Sopno vora somoai

Sopno vora somoai Balovaso Nija nijar kotha vabo

31/07/2022
24/07/2022
23/06/2022

#ব্ল্যাক_ভাইরাস(সিজন-৩)
#পার্টঃ৭_৮_৯_১০
: নীল মাহমুদ ....
রাইসার বাবা রাইসাকে দেখে চমকে যায় আর সেই সাথে রাইসাও চমকে যায়, তার বাবা আকমল সাহেব এত খারাপ,
রাইসা সরাসরি তার বাবার দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো,বাবা তুমি?
তখন আকমল সাহেব মুখ টা লুকাবে কই,
রাইসা আবার বলল, তোমাকে বাবা বলতে আমার ঘেন্না লাগছে, তুমি এত নিজ, তুমি একটা বারও ভাবলে না তোমারও একটা মেয়ে আছে,
তুমি এই সব করে বেড়াও,
আজ তোমার পাপের ফল আমাকে ভোগ করতে হতো,
আকমল সাহেব কোন কথা না বলে বের হয়ে যায়,
তখন নিশি এসে জিজ্ঞেস করলো,কি স্যার এত তারাতাড়ি কাজ শেষ,
আকমল সাহেব নিশির গালে একটা কষে চড় মারে,
আর বলে ও আমার মেয়ে তুই আমার মেয়েকে নিয়ে আসছিস,
তখন নিশি আকমল সাহেবের শার্টের কলার চেপে অন্যের মেয়ে মাল আর তোর মেয়ে কি অন্যের কাছেই মাল,
কি এখন খুব কস্ট লাগে,
একটু ভেবে দেখ,
আকমল সাহেব ; তোকে আমি দেখো নিশি,
নিশি- এই ভুল টা, ভুল করেও করিস না,না হলে কাল ফেসবুকের কোন পেজে লিখা থাকবে,
বাবা একটি মেয়ের সর্বনাশ করতে গিয়ে দেখে এটি তার নিজের মেয়ে।
সব ভিডিও হয়ে গেছে বেশি কথা বললে একদম,
আকমল চলে গেলেন,তারপর রাইসাকে নিশি বলল,সরি রাইসা তোমার বাবাকে একটা উচিত শিক্ষা দেওয়ার দরকার ছিলো তাই,
এর আগে কত মেয়ের যে সর্বনাশ করেছে,
আর আমাকে যতটা তোমরা খারাপ ভাবো ততটা খারাপ আমি না,
এই কলেজে সবাই জানে আমি মাদক ব্যবসায়ী, দেহ ব্যবসায়ী,
এই যে আজ যেটা হল, এরকম সেইম একটা পুলিশের সাথে করছিলাম তাই ২মাসের জন্য জেলে ছিলাম,
এই সব কাউ কে বলো না,এখনো অনেক অমানুষ যাদের মানুষ করতে হবে,
ভোরের আলো ফুটতেই ছাত্র-ছাত্রীদের
আনাগোনা বেড়েই চলেছে,
আমাদের নীল২ ও পিছিয়ে নেই সেই ফুচকার ভ্যান ঠেলতে ঠেলতে ক্যাম্পাসে আসে,
আর দাঁড়িয়ে গান গাইছে "আখ ক্ষেতে ছাগল বন্দি জলে বন্দি মাছ আরে আমার কাছে তানিয়া ম্যাডাম বন্দি ঘুরায় ১২মাস,সখি গো আমার ফুচকা অনেক বালা,
কি বলি কিছুই মিলছে না,
ধ্যাত তানিয়া আসছে না কেনো,
বলে পেছনে ঘুরে দেখে তানিয়া অগ্নি মূর্তি রুপে দাঁড়িয়ে আছে,
নীল২ ভয়ে তানিয়া কে বলল,আফা ফুচকা খাবেন,
তানিয়া- এই তুই একটু আগে বলে গান গাইছিলি,
নীল২- আমি কই না তো ,, আফা ফুচকা দেই,
তানিয়া- আমি তোর কাছে কিসের জন্য বন্দি বল,
নীল২- মানে হইছে আমি একটা গান বানাইতে চাই ছিলাম কিন্ত মিলে না, হয় না গান,
তানিয়া- তোর যা কর কিন্ত আমার নাম বলবি না,মারতে যাবে৷ ঠিক এমন সময় মাইশা রিয়া এসে পড়লো,
আসসালামু আলাইকুম ম্যাম,ফুচকা খেতে আসছেন,,
ম্যাম- না,
রিয়া- তাহলে?
ম্যাম- আসলে খেতে আসছিলাম এখন ইচ্ছে নাই,বিড়বিড় করে তোকে আমি পড়ে দেখে নিবো,
রিয়া- কি ম্যাম এরকম তেড়ে আসছিলো কেনো তোমাকে মারতে,
নীল২- কই না তো, উনি আমাকে মারবে কেনো,
রিয়া- আচ্ছা ফুচকা দেও তুমি?
নীল২- আচ্ছা দিচ্ছি?
রিয়া মাইসা কে বলল,আচ্ছা মাইসা তুই কি জানিস নীল স্যার তোর প্রতি একটু দূর্বল,
--তুই যে কি বলিস রিয়া,
-দেখ মাইসা নীল স্যার কিন্ত যথেষ্ট একটা ভালো ছেলে একটু তার নমুনা তো দেখলি একজন কে রক্ত দিলো,,
-রক্ত দিলেই মানুষ হয় না,কিন্ত নীল স্যার সহজ সরল একজন মানুষ কিন্ত তাকে নিয়ে সংসার সম্ভব না,এক তো দেখতে একদম ক্ষ্যাত আর ২য় তো উনি আমাদের শিক্ষক,
রিয়া- ধূর তুই কোন কাজেরই না,আরে এখন কত ছাত্রী শিক্ষক বিয়ে করছে তুই জানিস,
মাইসা -নিজে চয়েস করে তারপর প্রেম করবো,
নীল২ বলে উঠলো তাহলে মাইসা জীবনে বড় একটা বাঁশ খাবা,।
মাইসা- কেনো ভাইয়া,
নীল২- মেয়েরা নিজের জন্য সঠিক জীবন সঙ্গী নির্বাচন করতে ব্যর্থ,
মেয়েরা এই একটা জিনিস সঠিক ভাবে নির্বাচন করতে পারে না,হয়তো কিছু আছে পারে কিন্ত সেটা কপাল গুনে,
মাইসা একটু কৌতুল ভাব নিয়ে জিজ্ঞেস করলো কেনো ভাইয়া পারে না,,
নীল২- তুমি যখন একটা ছেলের পিছনে ঘুরবে তখন ছেলেটা মনে করবে তুমি
ভালো মেয়ে না,৪২০ মেয়ে তুমি যত তার পিছনে ঘুরবে ততই সে খারাপ ভাবতে শুরু করবে,
এক সময় গিয়ে বলবে তুমি যদি আমাকে সত্যি ভালবেসেই থাকো তাহলে একটা পরীক্ষা দেও,তখন ছেলেটি বলবে চলো যাই লিটনের ফ্লাটে,
তারপর খেয়েদেয়ে ছেলে হাওয়া,
তুমি যদি ছেলেটি কে আগে বলো,
আমি তোমাকে ভালবাসি তাহলে এটা
চরম ভুল করবে,
তুমি মেয়ে তোমার পিছনে অনেক ছেলে ঘুরবে,আর
তুমিও মানুষ তোমার পছন্দ অপছন্দ আছে কিন্ত তোমাকে বেঁচে নিতে হবে সেখান থেকে,
কিন্ত আবার সেখানেও ভুল করে মেয়েরা ঠিকঠাক বেঁচে নিতে পারে না।
রিয়া নীল কে জারি দিয়ে তাহলে করবে টা কি,
নীল২- আমাকে শেষ করতে দিবা তো,
মাইশা - বলতে দে?
নীল২- শেষ কথা হল,চকচক করলেই সোনা হয় না সেটা তো শুনছো,
পাস দিয়ে যাচ্ছিলো সোনা মিয়া,
তিনি দাঁড়িয়ে নীল২ কে বলল,আমি কি তা তাহলে সোনা মিয়া না,
নীল২- আরে ভাই আপনাকে কে বলছে?আমি তো এখানে ওদের বুঝাচ্ছিলাম চকচক করলেই সোনা হয় না,
সোনা মিয়া রাগ দেখিয়ে বলল,আজ একটু ফিটফাট হয়ে আসছি বলে তুমি এই কথা বললা চকচক করলেই আমি সোনা মিয়া না তাহলে কি লাগে আমাকে,
নীল২ রেগে বলে ফেলে তোকে তো ঐ সোনা লাগে,,
শুনে রিয়া আর মাইসার মুখ থেকে ফুচকা পড়ে গেলো,
নীল২- তোমরা এমন করলে কেনো কি হয়েছে।
রিয়া- তুমি কি বললে এই মাত্র।
নীল তো রেগে ভুল করে বলে ফেলছে,
আরে আমি সোনা, রুপা,তামা এই সব এর কথা বলছি,
রিয়া- আমি ভাবলাম ঐটা,
নীল২- চুপ,
এমন সময় ২ টা পুলিশের গাড়ি ঢুকলো কলেজে সবাই তাকিয়ে আছে,
কিন্ত পুলিশের গাড়ি ব্রেক করলো নীল২ এর,,,,,,..........

#পার্টঃ৮
: নীল মাহমুদ .......
পুলিশের গাড়ি গুলো এসে নীল২ এর সামনে ব্রেক করলো,
হঠাৎ পুলিশের আগমন দেখে রীতি মতো হইচই পড়ে গেলো,
তখন গাড়ি থেকে এস আই নেমে বললেন ভয়ের কোন কারন নেই,
প্রশাসন থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে
আজ থেকে আমরা এই ক্যাম্পাসে অবস্থান করবো যাতে আর কোন খুন খারাপি না হয়,
স্টুডেন্টদের উদ্দেশ্য করে বলল,আপনারা নিশ্চিতে থাকতে পারেন,।
নীল স্যার তার বটবটি বাইক নিয়ে কলেজে আসে এসে দেখে পুলিশ,
সামনে পড়ে মাইসা আর রিয়া,
নীল স্যার রিয়া কে জিজ্ঞেস করে,রিয়া
কলেজে এত পুলিশ কেনো,
আজ আবার কোন খুন হয়েছে নাকি,
রিয়া- স্যার কোন তো আপনি হবেন মাইসার হাতে,
নীল লজ্জা পেয়ে, কি যে বলো না রিয়া ও আমাকে খুন করবে কেনো,
রিয়া- তো কি করবে স্যার আপনি এত ক্ষ্যাত কেন স্যার,।।
ছাত্রীর মুখে ক্ষ্যাত শুনে নীল স্যার একটু লজ্জাই পায়,
নীল- দেখো রিয়া আমি ক্ষ্যাত হতে পারি কিন্ত আমি ভালো ছেলে।
রিয়া- স্যার সত্যি করে বলেন তো আপনি মাইশা কে পছন্দ......
মাইসা রিয়া কে থামিয়ে বলল,চুপ করবি তুই একটু বেশি কথা কস,
নীল স্যার চোখ থেকে চশমা খোলে বলল,আমার বাইকের পিছনে বসতে ভয় পাবে কি?
মাইশাও কেমন জানি মাথা নাড়িয়ে বলল না,
নীল স্যার বাইক স্টার্ট দিতেই মাইসা নীল স্যারের বাইকের পিছনে সিটে বসলো তারপর চলল রেস্টুরেন্টের দিকে,এই দিকে রিয়া হা করে দাঁড়িয়ে আছে আর ভাবছে সালা তলে তলে এত দূর আর আমি জানি না,
বুঝলাম না কাহিনি টা কি,
পাঠকরা তো জানে না যে তারা ফেসবুকে কথা বলতো,
তো নীল স্যার মাইসা কে রেস্টুরেন্টে নিয়ে গেলো কেনো কারন আজ মাইসা কে প্রপোজ করবে নীল স্যার,
নীল স্যার একটু বোকা হলেও মাইসার খুব পছন্দ কিন্ত সেটা কাউ কে বলে না,
মাইসার ভাবনা হল, পৃথিবীতে কেউ
কারো মনের মতো থাকে না,
ভালবাসা দিয়ে নিজের মনের মতো করে নিতে হয়,
যে বলবে আমি তোমার মনের মতো বুঝবে সে তোমাকে ডপ দিচ্ছে,
কারন কেউ কারো মনের মতো থাকে না।
যাক নীল স্যার আর মাইসার প্রেম টা শেষ পর্যন্ত হয়েও গেলো,
আর নীলের সাথে মাইসাকে দেখে কেউ কিছু বলে না,কারন সবাই জানে নীল স্যার সহজ সরল বোকাসোকা একজন
মানুষ,
একটা কথা বলতে ভুলে গেছি কলেজে পূর্ণমিলনী অনুষ্ঠান আছে সব ডিপার্টমেন্টের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ আয়োজন করেছে ৭দিন পর অনুষ্ঠান,
হাজার হাজার স্টুডেন্ট আসবে এখন নীল ভাবছে এত গুলা মেয়ে আসবে তাদের সামনে ফুচকা বিক্রি করব কেমন দেখা যায়,
২দিন পর,,,,
রিয়ার বান্ধবী নদী এসে নীল২ কে বলল,ভাইয়া খবর শুনছেন?
নীল২- কোন খবর? (হেসে)
--তানিয়া ম্যামের তো বিয়ে ঠিক হয়েছে,২দিন পর বিয়ে।
কথা টা শুনে নীল২ এর ফুচকা বানানো হাত হঠাৎ থেমে গেলো,আর হাসি মুখ টা নিমিষেই কালো হয়ে গেলো,
কথা টা শুনে সেদিন চলে যায় নীল২, কারন মন টা অনেক খারাপ হয়ে যায়,
ক্যাম্পাসে সারাদিন পুলিশ থাকলেও রাতে কোন পুলিশ থাকে না,
হস্টেলের এক ছাত্রী টিউশনি শেষ করে ফিরছিলো,
রাত তখন ৮টা বাজে বেশি রাতও না,
ঠিক তখন একটি ছেলে পথ আগলে দাঁড়ায়,
মেয়েটি ভয় পেয়ে যায়,মেয়ে টি ছেলেটি কে সালাম দেয় আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া,আমার পথ আটকে দাঁড়ালেন কেনো,
ছেলেটির নাম রাকিব,স্থানীয় ছেলে।
রাকিব- তোকে অনেক দিন ধরে দেখি কিন্ত খুব ইচ্ছে হয় বুঝলি চল না আড়ালে,
মেয়েটি এই সব কি বলছেন ভাইয়া,
রাকিব- চুপ কোন কথা বলবি না,
কিন্ত এক পর্যায়ে মেয়েটির মুখ বেঁধে ফেলে রাকিব,তারপর রাকিবের মনের ইচ্ছে পূরন করে কিন্ত রাকিব মাতাল থাকায় মেয়েটিকে গলা টিপে মেরে ফেলে,
সকালে পাওয়া যায় মেয়েটির লাশ,
থানা থেকে পুলিশ আসে,
কলেজের স্টুডেন্টরা ভিড় করে দেখছে মেয়েটি কে,
সবার জবানবন্দি নিলো কিন্ত এবার পুলিশ পড়ে গেলো বিপাকে,
স্টুডেন্টদের দাবি এটা পুলিশের ব্যর্থতা কারন পুলিশ কোন কঠিন ব্যবস্থা নিচ্ছে না,
স্টুডেন্ট রা অবরোধ ডাকবে স্লোগান দিচ্ছে,।
তখন এস আই মামুন বললেন,দেখেন আমরা এটা হালকা ভাবে নিচ্ছি না,
আমরা মানছি আমরা ব্যর্থ কিন্ত শেষ বার একটা সুযোগ দিন,কারন এই কেসের দায়িত্ব নতুন অফিসার কে দেওয়া হয়েছে,নতুন বললে ভুল হবে এর আগেও সে একই মিশন সফল হয়েছে,
সবাই বলে উঠলো কে সে, সে কোথায় এসির হাওয়া খাচ্ছে নতুন অফিসার,।।
আরেক জন বলল,মহারাজ মনে হয় ঘুম থেকেই উঠে নাই,
এমন সময় একটি গাড়ি এসে থামলো,
সবাই গাড়ির দিকে তাকিয়ে আছে,
গাড়ির দরজা ঠেলে নামলেন রিয়াদ,
এই সেই অফিসার রিয়াদ যার বউ ছিলেন ব্ল্যাক ভাইরাস টিমের সদস্য,
সবাই চমকে যায় আর কোন কথা বলে না,রিয়াদ কে দেখে সবাই চুপ হয়ে যায় সবাই বুঝে গেছে,
রিয়াদ কিছু না বলে নিজের কাজ শুরু করে,
রিয়াদ এস আই মামুন কে বলল,এদের জবানবন্দি নিয়েছেন কাউ সন্দেহ হয় বলছে কিছু কেউ মেয়েটি কে ইভটিজিং করতো কিনা,
হঠাৎ রিয়াদের চোখ যায় গাছের দিকে, ভালো করে দেখে এটা তো একটা সিসি ক্যামেরা,
রিয়াদ মামুন কে বলে সিসিটিভির ফুটেজ দেখতে তাহলে খুনি কে ধরা যাবে কিন্ত মামুন কিছুক্ষণ পর এসে বলল স্যার সিসিক্যামেরার ফুটেজ ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে,কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে তাদের সার্ভার হ্যাক হয়েছে,আজ সকালেই,
রিয়াদ পড়ে যায় চিন্তায় কে ডিলিট করলো আসামি নাকি ব্ল্যাক ভাইরাস,
যেহেতু সার্ভার হ্যাক তাহলে ব্ল্যাক ভাইরাস চায় না আমাদের হাতে অপরাধী ধরা পড়ুক,
ব্ল্যাক ভাইরাস চায় তারা শাস্তি দিবে,
তখন রিয়াদ বলে অপরাধী এই এলাকার এস আই মামুন পুলিশ টহলের ব্যবস্থা করুন এই এলাকা জুড়ে,
পুলিশ লাশ টি নিয়ে চলে যায়,
আর এদিকে পরেরদিন নীল২.....
.......

#পার্টঃ৯
#লেখকঃNill_Mahmud.....
নীল২ ক্যাম্পাসে এসে দাঁড়াতেই একটা ফোন আসে আর নীল২ ফুচকার ভ্যান ফেলেই চলে যায়,
রিয়া আসে নীলের সাথে কথা বলতে কিন্ত এসে দেখে নাই,
ভ্যান আছে নীল২ নাই,
একজন বলল,
কই থেকে ফোন আসলো আর নীল২ চলে গেলো,
রিয়ার মনে পড়লো আজ তো তামিয়া ম্যামের বিয়ে,
তাহলে নীল২ সেখানে ভেজাল করতে,
বিয়ের অনুষ্ঠান নেই শুধু কয়েক জন,
ম্যাম যেখানে থাকে সেখানেই বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে ম্যামের বাবা মা আসছে,
ম্যামের বাবা যা বলে তাই করে অনেক ভয় পায় বাবা কে দেখে,
রিয়া নদী কে নিয়ে তানিয়া ম্যামের বাসায় গেলো।
মাইসা কে নিয়ে যাবে কিন্ত মাইসা তো নীল স্যার কে মানুষ করতে ব্যস্ত,।
তাই নদী কে নিয়ে গেলো যাতে
নীল২ কে ফেরাতে পারে,
কোন ঝামেলা না করে,
নদী আর রিয়া তানিয়া ম্যামের বাসায় গিয়ে দুজনেই চমকে গেলো,
ভূত দেখার মতো কারন নীল৩ তো বর সেজে তানিয়া ম্যামের পাসে বসে আছে,
রিয়া নদী কে বলল,এই আমার হাতে একটা চিমটি দে তো আমি কি স্বপ্ন দেখছি নাকি,।
নদী- না সত্যি, দেখিস না কিন্ত কেমনে সম্ভব,
রিয়া- কেমনে সম্ভব, তুই দে না চিমটি একটা,
নদী ঠাস করে থাপ্পড় মারলো আর রিয়া উফফ তোরে থাপ্পড় দিতে বলছি,
এটা স্বপ্ন না সত্যি কিন্ত কেমনে,
যাই হোক গিয়ে নীলের পাশে দাঁড়ালো কিন্ত ম্যামের মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না,বেচারি বিসিএস করে কি হল শেষে একটা ফুচকা ওয়ালা কে বিয়ে কর‍তে হল,।
কি সুন্দর ম্যাইয়া টা শেষ জীবন ডা তামা তামা ম্যামের জীবন,
রিয়া নীল২ কে বলল ফিসফিস করে কি করে সম্ভব, ডিয়ার এক্স বুদ্ধি থাকলে সব সম্ভব,
নীল২- জায়গা মতো তেল মারছি
রিয়া মনে মনে ছেলেটার কথা কোন দিন ঠিক হবে না,।।কিন্ত কি এমন ম্যামের বাবা কে বলল যে বেটা রাজি হয়ে গেলো,
আর নীল২ এর পেটে জিলিপীর প্যাচের মতো বুদ্ধি তাই দিয়ে কাবু করে ফেলছে,
যাইহোক বিয়েটা সম্পূর্ণ হল আজ নীল২ আর তানিয়ার বাসর রাত তাও
তানিয়ার বাসায়,
তানিয়া বসে আছে ঘোমটা দিয়ে তাই ভাবছেন আপনারা না কোন দিন না,
নীল২ দরজা খোলে দেখে তানিয়া ফ্যানের সাথে ফাঁসি দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে,
নীল২ দৌড়ে গিয়ে তানিয়া কে আটকায়
তানিয়া রেগে বলে, ছাড় ছাড় আমাকে ধরবি না,আমি মরে যাবো তাও তুই আমাকে পাবি না,
নীল২ - কেনো কি অপরাধ আমার কি করছি আমি,
তানিয়া- তুই জানিস না তুই কি করছিস সেই স্কুল লাইফ থেকে তুই আমার পিছনে লেগে আছিস,আর তুই সামান্য ফুচকা ওয়ালা তুই আমার এত পড়াশোনা করে তাহলে কি লাভ হলো যদি ফুচকা ওয়ালা কে বিয়ে করতে হয়,
তানিয়ার কথা ঠিক, কিন্ত নীল২ কে তো অনেক ভালবাসে,
তানিয়া- তোর জন্য এখন কলেজে আমি মুখ দেখাতে পারবো, আমি বেঁচে থাকতে চাই না,
নীল২- তানিয়া আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি সেটার কথা একবার বলছো না কেনো।
তানিয়া- তোর মতো বাজে ছেলের ভালবাসার দরকার নেই,তুই এত টা খারাপ যে তোর ফ্যামিলি তোর সাথে না ৪ বছর আগে তোর বাড়ি থেকে বের করে দিছে তুই কত ভালো হলে তোর বাবা মা তোকে বের করে দেয়,,,
নীল২- তোমাকে এই কথা কে বলল,
তানিয়া- আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি,
নীল২ উপায় না পেয়ে তানিয়া কে বলে আমি ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দিবো সময় মতো,
তোমার জীবন থেকে একেবারে চলে আমার ছাঁয়াও খোঁজে পাবা না,
বলে নীল২ বের হয়ে গেলো বাসর ঘর থেকে,
তারপর,,,,,
কলেজে পূর্ণমিলনী অনুষ্ঠান চলছে হাজার হাজার স্টুডেন্ট আসছে নীল২ ফুচকা বিক্রি করছে,

কলেজে তানিয়া কে নিয়ে অনেক বাজে কথা বলাবলি শুরু হয়ে গেছে সে ফুচকা ওয়ালা কে বিয়ে করছে মনে ম্যামের কোন দোষ আছে,তাই ফুচকা ওয়ালার সাথে বিয়ে হয়েছে এমন অনেক কথাই হচ্ছে,
প্রিন্সিপাল স্যার বক্তব্য দিচ্ছে খুব জ্ঞান
মূলক কে কথা বলছে সবাই কে দিক নির্দেশনা দিচ্ছে,
কিন্ত একটি প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে উদাহরণ স্বরুপ নীল২ এর নাম বলে,
বলে কলেজে এসে পড়াশোনার নাম করে আজেবাজে কাজ করলে, বাজে রাজনৈতিক করলে,
যা ফল হয় তা হল আমাদের ফুচকা ওয়ালা নীল২ ওকে দেখে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত, মানে নীলের পুরো গল্প টা সবাই কে বলে প্রিন্সিপাল স্যার,
এখন গল্প শুনে সবার আগ্রহ জাগে নীল কে দেখবে স্টেজে ডাকতে বলে,,,
প্রিন্সিপাল স্যার নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে হলেও ডাকতে হয় নীল২ এর মুখ টা কালো হয়ে যায়,।
আর এদিকে তানিয়া বসে ছিলো স্টেজে, তানিয়া লজ্জায় এখন যদি পারতো মরে যেতো, কারন সবাই জানে তানিয়ার স্বামী নীল২,
একজন স্যার মাইক্রো ফোন টা হাতে নিয়ে বলেই ফেলে নীল২ এর কিন্ত আরেকটা পরিচয় আছে যেটার ভয় নীল২ আর তানিয়ার মনে ছিলো সেটাই বলে ফেলল,
পরিচয় টা হল নীল কিন্ত আমাদের তানিয়া ম্যামের স্বামী,
তখন সবাই হেসে দেয়,
লজ্জায় তানিয়ার মাথা কাটা যাচ্ছে তানিয়া মনে মনে ডিসিশন নিলো আজকেই নিজের জীবন টা শেষ করে ফেলবে এত অপমান,,,
স্যার নীল২ এর হাতে মাইক্রোফোন টা দেয় কিছু বলার জন্য কিছু বলতে যাবে তখন হাত টা কেঁপে মাইক্রোফোন টা পড়ে যায় আর ওমনি একটা গুলির আওয়াজ হয় টার্গেট ছিলো নীল২ বেঁচে যায় কিন্ত নীল২ নিজের লুঙ্গি টা খোলে ফেলে, আরে ভাই নিচে প্যান্ট আছে,
কোমর থেকে পিস্তল টা বের করে একদম শ্যুটারের কপালে গুলি করে,
আসল কাহিনি হল নীল২ ইন্টেলিজেন্স পুলিশ অফিসার,
পকেটা থাকা ওয়াকিটকি বের করে আর ফোর্স এলার্ট একজন ডেথ আরো ৪জন আছে,সো বি কেয়ার ফুল,
সবাই অবাক কি থেকে কি হল,
এদিকে সোনা মিয়া নিজের বড় দাঁত গুলো ফেলে নীল২ কে সেলুট দিয়ে স্যার দুজন আরও গ্রেফতার করা হয়েছে,......

#পার্টঃ১০
#লেখকঃNill_Mahmud......
নীল২ কে দেখে তানিয়া তো রীতি মতো চমকে গেলো,
তানিয়ার সব কিছু স্বপ্নের মতো লাগছে,
২জন শ্যুটার কে গ্রেফতার করা হয়েছে,
আর বাকি দুজন পালিয়েছে,
২জন কে পাঠিয়ে দিলো থানায়,
এবার নীল২ অনুষ্ঠানের মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে সবাই কে বলল,
আপনারা বিপদ মুক্ত এবার যার যার
সীট গ্রহণ করুন,
আমি কিছু বলতে চাই,
সবাই বসার পর নীল২ বলা শুরু করলো,
আমি নীল মাহমুদ এই কলেজের একজন ছাত্র কিন্ত আমার আরেক টা পরিচয় আছে সেটা হল আমি একজন পুলিশ অফিসার,
কিন্ত আমাকে সব সময় সিক্রেট মিশনে থাকতে হয়,
সেটা যেকোন জেলা বা থানা হতে পারে,
আমি চাকরি তে জয়েন করেছি আরও ৪ বছর আগে,
এই কলেজে পড়াশোনা অবস্থায়,
কিন্ত সবাই আমাকে জানতো আমি বখাটে ছেলে,
এর আগে যে ব্ল্যাক ভাইরাস ধরেছেন রিয়াদ স্যার আমি তাকে নানান ভাবে হেল্প করতাম,
কিন্ত তখন ছিলো আমার ট্রেনিং,
আর আমি আজ ৪-৫ বছর ধরে বাড়ি থেকে অনেক দূরে মা বাবা আত্নীয় স্বজন সবার থেকে, এটাই আমার ডিপার্টমেন্ট এর নিয়ম,।
কিন্ত আমি আর ১৫দিন পর আমার মা বাবা মানে আমি বাড়ি যেতে পারবো,
সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন,
আমি যে মিশন নিয়ে আসছি সেটাতে যেনো সফল হতে পারি আর এই ৫ জন শ্যুটার কে হায়ার করা হয় আমাকে মারার জন্য তাদের কে অনলাইনে
হায়ার করা হয়,
যার ইনফরমেশন আগে থেকে আমার কাছে ছিলো,
আর কিছু বলে আপনাদের সময় নষ্ট করতে না,
সবাই ভালো থাকবেন,
এবার তানিয়া হাসি ফুটে উঠে,
তানিয়া নীল২ এর সাথে কথা বলতে যায় কিন্ত নীল২ তানিয়ার দিকে একবার তাকিয়ে চলে যায় নিজের কাজে,
ব্ল্যাক ভাইরাসের জন্য এই এলাকায় ধর্ষণ, ইভটিজিং নাই বললে চলে কিন্ত
লাস্ট টার্গেট হল সেদিন কার ধর্ষক।
এদিকে নীল স্যার আর মাইসা প্রেম করে একদম জোড়া কবুতর হয়ে গেছে
একজন কোথাও গেলে আরেক জন না গিয়ে থাকতে পারে না,
রাত ২টা বাজে বাহিরে টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছে রাকিব ফেসবুক গুতিয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে,
এমন সময় কারও উপস্থিত টের পায় রাকিব,
রাকিব লাইট টা অন করে, কালো পোশাকে একজন বসে আছে,
রাকিব - কে কে আপপনি (ভয়ে)
- কি এখনি ভয়ে কথা এমন,
ব্ল্যাক ভাইরাস,
নাম শুনে রাকিবের অবস্থা খারাপ হয়ে
যায়,
-আজ তোকে কেটে ১০ টুকরো করবো,
তখন দরজা দিয়ে আরেকজন প্রবেশ করলো একটা ধারালো বড় ছুরি নিয়ে,
আর হাতে একটা ড্রিল মেশিন,
রাকিব বোঝে গেছে কি হতে চলেছে।
একজন রাকিবের নাকে রুমাল চেপে ধরে তারপর অজ্ঞান হয়ে যায়,
১০ মিনিট পর রাকিব চোখ খোলে দেখে তাকে চেয়ারের সাথে হয়েছে,
চিৎকার করে কিন্ত ছুটতে পারছে না,
একজন ড্রিল মেশিনের লাইন টা দেয়
সুইচ অন করতেই ড্রিল মেশিন টা ঘুরতে থাকে শব্দ করে রাকিব ভয়ে চিৎকার করছে,
ড্রিল মেশিন নিয়ে যাচ্ছে রাকিবের দিকে কপাল বরাবর ধরে নিচের দিকে চাপ দিবে এমন সময় আলমারি থেকে গুলির আওয়াজ বের হয়,
ড্রিল মেশিন টা পড়ে যায় হাত থেকে রাকিব তাকিয়ে দেখে কপালে গুলি ব্ল্যাক ভাইরাস এর,
আরেকজন বুঝতে পেরে রাকিব কে মারতে যাবে বাথরুম থেকে আরেক জন বের হচ্ছে দৌড়ে তাকে দেখে ২য় ব্ল্যাক ভাইরাস দাঁড়িয়ে যায়,
কারন যে বাথরুম থেকে পিস্তল হাতে বের হচ্ছে সে হল নীল স্যার,(বোকা নীল)
২য় ব্ল্যাক ভাইরাস দাঁড়ালে নীল স্যার
নীল স্যার পিস্তল টা সোজা গিয়ে
ব্ল্যাক ভাইরাসের মাথায় ধরে যখন ট্রিগার টা টানবে এমন সময় আলমারি থেকে নীল২ বের হয়ে বলল,স্টপ স্টপ
নীল- কেনো আজ ওকে এখানেই শেষ করে দিবো,
নীল২- শ্যুট, এই আপনাকে না,
বাহিরে একটা গুলির আওয়াজ হল,
নীল- কেনো ওকেও শেষ করে দেই,
নীল২- ওর মুখ টা খোলে দেখো,
নীল টান মেরে মুখের কালো মাক্স টা
খোলে দেখে,
এত মাইসা নীল ১২ বোল্ড শর্ট খায়,
বাহিরে নদীর লাশ পড়ে আছে,
আর রুমের ফ্লোরে পড়ে আছে
রিয়ার লাশ,
নীল২ পড়ে যায় একটা মায়ার মধ্যে,
কিন্ত তাদের মিশনে কোন মায়ার স্থান নেই,
নীল টু নীল কে বলল, এখন শ্যুট করো,
নীল- কি বলছো নীল টু,
নীল২- তুমি ভালো করে জানো আমাদের মধ্যে কোন মায়া থাকা যাবে না,শ্যুট
নীল- তাহলে ওর মুখ দেখালে কেনো,
নীল২- কোন কথা হবে না,শ্যুট
মাইসা মায়া ভরা চোখে তাকিয়ে আছে নীলের দিকে কি করে মারবে তার প্রথম ভালবাসা কে,
কিন্ত মারতে তো হবেই,,
নীল২- শ্যুট নীল।
নীল ট্রিগার টা টেনে দিলো আর মাইসা
জায়গায়.........?....
চলবে.....???

23/06/2022

#প্রেম_প্রতারণা_আর_প্রতিশোধ (১৮+)
©কলমে-মৌ
#পর্ব_15_16_17
আমরা সবাই একটা গভীর খাতের সামনে তথ্য নোট করছিলাম, নীলার হাতে ম্যাপটা ছিল, হঠাৎ ম্যাপটা নীলার হাত থেকে গভীর খাতের নিচে পড়ে গেল..!! আমরা সবাই আতকে উঠলাম, কারণ ম্যাপটা ছাড়া আমরা কিছু করতে পারবোনা।

তারপরে সবাই ঠিক করলাম আমরা ফিরে যাব..! ফিরে যাওয়ার জন্য আমরা একটু এগোলাম একটু এগোতেই দেখলাম আমাদের রাস্তা মনে নেই। আমরা জঙ্গলের এদিক-ওদিক রাস্তা খোঁজার চেষ্টা করলাম কিন্তু কোনমতেই পেলাম না.. আমরা জঙ্গলের মধ্যে হারিয়ে গেছিলাম..!!

আমরা সবাই আপ্রাণ চেষ্টা করছিলাম জঙ্গল থেকে বেরোনোর কিন্তু কোনমতেই কোন রাস্তা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তারপরে হঠাৎ রাজুর পা টা ডিসব্যালেন্স হয়ে, রাজুর পায়ে একটা কাঠের টুকরো গেঁথে যায়, কাঠের টুকরো বের করা হলেও ওর পায়ে অনেকটা ক্ষত হয়ে যায়। তারপর সারা দিন পার হয়ে বিকেল নেমে এলো..! আর আমরাও সারাদিন খোঁজাখুঁজি করে প্রচন্ড থোকে গেছিলাম, আমাদের কাছে যা খাবার জল ছিল সেটাও শেষ হয়ে গেছিল.. আমাদের প্রচন্ড জল তেষ্টা লাগছিল কিন্তু আমাদের কারো কাছে জল ছিলনা।

জল না পেয়ে রিয়ার অবস্থা খারাপ হচ্ছিল.. রিয়া প্রচন্ড হাপাচ্ছিল, রিয়া আর একটুও হাঁটতে পারছিল না, রিয়া বলল জল ছাড়া, আমি আর কোন মতেই চলতে পারছি না। তখন জয় বললো এভাবে আর কতক্ষণ খোঁজাখুঁজি করবো.. আস্তে আস্তে সবার অবস্থাই খারাপ হয়ে যাবে, আগে জলের ব্যবস্থা করতে হবে তার জন্য কোন জলাশয়ের খোঁজ করতে হবে..। তারপর জয় বলল, আমি আশেপাশে কোন জলাশয়ের খোঁজ করছি, তোরা এখানে থাক..!! আমি তখন সঙ্গে সঙ্গে বললাম এরকম ভাবে জঙ্গলে একা যাওয়াটা ঠিক হবে না, এমনি আমরা রাস্তা হারিয়ে বসে আছি..!! তুমি বরং জন অথবা রাজুকে নিয়ে যাও..!! জয় তখন বলল রাজুকে কি করে নিয়ে যাব..?? ওর পায়ে তো লাগা আছে, আর জনকে যদি নিয়ে যায়, তাহলে রাজু এই অবস্থায় কি করে তিনজন মেয়ের দায়িত্ব একা নিতে পারবে..!!

তখন আমি বললাম, তাহলে আমি যাচ্ছি তোমার সঙ্গে..!! জয় বলল না না আমি একাই যেতে পারবো..! তখন আমি বললাম এভাবে জঙ্গলে একা যাওয়া কারোরি ঠিক হবে না, আর যদি কোন বিপদ হয় তাহলে আর একজন সাহায্য করতে পারবে..! আর রাস্তাটাও তো চিহ্নিত করে করে যেতে হবে..! যেখানে আমরা বসে আছি, তাহলে তো এখানে ফিরে আসতে পারব..। না হলে তো আরো সবাই আলাদা হয়ে হারিয়ে যাব..!!। আমার কথা শুনে বাকিরাও জয় কে বলল প্রাপ্তি ঠিকই বলছে..!!

তারপরে আমি আর জয় জলের খোঁজে গেলাম। আমরা যে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম, সব জায়গাতেই গাছের ডালে একটা করে চিহ্ন দিয়ে যাচ্ছিলাম..! যাতে করে আমরা আবার এখানে ফিরে আসতে পারি।

অবশেষে আমরা অনেক খোঁজাখুঁজির পর একটা নদী দেখতে পেলাম। নদীটা দেখেই আমি আর জয় যেন জীবন ফিরে পেলাম..!! কিন্তু নদীটা থেকে আমরা অনেক উপরে দাঁড়িয়ে ছিলাম নদীটা ছিল অনেক নিচে..!! জয় বলল তুমি উপরেই থাকো আমি জলটা নিয়ে আসছি..। জয় তারপর জলটা নেয়ার জন্য আস্তে আস্তে নিচে নামল, আমি উপরে দাঁড়িয়ে ছিলাম.. জয় নদী থেকে বোতলে জল ভোর ছিল হঠাৎ আমার হাতে কিছু একটা কামড়ালো..!! আমার সেরকম বেশি জোরে কামড়ানোর অনুভব হয়নি, তাই আমি ভাবলাম কোন পিঁপড়ে হবে অতোটা ধ্যান দিলাম না..!!

জয় জলটা নিয়ে উপরে আসছিলো আমার কাছে.. আমার এতটা জল তেষ্টা পেয়েছিল যে আমি জয়ের হাতে জলের বোতলটা একদৃষ্টিতে দেখেছিলাম আর জলটা দেখে খুশিতে উৎফুল্ল ছিলাম..। তখনই হঠাৎ আমার চোখের সামনে যেন অন্ধকার নেমে এলো, আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলাম। জয় সঙ্গে সঙ্গে আমার কাছে দৌড়ে এলো..!! বলল কি হল তোমার..!!!! আমাকে উঠাবার চেষ্টা করলো কিন্তু আমি কিছুতেই উঠলাম না। জয় তখন আমার মুখে চোখে জল দিয়ে আমাকে ওঠানোর চেষ্টা করল, তখন আমার একটু চেতনা ফিরে আসলেও কিন্তু আমার পুরোপুরি জ্ঞান ফিরে আসেনি..! মনে হচ্ছিল আমি যেন নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিলাম..!! জয় প্রচন্ড চিন্তায় পড়ে যায় জয় কিছুই বুঝতে পারছিল না কিভাবে হল..!!ও এখন কী করবে?? কী করে আমাকে নিয়ে যাবে?? আর এদিকে বাকিরা সবাই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে..!!! জয়ের মাথায় কিছু আসছিল না..!!

তারপরে জয় হঠাৎ দেখতে পেল, নদীর ওপারে একটা ছোট্ট আদিবাসীদের গ্রাম আছে..!!
জয় তখন ঠিক করল আমাকে ওইখানে নিয়ে যাবে, যদি ওদের কাছ থেকে একটু সাহায্য পাওয়া যায়। জয় কিছুই বুঝতে পারছিল না আমার কি হয়েছে..??
তারপরে জয় আমাকে কোলে তুলে নিয়ে আদিবাসীদের গ্রামটাতে গেল, অধিবাসীদেরকে সব কিছু বললো কিন্তু ওরা কিছু বুঝতে পারল না কারণ আদিবাসীদের ভাষা আলাদা..!! আদিবাসীরা যে ভাষায় কথা বলছিল জয় আগে সেই ভাষাটা একটু শিখেছিল কিন্তু জয় বুঝতে পারলেও সেই ভাষাটা খুব ভালো ভাবে বলতে পারেনা।

জয় আর আমাকে দেখে ওরা এটুকু বুঝতে পারলো.. যে আমি অসুস্থ। তারপরে ওরা আমাকে শোয়ালো..!! তারপরে ওরা ওদের ওখানের একজন বয়স্ক ভদ্রলোক কে ডেকে আনলেন.. উনি আমাকে দেখে জয়কে বললেন, সেরকম কিছু হয়নি, আমাকে একটা পোকা কামড়েছে যেটাতে আমি অজ্ঞান হয়ে গেছি, আর ওরা একটা কোন ওষুধ খাইয়ে দেবে যেটাতে আমার নেশাগ্রস্ত অবস্থাটা কেটে যাবে, আর তারপরেই আপনার স্ত্রী সুস্থ হয়ে যাবে..!! জয় ওদের কথা শুনে চমকে উঠলো বলল ও আমার স্ত্রী নয়, কিন্তু আদিবাসীরা জয়ের কথা বুঝল না। আদিবাসীরা ভেবেছিল যে আমরা দুজন স্বামী স্ত্রী...!! তারপর জয় ভাবল আর বেশি কিছু বলা ঠিক হবে না, যদি ওরা আমার কোন কথায় ভুল বুঝে , আমাদেরকে এই অবস্থায় বার করে দেয়..!!

এদিকে আমার বাকি সবার জন্যেও চিন্তা হচ্ছিল, যে ওরা আমার অপেক্ষা করছে.. আর রিয়ার শরীরটাও ভাল ছিলনা..!! কি অবস্থায় আছে ওরা কে জানে..!!?? আমি যে ফোন করে ওদের সাথে যোগাযোগ করব সেটারও কোন উপায় নেই, কারণ এখানে নেটওয়ার্ক নেই।

এদিকে জন বলল, এখন ওরা এলো না কেন..?? কিছুই তো বুঝতে পারছি না, রিয়ারও শরীরটা খারাপ, আর রাজুর পায়ের ব্যথাটাও আরো বাড়ছে.. আমরা এভাবে কতোক্ষন আর অপেক্ষা করব..!! নীলা বললো ওরা কোন বিপদে পড়লো না তো..!! আমাদেরকে আর এখানে থাকলে চলবে না..!! আমাদেরকে ওদের খোঁজ করতে হবে, আর জলের খোঁজও করতে হবে.. তখন রিয়া শুনে বলল আমিতো আর এক পাও হাঁটতে পারছি না..!! নীলা বললো কিছু করার নেই, তোকে মনের জোর করে হাঁটতেই হবে, জন তখন রিয়াকে বলল আমি যতটা সম্ভব তোকে ধরে ধরে নিয়ে যাব..!! আমাদের কাছে আর কোন উপায় নেই এই রকম পরিস্থিতিতে আমাদেরকে ভেঙে পড়লে চলবে না মনের জোর রাখতেই হবে..!!

তারপরেই আমরা সবাই আস্তে আস্তে বেরিয়ে পড়লাম..!! আমাদের হাঁটতে প্রচন্ড অসুবিধে হচ্ছিল জন রিয়াকে কোনরকমে ধরে ধরে নিয়ে যাচ্ছিল, আর কিছুটা হাঁটার পরেই রাজুর পায়ের ক্ষত থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল.. নীলা তখন ওর স্কার্ফটা ছিড়ে রাজুর পায়ে বেঁধে দিল..! তারপরে কিছুদূর যেতেই নীলা লক্ষ্য করলো মাটিটা ভেজা ভেজা লাগছে, তারপরই ওরা নদীটা দেখতে পেল নদীটা দেখতে পেয়েই ওরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠলো.. তবে ওরা যে নদীটা দেখতে পেয়েছিল সেটা ওই নদীটারি অন্য একটা দিক..!!

এদিকে আমি চিন্তায় অস্থির, বাকি সবাই কি করছে??? আমি কিভাবে কি করব??? কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না..!!!! হঠাৎ আমার কাছে কয়েকজন আদিবাসী লোক এসে, আদিবাসী মহিলাদের কিছু কাপড় দিয়ে ইশারার ভঙ্গিতে বললেন আপনার স্ত্রীর কাপড় চেঞ্জ করে দিন...!!!! আমি সঙ্গে সঙ্গে অনেক জোরে চমকে উঠলাম..!!!!!!

পর্ব 16
কিছুদূর যেতেই নীলা লক্ষ্য করলো মাটিটা ভেজা ভেজা লাগছে, তারপরই ওরা নদীটা দেখতে পেল নদীটা দেখতে পেয়েই ওরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠলো.. তবে ওরা যে নদীটা দেখতে পেয়েছিল সেটা ওই নদীটারি অন্য একটা দিক..!!

এদিকে আমি চিন্তায় অস্থির, বাকি সবাই কি করছে??? আমি কিভাবে কি করব??? কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না..!!!! হঠাৎ আমার কাছে কয়েকজন আদিবাসী লোক এসে, আদিবাসী মহিলাদের কিছু কাপড় দিয়ে ইশারার ভঙ্গিতে বললেন আপনার স্ত্রীর কাপড় চেঞ্জ করে দিন...!!!! আমি সঙ্গে সঙ্গে অনেক জোরে চমকে উঠলাম..!!!!!!

আমি ওনাদেরকে অনেক অস্থির হয়ে বলতে লাগলাম এটা আমি করতে পারবোনা..!! ওনারা আমার কোন কথাই বুঝতে পারছিল না..!! আমি উনাদের হাতে পায়ে ধরতে লাগলাম বারবার বলতে লাগলাম আমাকে এটা বলবেন না, আমি কোনমতেই এটা করতে পারব না..। উনারা আমার হাতে পায়ে ধরা দেখে একটু অস্বস্তিতে পড়ে গেলেন..!! তারপরে উনারা ভাবলেন যে আমার হয়তো এই আদিবাসী মহিলাদের জামা কাপড় পরাতে কোন অসুবিধা আছে তাই হয়তো আমি এই রকম করছি..!! তারপরে ওনারা আমাকে উনাদের ভাষাতে একটু শান্ত হতে বললেন, তারপরে বললেন দেখছি কি করা যায় বলে চলে গেলেন..!!

তারপরে কিছু আদিবাসী মহিলা আমার কাছে এল আমাকে যে জামা কাপড় গুলো দেয়া হয়েছিল সেগুলো দিতে বলল..!! আমি তাদেরকে সেই জামা কাপড় গুলো দিয়ে দিলাম..!! তারপরে তারা আমাকে প্রাপ্তিকে আর আমাকে যে রুমে রাখা হয়েছিল সেখান থেকে বাইরে বেরোতে বলল..!! কিছুক্ষণ পর তারা বেরিয়ে এলো, তারপরে আমাকে ভেতরে যেতে বলল..!!

আমি গিয়ে দেখলাম তারা প্রাপ্তির জামাটা চেঞ্জ করে দিয়েছে.. সেটা দেখে আমি একটু স্বস্তি পেলাম..!! তবে প্রাপ্তিকে আদিবাসীদের পোশাকে একটু আলাদা লাগছিল..। আজকে এই পোষাকে যেন প্রাপ্তিকে এক অদ্ভুত মোহময়ী সুন্দরী লাগছিল ওর দিক থেকে আমি যেন আমার দৃষ্টি ফেরাতে পারছিলাম না..। আমার মনে হচ্ছিল প্রাপ্তিকে তো আমি আগেও দেখেছি কিন্তু কখনো এতটা সুন্দরী মনে হয়নি, হয়তো সেরকম ভাবে কখনো দেখিও নি..!! আর প্রাপ্তির সাথে আমার পরিচয়টাও ঠিক অন্যরকমভাবে হয়েছিল আর আমাদের মধ্যে সব সময়ই একটা দ্বন্দ্বই ছিল, তাই সেরকম ভাবে আমি ওর দিকে কখনো খেয়ালই করিনি..!! তবে এখন প্রাপ্তিকে দেখে মনে হচ্ছে প্রাপ্তি সৌন্দর্য যেকোনো লোকের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে..!! আর প্রাপ্তিকে এইভাবে ঘুমন্ত অবস্থায়, প্রাপ্তির মুখে একটা অদ্ভুত সরলতা ফুটে উঠছে যেটা প্রাপ্তিকে আরো সুন্দর করে তুলেছে..!!

তারপরে আমি প্রাপ্তিকে একভাবে দেখেই ছিলাম..!! প্রাপ্তি একটা খাটের উপরে শুয়ে ছিল, আর আমি খাটের পাশে নিচে বসে ছিলাম.. ওই ভাবে বসে প্রাপ্তিকে দেখতে দেখতে আমার কখন যে চোখটা লেগে যায় আমি বুঝতেও পারিনা..!!

এদিকে বাকি সবাই রাত হয়ে যাওয়াতে নদীর ধারেই জল খেয়ে রেস্ট নেয় কারণ রাত্রিবেলায় জঙ্গলের মধ্যে এদিক-ওদিক করলে বিপদ হতে পারে তাই নদীর ধারে আগুন জ্বালিয়ে সেখানে রাতটা পার করবে বলে তারা ঠিক করে..!! ওদের এটাও চিন্তা হচ্ছিল যে প্রাপ্তি আর জয় কেমন আছে?? ওদের কোনো বিপদ হয়নি তো..!! কিন্তু ওদের কাছে অপেক্ষা করা ছাড়া কোনো উপায় নেই, রাত্রি হয়ে গেছে...!!

ওদের প্রচন্ড খিদে পেয়েছিল তাই ওরা ভাবলো যে, নদীতে মাছ ধরে যদি পুড়িয়ে খাওয়া যায়..!! জন তারপরে মাছ ধরার ব্যবস্থা করল..!! ওদের ভাগ্য ভালো থাকায় কিছু মাছ পেল, আর সেগুলোকে ওরা পুড়িয়ে খাওয়ার ব্যবস্থা করল..! ওরা ঠিক করল সকালের আগে ওইখান থেকে কোথাও যাবে না, ওই ভাবেই পুরো রাতটা ওখানেই কোনরকমে কাটাবে..!!

প্রাপ্তির ঘুম ভাঙতেই ও চমকে উঠলো..!!!! ও বুঝতে পারছিল না ও ওইখানে কি করে এলো..???? তারপরেও হঠাৎ দেখল ওর জামা কাপড়টা চেঞ্জ হয়ে গেছে...!!!!! সেটা দেখে ওর মাথায় যেন বাজ পড়লো..!! ওর বুকের ভেতরটা যন্ত্রণায় যেন উথাল পাথাল করে উঠলো, আর ওর পুরনো স্মৃতিগুলো যেন চোখের সামনে ভেসে উঠলো.. ওর শরীরটাকে আগে সবাই যেভাবে ছিন্নভিন্ন করেছিল সেটা যেন, ও আরও একবার অনুভব করলো..!! ও বুঝতে পারছিল না ওর সাথে কি হলো..?? কেন এরকম হলো..?? ও কি করবে..??? ওর শুধু মনে হচ্ছিল কেন ওকে বারবার এই যন্ত্রণাটা সহ্য করতে হচ্ছে..!! ওর বুকের ভেতরটা যন্ত্রণায় দুমড়ে মুড়চে যাচ্ছিল তখনই ওর চোখ পরল জয়ের দিকে..!! জয় প্রতি রাগে ঘৃণায় ভরে উঠলো ওর মন.. তখন প্রাপ্তির মাথায় কিছু আসছিল না, ও কি করবে..?? তখনই ওর নজর পরল ওখানে রাখা একটা ছুরির দিকে.. সঙ্গে সঙ্গে প্রাপ্তি ছুরিটা নিয়ে জয়ের বুকে বসাতে গেল..!!!

পর্ব 17
ও বুঝতে পারছিল না ওর সাথে কি হলো..?? কেন এরকম হলো..?? ও কি করবে..??? ওর শুধু মনে হচ্ছিল কেন ওকে বারবার এই যন্ত্রণাটা সহ্য করতে হচ্ছে..!! ওর বুকের ভেতরটা যন্ত্রণায় দুমড়ে মুড়চে যাচ্ছিল তখনই ওর চোখ পরল জয়ের দিকে..!! জয় প্রতি রাগে ঘৃণায় ভরে উঠলো ওর মন.. তখন প্রাপ্তির মাথায় কিছু আসছিল না, ও কি করবে..?? তখনই ওর নজর পরল ওখানে রাখা একটা ছুরির দিকে.. সঙ্গে সঙ্গে প্রাপ্তি ছুরিটা নিয়ে জয়ের বুকে বসাতে গেল..!!!

প্রাপ্তি ছুরিটা জয়ের বুকে বসাতে যাবে তখনই হঠাৎ প্রাপ্তির কান্নার আওয়াজে জয়ের চোখ খুললো.. জয় সঙ্গে সঙ্গে প্রাপ্তির হাতটা ধরল..!! আর প্রাপ্তিকে বলল কি করছো কি তুমি..??? প্রাপ্তি রাগ আর ঘৃণার সাথে জয়ের দিকে দেখল, আর জয়ের হাতটা ছাড়িয়ে গায়ের জোরে.. ছুরিটা আরো জয়ের ওপর বসাতে গেল.. কিন্তু কোনমতেই জয়ের হাত ছাড়াতে পারল না..!! জয় প্রাপ্তির হাত থেকে ছুরিটা ফেলে দিল.. আর প্রাপ্তির গালে একটা থাপ্পর মেরে প্রাপ্তিকে মাটিতে ফেলে দিলো, বলল তুমি কি পাগল হয়ে গেছো..??

প্রাপ্তি মাটিতে বসে কাঁদতে কাঁদতে রাগে ঘৃণায় জয় কে বলল, কেন তুমি আমার সাথে এরকম করলে?? আমি তোমার কী ক্ষতি করেছিলাম..?? আমি ভাবতে পারিনি যে তুমি এতটা জঘন্য..!! তুমি আমার সাথে এরকম করবে...!!!! তারপরে প্রাপ্তি বলল, একটা মেয়ে তোমাদের কাছে কি শুধুই বস্তু..!!! একটা মানুষ এতটা হিংস্র কি করে হতে পারে, তোমাদের বিবেকে একটুও বাধে না…!!! কি করে তোমরা নির্দ্বিধায় কারোর এত বড় সর্বনাশ করতে পারো.. বলে প্রাপ্তি প্রচন্ড কাঁদতে লাগলো..
জয় শুনে সঙ্গে সঙ্গে বললো তুমি চুপ করবে.. তখন থেকে আমাকে যা খুশি তাই বলে যাচ্ছ..!! তুমি কি বলছো আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা..!! আর আমি তোমার কি ক্ষতি করেছি..?? আমি তোমার কোন ক্ষতি করিনি..!! প্রাপ্তি তখন রেগে আগুনের মতো জ্বলে উঠে বলল, তুমি এখনো এই ধরনের কথা বলছ আমার জামাটা কি করে চেঞ্জ হলো..!! আমি তো এই জামা কাপড়গুলো পড়েছিলাম না..!!!

জয় তখন প্রাপ্তিকে বলল ও এই ব্যাপার..!! তুমি শুধু শুধু না জেনেই যা খুশি তাই বলে যাচ্ছিলে..!! আমি তোমার সাথে কিছু করিনি..!! কালকে রাত্রে বেলায় নদীতে জল নেয়ার সময়, কোন পোকার কামড়ে তুমি অজ্ঞান হয়ে গেছিলে, আমি কিছু বুঝতে না পারায় এখানে আদিবাসীদেরকে দেখতে পাই, তখন তোমাকে এখানে নিয়ে আসি.. উনারা তোমাকে ওষুধ দেয়.. আর তোমার জামাকাপড়টা এখানের আদিবাসী মহিলারা চেঞ্জ করে দেয়!!! তারপরে জয় বলল আমার তো ভেবে অবাক লাগছে তুমি ভাবলে কি করে আমি একটা মহিলার সর্বনাশ করে দেবো..!!!! তোমার ক্ষতি করার থাকলে আগেই করতে পারতাম, তার জন্য এতক্ষণ অপেক্ষা করার দরকার হতো না..!!!

আমার জয়ের কথাগুলো শুনে খারাপ লাগলো..!! আমার মনে হলো, না জেনে জয় কে ওরকম ভাবে কথাগুলো বলা ঠিক হয়নি..!! কিন্তু ও বুঝবে কি করে..?? তারপরে আমার যে পুরনো খারাপ স্মৃতি আছে...!! এরকম মনে হওয়া স্বাভাবিক..!! আমার মনে হলো সবকিছু নতুন কিন্তু তার পরেও একটু কিছু হলেই আমার পুরনো স্মৃতিগুলো চোখের সামনে ভেসে ওঠে..!!!!

আমি ভাবলাম জয়ের সাথে খারাপ আচরণের জন্য, আমার জয়ের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত..!! কিন্তু কিভাবে ও জয়ের কাছে ক্ষমা চাইব সেটা ভেবে পাচ্ছিলাম না..!!

এদিকে বাকি সবাই সকাল হতেই ঠিক করল যে প্রাপ্তি আর জয় কে খুঁজতে হবে.. ওদের সবার চিন্তা হচ্ছিল যে প্রাপ্তি আর জয় কোন বিপদে পড়েনি তো..!! তারপরে ওরা ওইখান থেকে বেরিয়ে পরলো আর আমাদেরকে খুঁজতে শুরু করলো..!!

জয় তারপরে আমাকে বলল তুমি ঠিক আছো তো..!! আমাদেরকে এখনই এখান থেকে বের হতে হবে.. বাকি সবাই কি অবস্থায় আছে কে জানে..??? কাল রাত থেকে ওদের কোন খবর নেই..?? ওরা সবাই ঠিক আছে কিনা কে জানে, কিছুই বুঝতে পারছিনা..!! ওদের কোন খবর নিতে পারিনি..!! তুমি অসুস্থ হয়ে পড়ায় আমার কাছে আর কোন অপশন ছিল না, ওদের কাছে ফিরে যাওয়ার..!!

জয়ের কথা শুনে আমার প্রচন্ড খারাপ লাগলো.. আমার জন্য জয় এত বড় অসুবিধায় পড়ে গেছিল। আর শুধু জয় নয় বাকি সবাই আমার জন্য অসুবিধায় পড়ে গেছে..!! তার ওপর আমি জয়ের সাথে এতটা খারাপ ব্যবহার করলাম..!! বাকি সবাই কি অবস্থায় আছে কে জানে..?? রিয়ার শরীর ভালো ছিল না..!! রাজুর পায়ে চোট লেগেছিল..!! আর ওরা হয়তো আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল..!! আমরা না যেতে পারায় ওদের কি অবস্থা হয়েছে কে জানে..!! সেটা ভেবে আমার প্রচন্ড খারাপ লাগছিল..!!! আমরা না যেতে পারায় ওদের কোনো বিপদ হয়েছে কিনা.. সেটাও বলতে পারবো না...!!! তখন হঠাৎ জয় আমাকে বলল, আর আমাদেরকে একটুও সময় নষ্ট করা যাবে না, আমাদেরকে এখনই বেরোতে হবে.. তারপরে জয় বলল আমি এখনই আসছি যারা আমাদেরকে সাহায্য করেছিল, আর এখানে থাকতে দিয়েছিল কালকে.. তাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে ও আমাদের যাওয়ার কথা জানিয়ে আমি এখনই আসছি...

জয় যাওয়ার পর কিছু আদিবাসী মহিলা আমার কাছে এলো..!! ওরা ওদের ভাষায় জিজ্ঞেস করল আমি ঠিক আছে কিনা..!!!! আমি ওদের সব ভাষাটা বুঝতে পারলাম না কিন্তু কিছুটা বুঝতে পারলাম কারণ আমি আসার আগে এই প্রজেক্টটা নিয়ে ও এখানের আশেপাশের মানুষদের নিয়ে কিছু বই পড়েছিলাম.. তাই ওদের কয়েকটা ভাষা বুঝতে পারছিলাম..!! তারপরে ওদের মধ্যে একজন মহিলা বলে উঠলো তোমার স্বামী তোমাকে অনেক ভালোবাসে, তোমার অনেক খেয়াল রেখেছিল..!!

কথাটা শুনে আমি চমকে উঠলাম..!! আমি সঙ্গে সঙ্গে বললাম মানে..!! কে স্বামী?? কোন স্বামী..?? ওনারা আমার ভাষা বুঝতে পারল না..!! তখনই জয় এল..!! ওনারা আবার ওদের ভাষায় বলল, এইতো তোমার স্বামী চলে এলো.. আমরা আসছি..!! জয় শুনে একটু ইতস্তত বোধ করলো..!! আমি সঙ্গে সঙ্গে জয় কে বললাম উনারা কি বলছে কি..!! জয় একটু ইতস্তত হয়ে বললো ও কিছুনা এমনি সাধারণ কথা বলছে..!! আমি সঙ্গে সঙ্গে বললাম সাধারণ কথা বলছে মানে..!! তোমাকে আমার স্বামী বলছে..!! আর তুমি বলছো সাধারন কথা বলছে..!! জয় একটু আশ্চর্য হল.. আর বলল তুমি ওনাদের ভাষা বুঝতে পারছ..!! আমি বললাম হ্যাঁ আমি এই প্রজেক্টটা শুরু হওয়ার আগে এই প্রজেক্টটা নিয়ে কিছু বই পড়েছিলাম, সেখানে আদিবাসীদের ভাষা সম্বন্ধে জেনেছিলাম..!! তারপরে জয় কে বললাম তুমি ওসব কথা ছাড়ো..!! তুমি আগে বলো ওরা তোমাকে আমার স্বামী কেন বলছে..???!!!!

জয় তখন একটু ইতস্তত হয়ে বলল.. ওনাদের একটুও মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়ে গেছে.., কালকে যখন অসুস্থ অবস্থায় তোমাকে এখানে এনে ছিলাম তখন ওনারা ভেবেছিল তুমি আমার স্ত্রী..!! আমি তারপরে প্রথমে উনাদেরকে বোঝাবার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু পরে মনে হলো যদি বলি যে আমরা স্বামী স্ত্রী নই, তাহলে রাত্রে বেলায় আমাদেরকে যদি এখান থেকে ওনারা তাড়িয়ে দেয়, তাই আর আমি কিছু বললাম না..!! আমি সঙ্গে সঙ্গে বললাম তুমি কালকে আমার স্বামী হিসেবে আমার সঙ্গে ছিলে..!! জয় বলল না.. কোন কিছু হিসেবেই এখানে ছিলাম না, তুমি অসুস্থ ছিলে, বিপদে পড়েছিলাম তাই ছিলাম..!! আমি বললাম কিন্তু তবুও ওনাদেরকে এভাবে মিথ্যে বলাটা কি ঠিক হয়েছে..!! জয় বলল ঠিক.. ভুল.. জানিনা, তখন আমার যেটা মনে হয়েছে আমি তাই করেছি..!! তারপরে বলল চলো...!!! এখনই আমাদেরকে বেরোতে হবে..!! এমনি অনেক দেরি হয়ে গেছে..!! বাকি সবার খোঁজ করতে হবে..!! সবাই কি অবস্থায় আছে কে জানে..!!!!!!?

তারপরে আমি আর জয় ওখান থেকে বেরোতে গিয়েছি তখনি দেখি.. বাকি সবাই এখানে এসে পৌঁছেছে..!!!! ওরা আমাদেরকে এখানে দেখে অবাক..!! ওরা সঙ্গে সঙ্গে বলল প্রাপ্তি..!! জয়...!!!! তোরা এখানে..!! তোদের জন্য আমরা কত অপেক্ষা করেছি..!! তোদের জন্য আমাদের তো চিন্তা হচ্ছিল যে তোদের কোন বিপদ হলো নাতো..!! আর তোরা এখানে ভালোভাবে আছিস..!! তোরা একবারও আমাদের কথা ভাবলিনা...!!!
আরো চলবে...

Address

Alfadanga

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Sopno vora somoai posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Category