জল ও জীবন

জল ও জীবন জলাকীর্ণ জনপদের শিল্প-সাহিত্যের মূখপত্র ।
ইমেইল: [email protected]

ঐতিহাসিক ও সমসাময়িক ঘটনাবলীর অনবদ‌্য মি‌শেলে জীবন‌বো‌ধের এক অনন‌্য গল্প ভগ্নাংশ। রাজনী‌তি আর মান‌বিক মূল‌্যবো‌ধের  এ প...
18/02/2022

ঐতিহাসিক ও সমসাময়িক ঘটনাবলীর অনবদ‌্য মি‌শেলে জীবন‌বো‌ধের এক অনন‌্য গল্প ভগ্নাংশ। রাজনী‌তি আর মান‌বিক মূল‌্যবো‌ধের এ পারস্প‌রিক প্রবাহ জান‌তে পড়‌তে হ‌বে লেখক আর কে পা‌ণ্ডে'র ভগ্নাংশ বই‌টি।
দেশ পাব‌লি‌কেশন থে‌কে প্রকা‌শিত এ বই‌টি পাওয়া যা‌চ্ছে অমর একু‌শে বই মেলায় পাওয়া যা‌চ্ছে ৪৬১, ৪৬২ ও ৪৬৩ নম্বর স্ট‌লে।

09/02/2022

প্রেম , তার কবিকে
-জয় গোস্বামী

হাতছানি দিইনি, ইশারা করিনি, কোথাও দাঁড়াতে বলিনি,
হাসিনি, হাসি লুকোইনি, চিঠি পাঠাইনি বোনের হাতে,
শুধু চেনা দিয়েছি আর চেনা দিয়েছি,
কখনো গাছের পাতা সরিয়ে, কখনো জানলার পর্দা সরিয়ে,
জল থেকে উঠে কখনো, কখনো সামনের সিট থেকে
চেনা দিয়ে গেছি...
আর তুমিও, শুধু আমাকে দেখবার জন্যেই,
এতদিন ধরে এতবার
গাছের দিকে তাকিয়েছ, জানলার দিকে তাকিয়েছ, জলের দিকে তাকিয়েছ,
তাকিয়েছ প্রত্যেক রাস্তায়-

তাও একবার নিজে থেকে বলতে পারলে না?

28/12/2021

জেল থেকে বেরিয়েই শুনি- “এই দেশে
সমাজতন্ত্রের কোনো ভবিষৎ নেই।”
তিন যুগ কবিতা লেখার শেষে আমরা জেনেছি--
আমাদের কিছুই হয়নি
চমকে দেওয়ার মতো গল্প ছাড়া কবিতা হবে না

ভালোবেসে কাঙাল হওয়ার পরে বোঝা গেল
প্রেম মানে পাগলামি নয়--
এ-ও এক হিসাববিজ্ঞান, সবচে’ উত্তম কাজ
দেরি না করেই সরে পড়া, কোনো প্রমাণ না রেখে!

“এইসব ভুলভাল যাপনের ফলে আমরা কোথায় যাব?”
এমন কথায় হেসে উঠে গুরু বললেন—
“কেন? বোকারা যেখানে যায়…”

-- সরদার ফারুক

28/12/2021

উড়িয়ে দাও দুপুর তোমার
- রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ

মেলার মধ্যে একটুখানি খোলামেলা-
একটুখানি কেন ?
খোলামেলা একটুখানি কেন ?

খুলতে পারো হৃদয় তোমার সমস্তটুক,
দেবদারু চুল খুলতে পারো
ভুরুর পাশে কাটা দাগের সবুজ স্মৃতি
স্বপ্ন এবং আগামীকাল এবং তোমার
সবচে’ গোপন লজ্জাটিও খুলতে পারো।
উড়িয়ে দিতে পারো তোমার স্মৃতির ফসিল-

উড়িয়ে দাও দুপুর তোমার শিমুল তুলো,
মেঘের খোঁপায় মুখর বিকেল উড়িয়ে দাও,
উড়িয়ে দাও ব্রীজের নিচের স্বচ্ছ জলে
স্বপ্ন লেখা সবুজ কাগজ।

এ বৈশাখে হাত মেলে চাও ঝড়ের ঝাপটা,
ভেজা মাটির গন্ধে ফেলে পায়ের আঙুল
এ বৈশাখে হাত মেলে চাও জীবন বদল।

17/12/2021

১৯৮০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। সম্পাদনা করছেন সাহিত্যবিষয়ক পত্রিকা-মা....

17/12/2021
09/12/2021

শঙ্খমালা
— জীবনানন্দ দাশ

কান্তারের পথ ছেড়ে সন্ধ্যার আঁধারে
সে কে এক নারী এসে ডাকিল আমারে,
বলিল, তোমারে চাই:
বেতের ফলের মতো নীলাভ ব্যথিত তোমার দুই চোখ
খুঁজেছি নক্ষত্রে আমি- কুয়াশার পাখনায়-

সন্ধ্যার নদীর জলে নামে যে আলোক
জোনাকির দেহ হতে-খুজেছি তোমারে সেইখানে-
ধূসর পেচার মতো ডানা মেলে অঘ্রাণের অন্ধকারে
ধানসিড়ি বেয়ে-বেয়ে
সোনার সিঁড়ির মতো ধানে আর ধানে
তোমারে খুঁজছি আমি নির্জন পেঁচার মতো প্রাণে।

দেখিলাম দেহ তার বিমর্ষ পাখির রঙে ভরা;
সন্ধ্যার আঁধারে ভিজে শিরীষের ডালে যেই পাখি দেয় ধরা-
বাঁকা চাঁদ থাকে যার মাথার উপর,
শিঙের মতন বাঁকা নীল চাঁদ শোনে যার স্বর।

কড়ির মতন সাদা মুখ তার;
দুইখানা হাত তার হিম;
চোখে তার হিজল কাঠের রক্তিম
চিতা জ্বলে: দক্ষিণ শিয়রে মাথা শঙ্খমালা যেন পুড়ে যায়
সে আগুনে হায়।

চোখে তার
যেন শত শতাব্দীর নীল অন্ধকার!
স্তন তার
করুণ শঙ্খের মতো – দুধে আর্দ্র-কবেকার শঙ্খিনীমালার!
এ পৃথিবী একবার পায় তারে, পায় নাকো আর।

30/11/2021

আমি চলে যাচ্ছি
- নির্মলেন্দু গুণ

জয় করবার মতো একটি মনও যখন আর অবশিষ্ট নেই,
তখন আমার আর বসে থেকে কী প্রয়োজন? আমি যাই।
তোমরা পানপাত্র হাতে হোয়াং হো রেস্তোঁরার নির্জনতায়
মৃদু আলোর নিচে বসে মৃদুলের গান শোনো, আমি যাই।
মহাদেব-নীলা-অসীম-অঞ্জনা-কবীর-বদরুন আমি যাই,
ইয়াহিয়া, আমি চললাম। এই-যে নাসরিন, আমি আসি।

যদি কোনোদিন এই রাত্রি ভোর হয়, যদি কখনো আবার
সূর্য ওঠে রূপসী বাংলায়, আবার কখনো যদি ফিরে পাই
আমার যৌবন, যদি পাই অনন্ত স্বপ্নের মতো নারী, কবি
না হয়ে, অন্য যা-কিছু হয়ে আমি ফিরে আসতেও পারি।

অভিভূত কবির মতন নারীকে আমি ভালোবেসেছিলাম।
সুচিত্রা সেনের মতো অপরূপা, বিদুষী-সুন্দরী ছিল তারা,
তাদের দেহে স্বর্গের লাবণ্য ছিল কিন্তু হৃদয় ছিল ঘাস।
আমার প্রেম নিয়ে তারা কত রকমের যে রহস্য করেছে-
গাধা ভেবে কেউবা নাকের ডগায় ঝুলিয়ে দিয়েছে মুলো;
কেউবা উরাত দেখিয়ে-দেখিয়ে কাটিয়েছে কাল। তারপর
একদিন সর্পচর্মবৎ আমাকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে চলে গেছে
দূরে। আমি নিঃস্ব গৃহকোণে, তারা ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বে।
অথচ তাদের কথা ভেবে আমি কেঁদেছি নিদ্রায়-জাগরণে।
এখন আমারও হৃদয়ে আর প্রেম নেই, ভালোবাসা নেই,
বাসনার আলোড়ন নেই, আজ আমারও হৃদয়ে শুধু ঘাস,
শুধু স্মৃতি, শুধু স্মৃতি, শুধু স্মৃতি আর স্মৃতির দীর্ঘশ্বাস।

জয় করবার মতো একটি মনও যখন আর অবশিষ্ট নেই,
তখন আর আমার বসে থেকে কী প্রয়োজন? আমি আর
কতো ভালোবাসবো? আর কার জন্যে অপেক্ষা আমার?
তার চেয়ে এই কি যথার্থ নয়? আমি খুব দূরে চলে যাই।

যদি কোনোদিন এই রাত্রি ভোর হয়, আবার কখনো যদি
সূর্য ওঠে নিষ্ঠুর বাংলায়, আবার কখনও যদি ফিরে পাই
আমার যৌবন, যদি পাই আমার স্বপ্নের সেই নারী, কবি
না হয়ে, অন্য যা-কিছু হয়ে আমি ফিরে আসতেও পারি।

তোমরা পানপাত্র হাতে হোয়াং হো রেস্তোঁরার নির্জনতায়
মৃদু আলোর নিচে বসে মৃদুলের গান শোনো, আমি চলি।
মহাদেব-নীলা-অসীম-অঞ্জনা-কবীর-বদরুন, আমি যাই,
ইয়াহিয়া, আমি চললাম। এই-যে নাসরিন, আমি আসি।

কবিতা কি এ-জিজ্ঞাসার কোনো আবছা উত্তর দেওয়ার আগে এটুকু অন্তত স্পষ্টভাবে বলতে পারা যায় যে কবিতা অনেক রকম। হোমরও কবিতা লি...
30/11/2021

কবিতা কি এ-জিজ্ঞাসার কোনো আবছা উত্তর দেওয়ার আগে এটুকু অন্তত স্পষ্টভাবে বলতে পারা যায় যে কবিতা অনেক রকম। হোমরও কবিতা লিখেছিলেন, মালার্মে র্যাঁবো ও রিলকেও। শেকস্‌পীয়র বদ্‌লেয়ুর রবীন্দ্রনাথ ও এলিয়টও কবিতা রচনা করে গেছেন। কেউ-কেউ কবিকে সবের ওপরে সংস্কারকের ভূমিকায় দ্যাখেন; কারো-কারো ঝোঁক একান্তই রসের দিকে। কবিতা রসেরই ব্যাপার, কিন্তু এক ধরনের উৎকৃষ্ট চিত্তের বিশেষ সব অভিজ্ঞতা ও চেতনার জিনিস—শুদ্ধ কল্পনা বা একান্ত বুদ্ধির রস নয়।

বিভিন্ন অভিজ্ঞ পাঠকের বিচার ও রুচির সঙ্গে যুক্ত থাকা দরকার কবির; কবিতার সম্পর্কে পাঠক ও সমালোচকেরা কি ভাবে দায়িত্ব সম্পন্ন করছেন—এবং কি ভাবে তা’ করা উচিত সেই সব চেতনার ওপর কবির ভবিষ্যৎ কাব্য, আমার মনে হয়, আরো স্পষ্টভাবে দাঁড়াবার সুযোগ পেতে পারে। কাব্য চেনবার আস্বাদ করবার ও বিচার করবার নানারকম স্বভাব ও পদ্ধতির বিচিত্র সত্যমিথ্যার পথে আধুনিক কাব্যের আধুনিক সমালোচককে প্রায়ই চলতে দেখা যায়, কিন্তু সেই কাব্যের মোটামুটি সত্যও অনেক সময়ই তাঁকে এড়িয়ে যায়।

আমার কবিতাকে বা এ-কাব্যের কবিকে নির্জন বা নির্জনতম আখ্যা দেওয়া হয়েছে; কেউ বলেছেন, এ-কবিতা প্রধানত প্রকৃতির বা প্রধানত ইতিহাস ও সমাজ -চেতনার, অন্য মতে নিশ্চেতনার; কারো মীমাংসায় এ-কাব্য একান্তই প্রতীকী; সম্পূর্ণ অবচেতনার; সুররিয়ালিস্ট। আরো নানা-রকম আখ্যা চোখে পড়েছে। প্রায় সবই আংশিকভাবে সত্য—কোনো-কোনো কবিতা বা কাব্যের কোনো-কোনো অধ্যায় সম্বন্ধে খাটে; সমগ্র কাব্যের ব্যাখ্যা হিসেবে নয়। কিন্তু কবিতাসৃষ্টি ও কাব্যপাঠ দুই-ই শেষ পর্যন্ত ব্যক্তি-মনের ব্যাপার; কাজেই পাঠক ও সমালোচকদের উপলব্ধি ও মীমাংসায় এত তারতম্য। একটা সীমারেখা আছে এ-তারতম্যের; সেটা ছাড়িয়ে গেলে বড়ো সমালোচককে অবহিত হ’তে হয়।

নানা দেশে অনেক দিন থেকেই কাব্যের সংগ্রহ বেরুচ্ছে। বাংলায় কবিতার সঞ্চয়ন খুবই কম। নানা শতকের অক্‌স্‌ফোর্ড বুক অব ভর্সের সংকলকদের মধ্যে বড়ো কবি প্রায়ই কেউ নেই; কিন্তু সংকলনগুলো ভালো হয়েছে; ঢের পুরোনো কাব্যের বাছবিচারে বেশি সার্থকতা বেশি সহজ, নতুন কবি ও কবিতার খাঁটি বিচার বেশি কঠিন। অনেক কবির সমাবেশে একটি সংগ্রহ; একজন কবির প্রায় সমস্ত উল্লেখ্য কবিতা নিয়ে আর-এক জাতীয় সংকলন; পশ্চিমে এ-ধরনের অনেক বই আছে; তাদের ভেতর কয়েকটি তাৎপর্যে–এমন কি মাহাত্ম্যে প্রায় অক্ষুণ্ণ। আমাদের দেশে দু-একজন পূর্বজ (উনিশ-বিশ শতকের) কবির নির্বাচিত কাব্যাংশ প্রকাশিত হয়েছিলো; কতো দূর সফল হয়েছে এখনও ঠিক বলতে পারছি না। ভালো কবিতা যাচাই করবার বিশেষ শক্তি সংকলকের থাকলেও আদি নির্বাচন অনেক সময়ই কবির মৃত্যুর পরে খাঁটি সংকলনে গিয়ে দাঁড়াবার স্থযোগ পায়। কিন্তু কোনো-কোনো সংকলনে প্রথম থেকেই যথেষ্ট নির্ভুল চেতনার প্রয়োগ দেখা যায়। পাঠকদের সঙ্গে বিশেষভাবে যোগ-স্থাপনের দিক দিয়ে এ-ধরনের প্রাথমিক সংকলনের মূল্য আমাদের দেশেও লেখক পাঠক ও প্রকাশকদের কাছে ক্রমেই বেশি স্বীকৃত হচ্ছে হয়তো। যিনি কবিতা লেখা ছেড়ে দেননি তাঁর কবিতার এ-রকম সংগ্রহ থেকে পাঠক ও সমালোচক এ-কাব্যের যথেষ্ট সংগত পরিচয় পেতে পারেন; যদিও শেষ পরিচয় লাভ সমসাময়িকদের পক্ষে নানা কারণেই দুঃসাধ্য।

এই সংকলনের কবিতাগুলো শ্রীযুক্ত বিরাম মুখোপাধ্যায় আমার পাঁচখানা কবিতার বই ও অন্যান্য প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত রচনা থেকে সঞ্চয় করেছেন, তাঁর নির্বাচনে বিশেষ শুদ্ধতার পরিচয় পেয়েছি। বিন্যাসসাধনে মোটামুটিভাবে রচনার কালক্রম অনুসরণ করা হয়েছে।

কলকাতা
২০. ৪. ১৯৫৪


জীবনানন্দ দাশ

জীবনানন্দ দাশ-এর সুরঞ্জনা বা শোভনাআকাশলীনাসুরঞ্জনা, ওইখানে যেওনাকো তুমি,বোলোনাকো কথা ওই যুবকের সাথে;ফিরে এসো সুরঞ্জনা:ন...
30/11/2021

জীবনানন্দ দাশ-এর সুরঞ্জনা বা শোভনা

আকাশলীনা

সুরঞ্জনা, ওইখানে যেওনাকো তুমি,
বোলোনাকো কথা ওই যুবকের সাথে;
ফিরে এসো সুরঞ্জনা:
নক্ষত্রের রুপালি আগুন ভরা রাতে;

ফিরে এসো এই মাঠে, ঢেউয়ে;
ফিরে এসো হৃদয়ে আমার;
দূর থেকে দূরে— আরো দূরে
যুবকের সাথে তুমি যেওনাকো আর।

কি কথা তাহার সাথে? তার সাথে!
আকাশের আড়ালে আকাশে
মৃত্তিকার মতো তুমি আজ:
তার প্রেম ঘাস হ’য়ে আসে।

সুরঞ্জনা,
তোমার হৃদয় আজ ঘাস:
বাতাসের ওপারে বাতাস—
আকাশের ওপারে আকাশ।

29/11/2021

কাছে দূরে
— সুভাষ মুখোপাধ্যায়

মুখখানি যেন ভোরের শেফালি
নেমে গেল এক্ষুনি
দু-অধরে চেপে চাঁদ একফালি
নেমে গেল এক্ষুনি

তার দুটি আঁখি খঞ্জন পাখি
দূরে কাছে ঘুরে নাচে
এই আছে এই নেই আছে নেই
দূরে কাছে ঘুরে নাচে

নেমে গেল এক্ষুনি

হাওয়া বারে বারে আঁচল সরায়
হাত বারে বারে ঢাকে
হাত খালি হলে আঙুল জড়ায়
সময়কে পাকে পাকে

নেমে গেল এক্ষুনি

ঝুঁকে প’ড়ে চোখে চূর্ণ অলক
যেন চায় পড়ে নিতে
শ্বেতপাথরের স্মৃতির ফলক
মণি-জ্বলা চারিভিতে

নেমে গেল এক্ষুনি

পদচারণায় দূরে নিয়ে যায়
তার কায়া তার ছায়া
দু-চরণে বোনা যাব কি যাব না
ও-বনে ও-যৌবনে

নেমে গেল এক্ষুনি

থাকতে দেখি নি চেয়ে অকপটে
তার সে মুখচ্ছবি
দেখি আকাশের প্রচ্ছদপটে
ছাপা সে মুখচ্ছবি

নেমে গেল এক্ষুনি
ট্রেন খালি করে ভোরের শেফালি
নেমে গেল এক্ষুনি।

24/11/2021

মনে মনে বহুদূর চলে গেছি – যেখান থেকে ফিরতে হলে আরো একবার জন্মাতে হয়
জন্মেই হাঁটতে হয়
হাঁটতে-হাঁটতে হাঁটতে-হাঁটতে
একসময় যেখান থেকে শুরু করেছিলাম সেখানে পৌঁছুতে পারি
পথ তো একটা নয় –
তবু, সবগুলোই ঘুরে ফিরে ঘুরে ফিরে শুরু আর শেষের কাছে বাঁধা
নদীর দু – প্রান্তের মূল
একপ্রান্তে জনপদ অন্যপ্রান্ত জনশূণ্য
দুদিকেই কূল, দুদিকেই এপার-ওপার, আসা-যাওয়া, টানাপোরেন —
দুটো জন্মই লাগে
মনে মনে দুটো জন্মই লাগে।

_____ শক্তি চট্টোপাধ্যায়

24/11/2021

কেউ একটা তো চাই
__ রুদ্র গোস্বামী

কেউ একটা তো চাই, টিপ সরে গেলে
আয়নার মতো বলবে ‘টিপ বাঁকা পরেছ।’
চোখের কাজল লেপটে গেলে ধরিয়ে দেবে।

কেউ একটা তো চাই, পিছু ডাকবে
বলবে ‘সাবধানে যেয়ো।’

কেউ একটা তো চাই, ঘড়ির কাঁটার মতো
কাছে থাকবে। অভিমান দেখলেই বলবে,
‘সবুজ পাতা তোমাকে ভালোবাসি।’

কেউ একটা তো চাই, ভুল গুলোকে
শুধুই বকবে না। কাছে টেনে বলবে 'বোকা মেয়েটা,
আর কিছু ভালো রাখা যত্ন নিয়ো।’

কেউ একটা তো চাই, খোলা জানালার মতো
আমাকে আকাশ দেখাবে। বলবে ‘এখানে ঠিকানা রেখে
তুমি পাখি হয়ে যাও।’

কেউ একটা তো চাই, হাওয়ার শিসের মতো
কানে এসে বলবে ‘আমাকে ছাড়া কারো
প্রেমে পড়তে নেই।’

কেউ একটা তো চাই, শাসন করবে আমার
খুচরো বিষাদ, আর আমাকে লুঠতে আসা
ডাকাত স্মৃতি।

কেউ একটা তো চাইই, গ্রীষ্মে বিছিয়ে রাখবে বুকে
শীতলপাটি, বলবে ‘এই বুকের মধ্যে তোমাকে
বসতে দিলাম।’

কেউ একটা তো চাইই, কাছে থাকবে
‘তুমি’ বললেই যেমন দুঠোঁটে দু'ঠোঁট মেশে।

কেউ তো একটা চাইই, কিছুটা সে তাঁর মতো থাক,
কিছুটা আমার মতো হবে।

12/11/2021

সেই কবে থেকে
– হুমায়ুন আজাদ

সেই কবে থেকে জ্বলছি
জ্ব’লে জ্ব’লে নিভে গেছি ব’লে
তুমি দেখতে পাও নি ।

সেই কবে থেকে দাঁড়িয়ে রয়েছি
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বাতিস্তম্ভের মতো ভেঙে পড়েছি ব’লে
তুমি লক্ষ্য করো নি ।

সেই কবে থেকে ডাকছি
ডাকতে ডাকতে স্বরতন্ত্রি ছিঁড়ে বোবা হয়ে গেছি ব’লে
তুমি শুনতে পাও নি ‘।

সেই কবে থেকে ফুটে আছি
ফুটে ফুটে শাখা থেকে ঝ’রে গেছি ব’লে
তুমি কখনো তোলো নি ।

সেই কবে থেকে তাকিয়ে রয়েছি
তাকিয়ে তাকিয়ে অন্ধ হয়ে গেছি ব’লে
একবারো তোমাকে দেখি নি ।

07/11/2021

সোমলতা কে
___শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়

সীমন্তিনী, তোমায় ডেকে পাইনি সাড়া,
দুয়ার ঘিরে ছিল হাজার কাটার বেড়া ।
কেন তবে বনের পথে, সীমন্তিনী
কেন তবে এই কুয়াশায়, সীমন্তিনী
একলা এলে পথ হারালে
বনের পথে কেন আমায় পথ ভোলালে, সীমন্তিনী?

সীমন্তিনী, এখন তোমার চোখের আঁচে
দুটি ভুরুর মধ্যিখানে গনগনে লাল সিঁদুর আঁচে
উড়ে-পুড়ে, খাক হল সব রাত্রি-দিবস ।
সীমন্তিনী, প্রিয় কাফের তোমার প্রেমে আজো বিবশ .......

সোমলতা! কুয়াশাবৃতা!!

নদীর ওপাড়ে ঘন কুয়াশায়-
কুয়াশার ফুল কুড়াতে এলে!
মাঝখানে আজ বহমান পানি রচে ব্যবধান-
রচে ব্যবধান তোমার আমার;
রচে ব্যবধান দুই বাংলার!

তাই কি এলে ওপাড়ের মেয়ে!
সব কাজ ফেলে- তাই কি এলে!
কুয়াশার সেতু বাঁধবে বলে- তাই কি এলে!

রেলগাড়ি ঐ চলে গেল শুনো রাত্রি চিরে,
কথা ডুবে গেলো অতল তিমিরে!
অপলক তুমি চেয়ে আছো মুখে- অপরিচিতা!
কুয়াশায় গড়া অলীক মানবী - কুয়াশাবৃতা!

ভেঙ্গে ভেঙ্গে যায় কুয়াশার সেতু -
উঠেছে হাওয়া,
মূহুর্তজাল ছিড়ে চলে গেলে কল্পকায়া-
পাগলহাওয়া!
রক্তে জোয়ার হলো দূর্বার- তোমাকে চাওয়া! তোমাকে চাওয়া!!

কাফের তোমাকে ভালোবাসলাম বলে,
ছায়া মরে গেলো, তারা নিভে গেলো,
সাগর উঠলো জ্বলে!
মহাকাশ জুড়ে উল্কাবৃষ্টি,
শিহরিত হলো সকল সৃষ্টি,
পাহাড় পড়লো টলে!
এ দুঃসময়-ঘোর প্রলয়
কেবল তোমাকে ভালোবাসলাম বলে!

কাফের তোমাকে ভালোবাসলাম বলে,
অকালবোধনে বসন্ত এল
কৃষ্ণচূড়া অবনত হলো ফুলে,
চরাচর জুড়ে এলো হাওয়া উত্তাল-
নাচে ধমণীতে শোনিতের শ্রোতে -
উদ্দাম মহাকাল!
কাফের তোমাকে ভালোবাসলাম বলে!

27/10/2021
24/10/2020

তিনি বলেছেন, তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর সমস্ত সৃষ্টি যেন ট্রাকে করে নিয়ে গিয়ে ধ্বংস করে কলকাতা পুরসভা।

শামসুর রাহমান (২৩ অক্টোবর ১৯২৯ - ১৭ আগস্ট ২০০৬)
22/10/2020

শামসুর রাহমান
(২৩ অক্টোবর ১৯২৯ - ১৭ আগস্ট ২০০৬)

18/10/2020

প্রাসঙ্গিক ও বাঙলায়ন : মীম মিজান [লুইস গ্লিক বর্তমান সাহিত্যাঙ্গনের টক অব দ্য টাইম। ২০২০ নোবেল পদক প্রাপ্তিই তাঁ....

17/10/2020

০১ মগ‌জের বিভ্রা‌ন্তি সংশয়ী মন প্রশ্নে বো‌ধোন্মচন। ০২ অনিশ্চিত জীবন দোদুল্যমান সম্ভোগে হৃতপ্রাণ। ০৩ ম্রিয়মা....

17/10/2020

সময়ের কালচক্রে দুঃখ কিংবা হতাশা আপে‌ক্ষিক তবু বাস্তবতার অসম দ্বন্দ্বে প্রতিনিয়ত নুয়ে পড়ে- স্বপ্নপাগল মন‌নে...

16/10/2020

  ০১ সুদৃঢ় বিষন্নতা মগজ-ভ্রা‌ন্তি অফুরান অতৃপ্তি। ০২ অ‌নি‌মেষ মুগ্ধতা চোখের ভাষা অনুভূতির দিশা। ০৩ নান্দনিক যৌ.....

27/09/2020

সুশান্ত পোদ্দার জীবন থমকে যায় যদি অজানা গন্তব্যেঅথবা কোন অযাচিত বেপরোয়া জীবনের ঘাতে__খুলে দিও বাতায়ন নিস্তব্ধ ম...

21/09/2020

মা দিবসে সবাই মাকে নিয়ে অনেক ছবি দেয় বি‌ভিন্নভা‌বে ম‌নের অপ্রকা‌শিত কথায় হালকা ক‌রে বুকটা‌কে। আমি মনের ভুলেও সেট...

16/12/2016
20/02/2016

প্রাণের ভাষা ও সংস্কৃতির ভিত
বাংলাকে বহালতবিয়তে রাখতে
যাদের আত্মত্যাগ,তাদের প্রতি 'জল ও জীবন' এর অসীম
ও অগাধ শ্রদ্ধা।
ভালোবাসায় বেচে থাকুক ভাষা
শহীদেরা শত শত বাঙালির হৃদয়ে।

লেখা পাঠান
24/01/2016

লেখা পাঠান

Address

Barisal
Barisal
8200

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when জল ও জীবন posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to জল ও জীবন:

Share

Category



You may also like