

‌“এবং অবশ্যই আমি তোমাদেরকে পরিক্ষা করবো কিছুটা ভয়,ক্ষুধা,মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল ফসলাদি বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও সবরকারীদের" [আল বাকারাঃ১৫৫]

- দেখেন একজন ব্যক্তি যে কখনো আল্লাহ কে স্মরণ করে না,নামাজ পড়ে না অথচ ব্যবসায় লাখ লাখ টাকা আয় করে, কখনো রোগাক্রান্ত হয়না এর মানে কি এই যে আল্লাহ তার উপর খুব খুশি? আল্লাহর আনুগত্য যেটা সবচেয়ে বড় রহমত তার ভেতর তো সেটাই নেই।

- একজন লোক যে আল্লাহর জন্য পাগল-পারা। কখনো নামাজ ছুটে না কিন্তু ব্যবসায় মন্দা,রোগ ব্যাধি লেগেই থাকে,একের পর এক কষ্ট, তার মানেই কি আল্লাহ তার উপর অসন্তুষ্ট?

• ওয়াল্লাহি না আমরা ভাই। সবসময় এমনটা হয় না। তার ঐ সুখ সেটা কিছু সময়ের, অপরজনের ঐ দুঃখ তাও কিছু সময়ের। এর মানে আবার এই নয় যে, আল্লাহ যাকে পছন্দ করেন তাকে সবসময় অশান্তি রাখেন আর যাকে অপছন্দ করেন তাকে শান্তিতে রাখেন। বস্তুত যে আল্লাহর বিধান অনুযায়ী চলে এবং তারপরে গিয়ে আনন্দের জীবন যাপন করে সেই প্রকৃত সুখী। আবার যে আল্লাহর বিধান অনুযায়ী চলে আবার কষ্টেও আছে নিশ্চয়ই সেটা তার জন্য পরিক্ষা, এবং সে যদি সবরকারী হয় অচিরেই সে সুসংবাদ ও পুরষ্কার প্রাপ্ত হবে। (আল্লাহু আ'লাম) আল্লাহ বলেন -

“নিশ্চ‌ই কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে" [সূরা আল ইনশিরাহ্:৫]

• অসুস্থ হলে আমরা যেন ভেঙে না পরি। আল্লাহর দেয়া এই নেয়ামত আমরা যেন আলিঙ্গন করে নেই,আমরা যেন আল্লাহর ইচ্ছার বিরুদ্ধে অভিযোগ না করি। আল্লাহর নেয়ামত প্রাপ্ত কিছু বান্দাকে আল্লাহ দুনিয়াতেই দুঃখ কষ্টের মাধ্যমে তার গুনাহের হালকা শাস্তি দিয়ে থাকেন তাকে দুনিয়াতেই পরিশুদ্ধ করে দেন, বস্তুত এটাতো শাস্তি নয় বিশাল এক অনুগ্রহ। সেই ব্যক্তির জান্নাতে যাওয়ার জন্য হয়তো আর বাঁধাই থাকবে না। রোগের মাধ্যমে তো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদের গুনাহ্ মোচন করে দেন। রাসূল (সা:) বলেন -

“কোনো মুসলিম যখন কোনো কষ্টের মুখোমুখি হয়, তখন আল্লাহ তা'আলা তার গুনাহসমূহ এমনভাবে ঝেড়ে ফেলে দেন, যেমন গাছের পাতাগুলো ঝরে পড়ে যায়।”[বুখারী: ৫৬৪৭]

"রাসূল (সা:) একদা আয়েশার (রা.) কাছে গেলেন। দেখলেন আয়েশা কপালে একটি জলপট্টি দিয়ে আছেন এবং ব্যথার প্রকোপে কাঁপছেন। রাসুল (সা.) জিজ্ঞেস করেন, ‘কী হয়েছে তোমার আয়েশা?’ বলেন, ‘জ্বর হয়েছে। আল্লাহ দ্রুত আরোগ্য দান করুন।’ রাসূল (সা:) বলেন, ‘জ্বরকে মন্দ বলো না। এটি বনি আদমের গুনাহকে এভাবে দূর করে দেয়, যেভাবে আগুন শুকনো লাকড়িকে জ্বালিয়ে শেষ করে দেয়।" [মুসলিম, হাদিস: ২৫৭৫]

• আল্লাহ আমাদের জন্য উত্তম পরিকল্পনা করে রেখেছেন যা হয়তো আমাদের চিন্তাতেও আসে না। আমাদের জীবনের যেকোনো পরিস্থিতিতে আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখতে হবে এবং সবর করতে হবে। আল্লাহ আমাকে এবং আমাদের সবাইকে তাওফিক দান করুন। (আমিন)

লেখা: Rifat Ahmed ভাই। Mahfuzur Rahman ভাইয়ের ওয়াল থেকে কপিকৃত। আল্লাহ সুবহানাওয়াতায়ালা দুজনকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।

31/08/2025

লেখা: আরিফ আজাদ ভাই।।

সুরা আদ-দোহাকে আপনি কীভাবে পড়েন?

কুরআনের এই বিশেষ সুরাটিকে নানানভাবে বুঝবার সুযোগ রয়েছে। তাফসির বিশারদগণ নানান বৈচিত্রময় দিক থেকে সুরাটিকে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেছেন। অন্ধকার চিরস্থায়ী নয়, আলোকোজ্জ্বল ভোর নিকটবর্তী। দুঃখ চিরস্থায়ী নয়, সুখ অত্যাসন্ন। কষ্টের পরেই আসে সুখ। দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী, আখিরাতের জীবনের আনন্দই সত্যিকারের সফলতা—এমনসব সুখকর, অনুপ্রেরণাদায়ী কথামালায় সাজানো সেইসব ব্যাখ্যা।

হতাশায় নিমজ্জিত অন্তরকে জাগিয়ে তুলতে এই সুরা যেন এক মহৌষধের মতো কাজ করে আমাদের জীবনে। সমস্ত আশা হারিয়ে ফেলে যে হৃদয় হাঁবুডুবু খাচ্ছে অন্ধকারের অতল গহ্বরে, সেই হৃদয়কে আনন্দের মোহনায় টেনে আনতে সুরা আদ-দোহা যেন বিকল্পহীন।

আরেকটা ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকেও সুরা আদ-দোহাকে বোঝার সুযোগ রয়েছে বলে আমার ধারণা। আমার এই ধারণা পূর্বের ব্যাখ্যাগুলোর সাথে কোনোভাবে সাংঘর্ষিক নয়, বরং সেগুলোর পরিপূরক। সুরা আদ-দোহা থেকে আমরা অনুপ্রেরণাটুকু কেবল নিয়ে থাকি, কিন্তু কোনো কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করি না। আমার ধারণা—এই সুরার মধ্যে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদের জন্য খুব সুন্দর একটা কর্মপরিকল্পনাও অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

সুরা আদ-দোহার শুরুতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা দুটো শপথ করেছেন।

‘শপথ পূর্বাহ্নের’
‘(এবং শপথ) রাতের যখন তা নিঝুম হয়।’

এই শপথ দুটোর পর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা রাসুল সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কতিপয় আশার বাণী শুনিয়েছেন যা উক্ত সময়ে নবিজির জন্য প্রবলভাবে দরকারি ছিল।

সুরাটির শানে নুযুল তথা অবতীর্ণের কারণ থেকে আমরা জানতে পারি যে, একবার কিছুটা লম্বা সময়ের জন্য নবিজি সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে ওহী আসা বন্ধ থাকে। নবিজির কাছে জিবরিল আলাইহিস সালামের আগমন সাময়িক বন্ধ হয়ে পড়ায় মক্কার মুশরিকেরা নানান কটু কথা বলতে শুরু করে। তারা উপহাস আর তাচ্ছিল্যের স্বরে বলতে থাকে—‘মুহাম্মাদকে তার আল্লাহ পরিত্যাগ করেছে।’

একদিকে জিবরিল আলাইহিস সালামের ওহী নিয়ে আগমন বন্ধ থাকা, অন্যদিকে মুশরিকদের এহেন তিরস্কার নবিজিকে খুবই মর্মাহত করে তুলে। তিনি ভেতরে ভেতরে ভেঙে পড়েন। এই দুঃখ আর দুর্দশা থেকে নবিজিকে টেনে তুলতেই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা সুরা আদ-দোহা নাযিল করেন যা প্রশান্তি এনে দেয় নবিজি সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অন্তরে। মুশরিকদের অপবাদের বিপরীতে চপেটাঘাত এবং নবিজির হৃদয় থেকে হতাশার মেঘ দূরীভূত করার যাবতীয় রশদ নিয়েই যেন নাযিল হয় এই ছোট্ট সুরাটি। সুরাটির শুরুর কয়েকটা আয়াতের দিকে নজর দিলেই ব্যাপারটা আমরা সহজে উপলব্ধি করতে পারব।

‘শপথ পূর্বাহ্নের।
(এবং শপথ) রাতের যখন তা নিঝুম হয়।
আপনার রব আপনাকে পরিত্যাগ করেননি এবং তিনি আপনার প্রতি অসন্তুষ্টও নন।
আর অবশ্যই পরবর্তী সময় আপনার জন্য পূর্ববর্তী সময় অপেক্ষা উত্তম।
শীঘ্রই আপনার রব আপনাকে (এত নিয়ামত) দিবেন যে আপনি খুশি হয়ে যাবেন। (সুরা আদ-দোহা ১-৫)

অবিশ্বাস্য রকমের আশাব্যঞ্জক এবং উদ্দীপনামূলক এই আয়াতগুলো শুধু নবিজি সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অন্তরেই প্রশান্তি এনে দিয়েছিল তা নয়, এই আয়াতগুলো যুগ যুগ ধরে আশা যুগিয়ে যাচ্ছে কোটি কোটি বিশ্বাসী মানুষের অন্তরেও যারা নিজেদের যাবতীয় হতাশা আর ক্লান্তিতে ভেঙে পড়ার দিনগুলোতে কুরআনের শরপণাপন্ন হয়। বিশ্বাসী অন্তরের ক্ষতস্থানে এই আয়াতগুলো লেপে দেয় এমন এক প্রেরণার প্রলেপ যা সঞ্জীবনী শক্তির মতো জাগিয়ে তুলে তার হৃদয়কে। অন্ধকারের আস্তরণ সরিয়ে সে খুঁজে পায় পথের দিশা।

আপনি হয়ত ভাবছেন, এই সুরাটির মাঝে আমাদের জন্য কর্মপরিকল্পনাটা কোথায়, তাই তো?

সুরাটি থেকে আমরা যদি কেবল অনুপ্রেরণার বাণীটুকু শুনেই ইতস্ফা দিই, তাহলে সুরাটির ব্যবহারিক দিকটা আমরা কখনোই আবিষ্কার করতে পারব না।

‘আপনার রব আপনাকে পরিত্যাগ করেননি এবং তিনি আপনার প্রতি অসন্তুষ্টও নন’—এই আয়াত শুনেই যদি আমরা পুনরায় আমাদের গতানুগতিক জীবনে ফেরত যাই,

‘আর অবশ্যই পরবর্তী সময় আপনার জন্য পূর্ববর্তী সময় অপেক্ষা উত্তম’—এই অংশটুকু আওড়িয়েই যদি আমরা ঝুঁকে পড়ি পূর্বেকার উদাসীন জীবনে,

‘শীঘ্রই আপনার রব আপনাকে (এত নিয়ামত) দিবেন যে আপনি খুশি হয়ে যাবেন’—প্রাপ্তির এহেন সংবাদ লাভ করেই যদি আমরা অলস আর অকর্মণ্য জীবনের স্রোতে গা ভাসাই, তাহলে সন্দেহাতীতভাবে বলা যায় যে—সুরা আদ-দোহা সত্যিকারভাবে আমাদের অন্তরে আলোড়ন তুলতে পারবে না।

আমরা হয়ত সাময়িক তৃপ্তি লাভ করব, হতে পারে সুরাটা আমাদেরকে ক্ষণিক সময়ের জন্য স্বস্তি এনে দিবে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদের যে তৃপ্তি, প্রাপ্তি এবং আনন্দ—তা থেকে আমরা নিদারুনভাবে বঞ্চিত হব।

দীর্ঘমেয়াদে এই সুরা থেকে যদি আমরা সুফল লাভ করতে চাই, আমাদেরকে এই সুরা থেকে কর্মপরিকল্পনাটাও খুঁজে বের করতে হবে। সেই কর্মপরিকল্পনার খোঁজেই আমার আজকের এই লেখার অবতারনা।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা যখন কোনো বিষয় নিয়ে শপথ করেন, আমাদেরকে সুনিশ্চিতভাবে ধরে নিতে হবে যে তার মধ্যে কোনো কার্যকারণ, কোনো রহস্য অথবা নির্দেশনা রয়েছে। সুরা আদ-দোহায় খেয়াল করুন, আল্লাহ তাআলা সময়ের দুটো অবস্থা নিয়ে শপথ করেছেন। একটি হলো পূর্বাহ্ন তথা সূর্যোদয়ের পরের সময় এবং অন্যটি হলো রাতের সেই অংশ যখন তা পরিপূর্ণরূপে নিঝুম হয়ে উঠে।

তাফসির আহসানুল বায়ানে বলা হয়েছে—‘মানুষ এবং জীবজন্তুরা রাতের যে অংশে সম্পূর্ণরূপে শান্ত ও স্থির হয়ে পড়ে, এখানে রাতের সেই অংশকেই বোঝানো হয়েছে।’

আরও স্পষ্ট করে বলা যায়—রাতের যে অংশে মানুষ ও জীবজন্তুরা গভীর তন্দ্রায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে, যখন চারদিকে বিরাজ করে সুনশান ও নিরুপদ্রব নীরবতা, রাতের সেই বিশেষ অংশটার কথাই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা এখানে উল্লেখ করেছেন।

সুরাটি রাসুল সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উদ্দেশ্যে নাযিল হয়েছিল, এবং এই সুরার সমস্ত ওয়াদা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা পূরণ করেছিলেন। তিনি নবিজিকে পরিত্যাগ করেননি এবং তাঁর প্রতি অসন্তুষ্টও হোননি। নিশ্চয় নবিজির জন্য পরবর্তী সময় তথা আখিরাতের জীবনকে বানিয়েছেন পূর্ববর্তী সময় তথা দুনিয়ার জীবনের চেয়ে তুলনাহীনভাবে উত্তম। আর, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা নবিজিকে এতো অফুরন্ত নিয়ামত দান করেছিলেন যে—নবিজি ছিলেন রবের সবচেয়ে উত্তম কৃতজ্ঞ বান্দা।

সুরা আদ-দোহার ওয়াদাগুলো নবিজির জীবনে বাস্তবায়িত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, সুরাটিকে যদি আমাদের জীবনের সাথে মিলিয়ে পড়তে হয়, তখন আমরা কীভাবে পড়ব? আমরা হয়ত এভাবে পড়তে পারি—

‘তিনি আমাদের পরিত্যাগ করবেন না এবং আমাদের প্রতি তিনি অসন্তুষ্টও হবেন না। আমাদের জন্য পরবর্তী সময়কে তিনি পূর্ববর্তী সময় অপেক্ষা অধিকতর কল্যাণকর বানিয়ে দেবেন। তিনি আমাদের এত অঢেল পরিমাণে নিয়ামত দান করবেন যে, সেসব লাভ করে আমরা খুশি হয়ে যাব।’

ওয়াদাগুলো নবিজি সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনে বাস্তবায়িত হয়েছে, কিন্তু আমাদের জীবনে তো বাস্তবায়িত হয়নি। সেগুলোকে আমাদের জীবনে বাস্তবায়িত করতে হলে আমাদের কী করতে হবে? ঠিক এই উত্তরটাই লুকিয়ে আছে সুরাটির শুরুর দুটো শপথের মধ্যে।

‘শপথ পূর্বাহ্নের।
(এবং শপথ) রাতের যখন তা নিঝুম হয়।’

‘শপথ পূর্বাহ্নের’ বলে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা সূর্যোদয়ের পরের অবস্থা তথা দিনের সময়টুকুকে বুঝিয়েছেন। আর, ‘শপথ রাতের যখন তা নিঝুম হয়’ বলে বুঝিয়েছেন রাতের গভীর অংশটাকে।

‘শপথ পূর্বাহ্নের’ বলে আল্লাহ হয়ত জানাচ্ছেন—‘তোমরা যদি চাও আমি তোমাদের পরিত্যাগ না করি আর তোমাদের প্রতি অসন্তুষ্টও না হই, যদি চাও যে তোমাদের জন্য পরবর্তী সময়কে পূর্ববর্তী সময় অপেক্ষা উত্তম বানিয়ে রাখি, যদি ইচ্ছা করো যে তোমাদেরকে এত নিয়ামতে দান করি যা তোমাদের অন্তরকে অনাবিল আনন্দে ভরে তুলবে, তাহলে তোমাদের দিনের অংশটুকুকে সেভাবে যাপন করো যেভাবে যাপন করে গেছেন নবি মুহাম্মাদুর রাসুল সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, তাঁর সঙ্গী-সাথীগণ, সালেহীন বান্দাগণ।

তারা যাবতীয় অশ্লীলতা থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে চলতেন, তারা কারও নিন্দা করতেন না, কারও সম্পদ জবরদখল করতেন না, কারও গীবত করতেন না। তাদের অন্তরমনে সর্বদা বইত তাকওয়ার ফল্গুধারা। ঈমানের প্রশ্নে তারা ছিলেন আপষহীন, দ্বীনের প্রশ্নে তারা ছিলেন অনড় অবিচল। হালাল উপার্জন ব্যতীত তারা আহার করতেন না, হারামের সংস্পর্শ আছে এমন সবকিছু থেকে তারা সেভাবে নিজেদের আড়াল করতেন যেভাবে পাহাড় আড়াল করে রাখে প্রান্তরের ভূমিকে।

তারা ছিলেন সত্যবাদী, ইনসাফের প্রশ্নে দ্বিধাহীন। যদি তোমরা আমার ওয়াদাগুলোকে তোমাদের জীবনেও বাস্তবায়িত দেখতে চাও, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে প্রশ্ন করো—ঠিক কীভাবে কাটছে তোমাদের জীবন। ঈমান আর তাকওয়ার প্রশ্নে, ইনসাফ আর ইহসানের প্রশ্নে তোমরা কতোটা সচেতন?

আর, ‘শপথ রাতের যখন তা নিঝুম হয়’ বলে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা হয়ত বলছেন—

‘যদি আমার সন্তুষ্টি কামনা করো আর ইচ্ছা করো যে আমি তোমাদের পরিত্যাগ না করি, যদি চাও রাশি রাশি নিয়ামতে ভরে রাখি তোমাদের জীবন, তাহলে কিন্তু রাতের প্রহরগুলোকে কোনোভাবেই হেলায় কাটানো যাবে না।

যখন রাত্র গভীর হয়, যখন নিশ্চুপ নীরবতায় ছেঁয়ে যায় পৃথিবী, যখন চারপাশের সকলে আচ্ছন্ন হয়ে থাকে গভীর তন্দ্রায়, তখন তোমরা বিছানা ছেড়ে উঠে পড়ো। জাগ্রত করো তোমাদের রাতগুলোকে। জায়নামায বিছিয়ে দাঁড়াও আমার সামনে। তোমাদের কমতির কথা, অক্ষমতার কথা, অসমর্থের কথা আমার কাছে খুলে বলো। প্রাণ খুলে বলো তোমাদের ইচ্ছা আর আবদার, শখ আর স্বপ্নের কথা। দিলখুলে আমার পবিত্রতার প্রশংসা করো।’

দিন আর রাতের দুটো অবস্থার শপথ করে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদের জানাচ্ছেন যে, নবিজিকে যে নিয়ামত তিনি দান করেছেন, যে অভয়বাক্য, স্বস্তি এবং সৌভাগ্যের সংবাদ তিনি নবিজিকে শুনিয়েছেন, সেসব যদি আমরাও লাভ করতে চাই, এই দুই শপথের মাঝেই সেই রহস্য উদঘাটনের চাবি লুকায়িত আছে। সেই চাবিটা হলো—দিনের অংশটুকুতে ঠিক সেভাবে জীবনযাপন করা যেভাবে জীবনযাপন করলে মহান রব সন্তুষ্ট হবেন। এবং রাতের অংশের পুরোটা না ঘুমিয়ে, গভীর অংশটায় জাগ্রত হয়ে পূর্ণ মনোযোগের সাথে রবের নিবিষ্ট ইবাদাতে নিজেকে মগ্ন করে রাখা।

সুরা আদ-দোহা এক সত্যিকারের মহৌষধ, ভগ্ন হৃদয়কে জোড়া লাগাবার এক আশ্চর্য কৌশল, হতাশা-মগ্ন জীবনে সজীবতার আবহ ফিরিয়ে আনবার এক অনন্য উপকরণ। তবে তা কেবল তখনই কার্যকরি হবে যখন আমরা শপথবাক্যে থাকা সময় দুটোর দিকে গভীর দৃষ্টি দেবো।

যদি পূর্বাহ্ন থেকে রাত্রের সময় পর্যন্ত আমরা সেভাবে জীবনযাপন করতে পারি যেভাবে জীবনযাপন করলে তা আল্লাহর সন্তুষ্টির কারণ হবে, যদি গভীর রাতের সময়টুকু আমরা নিয়মিত কাটাতে পারি জায়নামাযে—কিয়ামে, সিজদায়, রুকুতে, যিকির, তিলাওয়াত আর মুনাজাতে, তাহলে আশা করা যায়, সুরা আদ-দোহার সেই সমূহ সুসংবাদ আমাদের জীবনেও বাস্তব হয়ে ধরা দেবে, ইন শা আল্লাহ।

কী এক মহা সৌভাগ্যের ব্যাপার হবে যখন সুরা আদ-দোহায় বলা মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার এই কথাগুলো আমার জীবনেও বাস্তব হয়ে উঠবে—

‘আপনার রব আপনাকে পরিত্যাগ করেননি এবং তিনি আপনার প্রতি অসন্তুষ্টও নন।
আর অবশ্যই পরবর্তী সময় আপনার জন্য পূর্ববর্তী সময় অপেক্ষা উত্তম।
শীঘ্রই আপনার রব আপনাকে (এত নিয়ামত) দিবেন যে আপনি খুশি হয়ে যাবেন।’

#কুরআনের_অলিতেগলিতে০২

27/08/2025

Address

Haven, 2nd Floor, 05 Rajapur Lane, Andarkilla, Chattogram

4000

Opening Hours

Monday 19:00 - 22:00
Tuesday 19:00 - 22:00
Wednesday 19:00 - 22:00
Thursday 19:00 - 22:00
Friday 15:00 - 18:00
Saturday 19:00 - 22:00
Sunday 19:00 - 22:00

Telephone

+8801975233888

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Emranul Haque, HR DESK BD posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Emranul Haque, HR DESK BD:

  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share