amadermeherpur.com

amadermeherpur.com news &social media portal

মেহেরপুর পৌর আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে উদ্বোধন করলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক এ সময...
08/05/2022

মেহেরপুর পৌর আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে উদ্বোধন করলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক এ সময় উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন দোদুল এমপি সহ সাবেক এমপি প্রফেসর আব্দুল মান্নান অ্যাডভকেট ইয়ারুল ইসলাম সহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ নেতৃবৃন্দ।

17/04/2022

আগের হিসাবে চললে বাংলা নববর্ষ হতো অগ্রহায়ণ মাসে সম্রাট আকবরের সময় তাঁর সভাসদদের মধ্য অন্যতম পণ্ডিত ব্যাক্তি ফতেউল্লাহ সিরাজিকে নির্দেশ দিলেন সৌর বর্ষের সাথে মিলকরে বাংলাবর্ষ ক্যালেন্ডার তৈরির সে মতে ফতেউল্লাহ সিরাজি বাংলা ক্যালেন্ডার তৈরি শুরু করেন ঐ সময় হিজরী সন ছিল ৯৬৩ এবং ঐ বছর হিজরী সনের প্রথম মাস মোহররম ছিল আর বাংলা ছিল তখন বৈশাখমাস তখন থেকে বৈশাখ কে বাংলা বর্ষের প্রথম মাস হিসাবে ধরাহয় তার আগ পর্যন্ত শক শাসকদের আমলে অগ্রহায়ণ মাস ছিল বাংলা প্রথম মাস এবং সেটা বলা হতো শকাব্দ যা ৯৬৩হিজরী সন থেকে বংগাব্দে রুপান্তরিত হয় এই রুপান্তরের আগে শকাব্দে নববর্ষের অনুষ্ঠানে মুখোস পরা পদযাত্রা ঢাক ঢোল পেটানো এসব ছিল হিন্দু উপজাতি বৈশাবিদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান যা বর্তমানে বাংলাভাষী মুসলমানদের বাংলা নববর্ষ উদযাপনের সাথে যায়না তবে আপনি যেটার অবতারনা করেছেন রোজার ইফতারের সাথে বাংগালিয়ানা মুখরোচক খাবারের সন্নিবেশ ঘটিয়েছেন এটা ভালই হয়েছে একসাথে দুই সাধ নেওয়া হলো নববর্ষ উদযাপন ও হলে ইফতার হলো ভাল খারাপ না আল্লাহ আপনাকে সব খেয়ে সুস্হ থাকার তৌফিক দান করুন আমিন।

12/08/2021
29/07/2021

কারা ভ্যাক্সিন নিতে পারবেন? কোন ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা কতটুকু??

#গর্ভবতী_মায়েরা_কোভিড১৯_ভ্যাক্সিন_নিতে_পারবেন❓

👉 গর্ভের ১৪-৩৩ সপ্তাহের মধ্যে যে কোন ধরনের কোভিড১৯ ভ্যাক্সিন নিতে পারবেন। (যদি সরকার অনুমোদন দেয়)।

#গর্ভের_শিশু_কি_সুরক্ষা_পাবে❓

👉 ১৪-৩৩ সপ্তাহের মধ্যে ২ ডোজ ভ্যাক্সিন গ্রহণ সম্পন্ন করতে পারলে মায়ের শরীরে তৈরি হওয়া এন্টিবডি রক্তের মাধ্যমে গর্ভের শিশুর শরীরে যাবে এবং শিশু করোনাভাইরাস আক্রমণ থেকে সুরক্ষা পাবে।

#মা_এবং_বাচ্চার_কোন_ক্ষতি_হবে_কিনা⁉️

👉 গবেষণায় (BMJ) দেখা গিয়েছে এখন পর্যন্ত যে সব দেশে গর্ভবতী মায়েরা টীকা পেয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে মায়েদের ভ্যাক্সিন পরবর্তী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (যেটা সবারই হতে পারে) ছাড়া অন্য কোনো সমস্যা হয়নি।
এবং বাচ্চার কোন সমস্যা হয়েছে বলেও গবেষণায় প্রমান পাওয়া যায়নি।

#দুগ্ধদানকারী_মা_ভ্যাক্সিন_নিতে_পারবেন❓

👉 অবশ্যই পারবেন এবং মায়ের কাছ থেকে বুকের দুধের মাধ্যমে বাচ্চার শরীরে এন্টিবডি গিয়ে বাচ্চাকে সুরক্ষা দিবে।
এতে মায়ের (ভ্যাক্সিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বাদে) এবং বাচ্চার কোনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নাই।

#গর্ভবতী_এবং_দুগ্ধদানকারী_মা_ভ্যাক্সিন_নেয়ার_আগে_বা_পরে_কোন_সতর্কতা_অবলম্বন_করবেন_কিনা❓

👉 না। তেমন কোনো সতর্কতার দরকার নাই। স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবেন।

#ভ্যাক্সিন_নেয়ার_পরে_কি_ধরনের_পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া_হতে_পারে❓

👉 জ্বর, মাথা ব্যাথা, শরীর ব্যাথা, ক্লান্তি লাগা, ভ্যাক্সিন দেয়ার জায়গায় মাংসপেশিতে ব্যাথা বা লাল হয়ে যাওয়া। এগুলো যে কারোরই হতে পারে।

#যে_সব_মায়েদের_ডায়াবেটিস_উচ্চরক্তচাপ_হাঁপানী #কিডনি_রোগ_আছে_তারা_কি_ভ্যাক্সিন_নিতে_পারবেন❓

👉 হ্যাঁ। তারাও নিতে পারবেন তবে ভ্যাক্সিন নেয়ার আগে এসব রোগ থাকলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে একটা নির্দিষ্ট মাত্রায় নিয়ন্ত্রণ করে তারপর ভ্যাক্সিন নিতে পারবেন। সেজন্য নিয়মিত চিকিৎসা নিতে হবে এবং ভ্যাক্সিন নেয়ার আগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

#কারা_ভ্যাক্সিন_নিতে_পারবেন_না❓

জ্বর, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী যিনি কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি পাচ্ছেন, ২ সপ্তাহের মধ্যে অন্য কোন ভ্যাক্সিন নিলে, যাদের প্রকট এলার্জির সমস্যা এবং যাদের ভ্যাক্সিনের কোনো একটি উপাদানে এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে (আগে যদি এমন হয়ে থাকে)।

সবাই টিকা নিন।সচেতন থাকুন,মাস্ক পড়ুন।

সংগৃহীত........

29/07/2021

💼টাকার বস্তা নয়, ৩৫০০ কেজি বই নিয়ে দেশে ফিরেছিলেন ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর❤


ডেস্ক রিপোর্ট : সৌদি আরবের ইমাম সউদ ইউনিভার্সিটির একজন শিক্ষার্থী দ্বিতীয় সেমিস্টারে পুরো ফ্যাকাল্টিতে ফার্স্ট হলেন। আরব দেশের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন নন-আরব ফার্স্ট হলেন, এটা যেনো চমক লাগানো সংবাদ। সাংবাদিক সাক্ষাৎকার নেবার জন্য ছুটলেন সেই ছাত্রের কাছে। সাক্ষাৎকারটি পরদিন ছাপা হয় রিয়াদের সেরা দৈনিক ‘আর-রিয়াদ’ পত্রিকায়। সেই ছাত্রের গড় নাম্বার ছিলো ৯৭, চারটি বিষয়ে পেয়েছিলেন ১০০ তে একশো।

ইমাম সউদের সেই কৃতি ছাত্র হলেন ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রাহিমাহুল্লাহ)। ১৯৮৬ সালে তিনি ইমাম সউদ ইউনিভার্সিটি থেকে লিস্যান্স, ১৯৯২ সালে মাস্টার্স, ১৯৯৮ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। তিনিই প্রথম বাংলাদেশী, যিনি এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। চূড়ান্ত পরীক্ষায় গড়ে ৯৬ মার্ক পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম স্থান অধিকার করেন। পরপর দুইবার বাদশাহ আযিযের কাছ থেকে সেরা ছাত্রের পুরস্কার গ্রহণ করেন।

সৌদি আরবের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সেরা ছাত্রের খেতাব পাবার পাশাপাশি তাঁর সামনে সুবর্ণ সুযোগ ছিলো সেখানে উজ্জ্বল ক্যারিয়ার গড়ার। ইংরেজিতে পারদর্শী হবার ফলে চাকরির অফার পেয়েছিলেন ইংল্যান্ড, অ্যামেরিকা, অস্ট্রেলিয়া থেকেও। কিন্তু, তিনি কী করলেন? পিএইচডি সমাপ্ত করেই ব্যাগ গুছাতে শুরু করলেন।
তাঁর জীবনী-লেখক তাঁকে পরামর্শ দিলেন, “সৌদিতে সম্পূর্ণ সময়টা পড়ালেখা করেই কাটালেন, ব্যাংক-ব্যালেন্স বলতে কিছুই নেই। কিছুদিন সৌদিতে থেকে অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল হয়ে দেশে গেলে হয় না?”

দৃঢ় প্রতিজ্ঞ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রাহি:) বললেন:
“পিএইচডি শেষ করে দেশে যাবো বলে আল্লাহর সাথে আমি ওয়াদা করেছি। আলহামদুলিল্লাহ, সবকিছু দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ হলো। আমি আল্লাহর সাথে কৃত আমার ওয়াদা রক্ষা করতে চাই।”

পড়ালেখার সুবাদে প্রায় ১৭ বছর থেকেছেন সৌদি আরব। ১৯৯৮ সালে যখন দেশে ফিরবেন, নিশ্চয়ই অনেক শপিং করবেন, কাপড় কিনবেন, সৌদি আরব থেকে আতর থেকে শুরু করে এমনসব জিনিস কিনবেন, যেগুলো সাধারণত দেশে গেলে পাওয়া যায় না। কিন্তু, না। তাঁর দুশ্চিন্তা হলো, এই ১৭ বছরে যেসব বই তিনি পড়েছেন, সংগ্রহ করেছেন, সেগুলো তো দেশে গেলে পাওয়া যাবে না। সেগুলো দেশে নিয়ে যাবেন কিভাবে?

বিমানে একজন মানুষ তো সর্বোচ্চ ২৫-৩০ কেজির পণ্য নিতে পারে। তাঁর বইগুলোর ওজন তো এর ১০০ গুণ বেশি। তিনি বইগুলো দেশে নিয়ে যাবার জন্য কার্টুনে ভরে ট্রান্সপোর্টে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করলেন।


প্রায় ১০০ টি কার্টুনে ৩৫০০ কেজি বই!
দীর্গ ১৭ বছরের সম্বল আত্মস্থ ইলম এবং ৩৫০০ কেজি ওজনের বই নিয়ে ১৯৯৮ সালে ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রাহি:) দেশের মাটিতে পা রাখেন। তাঁর সামনে সুযোগ ছিলো নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থেকে উজ্জ্বল ঈর্ষণীয় ক্যারিয়ার গড়ার। কিন্তু, নিজের ঘর অন্ধকার রেখে আলোর দাওয়াত নিয়ে পাশের গ্রামে তিনি যেতে চাননি। ফিরে আসেন নিজের শিকড়ে।

কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ, এই অঞ্চল দুটোকে মানুষ চিনে লালন ফকির আর পাগলা কানাই ফকিরের এলাকা বলে। শিরক, বিদ’আত, কুসংস্কার আর বাউল ফকিরদের তীর্থস্থান এই অঞ্চল। এরকম একটা এলাকায় জন্মগ্রহণ করে, এলাকার অধঃপতন দেখে কিভাবে ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রাহি:) বিদেশে এসির রুমে বসে দ্বীন কায়েমের স্বপ্ন দেখবেন?

তিনি ফিরে এসে নিজ এলাকার ধর্মীয় কুসংস্কার দূর করার উদ্যোগ নেন। ১৯৯৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়ার ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার হিশেবে যোগদান করেন। চাকরি করেই ক্ষান্ত হোননি, শিক্ষা সংস্কারের জন্য একটি একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন ‘আল-ফারুক একাডেমি’ নামে। ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ‘আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট’।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন মাহফিলে ওয়াজ করতে যেতেন, হাসিমুখে জটিল বিষয়গুলোর যুথসই সমাধান দেবার চেষ্টা করতেন। একজন আলেম শুধুমাত্র হাসি দিয়েই মানুষের মন জয় করতে পারেন, আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারকে না দেখলে এটা বুঝার উপায় ছিলো না হয়তো।

মানুষকে দূরে সরিয়ে দেবার বদলে কাছে টেনে নেবার প্রবণতা ছিলো তাঁর বেশি। ইখতেলাফি বিষয়ের আলোচনায় তাঁর শব্দচয়ন মানুষকে মুগ্ধ করতো। বাংলাদেশের মিডিয়ায় আলোচিত আলেমগণের মধ্যে এমন সহনশীল এপ্রোচের সাথে মানুষজন আগে পরিচিত ছিলো কিনা কে জানে! তাঁর ওয়াজ সুরেলা ছিলো না, তবুও মানুষ আগ্রহ নিয়ে তাঁর ওয়াজ শুনতো। সুরেলা ওয়াজ না করেও তিনি ছিলেন বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় বক্তা।

সাধারণ শিক্ষিত এবং মাদ্রাসায় শিক্ষিত, এই দুই শ্রেণী যার বই পড়ে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছে, তিনি হলেন ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর। জেনারেল শিক্ষিত কাউকে বাংলাদেশের কোনো আলেমের একাধিক বই রেফার করার মতো মৌলিক বই খুব বেশি ছিলো না। ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের লেখাগুলো ছিলো এমন স্টাইলের যে, একজন সাধারণ শিক্ষিত মানুষও তাঁর ৫০০+ পৃষ্ঠার বইগুলো সহজে পড়তে পারতো। যা বলতে চাচ্ছেন, তা সহজে লিখতে পারতেন।

বাংলাদেশের জেনারেল শিক্ষিতরা দীর্ঘদিন ধরে যেমন একজন আলেমকে খুঁজছিলো, যিনি তাদের মনের দুঃখ বুঝবেন, তাদের বিষয়গুলো তাদের মতো করে বুঝবেন, তেমনটা খুঁজে পেলো ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের মধ্যে।
ভালো বক্তা এবং ভালো লেখক; এই দুই গুণ বেশিরভাগের থাকে না। কেউ ভালো বক্তা, তো কেউ ভালো লেখক। আল্লাহ ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারকে এই দুটো গুণ দান করেছিলেন।
আল্লাহ তাঁর খেদমত কবুল করুন। এর বিনিময়ে তাঁকে জান্নাতুল ফিরদউস দান করুন।

~ আইমান সালাফী
-

একজন শিক্ষক কতোটা আদর্শ শিক্ষক হয়ে উঠলে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রোগী বলতে পারে যে, "আমার একটা ইচ্ছা আছে - অন্তত একবার আমার প...
27/07/2021

একজন শিক্ষক কতোটা আদর্শ শিক্ষক হয়ে উঠলে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রোগী বলতে পারে যে, "আমার একটা ইচ্ছা আছে - অন্তত একবার আমার প্রিয় শিক্ষক রেজা স্যারের সাথে হাত মেলাতে চাই!"?

একজন শিক্ষক তাঁর ছাত্রদের মননে কতোটা প্রভাব বিস্তার করলে গুরুতর অসুস্থ ছাত্রও তার বিক্ষিপ্ত ভাবনায় ওই শিক্ষককে স্মরণ করে আর বলে, "আহ! আমার স্যারের সাথে কতো কথা বলার আছে!"?

এই যুগে এও সম্ভব!

নটর ডেম কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষক রেজাউল করিম স্যারই সেই শিক্ষক! স্যারের বাড়ি সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে, পড়াশোনা করেছেন নটর ডেম কলেজেই এবং এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে। যারা রেজা স্যারের ক্লাস করেছেন, তারা জানেন এই ভদ্রলোকের ব্যক্তিত্ব ও পড়ানোর স্টাইল কতো বেশি প্রভাববিস্তারী! ক্লাসরুমে তিনি জাদুকর! ছাত্ররা যাঁর প্রতিটি পদক্ষেপ মন্ত্রমুগ্ধের মতো উপভোগ ও অনুসরণ করে।

নটর ডেম কলেজের ছাত্র মোহাম্মদ হামিম ডেঙ্গু সহ গুরুতর জটিলতা নিয়ে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছে। গতকাল একপর্যায়ে সে তার বড় ভাইকে ডেকে নিয়ে রেজা স্যারের সাথে 'অন্তত একবার হাত মেলানোর' ইচ্ছা পোষণ করে সবাইকে বিশেষ করে সাবেক-বর্তমান নটরডেমিয়ানদেরকে আবেগে আপ্লুত করেছে। রেজা স্যার জানিয়েছেন, হামিমের ইচ্ছাপূরণের জন্য তিনি প্রস্তুত আছেন।

সবাই হামিমের জন্য দোয়া করবেন। আর দোয়া করবেন, পুরো বাংলাদেশ যাতে রেজা স্যারের মতো মহান শিক্ষক দিয়ে ভরে যায়!

[ আগের পোস্টের লিংক: https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=4463473163717627&id=1400373303360977 ]

NotreDamians Worldwide

আইসিইউতে শুয়ে নটরডেমিয়ান হামিম: প্রিয় শিক্ষক রেজা স্যারের সাথে একবার হাত মেলানোর ইচ্ছা প্রকাশ

"যখন গত পরশু রাত ১২ঃ১০ এ হামিমকে আইসিইউ তে ভর্তি করালাম,তারপর ডাক্তার ওর সাথে যাস্ট ১০ মিনিট কথা বলার জন্য আমাকে এলাউ করছে।এই দশ মিনিট পুরাটা সময়ই ও কথা বলছে।আমি বলার সুযোগ পাই নাই।ও বলতেছিল,"ভাইয়া, আমার যদি কিছু হয়,তোমরা কেউ কোন কান্নাকাটি করবা না।জালাল উদ্দিন রুমির কবিতা আছে একটা When I Die মৃত্যুরে সবচেয়ে সুন্দর উনি ব্যাখ্যা করছে।আর ভাইয়া আমার কয়েকটা জিনিসের খুব ইচ্ছা ছিল।জানিনা পারব কিনা।খুব ইচ্ছা ছিল মক্কা,মদীনা যাওয়ার।নবীজী (সাঃ) যেসব জায়গায় ছিলেন সব জায়গাগুলা দেখার।একটা ইচ্ছা ছিল মাওলানা তারিক জামিলের সাথে দেখা করার।আর একটা ইচ্ছা ছিল আমাদের কলেজের রেজা স্যারের সাথে একটু হাত মিলাব।কলেজ থেকেই খুব ইচ্ছা।কিন্তু পারি নাই।ভাইয়া সবাই আমার জন্য দোয়া কইরো।আম্মু আব্বু মিম যাতে কোন কান্নাকাটি না করে।এটাই শেষ না।জান্নাতে হয়ত দেখা হইতে পারে।দোয়া কইরো বেশি বেশি"।এই কথাগুলা শোনার পর চোখের পানি আটকাইতে খুব কষ্ট হইছে।ডাক্তার একেবারেই নিষেধ করে দিছে যাতে কান্নাকাটি না করি।
আমি একজন হামিমের অধম বড় ভাই হিসেবে হয়ত হামিমের ইচ্ছাগুলা এখন পূরন করতে পারব না।কিন্তু রেজা স্যারের সাথে হামিমের হাত মিলানোর ইচ্ছাটা চাইলে স্যার পূরন করতে পারেন।আমার স্ট্যাটাসটা দেয়া এজন্যেই।খুব কঠিন মুহূর্তে একজন মানুষ তার কলেজ শিক্ষকের সাথে দেখা করার কথা বলে।কতটা প্রিয় শিক্ষক হলে এমনটা হয়!আমি কখনো রেজা স্যারকে সামনা সামনি দেখি নাই।যদি দেখা হত, তাহলে বলতাম পৃথিবীর সেরা শিক্ষক আপনি স্যার।যারা নটর ডেম কলেজের আছেন,তারা কাইন্ডলি আমাকে রেজা স্যারের সাথে যোগাযোগের ব্যাবস্থা করে দেন।কেউ বলছে স্যার দেশের বাইরে আছেন,কেউ বলছে তিনি চিটাগং আছেন।কাইন্ডলি স্যারের কাছে মেসেজ টা পৌছে দিন।স্যারকে দেখলে ও অনেক খুশি হইত।আইসিইউ তে থাকতে থাকতে ওর মন খারাপ থাকতেছে,মনোবল হারাচ্ছে।
আপডেটঃহামিম আলহামদুলিল্লাহ ইম্প্রুভ করছে।হামিমের ফুসফুসে,লিভারে কিছু ইনফেকশন ধরা পড়েছে সিটি স্ক্যনে।কাল জানা যাবে ইনফেকশন টা কি।ছোট বোন মিমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হইছে।ওর প্লাটিলেট এক লক্ষ চার হাজার।গতকাল থেকে এক দিনে এক লক্ষ পঞ্চান্ন হাজার থেকে পঞ্চাশ হাজার কমে গেছে।ওর জন্যও রক্ত দেয়া লাগতে পারে।সবার ফোন, মেসেজ রিসিভ করা হয় না ঝামেলার কারনে,তাই স্ট্যাটাস লিখলাম।সবাই অন্তত মোনাজাতে বা সিজদায় একবার হলেও আমাদের ফ্যামিলির সবার জন্য দোয়া করবেন।"

( হামিমের ভাই তামিমের আধাঘণ্টা আগের ফেসবুক স্ট্যাটাস )

[ আপডেট: রেজা স্যারের সাথে যোগাযোগ হয়েছে। স্যার এখন চট্টগ্রামে আছেন, লকডাউনের কারণে ঢাকায় আসা সম্ভব নয়। তবে রেজা স্যার জানিয়েছেন, তিনি যেকোনো সময় নটরডেমিয়ান হামিমের সাথে ভিডিও/অডিও কলে কথা বলতে প্রস্তুত আছেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ও অনুমতি সাপেক্ষে। হামিম সুস্থ হয়ে উঠলে তার সাথে হ্যান্ডশেক করবেন রেজা স্যার, এমনটিই জানিয়েছেন স্যার। হাসপাতালের আইসিউতে চিকিৎসাধীন একজন ছাত্র এতো সরল মন নিয়ে অন্তত একবার হাত মেলাতে চেয়েছে তার প্রিয় শিক্ষকের সাথে - এমন কথা জানতে পেরে রেজা স্যার এবং তাঁর পরিবার অত্যন্ত ইমোশনাল হয়ে পড়েছেন। হামিমের সুস্থতার জন্য সবাই দোয়া করেছেন। ]

NotreDamians Worldwide

যেন ভুলে না যাই, একাত্তরে শহীদ বুদ্ধিজীবী'মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী: এক ক্ষণজন্মা প্রতিভার নাম'"আহমাদ ইশতিয়াক, দ্য ডেইলি...
23/07/2021

যেন ভুলে না যাই, একাত্তরে শহীদ বুদ্ধিজীবী
'মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী: এক ক্ষণজন্মা প্রতিভার নাম'
"আহমাদ ইশতিয়াক, দ্য ডেইলি স্টার, ২২ জুলাই ২০২১: ১৪ই ডিসেম্বর সকাল। দিনটি ছিল মঙ্গলবার। সারা ঢাকা শহরে কারফিউ। শান্তিবাগের বাসায় বারান্দায় দাঁড়িয়ে সাত বছর বয়সী ছেলে সুমনকে নিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী দেখছেন ভারতীয় মিত্র বাহিনীর বিমানগুলো নিচু হয়ে উড়ে গিয়ে কাছেই কোথাও বোমা ফেলছে।
পাশে দাঁড়ানো ছেলের এক হাত চেপে তিনি হাস্যমুখে বললেন, ‘দেখেছো বাবা, যুদ্ধ বিমানগুলো কতো নিচ দিয়ে উড়ে গিয়ে বোমা ফেলছে। আমাদের বিজয় খুব নিকটেই। এক দুদিনের মধ্যেই আমরা স্বাধীন হব।’
বলতে বলতেই তিনি দেখলেন সাঁই করে আরও দুটো বিমান উড়ে গেল পুরান ঢাকার দিকে। এবার শিশুর মতো আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে তিনি বললেন, ‘আমাদের বিজয় কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। আমরাই জয়ী হব। কত কাঙ্ক্ষিত বিজয় আমাদের!’
এরই মধ্যে দুপুরের ভাত দেওয়া হয়েছে ডাইনিং টেবিলে। তার স্ত্রী সৈয়দা তাহমিনা মনোয়ারা নুরুন্নাহার বারবার তাগাদা দিচ্ছেন, ‘গোসলটা করে ফেল। কয়টা বাজে খেয়াল আছে? টেবিলে ভাত দিয়েছি।’
স্ত্রীর তাগাদায় বাথরুমে গোসল করতে ঢুকবেন ঠিক এমন সময়ই দরজায় ঠক-ঠক।
তার ভাই লুৎফুল হায়দার চৌধুরী শুনেই ডাইনিং টেবিল থেকে উঠে ড্রয়িং রুমের পাশ দিয়ে গিয়ে ঘরের দরজা খুললেন। দেখলেন পাঁচ-ছয় জন মুখোশধারী দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
লুৎফুল হায়দার চৌধুরী দরজা খুলতেই মুখোশধারীরা ইংরেজিতে তাকে জিজ্ঞেস করল, ‘প্রফেসর মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী কোথায়? স্যার কি বাসায় আছেন?’
লুৎফুল হায়দার চৌধুরী বললেন, ‘কেন? তাকে কি প্রয়োজন?’
জবাবে মুখোশধারীদের মধ্যে একজন বললেন, ‘তার সঙ্গে আমাদের ক্যাপ্টেন সাহেব জরুরি কথা বলবেন। সে জন্যই আমরা তাকে নিতে এসেছি।’
লুৎফুল হায়দার চৌধুরী বললেন, ‘এভাবে তো নিয়ে যেতে পারেন না আপনারা। আপনাদের কাছে কি কোন ওয়ারেন্ট আছে?’
জবাবে মুখোশধারীরা কিছু না বলেই ঘরে ঢোকার চেষ্টা করল। এমন সময় পথ আগলে দাঁড়ালেন লুৎফুল হায়দার চৌধুরী। মুখোশধারীরা বলল, ‘দেখি সরে দাঁড়ান। আমরা ঘরে ঢুকব।’
কিন্তু, লুৎফুল হায়দার চৌধুরী এক ইঞ্চিও পিছু সরলেন না। এমন সময় বাথরুম থেকে বেরিয়ে এসে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘আমিই মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, বলুন কি বলবেন?’
‘আপনাকে আমাদের সঙ্গে যেতে হবে,’ বলল মুখোশধারীরা।
‘কেন কি প্রয়োজন?’
‘ক্যাপ্টেন সাহেবের সঙ্গে একটু দেখা করতে হবে। কিছু কথা আছে আপনার সাথে। কথা শেষ হওয়ার পর আমরাই আপনাকে দিয়ে যাব,’ বলল এক মুখোশধারী।
মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী বললেন, ‘আপনারা একটু দাঁড়ান। আমি কাপড় পাল্টে নিচ্ছি।’
কিন্তু মুখোশধারীরা বলল, ‘কিছুক্ষণের মধ্যেই তো চলে আসবেন। কাপড় পরিবর্তন করতে হবে না।’
তবুও মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী কাপড় পাল্টাতে চাইলে তারা বলল, ‘আচ্ছা আপনি আমাদের সামনেই কাপড় পরিবর্তন করে আমাদের সঙ্গে চলেন।’
তিনি কাপড় পরিবর্তন করা মাত্রই মুখোশধারীরা তাকে ঘরের বাইরে নিয়ে গেল।
মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীর স্ত্রী তাহমিনা এই অবস্থা দেখে বললেন, ‘উনি এখনও কিছু খাননি। গোসল অব্দি করেননি। আপনারা উনাকে নিয়ে কোথায় যাচ্ছেন?’
এক মুখোশধারী জবাব দিলো, ‘ভাবি, ঘাবড়ানোর কিছু নেই। আমাদের ক্যাপ্টেন সাহেবের সঙ্গে দেখা করিয়েই স্যারকে আবার ফিরিয়ে দিয়ে যাব। উনি তো আমাদের শিক্ষক। তার কোন ক্ষতি তো আমরা করতে পারি না।’
কিন্তু, তার কথায় আশ্বস্ত হতে পারলেন না তাহমিনা। তার কান্নাজড়িত কণ্ঠ বাঁধ মানল না। দেখেই মৃদু হেসে মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী বললেন, ‘তোমরা মিছিমিছি ভয় পাচ্ছ। আর আমি তো কোনো অন্যায় করিনি। আমি আবার তোমাদের মাঝেই ফিরে আসব।’
তাকে যখন সিঁড়ি দিয়ে নামানো হচ্ছিল, তখন তার ভাই লুৎফুল হায়দার চৌধুরী বললেন, ‘আপনারা আমার ভাইকে নিয়ে যাচ্ছেন। একটু খেয়াল রাখবেন।’
এক পর্যায়ে তিনি মুখোশ পরা একজনকে বললেন, ‘আচ্ছা আপনি মুখোশ পরে আছেন কেন?’ এই বলে তিনি ওই লোকটির মুখে বাধা রুমালটি সরিয়ে ফেললেন।
তখন মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী তাকে ধরে রাখা ছেলেটিকে দেখেই চিনতে পেরে বললেন, ‘তুমি মাঈনুদ্দিন না?’
ছেলেটি উত্তরে বলল, ‘জ্বি স্যার, আমি মাঈনুদ্দিন। আপনার ছাত্র।’
তাহমিনা ও লুৎফুল হায়দার চৌধুরী নিচে নেমে দেখলেন বাসার নিচে একটা কাদা মাখা মাইক্রোবাস আর পাকিস্তানী হানাদারদের গাড়ি। সঙ্গে প্রায় কুড়ি জনের মতো সৈন্য দাঁড়িয়ে আছে।
মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীকে সেই কাদামাখা মাইক্রোবাসে ওঠানো হলো। তখন স্ত্রী তাহমিনা ও তার ভাই বললেন, ‘আপনারা উনাকে যেখানে নিয়ে যাচ্ছেন, আমরাও সেখানে যাবো।’
কিন্তু, সে কথায় পাত্তা না দিয়ে মাইক্রোবাস চলল অজানার উদ্দেশ্যে। তাহমিনা ও লুৎফুল হায়দার চৌধুরীর পায়ের নিচের মাটি যেন সরে গেছে। লুটিয়ে পড়লেন তাহমিনা।
না। এরপর আর ফিরে আসেননি। ফিরে আসেননি অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী। বিজয়ের মাত্র দুদিন আগে তাকে এভাবেই দিনে দুপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় একাত্তরের নরপিশাচ চৌধুরী মাঈনুদ্দিনের নেতৃত্বে আলবদর ও হানাদারদের একটি দল।
তাকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ইনস্টিটিউটে। সেখানে আগেই তুলে আনা হয়েছিল অধ্যাপক মুনীর চৌধুরীসহ অনেক অধ্যাপক, শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক ও সাংবাদিকদের।
এসময় তাদের ওপর চালানো হয়েছিলো ভয়ংকর নিষ্ঠুর নির্যাতন। সেই টর্চার সেল থেকে ফিরে আসতে পেরেছিলেন কেবল দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেছিলেন কেমন ছিল সেদিনের ঘটনা।
‘রাত তখন সাড়ে আটটার কাছাকাছি। লোহার রড হাতে অন্ধকার ঘরটাতে পা রেখেছিল কিছু যুবক। প্রথমে তারা মুনীর চৌধুরীর মুখোমুখি হয়েছিল। বলছিল, “ছাত্রদের তো অনেক কিছু শিখিয়েছেন। আজ আমরা আপনাকে কিছু শিক্ষা দেব।” তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, “রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে আপনি কয়টা বই লিখেছেন?” মুনীর চৌধুরী দুদিকে মাথা নেড়ে বলেছিলেন, “তিনি লেখেননি।” মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীর কাছেও ছিল তাদের একই প্রশ্ন। মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী বলেছিলেন, “হ্যাঁ, আমি লিখেছি।” এ কথা শুনেই রড দিয়ে তার ওপর চালানো হয়েছিল পৈশাচিক নির্যাতন।’
সেদিন যাদের ধরে আনা হয়েছিল, তাদের প্রত্যেককে নিষ্ঠুর নির্যাতনের পর নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মোহাম্মদপুরের কাটাসুরে। তারপর তার ভাগ্যে কি হয়েছিলো কেউ জানে না। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের এই কিংবদন্তী বুদ্ধিজীবীর মরদেহটি শেষমেশ খুঁজেও পাওয়া যায়নি।
কিংবদন্তী গবেষক, বুদ্ধিজীবী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীর জন্ম ১৯২৬ সালের ২২ জুলাই নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার খালিশপুর গ্রামে। তার বাবা বজলুর রহমান চৌধুরী সেকালেই ছিলেন ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। তার মা মাহফুজা খাতুন তেমন একটা পড়াশোনা না করলেও, দারুণ মেধাবী ছিলেন। মাত্র নয় বছর বয়সেই বাবাকে হারিয়েছিলেন মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী। তার শৈশব ও কৈশোর কেটেছিল মা ও মামার আশ্রয়ে।
মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সূচনা হয়েছিল নোয়াখালীতে গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে। এরপর নোয়াখালী আহমদিয়া ইংরেজি স্কুলে ভর্তি করা হয়েছিল তাকে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪২ সালের ম্যাট্রিক পরীক্ষায় পূর্ববঙ্গ থেকে প্রথম শ্রেণিতে চতুর্থ হয়েছিলেন মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী। দুই বছর পরে ১৯৪৪ সালে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে তিনি সমগ্র ঢাকা বোর্ডে মেধা তালিকায় শীর্ষস্থান অধিকার করেছিলেন।
এরপর কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী। কিন্তু, সেখানে তার ভাল না লাগায় বাংলা বিভাগে পরিবর্তিত হয়ে চলে গেলেন শান্তিনিকেতনে। তখন শান্তিনিকেতনের সিলেবাস কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সংযুক্ত ছিল। শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নন-কলেজিয়েট পরীক্ষার্থী হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পরীক্ষায়।
এ সময় তাদের বাড়িতে সম্পত্তি নিয়ে বেশ টানাপোড়েন চলছিল। তার মা একাই সব সামলাচ্ছিলেন। এমন সময় দাঙ্গা শুরু হলো ভারতবর্ষে। বাধ্য হয়ে গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীতে চলে গেলেন মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী। বাড়ি এসে দেখলেন পারিবারিক সেই বিরোধ চূড়ান্ত আকার ধারণ করেছে। শেষে বহু কষ্টে তিনি সেই পারিবারিক বিরোধ মেটালেন। যদিও এর জন্য তাঁদের বহু স্বার্থ ত্যাগ করতে হয়েছিল।
মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী যে বছর স্নাতকের চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন, সে বছর ছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯০তম বর্ষ। আর সেই বছর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বকালের ইতিহাসের সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছিলেন মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী।
সর্বকালের সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ায় তাকে সে বছর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ‘সুরেন্দ্রনলিনী স্বর্ণপদক’ প্রদান করে। দেশভাগের আগেই ১৯৪৭ এর জুলাই মাসে শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্র-ভবনের বৃত্তি পেয়ে সেখানে ফিরে গিয়েছিলেন তিনি। এর মধ্যে দেশ থেকে কয়েক মাস পর ফিরে গিয়ে ১৯৪৮ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রবীন্দ্রনাথের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে গবেষণা শুরু করলেন মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী। তার এই গবেষণার জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ‘সাহিত্যভারতী’ সম্মাননা দিয়েছিল।
এ সময় তিনি চাইলে ভারতে নির্দ্বিধায় থেকে যেতে পারতেন। কারণ, একই সঙ্গে সেখানে তাঁর গবেষণার দারুণ সুযোগ এবং ভালো চাকরির প্রস্তাব ছিল। কিন্তু, তিনি নিজের মাতৃভূমিকে ছেড়ে থাকতে পারেননি। আর তাই ১৯৪৯ সালের নভেম্বরে মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী শান্তিনিকেতন ছেড়ে ঢাকায় চলে এলেন।
ঢাকায় এসে মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী পাণ্ডুলিপি রচয়িতা হিসেবে যোগ দিলেন রেডিও পাকিস্তানের ঢাকা কেন্দ্রে। পরের বছর জগন্নাথ কলেজে বাংলা বিভাগের প্রভাষক হিসেবেও শিক্ষকতা শুরু করেন। একই সময়ে সেন্ট গ্রেগরিজ কলেজেও (বর্তমানে নটরডেম কলেজ নামে পরিচিত) খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করতেন তিনি। আরও আশ্চর্যের বিষয় হলো, শিক্ষকতাকালীন সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও স্নাতকোত্তর বিভাগে পড়তেন তিনি।
এত ব্যস্ততার পরেও এই অসামান্য মেধাবী ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় হয়েছিলেন প্রথম শ্রেণিতে প্রথম। দুই বছর পর ১৯৫৫ সালে লেকচারার হিসেবে যোগ দিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই।
১৯৫৬ সালে সৈয়দা তাহমিনা মনোয়ারা নুরুন্নাহারের সঙ্গে বিয়ে হয় মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীর।
১৯৫৭ সালে তিনি ব্রিটিশ কাউন্সিল থেকে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজে ভাষাবিজ্ঞানে পড়ার জন্য বৃত্তি পান তিনি। সেখানে দুই বছর গবেষণা করার পর তিনি কথ্য বাংলার শব্দের ছন্দবিজ্ঞানের ওপর একটি থিসিস পেপার লিখেছিলেন। দুঃখের বিষয়, তার গবেষণার ধরন তৎকালীন মার্কিন ধারার ভাষাবৈজ্ঞানিক গবেষণাপন্থার অতিমাত্রায় অনুসারী ছিল বলে এই থিসিস পেপার আর প্রকাশিত হয়নি। স্বাধীনতার পরে সেটি ‘Some Supra-Segmental Phonological Features of Bengali’ নামে বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত হয়েছিল।
১৯৬৪ সালে মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে ভাষাবিজ্ঞান পড়ার উদ্দেশে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, দুর্ভাগ্যবশত সেবার তিনি যেতে পারেননি। পরে ১৯৭০ সালে কেন্দ্রীয় বাংলা উন্নয়ন বোর্ড রবীন্দ্রনাথ বিষয়ে গবেষণার স্বীকৃতি হিসেবে তাকে সংবর্ধনা দিয়েছিল।
একাধারে গবেষক ও ভাষাবিজ্ঞানী হিসেবে মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী ছিলেন কিংবদন্তীতুল্য। মননশীল প্রবন্ধেও তিনি ছিলেন ভীষণ উঁচু মানের প্রাবন্ধিক। বিশেষ করে ১৯৬২ সালে প্রকাশিত তার লেখা বাংলা বানান ও লিপি সংস্কার ছিলো বাংলা ব্যাকরণ ও বাংলা ভাষার অন্যতম শ্রেষ্ঠ এক কাজ। ১৯৬৩ সালে প্রকাশিত তার লেখা রবি পরিক্রমা, রঙিন আখর ছিল অসামান্য দুই গ্রন্থ।
১৯৬৯ সালে প্রকাশিত তার লেখা প্রবন্ধ সংকলন ‘সাহিত্যের নব রূপায়ণ’ ছিল বাংলা প্রবন্ধের ইতিহাসে অন্যতম শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ।
মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী শিক্ষাজীবনে যেমন ছিলেন দুর্দান্ত ও তুখোড় মেধাবী এবং ভীষণ প্রতিভাবান, তেমনি শিক্ষকতা জীবনেও তার মতো শিক্ষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে খুব কমই এসেছে। শিক্ষার্থীদের প্রিয় শিক্ষক ছিলেন তিনি। তাদের সঙ্গে তিনি ছিলেন বন্ধুর মতো। সদা হাস্যোজ্জ্বল, অনন্য ব্যক্তিত্ববান ও ক্ষুরধার সরল এই মেধাবী গবেষক শিক্ষককে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ধরে নিয়ে হত্যা করেছিল কেবল তার বিচার বুদ্ধি, বিবেচনা ও বিশ্বাসের জন্য।
চিন্তা ও চেতনায় তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক। পঞ্চাশের দশকে তমদ্দুন মজলিশে পূর্ব বঙ্গের বাংলা সাহিত্যে অমুসলিম সাহিত্যিকদের কোনো সাহিত্যকর্ম গ্রহণযোগ্য হবে না বলা হলে তিনি এর তীব্র প্রতিবাদ করে বিবৃতিও দিয়েছিলেন। পূর্ব পাকিস্তানে রবীন্দ্রনাথকে মুছের ফেলার ষড়যন্ত্রের উদ্দেশ্যে ১৯৬৭ সালে যখন রেডিও ও টেলিভিশনে রবীন্দ্র সঙ্গীত নিষিদ্ধ করা হলে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধে তিনি যেমন পরোক্ষভাবে নানা সহযোগিতা করেছিলেন মুক্তিবাহিনীকে। ঠিক তেমনি নিয়মিত ক্লাস করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়েও। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাকে কিছুদিনের জন্য ভারতে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে অনুরোধ করেছিলেন বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনেরা। কিন্তু, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী যাননি। ছাড়েননি নিজের মাতৃভূমি।
তিনি বলতেন, ‘আমার দেশ ছেড়ে আমি যেতে কোথাও যেতে পারি না। মরলে এই দেশেই মরব।’
এটাই যেন নির্মম সত্য হয়ে ঘটল এই কিংবদন্তী শহীদ বুদ্ধিজীবীর জীবনে।
আজ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ক্ষণজন্মা গবেষক, শিক্ষাবিদ ও কিংবদন্তী বুদ্ধিজীবী মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীর জন্মদিন। জন্মদিনে বিনম্র শ্রদ্ধায় নত চিত্তে স্মরণ করি এই অনন্য প্রতিভাবান শহীদ বুদ্ধিজীবীকে।

তথ্য সূত্র:
আমার বাবার যুদ্ধ/তানভীর হায়দার চৌধুরী
স্মৃতিঃ ১৯৭১/রশীদ চৌধুরী
শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষগ্রন্থ/বাংলা একাডেমী
মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী রচনাবলী

১৪ই ডিসেম্বর সকাল। দিনটি ছিল মঙ্গলবার। সারা ঢাকা শহরে কারফিউ। শান্তিবাগের বাসায় বারান্দায় দাঁড়িয়ে সাত বছর বয়সী ....

22/07/2021

হিসাবটি আমার দারুণ লেগেছে। একেবারে পারফেক্ট! জীবনের সুন্দর একটি হিসাব দেখুন, বুঝুন এবং চিন্তা করুন।

যদি A, B, C, D, E, F, G, H, I, J, K, L, M, N, O, P, Q, R, S, T, U, V, W, X, Y, Z = 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9, 10, 11, 12, 13, 14, 15, 16, 17, 18, 19, 20, 21, 22, 23, 24, 25, 26
অর্থাৎ A to Z এর মান যদি এমনভাবে ধরি যেখানে : A=1, B=2, C=3, D=4, E=5, F=6, G=7, H=8, I=9, J=10, K=11, L=12, M=13, N=14, O=15, P=16, Q=17, R=18, S=19, T=20, U=21, V=22, W=23, X=24, Y=25, Z=26

তাহলে,,,
তুমি যতই পরিশ্রমী হও না কেনো, তোমার পরিশ্রম তোমাকে ভালো একটা জায়গায় নিয়ে যাবে, কিন্তু শতভাগ না।
Hard Work:
H+A+R+D+W+O+R+K= 8+1+18+4+23+15+18+11=98%

তুমি যতই বিজ্ঞ হও না কেনো, কখনো কখনো তা কঠোর পরিশ্রমের চেয়ে কম সফলতা আনতে পারে।
Knowledge:
K+N+O+W+L+E+D+G+E=
11+14+15+23+12+5+4+7+5=96%

আর তুমি যদি ভাগ্যের ভরসায় বসে থাকো, তা কোনো কূলেই তোমায় ভেরাবে না।
Luck:
L+U+C+K=
12+21+3+11=47%

অর্থাৎ এদের কোনোটাই 100% করতে পারে না, তাহলে সেটা কী যা 100% করতে পারে???
Money?? না, এটা 72%
Leadership?? না, এটা 97%
তাহলে??

সব সমস্যারই সমাধান করা সম্ভব, যদি আমাদের থাকে একটা পারফেক্ট Attitude বা দৃষ্টিভঙ্গি হ্যা, একমাত্র Attitude ই আমাদের জীবনকে করতে পারে 100% সফল......

A+T+T+I+T+U+D+E=
1+20+20+9+20+21+4+5=100%

সুতরাং দৃষ্টিভঙ্গি বদলান, জীবন বদলে যাবে।

19/07/2021

আজ ১৯ জুলাই সারাদেশে মৃত্যু বরণ করেন ২৩১জন। খুলনা বিভাগে ৫৭ জন কুষ্টিয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। মেহেরপুরে ৯ জন ও আক্রান্ত হয়েছেন ১৬৪ জন।
কুষ্টিয়ায় হাসপাতাল চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত্যুর মিছিল থামছে না । উপসর্গ থাকলেও অনেকেই আছেন যারা পরীক্ষা করছেন না তারা বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। শেষ অবস্থায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাচ্ছেন ।স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না।

শোক সংবাদমেহেরপুর জেলা ইমাম সমিতির সভাপতি ও মেহেরপুর দারুল উলুম মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ এবং মেহেরপুর কোর্ট মসজিদ এর পেশ ...
15/07/2021

শোক সংবাদ

মেহেরপুর জেলা ইমাম সমিতির সভাপতি ও মেহেরপুর দারুল উলুম মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ এবং মেহেরপুর কোর্ট মসজিদ এর পেশ ইমাম আলহাজ্ব মওলানা মোঃ আনসার উদ্দীন বেলালি আজ রাত ৪ঃ১৫ মিনিটে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করিয়াছেন ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রজিউন।
সকলের নিকট দোয়ার দরখাস্ত রইল আল্লাহ পাক যেনো তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করেন।

13/07/2021

ঢাকার সবচেয়ে ধনী পরিবারের ছেলে মাগফার উদ্দিন চৌধুরী আজাদ। তখনকার দিনে এলভিস প্রিসলির গান শোনার জন্য এক ধাক্কায় ১০০০ টাকার রেকর্ড কিনে আনতো।
তাঁদের বাড়িতে হরিণ ছিল, সরোবরে সাঁতার কাটত ধবল রাজহাঁস, মশলার বাগান থেকে ভেসে আসত দারুচিনির গন্ধ। (ডাকে পাখি খোলো আঁখি, এই গানটার শুটিং হয়েছিল তাদের বাড়িতে)।
আজাদ ক্লাস সিক্সে পড়ে, সেন্ট গ্রেগরি। ১৯৬০ এর দশক। আজাদের বাবা আরেকটা বিয়ে করবেন। আজাদের মা বললেন, তুমি বিয়ে করবে না, যদি করো, আমি একমাত্র ছেলে আজাদকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাব। আজাদের বাবা আরেকটা বিয়ে করলে আজাদের মা সাফিয়া তার বালকপুতের হাত ধরে ওই রাজপ্রাসাদ পরিত্যাগ করেন এবং একটা পর্ণকুটীরে আশ্রয় নেন। ছেলেকে লেখাপড়া শেখান।
আজাদ ১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে মাস্টার্স পাস করে।
তাঁর বন্ধুরা যোগ দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধে, ফিরে এসেছে আগরতলা থেকে, ট্রেনিং নিয়ে। তার ঢাকায় গেরিলা অপারেশন করে। বন্ধুরা আজাদকে বলল, চল, আমাদের সাথে, অপারেশন করবি। তুই তো বন্দুক পিস্তল চালাতে জানিস। তোর আব্বার তো বন্দুক আছে, পিস্তল আছে, তুই সেগুলো দিয়ে অনেকবার শিকার করেছিস।
আজাদ বলল, এই জগতে মা ছাড়া আমার কেউ নেই, আর মায়েরও আমি ছাড়া আর কেউ নেই। মা অনুমতি দিলেই কেবল আমি যুদ্ধে যেতে পারি।
মাকে আজাদ বলল, মা, আমি কি যুদ্ধে যেতে পারি?
মা বললেন, নিশ্চয়ই, তোমাকে আমার প্রয়োজনের জন্য মানুষ করিনি, দেশ ও দশের জন্যই তোমাকে মানুষ করা হয়েছে।
আজাদ যুদ্ধে গেল। দুটো অপারেশনে অংশ নিল। তাদের বাড়িতে অস্ত্র লুকিয়ে রাখা হলো। গেরিলারা আশ্রয় নিল।
১৯৭১ সালের ৩০ আগস্ট। ধরা পড়ে ক্র্যাক প্লাটুনের একদল সাহসী মুক্তিযোদ্ধা। সেসময় আজাদকেও আটক করা হয়। তাকে ধরে নিয়ে রাখা হলো রমনা থানা সংলগ্ন ড্রাম ফ্যাক্টরি সংলগ্ন এম.পি হোস্টেলের মিলিটারি টর্চার সেলে।
গরাদের ওপারে দাঁড়িয়ে থাকা আজাদকে তাঁর মা চিনতে পারেন না। প্রচণ্ড মারের চোটে চোখমুখ ফুলে গেছে, ঠোঁট কেটে ঝুলছে, ভুরুর কাছটা কেটে গভীর গর্ত হয়ে গেছে।
–“মা, কি করব? এরা তো খুব মারে। স্বীকার করতে বলে সব। সবার নাম বলতে বলে।“
–“বাবা, তুমি কারোর নাম বলোনি তো?
–না মা, বলি নাই। কিন্তু ভয় লাগে, যদি আরও মারে, যদি বলে দেই…!
–বাবারে, যখন মারবে, তুমি শক্ত হয়ে থেকো। সহ্য করো। কারো নাম বলো না।
–আচ্ছা মা। ভাত খেতে ইচ্ছে করে। দুইদিন ভাত খাই না। কালকে ভাত দিয়েছিল, আমি ভাগে পাই নাই।
–আচ্ছা, কালকে যখন আসব, তোমার জন্য ভাত নিয়ে আসব।
সাফিয়া বেগমের ভেতরটা দুমড়ে-মুচড়ে যায়। গায়ে হাত তোলা তো দূরে থাক, ছেলের গায়ে একটা ফুলের টোকা লাগতে দেননি কোনোদিন। সেই ছেলেকে ওরা এভাবে মেরেছে… এভাবে…
মুরগির মাংস, ভাত, আলুভর্তা আর বেগুনভাজি টিফিন ক্যারিয়ারে ভরে পরদিন সারারাত রমনা থানায় দাড়িয়ে থাকেন সাফিয়া বেগম, কিন্তু আজাদকে আর দেখতে পাননি। তেজগাঁও থানা, এমপি হোস্টেল, ক্যান্টনমেন্ট-সব জায়গায় খুজলেন, হাতে তখন টিফিন ক্যারিয়ার ধরা, কিন্তু আজাদকে আর খুঁজে পেলেন না।
ছেলে একবেলা ভাত খেতে চেয়েছিলেন। মা পারেননি ছেলের মুখে ভাত তুলে দিতে। সেই কষ্ট-যাতনা থেকে পুরো ১৪টি বছর ভাত মুখে তুলেন নি মা! তিনি অপেক্ষায় ছিলেন ১৪ টা বছর ছেলেকে ভাত খাওয়াবেন বলে। বিশ্বাস ছিলো তাঁর আজাদ ফিরবে। ছেলের অপেক্ষায় শুধু ভাতই নয়, ১৪বছর তিনি কোন বিছানায় শোন নি।
শনের মেঝেতে শুয়েছেন শীত গ্রীষ্ম কোন কিছুতেই তিনি পাল্টান নি তার এই পাষাণ শয্যা। আর এর মুল কারণ আজাদ রমনা থানায় আটককালে বিছানা পায় নি।

৩০ আগস্ট রাতে রুমী, আবু বকরদের মতো আজাদকেও রাজাকারদের সহযোগিতায় ধরে নিয়ে যায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী। তেজগাঁওয়ের নাখালপাড়া ড্রাম ফ্যাক্টরি সংলগ্ন এমপি হোস্টেলের মিলিটারি টর্চার সেলে পাকিস্থানী আর্মিদের দ্বারা অমানবিক নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার হয় বকর রুমি বদি সহ সাতজন । নাক-মুখ ফেঁটে রক্ত বের হয়েছে, কোটর থেকে চোখ খুলে এসেছে, হাড়গোড় ভেঙ্গে দিয়েছে, অসহ্য ব্যাথায় চিৎকার করতে করতে জ্ঞান হারিয়েছে, এতকিছু সয়েও ওঁরা একটি বারের জন্যেও মুখ খুলেনি ।
এরপর ওদের ভাগ্যে কি ঘটেছে কেউই জানেনা!
আজ কিংবদন্তি মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মাগফার উদ্দিন চৌধুরী আজাদের জন্মদিন। বিনম্র শ্রদ্ধা রইলো শহীদ আজাদের প্রতি। 💕

তথ্য সূত্র - মা/ আনিসুল হক।
ছবিটি আজাদের শৈশবে তোলা।

11/07/2021

হার্ডিঞ্জ ব্রিজ উদ্বোধনের সময় এর প্রধান প্রকৌশলী স্যার রবার্ট উইলিয়াম গেইলস আবেগঘন কণ্ঠে বলেছিলেন-
‘যে সেতু নির্মাণ করে দিয়ে গেলাম, উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণ করা হলে এ সেতু চিরযৌবনা হয়ে থাকবে।’

আজ উইলিয়াম গেইলস নেই, নেই লর্ড হার্ডিঞ্জ। কিন্তু রয়ে গেছে তাদের অমর কীর্তি। চিরযৌবনা এ সেতু আজও সাক্ষ্য দেয়- গেইল সত্য বলেছিলেন। ২০১৫ সালে শত বছর পূর্ণ করলো হার্ডিঞ্জ ব্রিজ। কিন্তু আজও দেখে মনে হয় যেন সদ্য যৌবনপ্রাপ্ত এক সেতু। ১৯১৫ সালের ৪ মার্চ, ব্রিটিশ বাংলার ইতিহাসে এক অনন্য দিন। হিজ এক্সিলেন্সি দি ভাইসরয় অব ইন্ডিয়া ‘ব্যারন হার্ডিঞ্জ পেনসুরস্ট’ এলেন পাকশিতে। খুলে দিলেন বাংলার উত্তরের সঙ্গে দক্ষিণের যোগাযোগের এক বন্ধ দুয়ার। একদিকে যেমন সৌন্দর্য, অপরদিকে ইতিহাসের সাক্ষী- সবমিলিয়ে এই ব্রিজটি বাংলার ঐতিহ্য এবং তাৎপর্য বহন করছে এশিয়ার অন্যতম দীর্ঘ রেলসেতু এ হার্ডিঞ্জ ব্রিজ।

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশীতে এই ব্রিজের অবস্থান। পাকশী স্টেশনের দক্ষিণে প্রমত্ত পদ্মা নদীর উপর লালরঙা এই ব্রিজটি দাঁড়িয়ে আছে। এর অপরপ্রান্তে রয়েছে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলা। ১৮৮৯ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার কলকাতার সাথে আসাম, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা ও উত্তরবঙ্গের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। এজন্য সর্বপ্রথম ১৮৮৯ সালে ব্রিজটি নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়। পরবর্তীতে দীর্ঘ ১৯ বছর পর ব্রিজটি নির্মাণের জন্য মঞ্জুরী লাভ করে। ব্রিজটি নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয় ব্রিটিশ প্রকৌশলী স্যার রবার্ট উইলিয়াম গেইলসকে। ব্রিটিশ সরকার তাকে এই ব্রিজ নির্মাণের স্বীকৃতিস্বরুপ 'স্যার' উপাধিতে ভূষিত করে।

ব্রিজটির নকশা প্রণয়ন করেন বিখ্যাত ব্রিটিশ স্থপতি আলেকজান্ডার মেয়াডোস রেন্ডেল। ব্রেথওয়েইট অ্যান্ড কার্ক নামক ব্রিটিশ কনস্ট্রাকশন কোম্পানি ব্রিজটির নির্মাণের দায়িত্ব গ্রহণ করে। ১৯০৯ সালে ব্রিজ নির্মাণের জন্য সার্ভে শুরু হয়। তখন পদ্মা ছিল ভরা যৌবনা। রবার্ট উইলিয়াম গেইলস বুঝতে পারেন- ব্রিজের নির্মাণ তার জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং হবে। এজন্য তিনি সিদ্ধান্ত নেন মূল ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করাই আগেই নদী-রক্ষা বাঁধ তৈরি করতে হবে। ১৯১০-১১ সালের পুরোটা সময় জুড়ে শুধু বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এক্ষেত্রে গেইলস এক অসাধারণ পদ্ধতি ব্যবহার করেন। তিনি বৃহদাকৃতির পাথর আর মাটি একত্রে মিশিয়ে নদীর পাড়ে ফেলতে থাকেন। দুই পাড়ে প্রায় পনের কিলোমিটার জুড়ে এভাবে বাঁধ দেন। ধারণা করা হয়, নদী বাধতে যে পাথর ব্যবহার হয়েছে তা দিয়ে আরো কয়েকটি ব্রিজ নির্মাণ করা যেত। গেইলসের সেই পদ্ধতি সত্যিই কাজে লেগেছিল। একশ বছর পেরিয়ে গেছে, কিন্তু সেই বাঁধ এখনও সম্পূর্ণ অক্ষত আছে। যেন একটা পাথরও এখনও খসে পড়েনি।

১৯১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যখন পুরোদমে কাজ চলছে, তখন এখানে কর্মী ছিলেন সর্বমোট ২৪ হাজার ৪শ’ জন। হয়। সেতুটি নির্মাণের ক্ষেত্রে ব্রিটিশরা তৎকালীন সর্বোচ্চ প্রযুক্তির ব্যবহার করে। ১৯১৫ সালের নববর্ষের দিনই (১ জানুয়ারি ১৯১৫) প্রথম মালগাড়ি দিয়ে চালু করা হয় একটি লাইন। সেই সময় এর নির্মাণে ব্যয় হয় ৩ কোটি ৫১ লাখ ৩২ হাজার ১৬৪ রুপি বা ৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ব্রিজ নির্মাণে নদীর নাব্যতার যাতে কোনো ক্ষতি না হয় তা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। ফলে এ ব্রিজের জন্য পদ্মার নাব্যতায় কোনো প্রভাব পড়েনি। যদিও ব্রিজের উত্তর দিকের বিরাট অংশ জুড়ে এখন চর। কিন্তু এটি হার্ডিঞ্জের জন্য নয়। ক্ষতি যদি কিছু হয়ে থাকে তবে তা ‘লালন শাহ’র জন্য।

সেসময় অনেক ব্রিটিশ নাগরিকের জন্য পাকশীতে গড়ে তোলা হয় বাংলো বাড়ি ও কটেজ। পাকশীতে তখন ব্রিটিশদের অবাধ চলাচল ছিল। রবার্ট উইলিয়াম গেইলসের একটি বড় বাংলো ছিল, যা এখনও টিকে আছে। বলা হয়ে থাকে, প্রায় এক কিলোমিটার দূরের এই বাংলো থেকে তিনি দূরবীন দিয়ে নির্মাণকাজের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতেন। নির্মাণকাজের সময় পাকশী ও এর আশপাশে ছোটখাট অনেক কলকারখানা, দোকানপাট ও বাজারঘাট গড়ে ওঠে। জনজীবনে প্রভাব পড়েছিল ব্রিটিশ অধিপত্যের। স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন হয়েছিল।

দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে নির্মাণকাজ চলে। অবশেষে ১৯১৫ সালে নির্মাণকাজ শেষ হয়। ব্রিজটির নির্মাণকাজে তৎকালীন হিসেবে ব্যয় হয়েছিল ৩ কোটি ৫১ লক্ষ ৩২ হাজার ১ 'শ ৬৪ ভারতীয় রুপি। ১৯১৫ সালের ১ জানুয়ারি প্রথম পরীক্ষামুলকভাবে ট্রেন ঈশ্বরদী থেকে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের উপর দিয়ে খুলনা অভিমুখে যাত্রা করে। এরপর একই বছর ৪ঠা মার্চ লর্ড ব্যারন হার্ডিঞ্জ নিজে ফিতা কেটে ব্রিজটি উদ্বোধন করেন।

Address

Meherpur District
Amjhupi
7101

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when amadermeherpur.com posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to amadermeherpur.com:

Share


Other Media/News Companies in Amjhupi

Show All