Proshantika News

Proshantika News A Bengali community newspaper published in Sydney and around Australia

সাদি মহম্মদের স্মরণে অমিয়া মতিনের একক  সঙ্গীতসন্ধ্যা “তুমি রবে নীরবে”   গত ৪ঠা মে শনিবার সিডনির হার্স্টভিল সিভিক থিয়েটার...
09/05/2024

সাদি মহম্মদের স্মরণে অমিয়া মতিনের একক সঙ্গীতসন্ধ্যা “তুমি রবে নীরবে”

গত ৪ঠা মে শনিবার সিডনির হার্স্টভিল সিভিক থিয়েটার অডিটোরিয়ামে প্রয়াত শিল্পী সাদি মহম্মদের স্মরণে অনুষ্ঠিত হলো অমিয়া মতিনের একক সঙ্গীত সন্ধ্যা “তুমি রবে নীরবে”
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন লরেন্স ব্যারেল এবং ন্যান্সী লীনা ব্যারেল I শুরুতেই সাদি মহম্মদের স্মৃতির প্রতি গভীর বিনম্র শ্রদ্ধা শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মৃতিচারন করে বক্তব্য রাখেন কলামিস্ট অজয় দাশগুপ্তে এবং ডঃ কাইয়ুম পারভেজ I

অমিয়া মতিন এর একক কণ্ঠে রবীন্দ্র, নজরুল, ক্লাসিক্যাল, লালন, হাসন রাজা, লতা, মান্না দে, দেশাত্মবোধক, পুরনোদিনের গানের অসাধারণ পরিবেশনা এবং তাঁর যাদুকরী সুরের মূর্ছনায় হারিয়ে গিয়েছিল দর্শক শ্রোতারা I গানগুলো সুরের মাদকতায় ভরিয়ে তোলে গুণী যন্ত্রশিল্পীগণ - সোহেল খান ( গিটার), অভিজিৎ দান ( তবলা), নীলাদ্রি ( কী বোর্ড) এবং ফাবিহা ( বাঁশি) I অনুষ্ঠানের শুরুতে ফাবিহা একটি দেশাত্মবোধক গান এবং নীলাদ্রি একটি নজরুলগীতি পরিবেশন করেন I নৃত্যে অংশগ্রহণ করেন মৌসুমী সাহার পরিচালনায় নৃত্যাঞ্জলি ড্যান্স একাডেমির শিশু শিল্পীরা I

রাত এগারোটা পর্যন্ত উপস্থিত সবাই উপভোগ করেছেন এবং স্মরণ করেছেন একজন গুণী শিল্পীকে। উল্লেখ্য ৪ঠা মে এর এই অনুষ্ঠানে সাদী মহম্মদের গান গাইবার কথা ছিল তাঁরই সুযোগ্য ছাত্রী অমিয়া মতিনের সাথে I তাই শিল্পী অনুষ্ঠানটি তাঁর স্মরণে উৎসর্গ করেন। একক সঙ্গীত এর পাশাপাশি অগ্রণীর প্রাক্তন ছাত্রীরা একটি সমবেত রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করেনI সিডনীর সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেক পরিচিত মুখ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে অমিয়া মতিন এবং সাদী মহম্মদের সিডির মোড়ক উন্মোচন হয় । লরেন্স ব্যারলের নান্দনিক মঞ্চসজ্জা সত্যিই প্রশংসনীয় I সব মিলিয়ে একজন অসাধারণ গুনি শিল্পীকে গানে গানে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়ে একটি চমৎকার এবং গুণসম্পন্ন সঙ্গীত সন্ধ্যা উপহার দিয়েছেন শিল্পী অমিয়া মতিন।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে শিল্পীদের সম্মামনা ক্রেস্ট উপহার দেয়া হয়। সবশেষে অনুষ্ঠানের আয়োজক প্রকৌশলী আবদুল মতিন সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা

ঈদের সবচেয়ে জনপ্রিয় সিনেমা রাজকুমার ও দেয়ালের দেশ চলছে অস্ট্রেলিয়ার প্রেক্ষাগৃহে, এই রবিবার পর্যন্ত।এই ঈদুল ফিতরে বা...
04/05/2024

ঈদের সবচেয়ে জনপ্রিয় সিনেমা রাজকুমার ও দেয়ালের দেশ চলছে অস্ট্রেলিয়ার প্রেক্ষাগৃহে, এই রবিবার পর্যন্ত।

এই ঈদুল ফিতরে বাংলাদেশে মোট ১১ টি বাংলা সিনেমা মুক্তি পেলেও জনপ্রিয়তার বিচারের ৬ টি সিনেমা মুক্তির দ্বিতীয় দিনেই সিনেমা হল থেকে হারিয়ে যায়। কিন্তু বাকি ৫ টি সিনেমা রাজকুমার, দেয়ালের দেশ, ওমর, মোনা জ্বীন ২ এবং লিপ্সটিক দাপটের সাথে দর্শকপ্রিয়তা পায় এবং মুক্তির ৪ সপ্তাহ পর এখনও হাউস্ফুল শো পাচ্ছে। আর এই ৫ টি বাংলা সিনেমাই অস্ট্রেলিয়াতে পর্যায়ক্রমে মুক্তি দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বঙ্গজ ফিল্মস। সিনেমার সময়সূচী এবং টিকেটের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তাদের ওয়েবসাইটে www.bongozfilms.com
দর্শকপ্রিয়তার বিচারে সবচেয়ে এগিয়ে আছে শাকিব খান, তারিক আনাম খান এবং মাহিয়া মাহি অভিনিত সিনেমা রাজকুমার। এটি বর্তমানে সিডনির হয়টস্ ব্যাংকস্টাউন হলে প্রতিদিন দেখা যাবে এই রবিবার ৫ মে পর্যন্ত এবং ক্যাম্পবেল্টাউনের ডুমারেস্ক স্ট্রিট সিনেমায় রবিবার সন্ধায়। এছাড়াও বাকি স্টেটের সিনেমা হলেও দেখানো ব্যবস্থা করা হয়েছে। হিমেল আশরাফের পরিচালনায় নির্মিত সিনেমাটিতে শাকিব খানকে দর্শক আবিষ্কার করেছে একদম ভিন্নরুপে। শাকিব খানের ভীষন পরিশীলিত অভিনয় দেখে সিডনির অনেক নতুন দর্শক ইতিমধ্যে মুগ্ধ হয়েছেন।

এরপরই সবচেয়ে দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে মিশুক মনি অভিনিত সিনেমা দেয়ালের দেশ যেখানে দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন শরিফুল রাজ এবং বুবলি। কাব্যিক ধাচে নির্মিত সিনেমাটিকে বলা হচ্ছে খামখেয়ালি এক প্রেমিকের ভালোবাসার নৈবেদ্য! তুমুল প্রেমের তীব্রতার গল্প দেয়ালের দেশ। এই সিনেমাটির প্রথম শো শুরু হচ্ছে এই শুক্রবার ৩ মে থেকে এবং সীমিত কিছু শো হবে যা আগামী ১২ মে পর্যন্ত চলবে।
এরপরই পর্যায়ক্রমে মুক্তি পাবে শরিফুল রাজেরই আরেকটি থ্রিলার সিনেমা ওমর যা পরিচালনা করেছেন মোস্তফা কামাল রাজ এবং কামরুজ্জামান রোমানের পরিচালনায় বাংলাদেশের সবচাইতে স্মার্ট হরর সিনেমা মোনা জ্বীন ২ যেখানে অসাধারন অভিনয় করেছেন সদ্য প্রয়াত অভিনেতা আহমেদ রুবেল। আর এরপর মুক্তি পাবে পুজা চেরি আর আদর আজাদ অভিনিত আরেকটি রোমান্টিক থ্রিলার লিপ্সটিক যারও পরিচালক কামরুজ্জামান রোমান।
বঙ্গজ ফিল্মসের প্রতিষ্ঠাতা তানিম আল মিনারুল মান্নান জানান, “আমাদের বাংলাদেশের সিনেমা উত্তরোত্তর উন্নতি করছে এবং অনেক নতুন পরিচালক দক্ষতার সাথে গল্প বলছেন। প্রতিটা সিনেমাতে ইংরেজি সাবটাইটেল থাকায় প্রবাসিদের দ্বিতীয় প্রজন্ম বা ভিন্ন ভাষার দর্শকও বিনোদোন খুজে পাবেন। বিশেষত প্রবাসি বাংলাদেশি কিংবা বাংলাভাষী দর্শকদের মতামত পেলে আমাদের নির্মাতারা আরো ভালো সিনেমা নির্মান করতে পারবেন।“

16/01/2024
কবির সমাধি প'রে অশ্রুপাত । কে এম আব্দুস সালাম ( কবি সৈয়দ শামসুল হক শ্রদ্ধাস্পদেষু ) আত্মার পরম সূর্য পৃথিবীর সব হিসাব ম...
27/12/2023

কবির সমাধি প'রে অশ্রুপাত । কে এম আব্দুস সালাম
( কবি সৈয়দ শামসুল হক শ্রদ্ধাস্পদেষু )

আত্মার পরম সূর্য

পৃথিবীর সব হিসাব মিটিয়ে দিয়ে
তোমার প্রিয় জলেশ্বরীর মাটিতে
শুয়ে আছো তুমি,
সন্তান ঘুমায় যেমন পরম নিশ্চিন্তে
তার মায়ের কোলে।
হেমন্তের ভোরে কয়েকটি গোলাপ হাতে
তোমার সমাধি সৌধে দাঁড়িয়ে
অলক্ষে অশ্রুপাত করে ভক্ত এক;

গোলাপ হয়ে ওঠে যেনো আত্মার পরম সূর্য
জলেশ্বরীর আকাশে তোমার।
কুন্ঠে বাহে, জাগো সবাই,
নূরলদীনের সেই আহবান তোমার কলমে
যেনো মুক্তির শ্বাশত জয়গান হয়ে
উড়ে বেড়ায় এই বাংলায়।
হৃৎ কলমের টানে এখনও মানুষের কাছাকাছি নিয়ে যায় আমাদের,
তোমার জলেশ্বরী হয়ে ওঠে বাংলার মুখ।
শান্তিতে ঘুমাও তুমি কবি,
ঘুমাও জলেশ্বরীর বুকের ভেতর,
তোমার কবিতায় আলোকিত হোক
এই বাংলার মাঠ, ঘাট, প্রান্তর।

একুশে একাডেমী অস্ট্রেলিয়া’র বিজয় দিবস উদযাপন প্রেস বিজ্ঞপ্তি : গত রবিবার ১৭ ডিসেম্বর স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় সিডনির এ্যাশ...
24/12/2023

একুশে একাডেমী অস্ট্রেলিয়া’র বিজয় দিবস উদযাপন

প্রেস বিজ্ঞপ্তি : গত রবিবার ১৭ ডিসেম্বর স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় সিডনির এ্যাশফিল্ড সিভিক সেন্টারের হল রুমে একুশে একাডেমী অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস ২০২৩ উদ্‌যাপন করেছে। উক্ত সংগঠনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আবদুল মতিন এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন এবং স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা এনায়েতুর রহিম বেলাল এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা কায়সার আহমেদ মুক্তিযুদ্ধ এবং গৌরবময় বিজয়ের স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য প্রদান করেন। অতঃপর রাজনীতিবিদ ডা. লাভলী রহমান, শিক্ষাবিদ ড. কাইয়ুম পারভেজ, রাজনীতিবিদ ড. আব্দুল জলিল, রাজনীতিবিদ এবং সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠক জনাব শফিকুল আলম বাঙালির অহংকার মুক্তিযুদ্ধ, মহান বিজয় দিবস এবং আমাদের করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করেন। আলোচনা পর্বে শহিদ জননী জাহানারা ইমাম রচিত “একাত্তরের দিনগুলি” গ্রন্থ থেকে পাঠ করেন কথাসাহিত্যিক এবং শিক্ষাবিদ শাখাওয়াৎ নয়ন। হেলাল হাফিজের কবিতা “একটি পতাকা পেলে” আবৃত্তি করেন শিশুসাহিত্যিক অনীলা পারভীন।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে শিশু কিশোরদের সাংস্কৃতিক সংগঠন “কিশলয়” এর সদস্যরা দেশের গান এবং নৃত্য পরিবেশন করে। অমিয়া মতিনের পরিচালনায় একুশে একাডেমীর নিজস্ব সাংস্কৃতিক দল ‘অভিযাত্রী’র পরিবেশনায় দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন অমিয়া মতিন, লিলি গোমেজ, অভিজিৎ বড়ুয়া, পিয়াসা বড়ুয়া, সুজন, বেঞ্জামিন গোমেজ, সুলতানা নূর, শহিদুল আলম এবং ছায়া বিশ্বাস প্রমুখ। তবলায় সঙ্গত করেন মিঠু বর্মন।
উক্ত অনুষ্ঠানে কবি, লেখক, সাংবাদিক এবং সিডনির সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সুধীজনরা অংশগ্রহণ করেন। অন্যান্যের মধ্যে ড. সুলতান আহমেদ, নেহাল নেয়ামুল বারী, ড. নূরুর খোকন, রূমানা ফেরদৌসি, ড. আব্দুল ওহাব, আল নোমান শামীম, কাজী সুলতানা সিমি, ড. মাহবুব আলম প্রদীপ, ইসহাক হাফিজ এবং ন্যান্সী লীনা ব্যারেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। একুশে একাডেমির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল মতিন সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানেন।

প্রকৌশলী আবদুল মতিন ​​​​​রওনক হাসান
সভাপতি, একুশে একাডেমী ​​​​সাধারণ সম্পাদক, একুশে একাডেমী

ঢাকায় বইফেরী’র বেস্টসেলার পুরস্কার পেল সিডনিবাসী  আরিফুর রহমানের ‘আমাদের ঠিকানা বদলে গেছে’ বাংলাদেশের কোন একটি প্লাটফর্ম...
23/12/2023

ঢাকায় বইফেরী’র বেস্টসেলার পুরস্কার পেল সিডনিবাসী আরিফুর রহমানের ‘আমাদের ঠিকানা বদলে গেছে’

বাংলাদেশের কোন একটি প্লাটফর্মে এটিই সিডনি প্রবাসী ঔপন্যাসিক আরিফুর রহমানের প্রথম পুরস্কার।
গতকাল ২২ ডিসেম্বরে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এক জাঁকজমক অনুষ্ঠানে অনলাইন বুক সেলার পোর্টাল বইফেরী তাদের দ্বিতীয় জন্মোৎসব অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গতবছরের বেস্টসেলার লেখক, বই এবং প্রকাশকদের পুরস্কার প্রদান করে। সৃজনশীল বিভাগে বেস্টসেলার বইয়ের পুরস্কারে ভূষিত হয় আরিফুর রহমানের সপ্তম উপন্যাস ‘আমাদের ঠিকানা বদলে গেছে’। সিডনি প্রবাসী লেখকের পক্ষ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন লেখকের মা এবং বড়ভাই প্রশান্তিকা সম্পাদক আতিকুর রহমান শুভ। কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক লেখকের মায়ের হাতে সম্মাননা স্মারক ও সনদ তুলে দেন। এসময় হলভর্তি দর্শক মুহুর্মুহ করতালি দিয়ে সম্বর্ধিত করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি আনিসুল হক, বিশেষ অতিথি ছিলেন ছড়াকার ও শিশু একাডেমীর মহাপরিচালক আনজীর লিটন, কথাসাহিত্যিক মোহিত কামাল, লেখক অরুণ কুমার বিশ্বাস এবং ব্যাংকার খুরশীদ আলম। সভাপতি হিসেবে ছিলেন বইফেরী’র কর্ণধার রাশেদুল আলম।

পুরস্কার প্রাপ্তির সংবাদে লেখক আরিফুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশের কোন একটি প্লাটফর্মে এটিই আমার প্রথম পুরস্কার। আমার নিজের ঠিকানা বদলের কারণে নিজের হাতে সেটা নিতে পারলাম না। তবে ঠিকই আমার মা এবং এই মুহূর্তে বাংলাদেশে থাকা বড়ভাই আতিকুর রহমান আমার পক্ষ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। আহা, এমন একটি অনুষ্ঠানে যদি থাকতে পারতাম। প্রিয় পাঠক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে চির কৃতজ্ঞ। প্রবাসে থেকে লেখালেখি করে এমন একটি সম্মাননা পাওয়া আমার জন্য সত্যিই বিস্ময়কর। অভূতপূর্ব। আমি ভীষণ আপ্লুত।”

আয়োজকদের অনুরোধে ধন্যবাদ জ্ঞাপন বক্তব্য দেন প্রশান্তিকা সম্পাদক আতিকুর রহমান শুভ। তিনি বলেন, “লেখকের জন্ম সিরাজগঞ্জের নদী বিধৌত অঞ্চলে যেটি একসময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। তারপর ঢাকা হয়ে বসবাসের ঠিকানা হয় প্রশান্ত পারের শহর সিডনিতে। সেই হিসেবে আমাদের ঠিকানা বদলে গেছে উপন্যাসটি লেখকের বাস্তব জীবন ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।” তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আনিসুল হক বলেন, পৃথিবী যত বদলাক না কেন আমাদের বারবার সাহিত্যের কাছে ফিরে আসতে হবে। একজন সাহিত্য পড়া মানুষ কখনই এটম বোমার সুইসে হাত দিতে পারবে না। তিনি তাঁর মা উপন্যাসের সারসংক্ষেপ বলেন। এসময় হলভর্তি মানুষ আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে।

অনুষ্ঠানে সৃজনশীল ও মননশীল বিভাগে লেখক হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন- মোশতাক আহমেদ, ইকবাল বাহার, লতিফুল ইসলাম শিবলী, ওয়াহিদ তুষার, গাজী মিজানুর রহমান, মুহম্মদ আনোয়ার হোসেন ফকির। ইসলামিক ও অনুবাদ বিভাগে পেয়েছেন- আরিফ আজাদ, ডা. শামসুল আরেফীন, মিরাজ রহমান, অনীশ দাস অপু, প্রিতম মুজতাহিদ ও এ. এস. এম. রাহাত। আমাদের ঠিকানা বদলে গেছে ছাড়াও সৃজনশীল ও মননশীল বিভাগে পুরস্কার পাওয়া বইয়ের মধ্যে রয়েছে- একজন তারা মিয়া, লাভ ইট অর লিভ ইট, বক্তৃতা দিতে শিখুন, স্বপ্ন ও সফলতা, পাসপোর্ট টু গ্রামার।

আরিফুর রহমান এখন লিখছেন তাঁর পরবর্তী উপন্যাস- সাউদার্ন ভ্যালি ওয়ে। এটি প্রকাশ করছে বাংলাদেশের নামকরা প্রকাশনী সংস্থা অন্বেষা

ঢাকা ইউনিভার্সিটি এলামনাই এসোসিয়েশন অস্ট্রেলিয়ারবিজয় দিবস ২০২৩ উদযাপনপ্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ গত ১৬ই ডিসেম্বর, “এসো মিলি বিজয়ের ...
19/12/2023

ঢাকা ইউনিভার্সিটি এলামনাই এসোসিয়েশন অস্ট্রেলিয়ার
বিজয় দিবস ২০২৩ উদযাপন

প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ গত ১৬ই ডিসেম্বর, “এসো মিলি বিজয়ের উল্লাসে, প্রাণের উচ্ছ্বাসে” এই শ্লোগানকে বুকে ধারণ করে ঢাকা ইউনিভার্সিটি এলামনাই এ্সোসিয়েশন অস্ট্রেলিয়া (DUAAA) উদযাপন করে বিজয় উৎসব ও বার্ষিক বনভোজন ২০২৩। সারাদিনব্যাপি এই অনুষ্ঠানটি উদযাপিত হয় Twin Shade Sails, Bicentennial Pk. Pathway, Sydney Olympic Park-এ।

এই শনিবারটি হয়ত অন্যদের জন্যে ছিল আর দশটি শনিবারের মতই সাধারণ। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের জন্য ছিল এক অনন্য সাধারণ দিন। এই দিনটিতে তারা ফিরে যায় বিজয়ের আলোয় উদ্ভাসিত বাংলাদেশে বিজয় দিবসের উল্লাস নিয়ে এবং মেতে উঠে বনভোজনের আনন্দে। বন্ধুদের কাছে পেয়ে হারিয়ে যায় ফেলে আসা তারুণ্যে উচ্ছল ঝলমলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই দিনগুলোতে। তাই তো সেদিন শত ব্যস্ততার মাঝেও সিডনী, ক্যানবেরা, মেলবোর্ন থেকে প্রাণের টানে প্রায় আড়াই শতাধিক সাবেক শিক্ষার্থীরা পরিবার পরিজন নিয়ে যোগদান করে এই আনন্দ উৎসবে। বরাবরের মত এবারও অভূতপূর্ব সাড়া পড়ে যায় সাবেক শিক্ষার্থীদের মাঝে। অনুষ্ঠানের আগের দিন পর্যন্ত অনুরোধ আসতে থাকে নাম নিবন্ধনের কিন্তু সীমাবদ্ধতার কারণে অনেককেই নিবন্ধিত করা সম্ভব হয়নি। এই যে এতো সাড়া এসেছে সদস্যদের কাছ থেকে তা “ঢাকা ইউনিভার্সিটি এলামনাই এসোসিয়েশন অস্ট্রেলিয়া”-র বর্তমান কার্যকরী পরিষদের প্রতি তাদের আস্থা, বিশ্বাস ভালোবাসারই পরিচায়ক।

সকাল সাড়ে নয়টায় প্রাতরাশ ও চা পরিবেশনা, শুভেচ্ছা বিনিময় এবং আড্ডার মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠান এবং শেষ হয় বিকেল ছয়টায়। কয়েকটি পর্বে সাজানো ছিল এই আয়োজন। জাহিদ মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের প্রথমেই ছিল সমবেত কণ্ঠে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সঙ্গীত ও দেশাত্মবোধক গান - এতে অংশ নেয় শুভ্রা, হিমেল, তামিমা, আজিজুন ও আরও অনেকে, তবলায় ছিল সাকিনা। অ্যাকনলেজমেন্ট অব কান্ট্রি পাঠ করে ফারহান শফিক। দেশের গানের সাথে নাচ পরিবেশন করে নাবিলা। এরপর ছিল সভাপতির স্বাগত ভাষণ। ছোট ছেলেমেয়েরা আকাশে বাংলাদেশের প্রতীক লাল সবুজ বেলুন উড়িয়ে প্রকাশ করে বিজয়ের দিবসের আনন্দ।

সংগঠনের সভাপতির কামরুল মান্নান আকাশ আগত এলামনাই ও অতিথিদের শুভেচ্ছা ও বিজয় দিবসের রক্তিম অভিবাদন জানিয়ে তার বক্তব্যের শুরু করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালনের আহবান জানান এবং তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন এই বিজয় ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পালন করেছে অগ্রণী ভূমিকা। তাই বাংলাদেশের ইতিহাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে চিরকাল। কার্যকরী পরিষদের সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন আমাদের আছে এক অসাধারণ ও উদ্যমী টিম, যা নিয়ে আমরা গর্বিত! তারা যা করে দায়িত্ববোধ, অঙ্গীকার ও সংগঠনের প্রতি ভালোবাসা থেকেই করে।

পরের পর্বে ছিল বিভিন্ন রকমের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। একে একে অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন বয়সের ছেলে ও মেয়েদের চকলেট দৌড়, বস্তা দৌড়, মেয়েদের চামচে ডিম নিয়ে ভারসাম্য দৌড়, ও ছেলেদের দড়ি লাফানো প্রতিযোগিতা। মহিলারা অংশগ্রহণ করেন পিলো পাসিং প্রতিযোগিতায়। পুরুষদের জন্য ছিল দড়ি টানাটানি ও কপালে টিপ পরানো প্রতিযোগিতা। পুরুষদের এবং মহিলাদের এই প্রতিযোগিতাগুলি ছিল হৈ চৈ এবং আনন্দ-উল্লাসে ভরপুর। খেলাধুলার এই পর্বটির পরিকল্পনা ও পরিচালনায় ছিলেন লিঙ্কন শফিকুল্লাহ, জাহিদ মাহমুদ ও বিশ্ব চক্রবর্তী।

দুপুরে ছিল পরিপূর্ণ মধ্যাহ্ন ভোজ, সাথে ছিল চমচম ও তরমুজ। এর সাথে চলতে থাকে খাইরুল চৌধুরীর সঞ্চালনায় স্মৃতিচারণ, শখের গান, কবিতা, জোকস যা ছিল সবার জন্য উন্মুক্ত। ছাত্রজীবনের কথা বলতে যেয়ে তারা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তারা বলেন জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় কাটিয়েছেন তারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। শ্রেণীকক্ষের শিক্ষার বাইরেও অনেক কিছুই শিখিয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়।

এরপর পর শুরু হয় সবার কাঙ্ক্ষিত গানের আসর “সোনালী দিন” যাতে একক সঙ্গীত পরিবেশন করে শুভ্রা মুস্তারিন, হিমেল, তামিমা শাহরিন ও আজিজুন। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিল মুনির বিশ্বাস, নার্গিস, কান্তা ও সাকিনা। জনপ্রিয় সব গানে মুখরিত হয়ে উঠে প্রাঙ্গণ। অনেক পুরানো জনপ্রিয় গানের সাথে কণ্ঠ মিলান আবেগপ্রবণ হয়ে যাওয়া শ্রোতারা।

র‍্যাফেল ড্র'র টিকেট বিক্রির মধ্য দিয়ে অসচ্ছল মেধাবী ছাত্রদের জন্য তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়া হয় এবং ছিল আকর্ষণীয় পুরস্কারও। কান্তা, তানিয়া, হাদী, লিঙ্কন, জাহিদ, খাইরুল, হায়াত টিকেট বিক্রিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। এ ছাড়াও নুসরাত জাহান স্মৃতি ও আবু সাঈদ তার কবিতার বই বিক্রির অর্থ তহবিলে দান করেন।

বিকেলে পরিবেশিত হয় মালই চা, সাথে ঝালমুড়ি ও কেক। নিকেশ নাগের বানানো ঝালমুড়ি, মিনি চৌধুরীর বানানো কাঁচা আমের ভর্তা ছিল লোভনীয়। মিলি ইসলাম করেছেন বাচ্চাদের জন্য ফেইস পেইন্টিং।

ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সেক্রেটারি রফিক উদ্দিন। তিনি সবাইকে সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং ভবিষ্যতে আরও ভালো অনুষ্ঠান উপহার দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সিনিয়র সহসভাপতি গোলাম মাওলা যারা স্পন্সর করেছেন বিভিন্ন ভাবে তাদেরকে ধন্যবাদ জানান।

শেষ পর্বে ছিল পুরস্কার বিতরণ। ঢাকা ইউনিভার্সিটি এলামনাই এ্সোসিয়েশন অস্ট্রেলিয়ার লোগো সম্বলিত ক্রেস্ট ও আকর্ষণীয় পুরস্কার প্রদান করা হয় বিজয়ীদের মধ্যে।

সমবেত কণ্ঠে “পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কি রে হায়” গানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এই মিলন মেলা। প্রচণ্ড তাপ-দাহ উপেক্ষা করে দিনভর থেকেও যেনো কারও ফিরে যেতে মন চাইছিলনা। ফিরে যাওয়ার সময় সবাই পরবর্তী অনুষ্ঠানে প্রতীক্ষায় থাকবেন বলে জানান।

অনুষ্ঠানটির সার্বিক পরিচালনায় ছিলেন সহযোগী সাধারণ সম্পাদক লিঙ্কন শফিকুল্লাহ, ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সেক্রেটারি রফিক উদ্দিন।

পুরো অনুষ্ঠানটি সফল করে তুলতে সহসভাপতি গোলাম মাওলা, কোষাধ্যক্ষ হালিমুসসান, সদস্য নার্গিস বানু, নুসরাত হুদা কান্তা, তানিয়া ফারজানা, সাকিনা আক্তার, আহসানুল হক হাদী, নুসরাত জাহান সৃতি, হায়াত ও সেলিম মমতাজ অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। এছাড়াও সাহায্য করেছে রুমকি, সাইফুল, হালিম, নাজমুল, ও আতিক।

15/12/2023
সিডনিতে ক্রিকেটার ইমরুল কায়েসকে সংবর্ধনা সংবাদ বিজ্ঞপ্তি : সিডনিতে ক্রিকেটার 'ইমরুল কায়েস' কে লালগালিচা সংবর্ধনা প্রদান...
14/12/2023

সিডনিতে ক্রিকেটার ইমরুল কায়েসকে সংবর্ধনা

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি : সিডনিতে ক্রিকেটার 'ইমরুল কায়েস' কে লালগালিচা সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। লাকেম্বায় গ্রামীণ হলে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ কমিউনিটি ক্রিকেট, NSW কমিটি I বড় পর্দায় শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন সাবেক ক্রিকেটার জুনায়েদ সিদ্দিকী, কোচ সালাউদ্দিন, শরিফুল ইসলাম, মোহাম্মাদ রবিন, শরীফুল্লাহ, সিনিয়র স্পোর্টস জার্নালিস্ট আপন তারিক, গীতিকার ও লেখক অনুরূপ আইচ, বাংলাভিশনের চিফ রিপোর্টার সুজন মাহমুদ, DBC নিউজ এর সাংবাদিক ফখরুল ইসলাম প্রমুখ I

ইমরুল কায়েস ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের মহিলা ক্রিকেটার সাবিনা সুলতানা কে ফুল দিয়ে বরণ করেন কাউন্সিলর সাজেদা আক্তার, কমিটিতে থেকে নেতৃত্ব দেন তালাত মাহমুদ ও সৈয়দ মুর্শেদ বাপ্পি I উপদেষ্টাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডাক্তার ফাইজুর রেজা ইমন ও তার সহধর্মিনী, লিটন বোল, ডাক্তার ইকবাল, ডাক্তার শাওন সহ আরো অনেক বিশিষ্ট ব্যাক্তিরা।

আমেরিকায় বদরুজ্জামান আলমগীরের গ্রন্থ উদযাপন এবং কিছু কথা । রাজিয়া নাজমী  Excellence  is never an accident. It is always ...
14/12/2023

আমেরিকায় বদরুজ্জামান আলমগীরের গ্রন্থ উদযাপন এবং কিছু কথা । রাজিয়া নাজমী

Excellence is never an accident. It is always the result of high intention, sincere effort and intelligent ex*****on - বলেছিলেন দার্শনিক অ্যারিস্টটল।
ডিসেম্বরের ২ তারিখে কুইন্স সেন্ট্রাল লাইব্রেরীতে উদযাপিত একটি অনুষ্ঠানের বেলায় এ কথাটি ভীষণভাবে প্রযোজ্য।
আমাদের পরিশ্রম সার্থক হয় তখনই যদি কাজের পিছনে সদিচ্ছা থাকে। অভিজ্ঞতা ছাড়াও high intention, sincere effort এর জন্যই দক্ষতার পরিচয় দিতে পারে।
সাধারণত কোন অনুষ্ঠান শেষ হলে ফেইসবুকে ছবি বের হয়, লেখা প্রকাশ হয়। সরাসরি মেসেজ আসে,ফোন আসে। তেমনিই হয়েছে কদিন আগে নিউ ইয়র্কের কুইন্স লাইব্রেরীর একটি অনুষ্ঠান নিয়ে।
এই নিয়ে আমার লেখার কথা ছিলো না। তবে কখনো আমাদের অনেক কাজের পিছনে একটা গল্প থাকে যা বলতে ভাল লাগে। বা বলাটা জরুরি হয়ে পড়ে।
শূন্য থেকে শুরু হয়ে শতভাগ পূর্ণ হবার দিন,ক্ষণ অতীত নামে এক পর্দার আড়ালে থেকে যায়। যদিও পূর্ণতা পাবার পিছে এই না দেখা না জানা অতীত সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
কিভাবে এমন একটি অনুষ্ঠানের শুরু হল তা বলতে গেলে যে নামটি ছাড়া শুরু করা যায় না সে সেলিনা শারমিন - কুইন্স সেন্ট্রাল লাইব্রেরীর প্রোগ্রামিং এবং আউটরিচ সিনিয়র লাইব্রেরিয়ান।
আমার সাথে ওঁর পরিচয় কবে কখন হয়েছিল সে অন্য এক গল্প। সংক্ষেপে বলা যায় আমার সাথে পরিচয়ের সূত্র ছিলো আমার লেখা এবং আমার বই নিয়ে অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত। ২০২১ সালের কথা। সেবেলায় সেলিনা পুরো আয়োজন করেছিলেন। নির্ভর করেছিলেন সাপ্তাহিক বাঙ্গালীর সম্পাদক কৌশিক আহমেদ এর সঞ্চালনার উপরে।
ভাল কিছু করার নেশায় যার সকাল হয় সেই সেলিনার সাথে আমার সম্পর্ক গড়ে উঠতে সময় লাগলো না। সেলিনা চাইল আমি লাইব্রেরীর একটি প্রোগ্রামে (স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে) ওর সাথে কাজ করি।
আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম সেন্ট্রাল লাইব্রেরীর ইতিহাসে একমাত্র বাঙালী নারী লেখক হিসাবে আমার ‘অথার টক’ দিয়ে প্রথম এবং শেষ হবে তা হতে পারে না। আরও করতে হবে। তবে প্যান্ডামিকের নির্দয়তা শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু প্যান্ডামিকের ভয়াবহতা শেষ না হতেই ২০২২ সালে সেলিনা চলে গেলো কানেক্টিকাট স্টেটের লাইব্রেরীতে। প্রায় এক বছর পরে ফিরে এলো আবার কুইন্স সেন্ট্রাল লাইব্রেরীতে। এই এক বছর বাঙালীদের কোন অনুষ্ঠান সেন্ট্রাল লাইব্রেরীতে হয়নি।
ফিরে আসার আগেই সেলিনা আমাকে বললো, আমি ফিরে আসছি। গেট রেডি। যা প্লান করেছিলাম তা শুরু করবো। সেলিনা নতুন দায়িত্বে আসার কিছুদিন পরেই বাংলা প্রোগ্রাম শুরু করার কথা জানালো।
আমার নিজের বই শেষ করার ব্যস্ততা, অফিসের ব্যস্ততা, ভাল মন্দ অনেক কিছুর জন্য রেডি হতে আমিই সময় নিলাম কয়েক মাস। শেষমেশ সেপ্টেম্বর মাসে সেলিনা’কে জানলাম কী প্রোগ্রাম এবং কাকে নিয়ে ভাবছি।
'বদরুজ্জামান আলমগীর' নাম বলতেই একটু অবাক হয়ে বলে, এই লেখকের নাম শুনি নাই তবে নিশ্চয় তেমন কেউ হবে নয়তো আমি কেন প্রস্তাব করবো। সেলিনার এটা স্বভাব না আমার উপরে ওর অগাধ বিশ্বাস, জানি না। আমি কিছু বললে সিদ্ধান্ত জানাতে সময় নেয় না। ওর একটা সংক্ষিপ্ত জবাব - Done!
Done - কিন্তু ভাল কাজে বাধা না এলে তা সম্পূর্ণ হয় কী করে বিশেষ করে আমার বেলায়। জীবন ভর বাধা ডিঙিয়ে কাজ করতে করতে সহজে কোন কাজ যদি হয়েও যায় তা নিয়ে আমার সন্দেহ থাকে।
তাই বাধা একবার না বহুবার নানাভাবে এসেছে, যে বাধা আসার কথা ছিলো না তাও এসেছে। আমি তাই জানতাম অনুষ্ঠান ভালোভাবেই শেষ হবে।
একটি সহজ অনুষ্ঠান করতে গিয়ে এতসব ঝামেলার জন্য বোধহয় অনুষ্ঠান 'উতরে গেছে' নয় - নিন্দুকেরাও বলবে - যথেষ্ট উঁচু মানের একটি অনুষ্ঠান হয়েছে। ত্রুটিহীন বা পিকচার পারফেক্ট না হলেও প্রায় পিকচার পারফেক্ট হয়েছে।
অনুষ্ঠানের ভূয়সী প্রশংসা প্রথম পেয়েছি সেলিনা শারমিন এর কাছ থেকে। এরপর একে একে প্রায় সকল শ্রোতা দর্শক বলেছে এমন অনুষ্ঠান সহসা হয় না।
আলোচনা অনুষ্ঠান ক্লান্তিকর হয়ে পড়ে। কিন্তু এই অনুষ্ঠান এমনভাবে সাজিয়েছিলাম যে সেই অবস্থায় যায়নি।
প্রথম পর্বেই ছিলো লেখক বদরুজ্জামান আলমগীর লেখা থেকে পাঠ, নাটকের অংশ বিশেষের প্রদর্শনী, তাঁর সম্পর্কে কিছু কথা যা উপস্থিত সকলকে মানসিকভাবে তৈরি করে দিয়েছিলো আলমগীরের কথা শোনার জন্য। এবং দ্বিতীয় পর্বে কৌশিক আহমেদ এর সাথে আলাপচারিতায় তাঁর কথা মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনেছে সবাই। সংক্ষেপে কিছু কথাও অনেক বলার চেয়ে বেশি বলা হয়, আলাপচারিতায় তা সেদিন প্রমাণ করে দিয়েছে লালন নূর ।
পিনপতন নীরবতায় কী করে সময় চলে গেলো টের পাওয়া গেলো না বলেছে বদরুজ্জামান আলমগীর এর লেখক বন্ধুরা। আবৃত্তি শিল্পীদের কাছেও অনুষ্ঠান ভালো লেগেছ।
ভাল লেগেছে আলমগীরের প্রিয় বন্ধু রাহমান টিটো'র এমন একটি অনুষ্ঠান করার উদ্যোগ নেবার জন্য।
লালন নূর, ৯ ঘণ্টা ড্রাইভ করে এসেছে - সেই পরিশ্রম সার্থক হয়েছে।
সাংবাদিক ইব্রাহিম চৌধুরী বলেছেন, নিউইয়র্কে বহুদিন পর ভালো মানের একটি আলোচনায় উপস্থিত ছিলাম।
সাংবাদিক শামিম আল আমিন, বললেন, এতটা সুন্দর হবে জানলে আমি রেকর্ড করার ব্যবস্থা করতাম (TBN24 থেকে)
কুলদা রায়, যিনি অপ্রিয় সত্য কথা বলতে দ্বিধা করেন না। যিনি কাউকে খুশি করতে কথা বলেন না। তিনি শুধু অনুষ্ঠানের দিনেই নয়, কদিন পরে ফোনেও আবার বললেন,এমন একটা অনুষ্ঠান কী করে করলেন- একজন লেখক সম্পর্কে আপনার ভূমিকায় যা বলেছেন তা অডিয়েন্সকে হিপনোটাইজ করে দিয়েছে যে এরপরে অনুষ্ঠানে সম্পূর্ণ মনোনিবেশ না করে থাকা সম্ভব হয়নি। একজন লেখক এবং তাঁর সৃষ্টিকে এভাবে তুলে ধরা সহজ কাজ নয়- এই অসাধ্য কাজটা এত সহজ করে করেছেন। আমি নিউ ইয়র্কে এমন অনুষ্ঠান কম দেখি । একটা বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনা অনুষ্ঠানে এসে আমার মনে হল আমার সময়টা কাজে লেগেছে।
আমি এবং বদরুজ্জামান আলমগীর দুজনেই তাঁর পরিচিত। নেহাৎ আসতে হবে বলেই এসেছিলেন। তবে ফিরে গেছেন ভাল সময় কাটিয়ে।
লেখক বদরুজ্জামান আলমগীর তাঁর অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে বলেছেন - তাঁর ধারণা ছিল তিনি এত পরিচ্ছন্ন, নিটোল,উন্নত মাপের অনুষ্ঠান করার ক্ষমতা রাখেন। তিনি বিস্মিত, অভিভূত হয়েছেন দেখে যে এত উন্নত মাপের অনুষ্ঠান করা আমার পক্ষেও সম্ভব।
বলেই ধারণা করেছিলেন। সেই তিনি বলেছেন, বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন আমার সূচনা বক্তব্যে। তিনি প্রশংসা করেছেন সেলিনা শারমিন কর্মদক্ষতার।
ভাল লেগেছে -আবৃত্তি শিল্পীদের তাঁর লেখার পাঠ। তাঁর নাটক থেকে পাঠ, প্রদর্শনী। অনুষ্ঠানে তিনি তাঁর অতীত দেখেছেন, বর্তমান দেখেছেন।
তিনি নিউ ইয়র্ক থেকে ফিরে গিয়েছেন তার ধারণার বাইরে ভালোলাগা নিয়ে। যথাযথ মর্যাদা পেয়ে।
কৌশিক আহমেদ, অবাক হন নাই। সেলিনার আন্তরিক সহযোগিতা এবং আমার নিষ্ঠার উপরে তাঁর বিশ্বাস ছিলো এবং তা মিথ্যে হবে না।
আর আমি বরাবরই বিশ্বাস করি - আমাদের লক্ষ্য থাকা উচিৎ অনুষ্ঠানকে সফল করা। একটু একটু করে এই অনুষ্ঠানের জন্য সব কাজের উদ্দেশ্য একটাই ছিল - যাকে নিয়ে, যার কাজ নিয়ে এই অনুষ্ঠান করার উদ্যোগ নিয়েছি - সেটাই যেন তুলে ধরতে পারি।
তবে এও সত্য শতভাগ সফলতার দাবী আমি করবো না কারণ তা সম্ভব হয়নি। তা যে কারণেই হোক। সেই অতৃপ্তি নিয়ে আমি বাড়ি ফিরেছি।
শতভাগ সফল করতে না পারার দায়ভার আমার। যতটুকু সফল হয়েছে তার কৃতিত্ব সেদিন দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত যারা ছিলেন তাঁদের সবার।এই অনুষ্ঠান সফল হতো না যারা অংশগ্রহণ করেছেন তাঁদের ছাড়া। সফল হতো না শ্রোতা দর্শক ছাড়া।

সেদিনের সেই অনুষ্ঠানের শিরোনাম 'বদরুজ্জামান আলমগির - বৃক্ষ একটি মনোহর' এর বদরুজ্জামান আলমগীর উপস্থিত শ্রোতা দর্শকের প্রায় সকলের পরিচিত। বইটির সম্পাদক লালন নুর কবি হিসাবেও আমাদের কাছে পরিচিত।
‘ বদরুজ্জামান আলমগীর - বৃক্ষ একটি মনোহর’ - এই বইটির লেখক বদরুজ্জামান আলমগীর নন। এই বইটি লেখা হয়েছে তাকে নিয়ে। যারা লিখেছেন তাঁদের মধ্যে আছেন কবি সাহিত্যিক, নাট্য ব্যক্তিত্ব, চলচ্চিত্রকার, সংগীত শিল্পী, সাংবাদিক। আছেন শিক্ষক যারা তাঁর চিন্তা ভাবনার সাথে পরিচিত। লিখেছেন সেই সব লেখক যারা তাকে তাঁর জন্মিটার থেকে চেনেন, যারা এক সময় একই রাজনীতির মাঠে ' চল পাল্টাই' এর অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলেন।
আমাদের অনুষ্ঠান এই বইটির প্রকাশনা উৎসব ছিলো না । তাহলে আমাকে অর্ধ শত লেখকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান করা উচিৎ ছিলো।
তাহলে কেন এই নামে এই অনুষ্ঠান? এর পুরো ব্যাখ্যা আমি সেদিন দেইনি। কারণ অনুষ্ঠানটির শেষে উপস্থিত সকলেই উপলব্ধি করবেন বলে আমার বিশ্বাস ছিলো।
তবে এই বইয়ের নামকরণ দেখে আমি চমকে উঠেছি - আমরা কম বেশি সকলেই জানি বিখ্যাত বাউল কবি জালাল উদ্দীন খাঁ এর একটি গান - কূল নাই দরিয়ার পারে - বৃক্ষ একটি মনোহর। অর্থাৎ দুঃখের মাঝে সুন্দর কিছু পাওয়া - বৃক্ষ একটি মনোহর ।
সম্পাদক বইটির এই নামকরণ কেন করেছেন তা তোলা ছিলো আলাপচারিতা পর্বে উঠে আসার জন্য।
তবে আমি আমার সূচনা বক্তব্যেই প্রশ্ন রেখে গিয়েছিলাম বদরুজ্জামান আলমগীরের কাছে - এই নাম তাঁর কাছে কতটা অর্থবহ মনে হয়েছে এবং কেন?
বৃক্ষের নামকরণ হয় বৃক্ষ আমাদের জন্য পাতা, ফুল, ফল, কী জন্ম দিচ্ছে তার উপরে।
এই বইটির নামকরণের মুল কারণ না জানলেও মোটাদাগে যা আমি দেখেছি তা হলো - এই বইটির মলাটের ভিতরে একজন লেখকের কবিতা, অনুবাদ, প্রবন্ধ, নাটক, নাট্য নির্দেশনা এবং তাঁর রাজনৈতিক দর্শন। অর্থাৎ এর ভিতরে আছে বদরুজ্জামান আলমগীরের চিন্তা ভাবনার কথা। তাঁর কাজ এবং নানা প্রতিকূলতার পরে তাঁর কাজের সফলতার কথা লিখেছেন বাংলাদেশে, উত্তর অ্যামেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে বিভিন্ন লেখক বিভিন্ন প্লাটফর্ম থেকে।
সবার লেখার ভিত্তিতে - আলমগিরের একটি কোন বই নিয়ে নয় - সমগ্র নিয়েই সংক্ষিপ্ত পরিসরে অনুষ্ঠানটির পরিকল্পনা করা হয়েছিলো।
সাধারণত একজন ব্যক্তির, এবং তার কাজের মূল্যায়ন করা হয় তিনি এই বিশ্ব থেকে চলে যাবার পরে।
বদরুজ্জামান আলমগীরের এর সৌভাগ্য যতটা তারচেয়ে বেশি সৌভাগ্য আমাদের যে তাঁর উপস্থিতিতে আমরা তা কাজের মূল্যায়ন করার সুযোগ পেয়েছি।
নাট্যকার বদরুজ্জামান আলমগীরের চাইতে কবি হিসাবে আমি তাকে বেশি জানি।
তাঁর প্রকাশিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘পিছুটানে টলটলায়মান হাওয়াগুলির ভিতর, ‘নদীও পাশ ফেরে যদিবা হংসী বলো, দূরত্বের সুফিয়ানা, মরিয়ম ফুল দুনিয়া, এবং যে গ্রাম দর্জিকে খলিফা বলে ডাকে।
তিনি লেখেন গদ্যের আদলে পদ্য - poem about everything.
রাজনীতি, মানব প্রেম সুফিবাদ- নিরন্তর প্রেম, ব্যক্তি প্রেম - তবে তার কবিতার ধরণ অ্যাবস্ট্রাক্ট পেইন্টিং এর মত। প্রেম, ভালোবাসা আছে তবে উপরে ভাসছে না। অনেক গভীরে।
তাঁর কবিতা সম্পর্কে আমার অনুভূতির কথা যদি বলি তাহলে বলবো, তিনি যখন ভিন ভাষাভাষীর কবিতা বাংলায় তুলে আনেন, তখন অনুবাদ নয়, করেন ভাষান্তর। এক্সরে আর জেরক্স কপির মধ্যে যে তফাৎ আছে। অনুবাদ আর ভাষান্তরের মধ্যেৎ তফাৎ ও তাই। আলমগীর এক্সরে করেন। তাই তাঁর অনুবাদ ঠিক অনুবাদ মনে হয় না। মনে হয় মুল কবির বাংলায় লেখা।
তাঁর কোন কোন মৌলিক কবিতা সম্পূর্ণ আলাদা, বিন্যাসে, ভাবে, গভীরতায়।
গভীর দুঃখবোধ ছেয়ে থাকে তাঁর কবিতায়। যেন নির্জন সমুদ্রের মাঝে একটি দ্বীপ – যেখানে জীবন শূন্যতায় ,একাকীত্বে বাস করে - তবু সেই দ্বীপের মাটি পাথরে আছে ঈহা, আছে স্বপ্ন, অসাধারণ সেই সব কবিতা সেই নির্জনতার মত ছুঁয়ে যায় ! আমাকে নিয়ে যায় শৈশবে কীর্তনখোলায় - বাবার হাত, মায়ের আঁচল ধরে ঢেই দেখি। নিয়ে যায় বুড়িগঙ্গা নদীর কিনারে - চোখ মেলে দেখি হাডসনের কুল। আমি বুঝি কীর্তনখোলা বুড়িগঙ্গা আমার অতীত - আমার বর্তমান হাডসনের তীরে।
আমি নস্টালজিয়ার চির-অসুখে ভোগা একজন। আসলে আমার মনে হয় আমি যেন বাংলাদেশ আর অ্যামেরিকার মাঝে দাঁড়িয়ে আছি। আমার আসাও হলো না যাওয়াও হলো না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হবার জন্য একধরনের গ্লানি নীরবে বাস করে মনের ভিতর। দেশ ছাড়ার কষ্ট পুষে রাখি আড়ালে। আবার এই দেশ ছেড়ে যেতে পারব না বলেই এই দেশকে ভালবাসি তা নয়, অনেকদিন কোথায় বাস করলে সেই মাটির জন্য যে একটা টান পড়ে যায়। মায়া জন্ম নেয় এদেশের অধিবাসীদের প্রতি। আলমগীরের লেখা পড়লে মনে তিনিও এর ব্যতিক্রম নন। জন্মভূমির কষ্ট হতাশার মধ্যে তিনি বাস করেন। তিনিও হতাশা চেপে রেখে থিতু হয়েছেন মার্ক্সের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা এই দেশে। যেমন বলেছি আগে, কোথায় বাস করলে সেই মাটির জন্য মায়া জন্মে যায়। আলমগীরের এদেশের মাটি মানুষের প্রতি ভালোবাসা গড়ে উঠেছে হয়তো নিজের অজান্তেই। দ্বৈত ভালবাসার দোটানার ভিতর দেখি আলমগীরের কবিতায় অ্যামেরিকা, এদেশের জনগণ -অবলীলায় জায়গা করে নিয়েছে। কিন্তু সেই সব লেখার মধ্যেও ভাগাভাগি করে মিসে আছে নিজের রুট। তিনি ফিরে ফিরে যান বাঙলার মাটিতে –ঢাকা, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের গ্রামে - তুলে আনেন মাটি কাঁদা, মানুষের ঘাম ঝরা আর্তনাদ, ক্ষুধা, তৃষ্ণা – প্রেম। নিজ গ্রামের মাটি, নদী, জনপদের কথা তুলে আনতে ভালবাসেন বাজিতপুরের আঞ্চলিক ভাষায় । এমনকি অনুবাদিত কবিতায় তিনি তাঁর আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করতে ভালোবাসেন -
দ্বৈত ভালবাসায় লেখা তাঁর ইংরেজি কবিতার বইয়ের নাম রেখেছেন - Dhaka stars on Philly sky-
তিনি মার্ক্সের দেখানো পথে এখনও মনে মনে হাঁটেন, কলমে চলে আসে সেই পদচিহ্নের রেখা। আলমগীর প্রবাসী জীবনে বসে তাঁর আত্মজৈবনিক লেখায় লিখেছেন - বালিশ পরিষ্কার করে ঘুমাতে যাই, ঘুম থেকে উঠে বালিশ সরাতে গিয়ে দেখি বালিশের নিচে - লাল রেক্সিনে মোড়ানো চেয়ারম্যান মাও সেতুঙ্গের বই!
মার্ক্সবাদ-যারা ভীষণভাবে ধারণ করেন তাঁদের চিন্তাভাবনা টিকিয়ে রাখার জন্য যে যুদ্ধ অ-মার্ক্সবাদ দেশে এসে করতে হয়, তিনিও তা করছেন। প্রতিনিয়ত মোকাবেলার রক্তক্ষরণের যন্ত্রণাকে নিয়ে তিনিও যে চলছেন তা তাঁর কবিতায় সেই ছাপ খুঁজে পাওয়া যায়-
তবে একজন বিপ্লবী দেশলাইর কাঠি দিয়ে যে কবিতা লেখেন, যেভাবে শব্দ, বাক্য পুড়িয়ে আনেন আগুনের শিখায়; তাঁর কবিতায় দহন ধপ করে জ্বলে ওঠে না।
আগেই বলেছি তাঁর কবিতার ধরণ ভিন্ন। দহনও ডিপ ইনসাইড -
নিজের সৃষ্টির প্রতি সন্দেহ নেই তাঁর। তা নাটক বা কবিতা যাই হোক। তিনি যা বলতে চেয়েছেন তা তিনি তাঁর মতে করেই বলেন এবং বিশ্বাস করেন পাঠকের গ্রহণ ক্ষমতার উপর।
তাঁর রচিত হৃদপেয়ারার সুবাস বইয়ের কথা ছাড়া কোন আলোচনাই সম্পূর্ণ হতে পারে না। আমার কথা অসস্পুর্ন থেকে যাবে।
হৃদপেয়ারার সুবাস -এটি প্যারাবল গ্রন্থ। প্যারাবল বলতে আমরা যা বুঝি তা হল মানবসমাজের জন্য উপদেশমূলক পাঠ। এবং এই শিক্ষামূলক পাঠ উপমার ধরণে ধর্মীয় গ্রন্থে দেখা যায়। কবি সাহিত্যিকরা এই ধরণকে অনুসরণ করে তাঁদের নিজস্ব গদ্য বা পদ্যে এর শৈলী ব্যবহার করে, সংক্ষিপ্ত, উপদেশমূলক নীতিগুলিকে চিত্রিত করেন। এবং তাঁদের এই ধারার লেখায়, প্যারাবল ধীরে ধীরে শিল্প সাহিত্যের একটি অংশ হয়ে ওঠে। প্যারাবল বা উপমা রচনায় তাঁরা ফেবল বা কল্পকাহিনী থেকে আলাদা রেখেছেন। হৃদপেয়ারার সুবাস গ্রন্থটি সেই অর্থে একটি খাটি প্যারাবল গ্রন্থ- যেখানে আছে শুধু মানব চরিত্র। এবং প্রতিটি প্যারাবল এক ধরনের ( metaphorical) রূপক উপমা।
আমার জানামতে বদরুজ্জামান আলমগীর সম্ভবত বাংলা সাহিত্যে প্রথম প্যারাবল রচয়িতা।
আলমগিরের লেখার সাথে পরিচয়ের পরে মনে হয়েছে এমন লেখাই তাঁর লেখার কথা। তাঁর চিন্তা ভাবনাকে এখানে খুঁজে পাওয়া সহজ।
তাঁর ভাবনা জগতে তিনি অন্ধকার দেখেছেন, আলো দেখেছেন – ভেবেছেন জীবনের সার কথা কী!
অবিনশ্বর প্রেমের সুবাস ছড়ানো গদ্যে-পদ্যে লেখা হৃদপেয়ারার সুবাস বদরুজ্জামান আলমগীর বৃক্ষ একটি মনোহর বইটিতে অনেকের লেখায় চলে এসেছে। তাঁরা যেন সাঁতার দিতে গিয়ে ডুব সাঁতারই দিয়েছেন। সেখান থেকে উঠে আসতে সময় লেগেছে।
আমার অনুভূতি - হৃদপেয়ারার সুবাসে যেতে যেতে বহুদূর যাওয়া হয় - বহুক্ষণ থাকা যায়।
একজন স্বর্ণগর্ভা মায়ের তৃতীয় সন্তান বদরুজ্জামান আলমগীর, একজন কবি এবং নাট্যকার। সেই পরিচয়ে নিয়ে তিনি অ্যামেরিকার সংবিধান রচিত হয়েছে পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের যে শহরটিতে সেই ফিলাডেলফিয়া বসবাস করছেন প্রায় দুই যুগ ধরে।
লিখে যাচ্ছেন তাঁর পাঠকের প্রত্যাশাকে বুকে ধারণ করে। পাঠকের অন্তর ছুঁয়ে যাক তাঁর লেখায়। সেই কামনা করছি।
তাঁর একটি প্রাপ্তির কথা বলেই সেদিনের অনুষ্ঠানের কথা শেষ হোক। ইশরাত নিশাত নাট্য পুরস্কার ‘২০২২’ বাংলাদেশে প্রথম বারের মতো অনুষ্ঠিত হলো। এবং শ্রেষ্ঠ নাট্যকার হিসাবে বদরুজ্জামান আলমগীর পুরস্কার পেলেন।

রাজিয়া নাজমী : রাজিয়া নাজমী গল্পকার, সেইসাথে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের নির্মোহ ভাষ্যকার তিনি। থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে, কিন্তু তাঁর বিশ্বাস ও অভিজ্ঞানে প্রাত্যহিক ধারণ করেন এক ভুবন বাঙলাদেশ। তিনি গল্পে বয়ান করেন সময়ের নৈর্ব্যক্তিক বোঝাপড়া, বুননে থাকে ইতিহাস ও নৃতত্ত্বের পলিমাটি, আর এক নির্দয় মায়া। রাজিয়া নাজমী ঘড়ি ধরে ধরে শব্দ গুণে লেখেন না- লেখেন এক অনিবার্য জেরা ও জন্মদানের রোখে।

রাজিয়া নাজমী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর। যুক্তিগ্রাহ্য, আইনসঙ্গত একটি সমাজ দেখার প্রত্যয়ে আইনশাস্ত্রে স্নাতক করে বার কাউন্সিলের সনদ নিয়েছিলেন; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রযুক্তিবিদ হিসাবে কাজ করেছেন।বর্তমানে কাজ করছেন নিয়ইয়র্কের একটি আইন সংস্থার সাথে।
লেখালেখির পাশাপাশি নোলক নামে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা পদে নিযুক্ত। তিনি নিউইয়র্ক কেয়ার, বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক, এবং বাপা'র সদস্য হিসাবে কাজ করেন। নিউইয়র্কের ফ্রেন্ডস অব কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরির হলিস শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট-এর দায়িত্ব পালন করেছেন।

প্রকাশিত বইঃ চৌকাঠের বাইরে, জলাগুন।

সিডনিতে বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন । পড়ুয়ার আসরের আয়োজন রোকেয়া আহমেদ : গত ১০ই ডিসেম্বর ২০২৩,  রবিবার সকাল ১১ টায় Macq...
12/12/2023

সিডনিতে বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন । পড়ুয়ার আসরের আয়োজন

রোকেয়া আহমেদ : গত ১০ই ডিসেম্বর ২০২৩, রবিবার সকাল ১১ টায় Macquarie Links Golf Club Community Hall এ “ পড়ুয়ার আসর” এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো “বেগম রোকেয়া দিবস”।

পড়ুয়ার আসর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সবাই মিলে বই পড়ার কার্যক্রম শুরু করেছিল; প্রতি দুই মাসে একটি বই পড়ার আসরের আয়োজন ছাড়াও পড়ুয়ার আসর গত বছরের ডিসেম্বর মাসে প্রথম বেগম রোকেয়া নিয়ে একটি বিশেষ পাঠসভার আয়োজন করেছিল। এরই ধারাবাহিকতায়, ২০২৩ সালের ১০ই ডিসেম্বর রবিবার পড়ুয়ার আসর আবারো যথাযোগ্য মর্যাদায় বেগম রোকেয়া কে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছে।

বিশেষ স্মরণসভা ও আলোচনা অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ছিল বেগম রোকেয়ার রচনাবলী থেকে পাঠ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে নারীর অবদানের বর্ণনা।
নাসরিন মোফাজ্জল ও রোকেয়া আহমেদের সঞ্চালনায় এই বিশেষ পাঠপর্বে অংশগ্রহণ করেন আজিজা শাদাত, নুরুন্নাহার বিউটি, রুমানা ফেরদৌস লনী, রওশন পারভীন, কাশফি আসমা আলম, রাণী নাহিদ,শামসুন্নাহার বিউটি, লায়লা লজি, সাকিনা আক্তার ও ইসরাত মুনির। সঙ্গীত পরিবেশনায় ছিলেন রুমানা ফেরদৌস লনী। এই পর্বের একটি বিশেষ পরিবেশনা ছিল কাশফি আসমা আলমের ধারা বর্ণনায় এবং নাসরিন মোফাজ্জল ও ইসরাত মুনিরের অংশ গ্রহনে শ্রুতি নাটক। বেগম রোকেয়ার “সুলতানার স্বপ্ন” উপন্যাস অবলম্বনে সারা ও সুলতানার দ্বৈত সংলাপের মাধ্যমে এই শ্রুতি নাটকটি পরিবেশনা করা হয়।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অংশে ছিল সিডনীর বিশিস্ট কবি সাহিত্যিক লেখক ও সুধীজনদের অংশগ্রহণে বেগম রোকেয়া কে নিয়ে পর্যালোচনার একটি বিশেষ পর্ব। এই পর্বের প্রধান বক্তা ও আলোচক ছিলেন অজয় দাশগুপ্ত, তিনি অত্যন্ত সাবলীল ভাষায় নারী জাগরণ ও নারী শিক্ষার অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার অবদান তুলে ধরেন এবং তাঁর সাহিত্য কর্মের পর্যালোচনা করেন। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সর্বজনাব শাফিন রাশেদ, গামা আবদুল কাদির, ড: কাজী আলী, ড: খাইরুল চৌধুরী, আব্দুল জলিল, আনীলা পারভিন, শাখাওয়াত নয়ন, নোমান শামীম, মোহাম্মদ শফিকুল আলম, ফারিয়া নাজিম, শোয়েব মো: কামাল, কানিজ আহমেদ, এহসান আহমেদ। এছাড়া “বিভাবরী” জামদানি শাড়ী বুটিকের স্বত্বাধিকারী সামিনা মাশা ও আভানী রিয়াল এস্টেট এর পক্ষ থেকে মুনীর সিরাজুম ও ইসরাত মুনীর তাদের শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। পুরো অনুষ্ঠানের শব্দ নিয়ন্ত্রণে ছিলেন মেহেদী হাসান এবং মঞ্চ সজ্জায় ছিলেন শামীম হাসান।

বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষ্যে পড়ুয়ার আসর “বই বদল” বা (Book Exchange) এর একটি বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করে। অনুষ্ঠানে আগত সুধীজনেরা আনন্দ ও উৎসাহের সাথে বই বিনিময় করেন এবং বই অনুদান ও ক্রয় করেন।এই Book Exchange টেবিলের দ্বায়িত্বে ছিলেন অদ্রি ও রিয়াশা নুসরাত চৌধুরী।
“ দেশী স্বাদ” এর আয়োজনে ছিলো সুলভ মূল্যে খাবার ও চা/ কফির আয়োজন। খাবার পরিবেশনায় ছিলেন সিনথিয়া, নাদিম ও মাশা।

Address

16 Maxwell Street, Macquarie Fields, NSW 2564
Macquarie Fields, NSW
2564

Telephone

61413444437

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Proshantika News posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Proshantika News:

Videos

Share


You may also like