Nusrat Jahan bithy

Nusrat Jahan bithy 12

20/01/2023

আচ্ছা তুই তো ভা*র্জিন তোর রে'ট টা একটু বেশি হবে বিথি আয়না কে বলল,

যদি ওয়ান টাইম কাস্টমার আসে তাহলে ঐ যে কাশফুল দেখছিস ঐখানে নিয়ে যাবে, আর যদি সারা রাতের জন্য আসে আমাকে বলবি,আমি সব ঠিকঠাক করে দিবো,
আয়না কাশফুলের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে,,
এই কাশফুল দেখতে ছবি তোলতে আসে তার প্রিয় মানুষটির হাত ধরে কিন্ত আমি, কি কপাল আমার,,,

একটি মেয়ের কয়টি Bf আছে সেটা আমরা খুব ভালো করে খোঁজ খবর রাখি কিন্ত,,
একটি মেয়ে তার পরিবারের জন্য নিজের শরীর কে বিলিয়ে দিতে চলেছে নাম তার আয়না,ডাক নাম অভাগি
রাত ১২টা বাজে,
শরীরে রঙিন শাড়ি জড়িয়ে, কড়া পারফিউম লাগিয়ে,
ঠোঁটে লাল লিপস্টিক মেখে,

চলল ঘুমন্ত রাস্তায় তার এক বান্ধবীর সাথে সেও অভাবে পড়ে এই রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছে,

যেতে যেতে সেই পতিতালয়ের মোড়ে
এসে হাজির হল,

এমন সময় আয়নার বান্ধবী বলল আয়না কোমর থেকে শাড়ি টা শরিয়ে নাভি বের কর,না হলে কাস্টমারের
নজরে আসেনা আকৃস্টি হবে না তোর
প্রতি,,

আয়নার বান্ধবীর নাম বিথী,,,

--বিথীর কথা মতো নিজের নাভিটা বের করে আয়না,

আয়নার মন টা কাঁদতে থাকে কারন একটা মেয়ে অহংকার হল তার ইজ্জত, সেটি আজ কোন কুকুরের খোরাক হতে চলেছে,,,

--বীথি এটাও বলে দিলো প্রথম প্রথম অনেক লাগবে কিন্ত মুখ বুঝে সহ্য করবি,তোর কোন কথা শুনবে না,
কুকুরের মত ছিড়ে ছিড়ে খাবে,,

--আয়না বিথি কে বলল তুই চিন্তা করিস না,,আমি পারবো,

--বিথি আবার বলল, আয়না তুই একবার ভেবে দেখ এখনো সময় আছে,,

--আয়না বলল নারে কাল বাড়িতে টাকা পাঠাতে হবে,আজ বাদ দিলে মা হয়তো বাঁঁচবে না,

বিথিঃ কিন্তু এই ভাবে তোর জীবনটা নস্ট করে দিবি,

আয়নাঃ তাছাড়া আর কি করব কোন উপায় নাই,

বিথি আয়না কে ডেকে বলল এদিক আয় শুন,

আয়নাঃ কি-?

--তুই তো ভার্জিন তোর রেট টা একটু বেশি হবে,,

এমন সময় এটা প্রাইভেটকার আসলো
ব্রেক টা করলো বিথির সামনে,
গাড়ির দরজা ঠেলে একজন ইয়াং ভদ্রলোক নামলেন,
আর এদিক ওদিক খোঁজতে লাগলেন,

এমন সময় বিথি বলল,আমাকে কি পছন্দ হয় না,

ভদ্রলোকঃ আমার সুন্দরী লাগবে, আপনারা তো মেকাপ দেওয়া,আমার নেচারাল বিউটি লাগবে,

বিথি ভদ্রলোকের পেটে হাত দিয়ে তুই মনে হয় নতুন, আমায় দেখ না অনেক মজা দিবো,,

ভদ্রলোক তখন বললেন আপনাকে আমার লাগবে না,আমার নতুন মেয়ে লাগবে।

বিথি; নতুন মাল লাগবে,

তখন আয়নার কথা মনে পড়লো,

বিথি আয়না কে ডেকে আনলো আর বলল এই যে নতুন মাল,একদম খাটি ভার্জিন অভাবে পড়ে এসছে,

আয়না নিচের

07/09/2022

একটা মেয়েকে ডি'প্রেশনে ঠেলে দেওয়ার জন্য একটা ‘ঘটক’ ই যথেষ্ট!😡😡

...আপনার সব অতীত যেনে, আপনাকে ভালোবাসে, বিশ্বাস করে, সারা জীবন পাশে থাকবে, আপনার শূন্য হীন পকেট আপনার পাশে থাকবে, সে ভাল...
01/09/2022

...আপনার সব অতীত যেনে, আপনাকে ভালোবাসে, বিশ্বাস করে, সারা জীবন পাশে থাকবে, আপনার শূন্য হীন পকেট আপনার পাশে থাকবে, সে ভালোবাসা কখনো কমবে না 💙 ....... প্রকৃত ভালোবাসা💙

01/09/2022

আপনি কি জানেন তালায় এই ছোট্ট ছিদ্র কেন থাকে ?
১৫০০ বছর আগে তুরষ্কের রাজা বিয়ে করার জন্য মেয়ে খুঁজছিলেন। রাজার আদেশে রাজ্যের ২০ টি সুন্দরী মেয়েকে উপস্থিত করা হয়, রাজা সবাইকে একটি করে বীজ দিলেন এবং বললেন, যে মেয়েটি ০৬ মাস পর এই বীজ থেকে গোলাপ ফুল ফুটাতে পারবে আমি তাকে বিয়ে করবো

ছয় মাস পর সব মেয়েরা এলো, সবার হাতে একটা করে গোলাপ, কারো হাতে লাল, কারো হলুদ, কারো হাতে সাদা। শুধু একটি মেয়ের হাতে গোলাপ ফুল ছিল না।

রাজা তাকে জিজ্ঞেস করলো তোমার গোলাপ কোথায় ?
মেয়েটি উত্তর দিল, রাজামশাই আপনি যে বীজটি দিয়েছিলেন তা গোলাপের বীজ ছিল না।
তার সততায় খুশি হয়ে রাজা তাকে বিয়ে করেন।

আর তালায় এই ছোট্ট ছিদ্রটি কেন থাকে সেটা আমারও জানা নাই :)

যে মানুষটার সাথে আপনি অভিমান করে আছেন, অথবা বন্ধ করে দিয়েছেন যোগাযোগ সেই মানুষটাও কিন্ত আপনার মতই রক্ত মাংসে গড়া একজন মা...
12/08/2022

যে মানুষটার সাথে আপনি অভিমান করে আছেন, অথবা বন্ধ করে দিয়েছেন যোগাযোগ সেই মানুষটাও কিন্ত আপনার মতই রক্ত মাংসে গড়া একজন মানুষই।

অভিমান আসলে জমতে দিতে হয়না। রাগ করে চুপ থাকার চাইতে ঝগড়া করা ভালো অন্তত কথাতো হবে।

ধরুন,আপনি রাগ করে আছেন মিনিট, ঘন্টা, দিন পেরিয়ে গেলো আপনি মানুষটাকে নক করছেন না বা কথা বলছেন না। যদি ফিরে এসে মানুষটাকে আর না পান নিতে পারবেনতো সেই সময়টাকে? বিশ্বাস করাতে পারবেনতো নিজেকে।

বুকের পাঁজর থেঁতলে দিয়ে যে মানুষটা ভালবাসার দূর্গ বানায় সেই মানুষটাকেই আমরা কত অবলীলায় ভুলে যাই। একটু সময়ের জন্যও মনে হয়না একটা সময় ভাল লাগার কারন ছিলো এই মানুষটাই।কতটা বদলে যায় মানুষ বছর মাস ঘুরে নতুনের বুকে ঠাঁই নেয়।

আসলে এগুলো মনে হয় অনূভুতির বিবর্তন। খেয়াল করে দেখেন,একটা সময় মানুষটার প্রতি টান ছিলো ভালবাসা ছিলো মায়া জন্মেছিলো আজ কিছুই নেই সবই হতাশায় মুড়ানো।

কত সহজেই মানুষ বদলে যায় কত সহজেই অচেনা কেউ মনে জায়গা পায়।

কান্নাজড়িত কন্ঠে একটা কথা বলি,মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব কিনা আমি জানিনা তবে আজব জীব নিঃসন্দেহে।

লেখাঃআবির ইবনে মুহাম্মদ যোহর।

#তাসনিম_এমি

13/10/2021

#ভালোবাসার_তুই



বাসার ভেতর গুণগুণ করে গান গাচ্ছিলাম আর রুম গুচ্ছাছিলাম।আজ নাকি বাসায় কে আসবে?কে আসবে কে জানে?আম্মু, আব্বুকে জিজ্ঞেস করছিলাম কে আসবে?তাদের এক উত্তর আসলেই দেখতে পারবে।আমি খুঁজে পাচ্ছি না আসবেটা কে??আম্মু সুন্দর করে রেডি হতে বলছে।মনে একটু খোটকা লাগছে।বাসার পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে আমায় কেউ দেখতে আসবে।কিন্তু সিউর হতে পারছি না বলে চেচামেচিও করতে পারছি না।আন্দাজে চেচামেচি করে কি মায়ের হাতে ঝাড়ুর দৌড়ানি খাবো নাকি।হালকা মেরুন রঙের একটা থ্রি পিস পরে বের হয়ে এলাম।ডেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে চুল আঁচড়াচ্ছি আর বিরবির করছি।

আমিঃ সবাইকে মাথার মাঝখানে সিঁথি করলে দেখা যায় চিকনি ক্যাটরিনা।আর আমাকে লাগে কামের বেডি জরিনা।নাহ চুল ছারবো না।মাথায় হিজাব পরবো। যদি আজ আমায় কেউ দেখতে আসে তাহলে তার খবর আছে। আমার ছোট বোনটা কোথায়?এই বাসার বার্তাবাহক তো আমার ছোট বোন। ওকে জিজ্ঞেস করলেই তো আমার উত্তর পেয়ে যাই। কিন্তু ইভাতো আম্মুর সাথে কিচেনে কাজ করছে। ধূর,ভালো লাগে না।ইভাকে ডাক দিয়ে জিজ্ঞেস করি দেখি ঘটনা কি?পানি কোন দিকে গড়িয়েছে?

বেশ কিছু সময় হাতের নখ কামড়িয়ে সারা রুম পায়চারি করছি।মাথায় কিছু ঢুকছে না।মাথার মধ্যে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।কাজের সময় মাথাটা হ্যাং হয়ে যায়। গলা ফাটিয়ে ইভাকে বেশ কয়েক বার ডাক দিলাম।

আমিঃ ইভা, ইভা একটু এদিকে আয় তো।
ইভাঃ কেন কি হয়েছে? আমি তোমার কোন লিপস্টিক ধরিনি।তুমি তোমার লিপস্টিক যেখানে রাখছো সেখানেই আছে।
আমিঃ এই মেয়েটা,দুই লাইন বেশি না বুঝলে হয় না।ওকে কি আমি লিপস্টিকের কথা জিজ্ঞেস করেছি।মাঝে মাঝে মনে হয় তুলে আছাড় মারি।
(বিরবির করে)
ইভাঃ বোইনে কেন ডাকো?
আমিঃ তুই এদিকে এসে শুনে যা।কিচেনের থেকে শুধু শুধু গলা ফাটাইস না।

৫ মিনিট পর ইভা এসে হাজির।এসেই আমাকে একটা মুখ ঝামটা দিলো।যার মানে আমি বুঝলাম না।

ইভাঃ কি হয়েছে বল?
আমিঃ এদিকে এসে চুপ করে বস।তোর সাথে আমার কথা আছে।
ইভাঃ যা বলার তাড়াতাড়ি বলো।আমার কাজ আছে।
আমিঃ ওরে আমার কামিনীরে।কাজ করে উল্টায় ফেলে দিচ্ছো সব।
ইভাঃ তোমার ঝগড়া করতে মন চাইলে পাশের বাসার ঝগড়ুটে মহিলার সাথে যোগ দেও।আমায় ডিস্টার্ব করো না।
আমিঃ তোর সাথে ফালতু পেচাল পারার সময় নেই আমার।সরাসরি সোজা পয়েন্টে চলে আসি।আজ বাড়িতে কে আসবে রে?
ইভাঃ যে আসার সে আসবে।তোমার কি?আমি তোমাকে বলবো না। (ভাব দেখিয়ে)
আমিঃ একদম ভাব নিবি না।ভাব নিলে আমার ফোন ধরা বন্ধ করে দিবো।
ইভাঃ পারোই তো এই ভয় দেখাতে।যাও যাও ভাগো এখান থেকে।তোমার ফোন না ধরলে আমার কিছু আসবে,যাবে না।
আমিঃ মনে রাখিস কথাটা।
ইভাঃ ধূর কি যে বলো না।আমি কি কিছু বলছি।তুমি আমায় ফোন ধরতে দিও। আমি তোমায় বলছি কে আসবে।
আমিঃ ব্লাকমেল আমি ভালোই করতে পারি।তাই আমার সাথে কোন ঝামেলা করো না।জলদী করে বলে দেও তো ছোট বাবু।
ইভাঃ আব্বুর অফিসে একসাথে কাজ করে সে আসবে।
আমিঃ ওহ্ আচ্ছা। আমি ভাবলাম কি না কি।তাহলে নিশ্চয়ই আঙ্কেলরা আসবে।তুই এখন যেতে পারিস।

ইভা কিচেনের দিকে চলে গেল।আমি নিশ্চিন্ত হয়ে মোবাইল হাতে নিয়ে ফেসবুক চালাতে লাগলাম।

🍂🍂🍂

এনাজ ওয়াস রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু ওর ভাইয়ের বেরুবার নামও নেই। এনাজ পুরো রেডি হয়ে ভাইয়ের অপেক্ষা করছে। আজ এনাজ মেয়ে দেখতে যাবে।কিন্তু মনে হচ্ছে এনাজ নয় এনাম যাবে নিজের জন্য পাত্রী দেখতে।এনাজ বাইরে থেকে চেচিয়ে ভাইকে উদ্দেশ্য করে বললো।

এনাজঃ এনাম, আমার মনে হচ্ছে আজ তুই মেয়ে দেখতে যাচ্ছিস।একটু কম সেজে যাস।নয়তো মেয়ে আমাকে পছন্দ না করে তোকে করে ফেলবে।তখন তো আবার আরেক বিপদ।
এনামঃ তোমার বউ তোমারি থাকবে।আমি নজর দিবো না।বড় ভাবী মায়ের সমান।তোওবা,তোওবা ভাইয়া কি বলো এসব।

ওয়াস রুম থেকে বের হয়ে একদমে সব কথা বললো এনাম।মুখে তার বিশ্ব জয় করা হাসি।অবশেষে সে তার বড় ভাইকে বিয়ের জন্য মেয়ে দেঝতে রাজী করাতে পেরেছে।তবে এনাম তো জানে না এনাজের পছন্দের মেয়েকেই আজ তারা দেখতে যাচ্ছে।

এনাজ যে কোম্পানিতে চাকরী করে নোভার বাবাও সেই কোম্পানিতে একসাথে কাজ করে।নোভার বাবার এনাজকে ভীষণ পছন্দ করে। মনে মনে তার বড় মেয়ের জন্য এমন একটা ছেলেই খুজতো।এনাজ যেদিন থেকে জেনেছে নোভার বাবা ওর কোম্পানিতে কাজ করে সেদিন থেকে নিজের ব্যাপারে আরো সচেতন হয়ে গেছে। জিসানকে দিয়ে কিছু দিন আগে নোভার বাবার কাছে এনাজ বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছিলো।এতে জেনো উনি হাতে চাঁদ পেলেন।উনিও কিছু দিন ধরে এনাজকে কথাটা বলবে করে ভাবছিলো।এনাজের প্রস্তাব তাই সে মানা করেনি।

এনাজঃ তুই এখানে থাক। আমি বাইক বের করছি।
এনামঃ আচ্ছা যাও।তবে তাড়াতাড়ি।

এনাজ বের হয়ে গেলো।টেবিল থেকে ঘড়ি নিয়ে পরতে লাগলো।হঠাৎ চোখ গেলো টেবিলে থাকা নীল মলাটের এক মোটা ডায়রীর দিকে।চোখ, মুখে বিস্ময় নিয়ে এনাম ডায়েরীটা হাতে নিলো।

এনাজঃ এটা কি ভাইয়ার ডায়েরী?এখানে কি করছে?আমি তো আগে কখনও দেখিনি।ভাইয়ার পার্সোনাল ডায়েরি হবে।আমি কি খুলে দেখবো ভেতরে কি আছে?অন্যর অনুমতি ছারা পার্সোনাল কিছু ধরা ঠিক নয়।তারপরেও তো মনটা আনচান করছে।কি আছে এই ডায়েরিতে।আমি তো জানি প্রায় রাতে ভাইয়া ডায়েরি লিখে। সেটা কি এই ডায়েরিটা।কি আছে এর মাঝে?আসলে নিষিদ্ধ জিনিসের ওপর আমাদের কৌতুহলটা বেশি থাকে। যেটা মোটেও ঠিক নয়।

মানুষ কৌতুহল প্রেমি।যেটা আমাদের ধরতে মানা করা হবে সেটার দিকে কৌতুহল বেশি থাকবে।সেটা যদি হয় কারো পার্সোনাল বিষয়। তাহলে তো আরো বেশি জেঁকে বসবো।কৌতুহল দমিয়ে রাখতে পারে এমন মানুষ খুব কম আছে। হাজারো দ্বিধা দ্বন্দ্ব নিয়ে এনাম ডায়েরিটার দিকে তাকিয়ে আছে। শেষ পর্যন্ত মনের সাথে যুদ্ধ করে ডায়েরিটা খুললো।১ম পেইজে বড় বড় অক্ষরের লেখাগুলো দেখে অবাকের চরম পর্যায়ে চলে গেল এনাম।১ম পেইজে ইংরেজি বড় হাতের অক্ষরে লেখা ছিলো (""NOVANAJ"")নিচে বাংলায় লেখা (""নোভানাজ"")।যেটার অর্থ বুঝতে এনামের কিছু সময় লাগলো।

এনামঃ ভাইয়ার নাম ANAJ তাহলে প্রথম নামটা কি?

কিছুক্ষণ এক দৃষ্টিতে পুরো নামটার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো এনাম।কারণ সাথের নামটাও সে পেয়ে গেছে। একজনের নামের শেষ অক্ষর দিয়ে তার ভাইয়ের নাম শুরু হয়েছে।তাই তার ভাই মাঝের A দিয়ে দুটো নামের সাথে কানেকশন জুড়ে রেখেছে।

এনামঃ বাহ্ বাহ্।ভাইয়ার বুদ্ধির তারিফ করতে হয় তো।নিজের নামের সাথে তার নামটাও কিভাবে বুদ্ধি করে জুরে রেঝেছে।একজনের নামের শেষ তো আরেকজনের শুরু। কিন্তু এই নোভাটা কে?ভাইয়া তাহলে এই মেয়েটাকে ভালোবাসে। ভালো না বাসলে তো নিজের নামের সাথে জুরে দিতো না।ওরে বাপরে!ভাইয়া কাউকে ভালবাসে আর আমি জানি না।ভাইয়া দেখছি তলে তলে টেম্পু না চালিয়ে বাস চালানো শুরু করে দিয়েছে। এই জন্য বিয়ে করতে রাজী হচ্ছিল না।
পরের পেইজ উল্টিয়ে দেখিতো কিছু আছে কিনা।

পরের পেইজ উল্টানোর আগেই কেউ ছোঁ মেরে হাতের থেকে ডায়েরিটা নিয়ে গেল।এনাম ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে এনাজ চোখ ছোট ছোট করে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। এনাম এর বিনিময়ে শুধু একটা ৩২ পাটি দাঁত বের করে বেক্কল মার্কা হাসি উপহার দিলো।

#চলবে

#

13/10/2021

#ভালোবাসার_তুই



ফুচকার স্টলে দুই গালে হাত রেখে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি সামনে থাকা পোটকা মাছের দিকে।আমার সামনে একের পর এক টপাটপ ফুচকা মুখে পুরছে সাইফ।ভেবেছিলাম এবারো বাঁশ দিবো।কিন্তু মনে হচ্ছে তা আমি পেতে চলেছি।কতদিন ধরে ওর কাছে থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে ছিলাম। যাতে ফুচকা না খাওয়াতে হয়।কিন্তু আজ বিধি বাম!কোচিং থেকে বের হতে না হতেই একটা বিশাল দেহী পোটকা মাছ আমার সামনে হাজির।সেখান থেকে আমাকে টেনে ফুচকার স্টলে নিয়ে এসেছে। আমার সামনেই আমার ফেবারিট ফুচকা মুখে পুরছে।একটাও দিচ্ছে না।

আমিঃ পোটকা কম করে খা।যেভাবে খাচ্ছিস মনে হয় ফুচকা খাওয়ার জন্য সারাদিন না খেয়ে ছিলি।৫ প্লেটের বেশি আমি একটাও খাওয়াবো না।

সাইফঃ আমাকে অনেকদিন ঘুরিয়েছিস।তাই তুই আরো দুই প্লেট বেশি খাওয়াবি।

আমিঃ আমি পারবো না।বেশি খেতে মন চাইলে নিজের টাকায় খা।টাকা গাছে ধরে না যে ঝাঁকি দিলেই পরবো।আমার বাপে অনেক কষ্ট করে ইনকাম করে।আমার আব্বু সারাদিন খাটুনি খেটে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে টাকা আয় করে।তোকে বলে কি লাভ?তুই কি করে বুঝবি।সারাদিন তো গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়াস।আর বাপের টাকায় ফুটানি করিস।যখন নিজে বাবা হবি তখন বুঝবি।

সাইফঃ আমাকে না বলে এসব নিজের কাজে লাগা।যখন বস্তায় বস্তায় লিপস্টিক কিনিস তখন এসব বড় বড় ডায়লগ কোথায় যায় তোর?নিজে যা করিস না তার উপদেশ অন্যকে দিস না।

আমিঃ চুপ কর। আমারটা আলাদা।আমি কি ছেলে নাকি যে তোর সাথে জোড়া হবে।একদম আমার সাথে জোড়া দিবি না।

সাইফঃ কথা বলিস না। চুপচাপ খেতে দে।খাওয়ার সময় কোন চেচামেচি আমার ভালো লাগে না।

আমিঃ আমি দুই প্লেট ফুচকা খাই।টাকা তুই দিয়ে দিস।আমি জানি তুই আমাকে ফিরিয়ে দিবি না।

সাইফঃ টাকা গাছে ধরে না যে ঝাঁকি দিলেই পরবো।আমার বাপে অনেক কষ্ট করে ইনকাম করে।নিজের টাকায় কিনে খা।

আমিঃ আমার ডায়লগ আমাকে দিচ্ছিস।(রেগে)

সাইফঃ তোর থেকেই তো শিখলাম।

আমিঃ সাইফ ভাইয়া।তুই আমার ভালো ভাইয়া,টুনটুনির ভাই, হাতির বাপ,জাদু ভাই। তুই না অনেক ভালো।

সাইফঃ কি দরকার সেটা বল?এতো সুনাম করতে হবে না।কি চাস তাই বল?

আমিঃ বুঝেই যখন গিয়েছিস তখন প্লিজ আমাকে ছেড়ে দে না ভাই। আমার কাছে একটা টাকাও নেই।এখন যদি তুই আমাকে না ছারিস তাহলে আজকে আমাকে থালা-বাসন মাজতে হবে।প্লিজ ভাইয়া আজকে বিল তুই দিয়ে দিস।পরে একদিন আমি তোকে দিয়ে দিবো।

সাইফঃ তা হবে না মিস।আজকে তুই প্লেট মাজিস বা পাতিল ধোস আমার বিষয় নয়।আজকে তুই বিল দিবি ৭ প্লেটের।

আমিঃ আমার সব টাকা গেলো রে।আজকে মনে হয় ফুচকার স্টলের থেকে একটা প্লেট নিয়ে গিয়ে বাজারের চৌরাস্তায় বসতে হবে। যদি কিছু টাকা পাই।আমার লিপস্টিক কেনার টাকা বোধহয় গেলো রে।আমি আজকে শেষ। এখন মাটিতে গড়াগড়ি খেতে হবে।তাও মনে হয় এই পোটকা মাছটার দয়া হবে না।
(বিরবির করে)

আমার বুকটা কষ্ট ফাডি যাচ্ছে গো।আমি ভাবছি কিছু লিপস্টিক কিনমু।সেটা আর হলো না। দেখি আজ কাউকে খুঁজে পাই কিনা।আজকে একটাও মুরগী পাচ্ছি না। কাউকে যদি পাই তাহলে তার হাতে কৌশলে বিলটা ধরিয়ে দিবো।আল্লাহ একজনকে পাইয়ে দেও।

🍂🍂🍂

এনাজ ল্যাপটপে এক ধ্যানে মনোযোগ সহকারে কাজ করছে।নিঃশ্বাস ছারার সময় পাচ্ছে না।প্রচুর ব্যস্ত আজ সে।অন্য কোম্পানির সাথে আজ তাদের ডিল ফাইনাল করতে হবে।কিছু সময় পর একটা বিশাল রেস্টুরেন্টে তাদের বিকালের নাস্তার পাশাপাশি কোম্পানি বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ মিটিং হবে।কিন্তু এখনো অনেক কাজ কমপ্লিট হয়নি।তড়িঘড়ি করে সব ফিনিস করছে।এনাজের কেবিনে ঢুকলো ওর এক কলিগ ও ফ্রেন্ড জিসান।

জিসানঃ কি খবর তোর?
এনাজঃ কথা বলিস না তুই। আমি নিশ্বাস ছারার সময় পাচ্ছি না।আর তুই এসেছিস পিনিক মারতে।
জিসানঃ প্যারা নিস না দোস্ত। যাস্ট চিল কর।
এনাজঃ এখন প্যারা না নিলে ডিল ক্যান্সেল হয়ে যাবে।কোম্পানির অনেক লোকসান হবে।তখন আমার চাকরী চান্দের দেশে পারি দিবে।
জিসানঃ সর, আমি তোকে হেল্প করছি।
এনাজঃ লাগবে না। আমি করে নিতে পারবো।
জিসানঃ বেশি কথা বলিস না।আমার কাজ আমাকে করতে দে।

এনাজ চেয়ার খানিকটা সরিয়ে জিসানকে জায়গা করে নিলো।জিসান সামনে থাকা ফাইলগুলো নিয়ে কাজে লেগে পরলো।এনাজ ও জিসানের সাথে বেশ ভালো সম্পর্ক।দুজন দুজনের সাথে সব কথা শেয়ার করে।পার্সোনালি বিষয় নিয়ে একে অপরের মতামত নেয়।নোভার ব্যাপারের সবকিছু জিসানকে বলেছে এনাজ।নোভার সাথে দুই দিন দেখা হওয়ার পর কি কান্ড হয়েছে সব খুলে বলে দিয়েছে সে।জিসানকে নিজের সাথে কিছু ঘটলে না বলা পর্যন্ত এনাজের শান্তি হয় না।পেটের মধ্যে কথায় খোঁচায়।যদিও এনাজকে দেখতে ভীষণ ভদ্র মনে হয়।তবে সে অনেকটা ভিজে বিড়াল টাইপের ছেলে।যাকে মিচকে শয়তান বললেও ভুল হবে না।দেখলে যতটা গম্ভীর টাইপের ছেলে মনে হয় আসলে সে বাস্তবে ভদ্র ফাজিল বা মিচকে শয়তান। ভদ্র ফাজিলকে কেউ ধরতে পারে না।অনেক ব্যাপারে এনাজকে দেখে মনে হয় সিরিয়াস কিন্তু মনে মনে সে শয়তানির মুডে আছে।জিসান ও এনাজ বেশ খানিক সময় ধরে কাজ করছে।কাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়।পুরো রুমে পিনপিনে নিরবতা।নিরবতা ভেঙে জিসান প্রথম কথা বললো।

জিসানঃ ঐ মেয়েটার কি খবর?
এনাজঃ কোন মেয়ে?
জিসানঃ ঐ যে রনির বোনের জন্মদিনে যে মেয়েটার সাথে লিপস্টিক নিয়ে তর্ক করেছিস।
এনাজঃ ও নোভার কথা বলেছিস।
জিসানঃ মেয়েটার নামও জেনে ফেলেছিস!!
(অবাক হয়ে)
এনাজঃ অবাক হওয়ার কিছু নেই। ওর নাম আমি আরো ২ বছর আগের থেকে জানি।
জিসানঃ ২ বছর মানে!!!!

আগেরবার থেকে বেশি অবাক হয়ে এনাজের দিকে তাকালো জিসান।জিসানের মুখটা বাংলা পাঁচের মতো হয়ে হা হয়ে আছে।এনাজ ওকে এভাবে দেখে ফিক করে হেসে উঠলো। প্রচুর হাসি আসছে এনাজের।কিন্তু মুখ চেপে আটকে রেখেছে। জিসান এনাজের দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

এনাজঃ এভাবে তাকানোর কোন ওয়ে খুঁজে পাচ্ছি না।আমি অবাক হওয়ার মতো কিছু বলি নি। নোভাকে আমি ২ বছর আগে কলেজে দেখেছিলাম।তখনই আমি ওর যাবতীয় ডিটেলস জোগাড় করে ফেলেছিলাম।

জিসানঃ ওরে ফাজিল।তলে তলে এতো কিছু। তুই ২ বছর ধরে নোভাকে চিনিস।এতো ভালুপাসা।কোথায় রাখিস ভাই?

এনাজঃ বাদ দে এসব কথা।

জিসানঃ বিয়ে কবে করবি?দাওয়াত দিস শালা।আবার একাই বউ নিয়ে পরিচয় করে দিতে আসিস না।যদি এমনটা করিস তাহলে তোকে মেরে হসপিটালে ভর্তি করে রাখবো।বিলের চিন্তা করিস না।সেটা তোর বউয়ের থেকে আদায় করে নিবো।

এনাজঃ লিপস্টিক পাগলীর থেকে টাকা আদায় করা এতো সহজ নয়।লিপস্টিক দেখলে হুশ থাকে না।ওকে হাজার বার অপমান করলে কোন রিয়েকশন হবে না।কিন্তু লিপস্টিক কে কিছু বললে বিনা ডিটারজেন্ট পাউডার দিয়ে ধুয়ে দিবে।

জিসানঃ ভাই, এটাকে নিয়ে সংসার করবি কি করে?
এনাজঃ আল্লাহ মালুম।চল,মিটিং-এ দেরী হয়ে যাচ্ছে।

জিসানঃ কথাটা পাল্টিয়ে ফেললি।

এনাজঃ জলদী চল।দেরী হয়ে গেলো।

জিসানঃ বললি না তো।আমিও তোর মুখ থেকে বের করেই ছারবো।

এনাজ মুচকি হেসে ব্যাগ কাঁধে নিলো।জিসানও ব্যাগ নিলো।দুজন একসাথে রওনা দিলো।এনাজ বাইকের চাবি হাতের আঙুলে ঘোরাতে ঘোরাতে রওনা দিলো গন্তব্যে।এনাজের মাথায় এখন একটা শয়তানি বুদ্ধি ঘুরছে।নতুন করে আবার নোভাকে জ্বালানোর আইডিয়া সে পেয়ে গেছে।

#চলবে

08/10/2021

#ভালোবাসার_তুই



কলেজের গেইট দিয়ে ঢুকতে দেরী কিন্তু আমার পিঠে দুরুম দারুম কিল পরতে দেরী হলো না।কি হলো আমার সাথে সেটা বুঝতে আমার কিছু সময় লাগলো।ততক্ষণে আমার পিঠ আলু ভর্তা হয়ে গেছে। আমি পিঠ ধরে মা গো, বাবা গো বলে চিৎকার শুরু করলাম।

আমিঃ ও বাবা গো, মা গো।কে কোথায় আছো গো?আমায় বাঁচাও গো।আমার পিঠে তাল পরছে।কোন হারামী আমার পিঠে কিল দিলো রে।আজ তার একদিন কি আমার একদিন?আমার সাথে লাগতে আসার মজা ভালো হবে না।

রেগে বাঘের মতো তাকাতেই বিড়াল হয়ে গেলাম।সামনে আমার পুরো বান্ধবী টিম কোমড়ে হাত দিয়ে খাইয়া ফালামু লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে। আমি চোখ দুটো এদিক সেদিক ঘুরিয়ে একটা বলদা মার্কা হাসি দিলাম।কিন্তু মন জয় করতে পারলাম না। সামনে আমার তিন বান্ধবী শারমিন,সিফা,মৌসুমি দাঁড়িয়ে আছে। এতটা রেগে আছে যে ওদের চোখের দিকে তাকাতে পারছি না।

শারমিনঃ এই তোর আসার সময় হলো।দুই দিন ধরে তোর কোন খোঁজ-খবর নেই।

সিফাঃ তোর কি হয়েছে বল তো?

মৌসুমিঃ আমরা বড়লোক্সদের সাথে কথা বলি না।

আমিঃ ঢংগীগুলি।আমার কোন খোঁজ-খবর নিছোত।একটা কলও তো করিসনি।

আমি রেগে ওদের দিকে তাকাতেই ওরা আমার দিকে দ্বিগুন রেগে তাকালো।আমি চুপ হয়ে মুখে এক আঙুল দিয়ে রাখলাম।

সিফাঃ তোর ফোন বন্ধ কেন?কতবার তোকে কল দিছি তোর ধারণা আছে।

মৌসুমিঃ তোর আম্মুর কাছে ফোন করে জানতে পারলাম তুই মামার বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিস।তুই তো ঐ বাড়িতে গেলে আমায় ভুলে যাস।

শারমিনঃ কে তুই? যা যেখানে থেকে এসেছিস সেখানে যা।আমরা তোকে চিনিনা।

আমিঃ ওরে আমার শারু বেবি,তুমি রাগ করছো আমার সাথে। এবার বুঝতে পেরেছি ঢংগীরা।আমার সাথে অভিমান করেছো।আহারে!!! ঢং না করে ভেতরে চল।আমার ক্ষুধা লাগছে।

মৌসুমীঃ বাসা থেকে খেয়ে আসিস নি?

আমিঃ হুম খেয়েছি। এখন আবার খাবো।তোর কোন সমস্যা? আমার বাপের টাকায় খাই তোর কি রে?

মৌসুমিঃ আমি এমনি বললাম।তাই বলে এভাবে অপমান করবি।

আমিঃ অপমানের দেখছিস কি?সবে তো শুরু করেছি।এখনো আরো বাকি আছে। ঐ সিফু আমার ব্যাগটা ধর তো।আমি ব্যাগ থেকে লিপস্টিক বের করে ঠোঁটে দিমু।ঠোঁটের লিপস্টিক হালকা হয়ে গেছে।

শারমিনঃ পৃথিবী উল্টিয়ে যাবে তারপরেও তোর লিপিস্টিক দেওয়া বন্ধ হবে না।বাসা থেকে দিয়ে আসতে আসতে খেয়ে ফেলছিস।

আমি ব্যাগ থেকে আয়না ও লিপস্টিক বের করে নিলাম।ব্যাগটা সিফার হাতে দিয়ে লিপস্টিক নিজের হাতে নিলাম।আয়নাটা মৌসুমির হাতে দিয়ে দিলাম।

আমিঃ চুপ কর।আমার আয়নাটা ধর তো।লড়াচড়া করবি না।সুন্দর করে ধর না রে।আমি তো ভালো করে দিতে পারছি না।যদি লিপস্টিক দেওয়া সুন্দর না হয় রে তোদের তিনটার খবর আছে।(রেগে)

মৌসুমিঃ বিয়ের পর কোন দিন জানি লিপস্টিকের কারণে ওর জামাইকে ডিভোর্স দিয়ে দেয়।বলবে তোর থেকে আমার লিপস্টিক বেশি দামী।

আমিঃ পাগল হলেও এতটা পাগল হয়নি।নিজের জামাইরে ডিভোর্স দিয়া দিমু।জাতে পাগল হলেও তালে ঠিক আছি।

সিফাঃ যাক তোর তাহলে সুমুতি হয়েছে। নিজের জামাইকে ডিভোর্স দিবি না।

আমিঃ আরে বলদী জামাইরে ডিভোর্স দিলে তো মন মতো লিপস্টিক কিনতে পারুম না।যেই ব্যাটারে বিয়া করুম তার থিকা লিপস্টিক কিনে তারে ফকির বানাই ফালামু।

মৌসুমিঃ তুই বদলাবি না।
আমিঃ হইছে এবার ভেতরে চল।

চার বান্ধবী একসাথে ভেতরে চলে গেলাম।দুই দিন ওদের ছারা ছিলাম।কিন্তু মনে হচ্ছে কতদিন পর সবার দেখা হয়েছে।

🍂🍂🍂

আজকাল অফিসের চাপ একটু বেশি এনাজের।নিশ্বাস ছারার জো নেই। কোম্পানির মালিক এনাজকে অনেক পছন্দ করে।কারণটা হলো ওর পার্সনালিটি।খুব কম সময়ে সবার মন জয় করার ক্ষমতা রাখে সে।মাথায় হাত দিয়ে কেবিনে বসে আছে। তখনি রুমে ঢুকলো কোম্পানির ম্যানেজার রুহুল আমিন সাহেব।

রুহুলঃ মাথা ব্যাথা করছে নাকি এনাজ?

এনাজঃ আসালামু আলাইকুম স্যার।কেমন আছেন?

রুহুলঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তুমি কেমন আছো?
এনাজঃ আলহামদুলিল্লাহ।

রুহুলঃ মুখ দেখে তো মনে হচ্ছে না ভালো আছো।কি হয়েছে তোমার?

এনাজঃ কিছু না।একটু মাথা ধরছে।কিছু বলবেন স্যার।হঠাৎ এই সময়।

রুহুলঃ একটা কথা বলতেই এসেছিলাম।তোমার শরীরটা যখন ভালো না তাহলে পরে বলব।

এনাজঃ না না সমস্যা নেই। বলুন আপনি।

রুহুলঃ পারিবারিক কাজের জন্য কিছু দিন ঢাকায় যেতে হবে।তুমি যদি আমার কাজগুলো একটু সামলে নিতে।অনেক জরুরি দরকার।তা না হলে যেতাম না।তোমার ওপর ভরসা আছে আমার।তাই এই দায়িত্ব তোমাকে দিতে চাইছি। অন্য কারো ওপর তোমার মতো ভরসা করতে পারি না।প্লিজ বাবা,তুমি আমাকে ফিরিয়ে দিও না।

এনাজঃ এ কেমন কথা স্যার।আপনি নিশ্চিন্তে আমার ওপর ভরসা করে যেতে পারেন।আমি অবশ্যই আপনার দেওয়া দায়িত্ব যথাযথ পালন করবো।এতটুকু আস্থা আমার নিজের ওপর আছে স্যার।

রুহুলঃ তুমি আমাকে চিন্তামুক্ত করলে বাবা।আল্লাহ তোমার ভালো করুক।আমি এখন আসছি।তুমি পিয়নকে ডেকে গরম গরম এক কাপ চা কিংবা কফি
খেয়ে নেও। মাথা ধরাটা কিছুটা হলেও কমবে।

এনাজঃ জ্বি আমি খেয়ে নিব।আমার ও আমার ছোট ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন স্যার।

রুহুলঃ আমার দোয়া সবসময় তোমাদের সাথে আছে।আর হ্যাঁ,শুনো তোমাকে বলতে হবে না।আমি এদিক দিয়ে যাওয়ার সময় পিয়নকে বলে দিবো।তোমার আর কষ্ট করে বলতে হবে না।

এনাজঃ ধন্যবাদ স্যার।

রুহুলঃ ধন্যবাদ দিয়ে আমাকে ছোট করো না এনাজ।ধন্যবাদ তো তুমি পাওনা আমার কাছ থেকে। আমি নয়।

এনাজ মুচকি হাসলো।রুহুল আমিন সাহেব এনাজের মাথায় হাত বুলিয়ে দ্রুত রুম ত্যাগ করলো।এনাজ তার যাওয়ার পানে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।

🍂🍂🍂

পরের দিন........

ক্লাসরুমে বসে হাই তুলছি নোভা।সাথে ওর বান্ধবী টিম।স্যার ক্লাস করছে যে টপিক নিয়ে তা ওর মাথার ওপর দিয়ে চলে যাচ্ছে। বিরক্ত হয়ে এদিক সেদিক তাকালো।ভেনেছিলো এখন ওর বান্ধবীদের সাথে লুকিয়ে গল্প করবে।তা আর হলো না।ওরা খুব মনোযোগ দিয়ে ক্লাস করছে।হাই তুলে ব্যাগ থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে মোবাইল বের করে নিজের ঠোঁটের লিপস্টিক চেক করলো।ঠোঁটের লিপস্টিক অনেকটা হালকা হয়ে গেছে। ক্লাস চলাকালীন সবার দিকে তাকিয়ে ব্যাগ থেকে লিপস্টিক বের করে ঠোঁটে ঘষতে শুরু করলো।এতটা মনোযোগ দিয়ে ঠোঁটে লিপস্টিক দিচ্ছে যে সামনে যে স্যার এসে দাঁড়িয়ে আছে সে দিকেও খেয়াল নেই।

আমি গুণগুণ করে গান গাইতে গাইতে লিপিস্টিক লাগাচ্ছিলাম।এমন সময় সিফা ওর হাত দিয়ে বারবার খোঁচা মারছে।আমি রেগে চিৎকার দিয়ে বললাম।

আমিঃ ঐ ছেমরি চোখে দেখস না লিপস্টিক দিতাছি।হাত দিয়ে খোঁচা মারছিস কেন?শান্তিতে কি একটু লিপস্টিকও দিতে দিবি না।তোদের এতো কি সমস্যা রে।সবাই আমার লিপস্টিকের পেছনে পরে আছিস।

সিফাঃ সামনে তাকা।(আস্তে করে)

আমিঃ ঐ ছেমরি সামনে কি দেখবো রে।আমার এতো দিকে নজর দেওয়ার টাইম নেই। আমি আগেও বলছি এখনও বললাম।আমি লিপস্টিক দেওয়ার সময় একটুও জ্বালাবিনা।শাঁকচুন্নি গুলো,আমার ভালো সহ্য হয় না।আমার লিপস্টিক পুরো নষ্ট করে দিলো।ধূর,কিছু ভালো লাগে না।

স্যারঃ আমি আয়নাটা ধরে তোমাকে লিপিস্টিক দিতে সাহায্য করি।

আমি তার দিকে না তাকিয়ে খুশি হয়ে বললাম।

আমিঃ তাহলে তো অনেক ভালো হয়।নিন আপনি আয়না ধরুন।আমি সুন্দর করে লিপস্টিক দিয়ে নেই।
স্যারঃ তোমার সাহস তো কম বড় না।স্যার কে বলো তোমার আয়না ধরতে।বেয়াদব মেয়ে কোথাকার?

আমি মাথা ঘুরিয়ে স্যারের দিকে তাকিয়ে হা হয়ে গেলাম।এতক্ষণ স্যারকে আমি এসব বলেছিলাম।আল্লাহ আমার এখন তেরটা বেজে যাবে।রক্ষা করো তুমি।আমি লিপস্টিক পেলে দীন-দুনিয়ার খবর কেন যে ভুলে যাই।

স্যারঃ এই মেয়ে ক্লাস রুম থেকে এখনি বের হয়ে যাও।
আমিঃ স্যার আমার কথাটা শুনুন।আমি বুঝতে পারিনি আপনি এখানে ছিলেন।(মাথা নিচু করে)

স্যারঃ একদম চুপ। আরেকবার কথা বললে আমি তোমার বাবা-মা কে ডাকবো।এই মুহুর্তে তুমি ক্লাস থেকে বের হয়ে যাবে।(রেগে)

আমি চুপচাপ ভালো মেয়ের মতো করে ব্যাগটা সামনে নিয়ে জাপটে ধরে ক্লাস রুম থেকে বের হয়ে গেলাম।বের হয়ে কিছু সময় উড়া ধুরা ডান্স করলাম ক্লাসের বাইরে।এখন আমি ফুচকা খেতে যাবো।সাথে কতগুলো লিপস্টিক কিনবো।বাজারে নিউ ব্রান্ডের কিছু লিপস্টিক এসেছে।স্যার আমাকে রুম থেকে বের করে দিয়ে আমার কাজ আসান করে দিয়েছে। নাচতে নাচতে ফুচকার স্টলের দিকে রওনা দিলাম।খুশিতে সিঁড়ি দিয়ে ব্যাঙের মতো লাফিয়ে লাফিয়ে নামলাম।আহা কি আনন্দ আকাশে,বাতাসে!!! আমি আজ অনেকগুলো রং-বেরঙের লিপস্টিক কিনবো।

#চলবে

07/10/2021

#ভালোবাসার_তুই



ওয়াস রুম থেকে বের হয়ে আশেপাশে তাকিয়ে কাউকে খুঁজলো ।গোসল সেরে তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে আরেকবার চোখ দুটো এদিকে সেদিকে ঘুরালো এনাম।না,কোথাও নেই। গেলো কোথায়?ঘুম থেকে উঠেও তো দেখলো না।বারান্দায়, কিচেনেও উঁকি মারলো সেখানে নেই ।সকাল সকাল কি একটা জলজ্যান্ত মানুষ উধাও হয়ে গেল।ঠিক তখনি সদর দরজা ঠেলে প্রবেশ করলো এনাজ।হাতে এক হালি ডিম দেখা যাচ্ছে। চোখ দুটো ছোট করে মুখে বিরক্তি নিয়ে এনাম ওর বড় ভাই এনাজের দিকে তাকালো।

এনামঃ কোথায় ছিলে তুমি??
এনাজঃ হাতে কি ডিম দেখতে পাচ্ছিস।না পেলে বল আমি দুটো তোর মাথায় ভেঙে দেখিয়ে দেই।
এনামঃ আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।তুমি এতো সকাল সকাল কোথায় চলে গিয়েছিলে?সব জায়গায় খুঁজে পাই নি।
এনাজঃ আজ তোর কলেজ নেই?
এনামঃ আছে তো।সেই জন্য সকাল সকাল গোসল করে তৈরি হয়ে নিয়েছি।অনেক খুদা লেগেছে ভাইয়া।জলদী কিছু করো।আজ কি বাসায় রান্না হয়েছে?
এনাজঃ ভাত রান্না করেছি।সাথে ভেবেছিলাম ডিম ভুনা করবো আলু দিয়ে। কিন্তু ফ্রিজ খুলে দেখি ডিম নেই। তাই দোকান থেকে গিয়ে ডিম নিয়ে এলাম।ভাই তুই একটু অপেক্ষা কর।ভাতের মার ঝরাতে দিয়ে গেছি।তারাতাড়ি করে এখন ডিম ভুনা করলে হয়ে যাবে।

এনাজ জলদী করে কিচেনে গিয়ে ছোট একটা পাতিলে ডিম সিদ্ধ বসিয়ে দিলো।ভাতের মার ঝরা শেষ হয়ে গেছে। তাই পাতিল উঠিয়ে ভাত একটা ছোট বোলে বেড়ে নিলো।এনাজ আহমেদ ও এনাম আহমেদ। সম্পর্কে আপন ভাই। ৩ বছরের ছোট-বড়।বাবা-মা খুব ছোটবেলায় মারা গেছে। এনাজের বয়স ২৬ বছর আর এনামের ২৩ বছর।এনাম এখনো পড়াশোনা করেছে। এনাজ মাস্টার্সে পড়ার পাশাপাশি একটা বেসরকারি কোম্পানিতে মোটামুটি ভালো পজিশনে চাকরি করে।দুই ভাই দেখতে, শুনতে মাশাল্লাহ। এতিম ছেলে হলেও দুজনের মাঝে কোন বেড হেবিট নেই। লোকজনের সাথে মেলামেশা খুব কম।এলাকার লোক ওদের দুজনকে ভালো হিসেবে জানে।দুই ভাই একটা ছোট বাসায় ভাড়া থাকে।

ডিম সিদ্ধ হতে হতে এনাজ একটা ছুরি নিয়ে আলু কুচি করে কেটে নিল।সাথে পেঁয়াজ ও মরিচ। রান্না করতে ভালোই পারে সে।বেঁচে থাকার তাগিদে রান্নাটাও শিখে নিয়েছিলো সে।খুব দ্রুত ডিমের খোসা ছারিয়ে নিলো। পেঁয়াজ লাল হয়ে এলে মশলা কষিয়ে নিলো।খুব জলদী করে রান্না শেষ করলো।এনাম তৈরি হয়ে এসে দেখলো তার বড় ভাই টেবিলে খাবার সাজাচ্ছে।

এনামঃ এতো তাড়াতাড়ি হয়ে গেল ভাই!!!
এনাজঃ আমি তোর মতো এতো অলস নই।
এনামঃ এভাবে অপমান না করলেও পারো ভাই।
এনাজঃ হয়েছে কথা কম বলে জলদী খেয়ে কলেজে যা।আমার অফিসের জন্য তৈরি হতে হবে।
এনামঃ আজ এত দেরী যে??
এনাজঃ অফিসে মিটিং আছে। ১০ টায় শুরু হবে।এতো তাড়াতাড়ি গিয়ে কাজ নেই।

দুই ভাই একসাথে বসে খাবার খেয়ে নিলো।দুপুরের খাবারটা ছারা বাকি দুই বেলা একসাথে খাবার খায় ওরা।দুই ভাইয়ের মধ্যে ভীষণ মিল।এনাম বোল থেকে ভাত বেড়ে নিয়ে এনাজকে বললো।

এনামঃ ভাই এবার একটা বিয়ে কর।তাহলে অন্ততপক্ষে আর কিছু হোক বা না হোক, সকালে তোকে এত কষ্ট করে রান্না করতে হবে না।
এনাজঃ খুব শীঘ্র একটা কাজের বুয়া রাখবো।ঢাকার শহরে কাজের মানুষ পাওয়া অনেক টাফ।
এনামঃ তুই কি বিয়ে করবি না?
এনাজঃ তুই রান্নার মানুষের চিন্তা করছিস তাই তোকে চিন্তামুক্ত করলাম।এখন বিয়ের কথা কেন বলছিস?
এনামঃ বয়স তো কম হলো না ভাইয়া।এবার তোর বিয়ে করা উচিত।তোর যদি কোন পছন্দ থাকে তাহলে তাকেই বিয়ে করে নিয়ে আয়।
এনাজঃ মেয়েটা কে?
এনামঃ কোন মেয়ে?
এনাজঃ তোর নিশ্চয়ই কোন মেয়ে পছন্দ হয়েছে। নয়তো আমাকে বিয়ের জন্য বলতি না।কোথায় এতোদিন তো এসব কথা বলিস নি।
এনামঃ আমি এমনি বলছি।তুমি নেগেটিভ মাইন্ডে নেও কেন?
এনাজঃ তোর এসব ফালতু বকবক শোনার সময় আমার নেই। আমার খাওয়া শেষ। তুই খাবার শেষ করে কলেজে চলে যা।আর হ্যাঁ,আমার বিয়ে নিয়ে তোর চিন্তা করতে হবে না।আমার যাকে পছন্দ হবে তাকেই বিয়ে করবো।বিয়েটা মনে হয় খুব তাড়াতাড়ি করতে চেলেছি।

আনমনে মুখ ফসকে কথাটা বলে ফেললো এনাজ।কিন্তু তার ছোট ভাই প্রথমে কিছু না বুঝলেও কিছু সময় পর জিজ্ঞেস করলো।

এনামঃ ভাই তুমি সবার শেষে কি বললে?তুমি খুব শীঘ্র বিয়ে করবো।কেউ পছন্দ আছে নাকি।প্লিজ ভাইয়া বলো না ভাবী কোথায়?আমি তাকে দেখতে চাই।

এনাজ জিহ্বায় কামড় দিয়ে অন্য দিকে ঘুরে গেলো।মুখ ফসকে কি বলে ফেললো সে?ঐ লিপস্টিক পাগলী ওর রাতের ঘুম হারাম করে ফেলেছে।এখন তার জন্য সবার সামনে উল্টো পাল্টা কথাও বলছে।মাত্র দুই দিনে মনের অনেক অংশ জুরে গেছে সে।

এনামঃ ভাইয়া বলো না, তোমার কেউ আছে নাকি?ভাবিকে ঘরে তুলবে কবে?প্লিজ, প্লিজ ভাইয়া। আমাকে ভাবীর সাথে দেখা করিয়ে দেও।
এনাজঃ কথা কম বল।তোর কোন ভাবী নেই।

এক মিনিট দেরী না করে হনহন করে চেয়ার থেকে উঠে রুমে চলে গেল। সেখানে গিয়ে অফিসের জন্য তৈরি হতে লাগলো।এনাম ঠোঁট উল্টে খাবারে মনোযোগ দিলো।খাবার শেষ করে যেতে নিলে পেছন থেকে এনাজ ডাক দিলো।এনাম পেছন দিকে না ঘুরে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো।সে এখন বড় ভাইয়ের সাথে রাগ করেছে।

এনাজঃ আমি তোদের কলেজের ঐ দিক দিয়েই যাবো।তোকে নামিয়ে দিয়ে যাবো।আমার সাথে বাইকে চলে যাস।

বাইকের চাবি নিয়ে কাঁধে ব্যাগটা ঝুলিয়ে নিলো এনাজ।তারপর ভাইয়ের সাথে বাইকে রওনা দিলো কলেজের উদ্দেশ্য।বাইক থামলো কলেজের গেইটে।এনাম কোন কথা না বলে ভেতরে ঢুকে গেল। পেছন থেকে জোরে ডাক দিলো এনাজ।কোন কথা না বলে এনাম ভেতরে চলে এলো।এনাজ বাইক সাইডে রেখে দৌড়ে এনামের কাছে এলো।কাঁধে হাত রেখে বললো।

এনাজঃ কি রে কি হয়েছে তোর?রাগ করেছিস আমার সাথে। নে ধর। টাকাগুলো রেখে দে।কাজে লাগবে।
এনামঃ (নিশ্চুপ)
এনাজঃ তোর ছোট বাচ্চাদের মতো অভিমান করা এখনো যায়নি।অনেক বড় হয়েছিস।কিছু দিন পর যখন আমি তোর সাথে থাকবো না। তখন কি করবি?
অস্ট্রেলিয়া গিয়ে তোকে পড়াশোনা করে অনেক বড় হতে হবে।

এনাম হুট করে ভাইকে জরিয়ে ধরলো। কাধে মুখ গুঁজে কান্না করলো।এনাজ আলতো হাতে ধরে রেখেছে। তার মনটাও সায় দেয় না ভাইকে দূরে পাঠাতে।কিন্তু ভাইয়ের ভালোর জন্য তো পাঠাতে হবেই।এনামকে নিজের থেকে ছারিয়ে টাকাগুলো ভাইয়ের পকেটে গুঁজে দিলো এনাজ।তারপর চোখ মুছতে মুছতে গেইট দিয়ে বের হয়ে গেল।এনাম দাঁড়িয়ে ভাইয়ের যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো। এই মানুষটা নিজের জন্য একফোঁটাও ভাবে না।সবকিছু তার এনামকে ঘিরে।এনাম ভালো থাকলেই এনাজ ভালো থাকে।দুই ভাই একে অপরের আত্মার সাথে মিশে আছে। কেউ কাউকে ছারা থাকতে পারে না।

এনামঃ সবসময় আমার কথা ভাববে।নিজের দিকে একটু নজর নেই। শুধুমাত্র আমার ভালোর জন্য আমাকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠাবে।নিজের ভবিষ্যতের জন্য একটুও খেয়াল নেই। বড় ভাইরা মনে হয় এমনি হয়।নিজের শখ,ইচ্ছা, সবকিছু বিসর্জন দিয়ে ছোট ভাইয়ের ভবিষ্যতে গড়ে দেয়।নিজের সুখগুলোকে বিসর্জন দিয়ে ছোট ভাই-বোনের শখ পূরণ করে দেয়। বড় ভাইরা নিজের আনন্দ বিক্রি করে অন্যের আনন্দ এনে দেয়।স্যালুট তোমাকে ভাই। তুমি না থাকলে আজ আমি এতদূর আসতে পারতাম না।রাস্তায় অনাহারে, অনাদরে,অবহেলায় মরেই যেতাম।

বড় করে একটা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে চুপচাপ হেঁটে ভেতরে চলে গেল। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে সব ছেড়ে নিজের ভাইয়ের সাথে থাকতে।কিন্তু তা হবে কিনা সে জানে না।অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার দিন তো ঘনিয়ে আসেছে।
কি হবে, কি করবে সেটা এনাম নিজেও জানে না।ভাইকে ছাড়া তার কিছুই ভালো লাগে না। মন খারাপ করে ক্লাস রুমে চলে গেল।

#চলবে #ভালোবাসার_তুই



ওয়াস রুম থেকে বের হয়ে আশেপাশে তাকিয়ে কাউকে খুঁজলো ।গোসল সেরে তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে আরেকবার চোখ দুটো এদিকে সেদিকে ঘুরালো এনাম।না,কোথাও নেই। গেলো কোথায়?ঘুম থেকে উঠেও তো দেখলো না।বারান্দায়, কিচেনেও উঁকি মারলো সেখানে নেই ।সকাল সকাল কি একটা জলজ্যান্ত মানুষ উধাও হয়ে গেল।ঠিক তখনি সদর দরজা ঠেলে প্রবেশ করলো এনাজ।হাতে এক হালি ডিম দেখা যাচ্ছে। চোখ দুটো ছোট করে মুখে বিরক্তি নিয়ে এনাম ওর বড় ভাই এনাজের দিকে তাকালো।

এনামঃ কোথায় ছিলে তুমি??
এনাজঃ হাতে কি ডিম দেখতে পাচ্ছিস।না পেলে বল আমি দুটো তোর মাথায় ভেঙে দেখিয়ে দেই।
এনামঃ আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।তুমি এতো সকাল সকাল কোথায় চলে গিয়েছিলে?সব জায়গায় খুঁজে পাই নি।
এনাজঃ আজ তোর কলেজ নেই?
এনামঃ আছে তো।সেই জন্য সকাল সকাল গোসল করে তৈরি হয়ে নিয়েছি।অনেক খুদা লেগেছে ভাইয়া।জলদী কিছু করো।আজ কি বাসায় রান্না হয়েছে?
এনাজঃ ভাত রান্না করেছি।সাথে ভেবেছিলাম ডিম ভুনা করবো আলু দিয়ে। কিন্তু ফ্রিজ খুলে দেখি ডিম নেই। তাই দোকান থেকে গিয়ে ডিম নিয়ে এলাম।ভাই তুই একটু অপেক্ষা কর।ভাতের মার ঝরাতে দিয়ে গেছি।তারাতাড়ি করে এখন ডিম ভুনা করলে হয়ে যাবে।

এনাজ জলদী করে কিচেনে গিয়ে ছোট একটা পাতিলে ডিম সিদ্ধ বসিয়ে দিলো।ভাতের মার ঝরা শেষ হয়ে গেছে। তাই পাতিল উঠিয়ে ভাত একটা ছোট বোলে বেড়ে নিলো।এনাজ আহমেদ ও এনাম আহমেদ। সম্পর্কে আপন ভাই। ৩ বছরের ছোট-বড়।বাবা-মা খুব ছোটবেলায় মারা গেছে। এনাজের বয়স ২৬ বছর আর এনামের ২৩ বছর।এনাম এখনো পড়াশোনা করেছে। এনাজ মাস্টার্সে পড়ার পাশাপাশি একটা বেসরকারি কোম্পানিতে মোটামুটি ভালো পজিশনে চাকরি করে।দুই ভাই দেখতে, শুনতে মাশাল্লাহ। এতিম ছেলে হলেও দুজনের মাঝে কোন বেড হেবিট নেই। লোকজনের সাথে মেলামেশা খুব কম।এলাকার লোক ওদের দুজনকে ভালো হিসেবে জানে।দুই ভাই একটা ছোট বাসায় ভাড়া থাকে।

ডিম সিদ্ধ হতে হতে এনাজ একটা ছুরি নিয়ে আলু কুচি করে কেটে নিল।সাথে পেঁয়াজ ও মরিচ। রান্না করতে ভালোই পারে সে।বেঁচে থাকার তাগিদে রান্নাটাও শিখে নিয়েছিলো সে।খুব দ্রুত ডিমের খোসা ছারিয়ে নিলো। পেঁয়াজ লাল হয়ে এলে মশলা কষিয়ে নিলো।খুব জলদী করে রান্না শেষ করলো।এনাম তৈরি হয়ে এসে দেখলো তার বড় ভাই টেবিলে খাবার সাজাচ্ছে।

এনামঃ এতো তাড়াতাড়ি হয়ে গেল ভাই!!!
এনাজঃ আমি তোর মতো এতো অলস নই।
এনামঃ এভাবে অপমান না করলেও পারো ভাই।
এনাজঃ হয়েছে কথা কম বলে জলদী খেয়ে কলেজে যা।আমার অফিসের জন্য তৈরি হতে হবে।
এনামঃ আজ এত দেরী যে??
এনাজঃ অফিসে মিটিং আছে। ১০ টায় শুরু হবে।এতো তাড়াতাড়ি গিয়ে কাজ নেই।

দুই ভাই একসাথে বসে খাবার খেয়ে নিলো।দুপুরের খাবারটা ছারা বাকি দুই বেলা একসাথে খাবার খায় ওরা।দুই ভাইয়ের মধ্যে ভীষণ মিল।এনাম বোল থেকে ভাত বেড়ে নিয়ে এনাজকে বললো।

এনামঃ ভাই এবার একটা বিয়ে কর।তাহলে অন্ততপক্ষে আর কিছু হোক বা না হোক, সকালে তোকে এত কষ্ট করে রান্না করতে হবে না।
এনাজঃ খুব শীঘ্র একটা কাজের বুয়া রাখবো।ঢাকার শহরে কাজের মানুষ পাওয়া অনেক টাফ।
এনামঃ তুই কি বিয়ে করবি না?
এনাজঃ তুই রান্নার মানুষের চিন্তা করছিস তাই তোকে চিন্তামুক্ত করলাম।এখন বিয়ের কথা কেন বলছিস?
এনামঃ বয়স তো কম হলো না ভাইয়া।এবার তোর বিয়ে করা উচিত।তোর যদি কোন পছন্দ থাকে তাহলে তাকেই বিয়ে করে নিয়ে আয়।
এনাজঃ মেয়েটা কে?
এনামঃ কোন মেয়ে?
এনাজঃ তোর নিশ্চয়ই কোন মেয়ে পছন্দ হয়েছে। নয়তো আমাকে বিয়ের জন্য বলতি না।কোথায় এতোদিন তো এসব কথা বলিস নি।
এনামঃ আমি এমনি বলছি।তুমি নেগেটিভ মাইন্ডে নেও কেন?
এনাজঃ তোর এসব ফালতু বকবক শোনার সময় আমার নেই। আমার খাওয়া শেষ। তুই খাবার শেষ করে কলেজে চলে যা।আর হ্যাঁ,আমার বিয়ে নিয়ে তোর চিন্তা করতে হবে না।আমার যাকে পছন্দ হবে তাকেই বিয়ে করবো।বিয়েটা মনে হয় খুব তাড়াতাড়ি করতে চেলেছি।

আনমনে মুখ ফসকে কথাটা বলে ফেললো এনাজ।কিন্তু তার ছোট ভাই প্রথমে কিছু না বুঝলেও কিছু সময় পর জিজ্ঞেস করলো।

এনামঃ ভাই তুমি সবার শেষে কি বললে?তুমি খুব শীঘ্র বিয়ে করবো।কেউ পছন্দ আছে নাকি।প্লিজ ভাইয়া বলো না ভাবী কোথায়?আমি তাকে দেখতে চাই।

এনাজ জিহ্বায় কামড় দিয়ে অন্য দিকে ঘুরে গেলো।মুখ ফসকে কি বলে ফেললো সে?ঐ লিপস্টিক পাগলী ওর রাতের ঘুম হারাম করে ফেলেছে।এখন তার জন্য সবার সামনে উল্টো পাল্টা কথাও বলছে।মাত্র দুই দিনে মনের অনেক অংশ জুরে গেছে সে।

এনামঃ ভাইয়া বলো না, তোমার কেউ আছে নাকি?ভাবিকে ঘরে তুলবে কবে?প্লিজ, প্লিজ ভাইয়া। আমাকে ভাবীর সাথে দেখা করিয়ে দেও।
এনাজঃ কথা কম বল।তোর কোন ভাবী নেই।

এক মিনিট দেরী না করে হনহন করে চেয়ার থেকে উঠে রুমে চলে গেল। সেখানে গিয়ে অফিসের জন্য তৈরি হতে লাগলো।এনাম ঠোঁট উল্টে খাবারে মনোযোগ দিলো।খাবার শেষ করে যেতে নিলে পেছন থেকে এনাজ ডাক দিলো।এনাম পেছন দিকে না ঘুরে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো।সে এখন বড় ভাইয়ের সাথে রাগ করেছে।

এনাজঃ আমি তোদের কলেজের ঐ দিক দিয়েই যাবো।তোকে নামিয়ে দিয়ে যাবো।আমার সাথে বাইকে চলে যাস।

বাইকের চাবি নিয়ে কাঁধে ব্যাগটা ঝুলিয়ে নিলো এনাজ।তারপর ভাইয়ের সাথে বাইকে রওনা দিলো কলেজের উদ্দেশ্য।বাইক থামলো কলেজের গেইটে।এনাম কোন কথা না বলে ভেতরে ঢুকে গেল। পেছন থেকে জোরে ডাক দিলো এনাজ।কোন কথা না বলে এনাম ভেতরে চলে এলো।এনাজ বাইক সাইডে রেখে দৌড়ে এনামের কাছে এলো।কাঁধে হাত রেখে বললো।

এনাজঃ কি রে কি হয়েছে তোর?রাগ করেছিস আমার সাথে। নে ধর। টাকাগুলো রেখে দে।কাজে লাগবে।
এনামঃ (নিশ্চুপ)
এনাজঃ তোর ছোট বাচ্চাদের মতো অভিমান করা এখনো যায়নি।অনেক বড় হয়েছিস।কিছু দিন পর যখন আমি তোর সাথে থাকবো না। তখন কি করবি?
অস্ট্রেলিয়া গিয়ে তোকে পড়াশোনা করে অনেক বড় হতে হবে।

এনাম হুট করে ভাইকে জরিয়ে ধরলো। কাধে মুখ গুঁজে কান্না করলো।এনাজ আলতো হাতে ধরে রেখেছে। তার মনটাও সায় দেয় না ভাইকে দূরে পাঠাতে।কিন্তু ভাইয়ের ভালোর জন্য তো পাঠাতে হবেই।এনামকে নিজের থেকে ছারিয়ে টাকাগুলো ভাইয়ের পকেটে গুঁজে দিলো এনাজ।তারপর চোখ মুছতে মুছতে গেইট দিয়ে বের হয়ে গেল।এনাম দাঁড়িয়ে ভাইয়ের যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো। এই মানুষটা নিজের জন্য একফোঁটাও ভাবে না।সবকিছু তার এনামকে ঘিরে।এনাম ভালো থাকলেই এনাজ ভালো থাকে।দুই ভাই একে অপরের আত্মার সাথে মিশে আছে। কেউ কাউকে ছারা থাকতে পারে না।

এনামঃ সবসময় আমার কথা ভাববে।নিজের দিকে একটু নজর নেই। শুধুমাত্র আমার ভালোর জন্য আমাকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠাবে।নিজের ভবিষ্যতের জন্য একটুও খেয়াল নেই। বড় ভাইরা মনে হয় এমনি হয়।নিজের শখ,ইচ্ছা, সবকিছু বিসর্জন দিয়ে ছোট ভাইয়ের ভবিষ্যতে গড়ে দেয়।নিজের সুখগুলোকে বিসর্জন দিয়ে ছোট ভাই-বোনের শখ পূরণ করে দেয়। বড় ভাইরা নিজের আনন্দ বিক্রি করে অন্যের আনন্দ এনে দেয়।স্যালুট তোমাকে ভাই। তুমি না থাকলে আজ আমি এতদূর আসতে পারতাম না।রাস্তায় অনাহারে, অনাদরে,অবহেলায় মরেই যেতাম।

বড় করে একটা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে চুপচাপ হেঁটে ভেতরে চলে গেল। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে সব ছেড়ে নিজের ভাইয়ের সাথে থাকতে।কিন্তু তা হবে কিনা সে জানে না।অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার দিন তো ঘনিয়ে আসেছে।
কি হবে, কি করবে সেটা এনাম নিজেও জানে না।ভাইকে ছাড়া তার কিছুই ভালো লাগে না। মন খারাপ করে ক্লাস রুমে চলে গেল।

#চলবে #ভালোবাসার_তুই



ওয়াস রুম থেকে বের হয়ে আশেপাশে তাকিয়ে কাউকে খুঁজলো ।গোসল সেরে তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে আরেকবার চোখ দুটো এদিকে সেদিকে ঘুরালো এনাম।না,কোথাও নেই। গেলো কোথায়?ঘুম থেকে উঠেও তো দেখলো না।বারান্দায়, কিচেনেও উঁকি মারলো সেখানে নেই ।সকাল সকাল কি একটা জলজ্যান্ত মানুষ উধাও হয়ে গেল।ঠিক তখনি সদর দরজা ঠেলে প্রবেশ করলো এনাজ।হাতে এক হালি ডিম দেখা যাচ্ছে। চোখ দুটো ছোট করে মুখে বিরক্তি নিয়ে এনাম ওর বড় ভাই এনাজের দিকে তাকালো।

এনামঃ কোথায় ছিলে তুমি??
এনাজঃ হাতে কি ডিম দেখতে পাচ্ছিস।না পেলে বল আমি দুটো তোর মাথায় ভেঙে দেখিয়ে দেই।
এনামঃ আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।তুমি এতো সকাল সকাল কোথায় চলে গিয়েছিলে?সব জায়গায় খুঁজে পাই নি।
এনাজঃ আজ তোর কলেজ নেই?
এনামঃ আছে তো।সেই জন্য সকাল সকাল গোসল করে তৈরি হয়ে নিয়েছি।অনেক খুদা লেগেছে ভাইয়া।জলদী কিছু করো।আজ কি বাসায় রান্না হয়েছে?
এনাজঃ ভাত রান্না করেছি।সাথে ভেবেছিলাম ডিম ভুনা করবো আলু দিয়ে। কিন্তু ফ্রিজ খুলে দেখি ডিম নেই। তাই দোকান থেকে গিয়ে ডিম নিয়ে এলাম।ভাই তুই একটু অপেক্ষা কর।ভাতের মার ঝরাতে দিয়ে গেছি।তারাতাড়ি করে এখন ডিম ভুনা করলে হয়ে যাবে।

এনাজ জলদী করে কিচেনে গিয়ে ছোট একটা পাতিলে ডিম সিদ্ধ বসিয়ে দিলো।ভাতের মার ঝরা শেষ হয়ে গেছে। তাই পাতিল উঠিয়ে ভাত একটা ছোট বোলে বেড়ে নিলো।এনাজ আহমেদ ও এনাম আহমেদ। সম্পর্কে আপন ভাই। ৩ বছরের ছোট-বড়।বাবা-মা খুব ছোটবেলায় মারা গেছে। এনাজের বয়স ২৬ বছর আর এনামের ২৩ বছর।এনাম এখনো পড়াশোনা করেছে। এনাজ মাস্টার্সে পড়ার পাশাপাশি একটা বেসরকারি কোম্পানিতে মোটামুটি ভালো পজিশনে চাকরি করে।দুই ভাই দেখতে, শুনতে মাশাল্লাহ। এতিম ছেলে হলেও দুজনের মাঝে কোন বেড হেবিট নেই। লোকজনের সাথে মেলামেশা খুব কম।এলাকার লোক ওদের দুজনকে ভালো হিসেবে জানে।দুই ভাই একটা ছোট বাসায় ভাড়া থাকে।

ডিম সিদ্ধ হতে হতে এনাজ একটা ছুরি নিয়ে আলু কুচি করে কেটে নিল।সাথে পেঁয়াজ ও মরিচ। রান্না করতে ভালোই পারে সে।বেঁচে থাকার তাগিদে রান্নাটাও শিখে নিয়েছিলো সে।খুব দ্রুত ডিমের খোসা ছারিয়ে নিলো। পেঁয়াজ লাল হয়ে এলে মশলা কষিয়ে নিলো।খুব জলদী করে রান্না শেষ করলো।এনাম তৈরি হয়ে এসে দেখলো তার বড় ভাই টেবিলে খাবার সাজাচ্ছে।

এনামঃ এতো তাড়াতাড়ি হয়ে গেল ভাই!!!
এনাজঃ আমি তোর মতো এতো অলস নই।
এনামঃ এভাবে অপমান না করলেও পারো ভাই।
এনাজঃ হয়েছে কথা কম বলে জলদী খেয়ে কলেজে যা।আমার অফিসের জন্য তৈরি হতে হবে।
এনামঃ আজ এত দেরী যে??
এনাজঃ অফিসে মিটিং আছে। ১০ টায় শুরু হবে।এতো তাড়াতাড়ি গিয়ে কাজ নেই।

দুই ভাই একসাথে বসে খাবার খেয়ে নিলো।দুপুরের খাবারটা ছারা বাকি দুই বেলা একসাথে খাবার খায় ওরা।দুই ভাইয়ের মধ্যে ভীষণ মিল।এনাম বোল থেকে ভাত বেড়ে নিয়ে এনাজকে বললো।

এনামঃ ভাই এবার একটা বিয়ে কর।তাহলে অন্ততপক্ষে আর কিছু হোক বা না হোক, সকালে তোকে এত কষ্ট করে রান্না করতে হবে না।
এনাজঃ খুব শীঘ্র একটা কাজের বুয়া রাখবো।ঢাকার শহরে কাজের মানুষ পাওয়া অনেক টাফ।
এনামঃ তুই কি বিয়ে করবি না?
এনাজঃ তুই রান্নার মানুষের চিন্তা করছিস তাই তোকে চিন্তামুক্ত করলাম।এখন বিয়ের কথা কেন বলছিস?
এনামঃ বয়স তো কম হলো না ভাইয়া।এবার তোর বিয়ে করা উচিত।তোর যদি কোন পছন্দ থাকে তাহলে তাকেই বিয়ে করে নিয়ে আয়।
এনাজঃ মেয়েটা কে?
এনামঃ কোন মেয়ে?
এনাজঃ তোর নিশ্চয়ই কোন মেয়ে পছন্দ হয়েছে। নয়তো আমাকে বিয়ের জন্য বলতি না।কোথায় এতোদিন তো এসব কথা বলিস নি।
এনামঃ আমি এমনি বলছি।তুমি নেগেটিভ মাইন্ডে নেও কেন?
এনাজঃ তোর এসব ফালতু বকবক শোনার সময় আমার নেই। আমার খাওয়া শেষ। তুই খাবার শেষ করে কলেজে চলে যা।আর হ্যাঁ,আমার বিয়ে নিয়ে তোর চিন্তা করতে হবে না।আমার যাকে পছন্দ হবে তাকেই বিয়ে করবো।বিয়েটা মনে হয় খুব তাড়াতাড়ি করতে চেলেছি।

আনমনে মুখ ফসকে কথাটা বলে ফেললো এনাজ।কিন্তু তার ছোট ভাই প্রথমে কিছু না বুঝলেও কিছু সময় পর জিজ্ঞেস করলো।

এনামঃ ভাই তুমি সবার শেষে কি বললে?তুমি খুব শীঘ্র বিয়ে করবো।কেউ পছন্দ আছে নাকি।প্লিজ ভাইয়া বলো না ভাবী কোথায়?আমি তাকে দেখতে চাই।

এনাজ জিহ্বায় কামড় দিয়ে অন্য দিকে ঘুরে গেলো।মুখ ফসকে কি বলে ফেললো সে?ঐ লিপস্টিক পাগলী ওর রাতের ঘুম হারাম করে ফেলেছে।এখন তার জন্য সবার সামনে উল্টো পাল্টা কথাও বলছে।মাত্র দুই দিনে মনের অনেক অংশ জুরে গেছে সে।

এনামঃ ভাইয়া বলো না, তোমার কেউ আছে নাকি?ভাবিকে ঘরে তুলবে কবে?প্লিজ, প্লিজ ভাইয়া। আমাকে ভাবীর সাথে দেখা করিয়ে দেও।
এনাজঃ কথা কম বল।তোর কোন ভাবী নেই।

এক মিনিট দেরী না করে হনহন করে চেয়ার থেকে উঠে রুমে চলে গেল। সেখানে গিয়ে অফিসের জন্য তৈরি হতে লাগলো।এনাম ঠোঁট উল্টে খাবারে মনোযোগ দিলো।খাবার শেষ করে যেতে নিলে পেছন থেকে এনাজ ডাক দিলো।এনাম পেছন দিকে না ঘুরে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো।সে এখন বড় ভাইয়ের সাথে রাগ করেছে।

এনাজঃ আমি তোদের কলেজের ঐ দিক দিয়েই যাবো।তোকে নামিয়ে দিয়ে যাবো।আমার সাথে বাইকে চলে যাস।

বাইকের চাবি নিয়ে কাঁধে ব্যাগটা ঝুলিয়ে নিলো এনাজ।তারপর ভাইয়ের সাথে বাইকে রওনা দিলো কলেজের উদ্দেশ্য।বাইক থামলো কলেজের গেইটে।এনাম কোন কথা না বলে ভেতরে ঢুকে গেল। পেছন থেকে জোরে ডাক দিলো এনাজ।কোন কথা না বলে এনাম ভেতরে চলে এলো।এনাজ বাইক সাইডে রেখে দৌড়ে এনামের কাছে এলো।কাঁধে হাত রেখে বললো।

এনাজঃ কি রে কি হয়েছে তোর?রাগ করেছিস আমার সাথে। নে ধর। টাকাগুলো রেখে দে।কাজে লাগবে।
এনামঃ (নিশ্চুপ)
এনাজঃ তোর ছোট বাচ্চাদের মতো অভিমান করা এখনো যায়নি।অনেক বড় হয়েছিস।কিছু দিন পর যখন আমি তোর সাথে থাকবো না। তখন কি করবি?
অস্ট্রেলিয়া গিয়ে তোকে পড়াশোনা করে অনেক বড় হতে হবে।

এনাম হুট করে ভাইকে জরিয়ে ধরলো। কাধে মুখ গুঁজে কান্না করলো।এনাজ আলতো হাতে ধরে রেখেছে। তার মনটাও সায় দেয় না ভাইকে দূরে পাঠাতে।কিন্তু ভাইয়ের ভালোর জন্য তো পাঠাতে হবেই।এনামকে নিজের থেকে ছারিয়ে টাকাগুলো ভাইয়ের পকেটে গুঁজে দিলো এনাজ।তারপর চোখ মুছতে মুছতে গেইট দিয়ে বের হয়ে গেল।এনাম দাঁড়িয়ে ভাইয়ের যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো। এই মানুষটা নিজের জন্য একফোঁটাও ভাবে না।সবকিছু তার এনামকে ঘিরে।এনাম ভালো থাকলেই এনাজ ভালো থাকে।দুই ভাই একে অপরের আত্মার সাথে মিশে আছে। কেউ কাউকে ছারা থাকতে পারে না।

এনামঃ সবসময় আমার কথা ভাববে।নিজের দিকে একটু নজর নেই। শুধুমাত্র আমার ভালোর জন্য আমাকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠাবে।নিজের ভবিষ্যতের জন্য একটুও খেয়াল নেই। বড় ভাইরা মনে হয় এমনি হয়।নিজের শখ,ইচ্ছা, সবকিছু বিসর্জন দিয়ে ছোট ভাইয়ের ভবিষ্যতে গড়ে দেয়।নিজের সুখগুলোকে বিসর্জন দিয়ে ছোট ভাই-বোনের শখ পূরণ করে দেয়। বড় ভাইরা নিজের আনন্দ বিক্রি করে অন্যের আনন্দ এনে দেয়।স্যালুট তোমাকে ভাই। তুমি না থাকলে আজ আমি এতদূর আসতে পারতাম না।রাস্তায় অনাহারে, অনাদরে,অবহেলায় মরেই যেতাম।

বড় করে একটা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে চুপচাপ হেঁটে ভেতরে চলে গেল। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে সব ছেড়ে নিজের ভাইয়ের সাথে থাকতে।কিন্তু তা হবে কিনা সে জানে না।অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার দিন তো ঘনিয়ে আসেছে।
কি হবে, কি করবে সেটা এনাম নিজেও জানে না।ভাইকে ছাড়া তার কিছুই ভালো লাগে না। মন খারাপ করে ক্লাস রুমে চলে গেল।

#চলবে #ভালোবাসার_তুই



ওয়াস রুম থেকে বের হয়ে আশেপাশে তাকিয়ে কাউকে খুঁজলো ।গোসল সেরে তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে আরেকবার চোখ দুটো এদিকে সেদিকে ঘুরালো এনাম।না,কোথাও নেই। গেলো কোথায়?ঘুম থেকে উঠেও তো দেখলো না।বারান্দায়, কিচেনেও উঁকি মারলো সেখানে নেই ।সকাল সকাল কি একটা জলজ্যান্ত মানুষ উধাও হয়ে গেল।ঠিক তখনি সদর দরজা ঠেলে প্রবেশ করলো এনাজ।হাতে এক হালি ডিম দেখা যাচ্ছে। চোখ দুটো ছোট করে মুখে বিরক্তি নিয়ে এনাম ওর বড় ভাই এনাজের দিকে তাকালো।

এনামঃ কোথায় ছিলে তুমি??
এনাজঃ হাতে কি ডিম দেখতে পাচ্ছিস।না পেলে বল আমি দুটো তোর মাথায় ভেঙে দেখিয়ে দেই।
এনামঃ আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।তুমি এতো সকাল সকাল কোথায় চলে গিয়েছিলে?সব জায়গায় খুঁজে পাই নি।
এনাজঃ আজ তোর কলেজ নেই?
এনামঃ আছে তো।সেই জন্য সকাল সকাল গোসল করে তৈরি হয়ে নিয়েছি।অনেক খুদা লেগেছে ভাইয়া।জলদী কিছু করো।আজ কি বাসায় রান্না হয়েছে?
এনাজঃ ভাত রান্না করেছি।সাথে ভেবেছিলাম ডিম ভুনা করবো আলু দিয়ে। কিন্তু ফ্রিজ খুলে দেখি ডিম নেই। তাই দোকান থেকে গিয়ে ডিম নিয়ে এলাম।ভাই তুই একটু অপেক্ষা কর।ভাতের মার ঝরাতে দিয়ে গেছি।তারাতাড়ি করে এখন ডিম ভুনা করলে হয়ে যাবে।

এনাজ জলদী করে কিচেনে গিয়ে ছোট একটা পাতিলে ডিম সিদ্ধ বসিয়ে দিলো।ভাতের মার ঝরা শেষ হয়ে গেছে। তাই পাতিল উঠিয়ে ভাত একটা ছোট বোলে বেড়ে নিলো।এনাজ আহমেদ ও এনাম আহমেদ। সম্পর্কে আপন ভাই। ৩ বছরের ছোট-বড়।বাবা-মা খুব ছোটবেলায় মারা গেছে। এনাজের বয়স ২৬ বছর আর এনামের ২৩ বছর।এনাম এখনো পড়াশোনা করেছে। এনাজ মাস্টার্সে পড়ার পাশাপাশি একটা বেসরকারি কোম্পানিতে মোটামুটি ভালো পজিশনে চাকরি করে।দুই ভাই দেখতে, শুনতে মাশাল্লাহ। এতিম ছেলে হলেও দুজনের মাঝে কোন বেড হেবিট নেই। লোকজনের সাথে মেলামেশা খুব কম।এলাকার লোক ওদের দুজনকে ভালো হিসেবে জানে।দুই ভাই একটা ছোট বাসায় ভাড়া থাকে।

ডিম সিদ্ধ হতে হতে এনাজ একটা ছুরি নিয়ে আলু কুচি করে কেটে নিল।সাথে পেঁয়াজ ও মরিচ। রান্না করতে ভালোই পারে সে।বেঁচে থাকার তাগিদে রান্নাটাও শিখে নিয়েছিলো সে।খুব দ্রুত ডিমের খোসা ছারিয়ে নিলো। পেঁয়াজ লাল হয়ে এলে মশলা কষিয়ে নিলো।খুব জলদী করে রান্না শেষ করলো।এনাম তৈরি হয়ে এসে দেখলো তার বড় ভাই টেবিলে খাবার সাজাচ্ছে।

এনামঃ এতো তাড়াতাড়ি হয়ে গেল ভাই!!!
এনাজঃ আমি তোর মতো এতো অলস নই।
এনামঃ এভাবে অপমান না করলেও পারো ভাই।
এনাজঃ হয়েছে কথা কম বলে জলদী খেয়ে কলেজে যা।আমার অফিসের জন্য তৈরি হতে হবে।
এনামঃ আজ এত দেরী যে??
এনাজঃ অফিসে মিটিং আছে। ১০ টায় শুরু হবে।এতো তাড়াতাড়ি গিয়ে কাজ নেই।

দুই ভাই একসাথে বসে খাবার খেয়ে নিলো।দুপুরের খাবারটা ছারা বাকি দুই বেলা একসাথে খাবার খায় ওরা।দুই ভাইয়ের মধ্যে ভীষণ মিল।এনাম বোল থেকে ভাত বেড়ে নিয়ে এনাজকে বললো।

এনামঃ ভাই এবার একটা বিয়ে কর।তাহলে অন্ততপক্ষে আর কিছু হোক বা না হোক, সকালে তোকে এত কষ্ট করে রান্না করতে হবে না।
এনাজঃ খুব শীঘ্র একটা কাজের বুয়া রাখবো।ঢাকার শহরে কাজের মানুষ পাওয়া অনেক টাফ।
এনামঃ তুই কি বিয়ে করবি না?
এনাজঃ তুই রান্নার মানুষের চিন্তা করছিস তাই তোকে চিন্তামুক্ত করলাম।এখন বিয়ের কথা কেন বলছিস?
এনামঃ বয়স তো কম হলো না ভাইয়া।এবার তোর বিয়ে করা উচিত।তোর যদি কোন পছন্দ থাকে তাহলে তাকেই বিয়ে করে নিয়ে আয়।
এনাজঃ মেয়েটা কে?
এনামঃ কোন মেয়ে?
এনাজঃ তোর নিশ্চয়ই কোন মেয়ে পছন্দ হয়েছে। নয়তো আমাকে বিয়ের জন্য বলতি না।কোথায় এতোদিন তো এসব কথা বলিস নি।
এনামঃ আমি এমনি বলছি।তুমি নেগেটিভ মাইন্ডে নেও কেন?
এনাজঃ তোর এসব ফালতু বকবক শোনার সময় আমার নেই। আমার খাওয়া শেষ। তুই খাবার শেষ করে কলেজে চলে যা।আর হ্যাঁ,আমার বিয়ে নিয়ে তোর চিন্তা করতে হবে না।আমার যাকে পছন্দ হবে তাকেই বিয়ে করবো।বিয়েটা মনে হয় খুব তাড়াতাড়ি করতে চেলেছি।

আনমনে মুখ ফসকে কথাটা বলে ফেললো এনাজ।কিন্তু তার ছোট ভাই প্রথমে কিছু না বুঝলেও কিছু সময় পর জিজ্ঞেস করলো।

এনামঃ ভাই তুমি সবার শেষে কি বললে?তুমি খুব শীঘ্র বিয়ে করবো।কেউ পছন্দ আছে নাকি।প্লিজ ভাইয়া বলো না ভাবী কোথায়?আমি তাকে দেখতে চাই।

এনাজ জিহ্বায় কামড় দিয়ে অন্য দিকে ঘুরে গেলো।মুখ ফসকে কি বলে ফেললো সে?ঐ লিপস্টিক পাগলী ওর রাতের ঘুম হারাম করে ফেলেছে।এখন তার জন্য সবার সামনে উল্টো পাল্টা কথাও বলছে।মাত্র দুই দিনে মনের অনেক অংশ জুরে গেছে সে।

এনামঃ ভাইয়া বলো না, তোমার কেউ আছে নাকি?ভাবিকে ঘরে তুলবে কবে?প্লিজ, প্লিজ ভাইয়া। আমাকে ভাবীর সাথে দেখা করিয়ে দেও।
এনাজঃ কথা কম বল।তোর কোন ভাবী নেই।

এক মিনিট দেরী না করে হনহন করে চেয়ার থেকে উঠে রুমে চলে গেল। সেখানে গিয়ে অফিসের জন্য তৈরি হতে লাগলো।এনাম ঠোঁট উল্টে খাবারে মনোযোগ দিলো।খাবার শেষ করে যেতে নিলে পেছন থেকে এনাজ ডাক দিলো।এনাম পেছন দিকে না ঘুরে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো।সে এখন বড় ভাইয়ের সাথে রাগ করেছে।

এনাজঃ আমি তোদের কলেজের ঐ দিক দিয়েই যাবো।তোকে নামিয়ে দিয়ে যাবো।আমার সাথে বাইকে চলে যাস।

বাইকের চাবি নিয়ে কাঁধে ব্যাগটা ঝুলিয়ে নিলো এনাজ।তারপর ভাইয়ের সাথে বাইকে রওনা দিলো কলেজের উদ্দেশ্য।বাইক থামলো কলেজের গেইটে।এনাম কোন কথা না বলে ভেতরে ঢুকে গেল। পেছন থেকে জোরে ডাক দিলো এনাজ।কোন কথা না বলে এনাম ভেতরে চলে এলো।এনাজ বাইক সাইডে রেখে দৌড়ে এনামের কাছে এলো।কাঁধে হাত রেখে বললো।

এনাজঃ কি রে কি হয়েছে তোর?রাগ করেছিস আমার সাথে। নে ধর। টাকাগুলো রেখে দে।কাজে লাগবে।
এনামঃ (নিশ্চুপ)
এনাজঃ তোর ছোট বাচ্চাদের মতো অভিমান করা এখনো যায়নি।অনেক বড় হয়েছিস।কিছু দিন পর যখন আমি তোর সাথে থাকবো না। তখন কি করবি?
অস্ট্রেলিয়া গিয়ে তোকে পড়াশোনা করে অনেক বড় হতে হবে।

এনাম হুট করে ভাইকে জরিয়ে ধরলো। কাধে মুখ গুঁজে কান্না করলো।এনাজ আলতো হাতে ধরে রেখেছে। তার মনটাও সায় দেয় না ভাইকে দূরে পাঠাতে।কিন্তু ভাইয়ের ভালোর জন্য তো পাঠাতে হবেই।এনামকে নিজের থেকে ছারিয়ে টাকাগুলো ভাইয়ের পকেটে গুঁজে দিলো এনাজ।তারপর চোখ মুছতে মুছতে গেইট দিয়ে বের হয়ে গেল।এনাম দাঁড়িয়ে ভাইয়ের যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো। এই মানুষটা নিজের জন্য একফোঁটাও ভাবে না।সবকিছু তার এনামকে ঘিরে।এনাম ভালো থাকলেই এনাজ ভালো থাকে।দুই ভাই একে অপরের আত্মার সাথে মিশে আছে। কেউ কাউকে ছারা থাকতে পারে না।

এনামঃ সবসময় আমার কথা ভাববে।নিজের দিকে একটু নজর নেই। শুধুমাত্র আমার ভালোর জন্য আমাকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠাবে।নিজের ভবিষ্যতের জন্য একটুও খেয়াল নেই। বড় ভাইরা মনে হয় এমনি হয়।নিজের শখ,ইচ্ছা, সবকিছু বিসর্জন দিয়ে ছোট ভাইয়ের ভবিষ্যতে গড়ে দেয়।নিজের সুখগুলোকে বিসর্জন দিয়ে ছোট ভাই-বোনের শখ পূরণ করে দেয়। বড় ভাইরা নিজের আনন্দ বিক্রি করে অন্যের আনন্দ এনে দেয়।স্যালুট তোমাকে ভাই। তুমি না থাকলে আজ আমি এতদূর আসতে পারতাম না।রাস্তায় অনাহারে, অনাদরে,অবহেলায় মরেই যেতাম।

বড় করে একটা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে চুপচাপ হেঁটে ভেতরে চলে গেল। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে সব ছেড়ে নিজের ভাইয়ের সাথে থাকতে।কিন্তু তা হবে কিনা সে জানে না।অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার দিন তো ঘনিয়ে আসেছে।
কি হবে, কি করবে সেটা এনাম নিজেও জানে না।ভাইকে ছাড়া তার কিছুই ভালো লাগে না। মন খারাপ করে ক্লাস রুমে চলে গেল।

#চলবে

Address

Chandpur

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Nusrat Jahan bithy posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Videos

Share

Category